সাধারণ ভাবে বলা যায়, ডায়াবেটিস Diabetes রোগ হলো অনিয়ন্ত্রিত খাবার-দাবার গ্রহণ এবং জীবন যাপনের ফলে শরীরে জেগে উঠা একটি শারীরিক সমস্যা যা মূলত মানুষের ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়ে পড়লে আরো তীব্র ভাবে প্রকাশ পায়। হোমিওপ্যাথির ভাষায় বলতে গেলে এটি মূলত একটি মাল্টি মায়াজমেটিক জটিল শারীরিক সমস্যা। দৈনন্দিন খাবার-দাবার যে ভাবে গ্রহণ করলে মানুষের শরীর সঠিক ভাবে পুষ্টি পায় সেগুলি সেভাবে গ্রহণ না করে বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় বা প্রোসেস করে গ্রহণ করার ফলে মানুষের শরীর সেভাবে পুষ্টি পায় না। তাছাড়া প্রসেস করার ফলে খাবারে নানা প্রকার ক্ষতিকর উপাদান যেমন যুক্ত হয় তেমনি পুষ্টিগুনও বহুলাংশে কমে যায়। আর সেগুলি বাচবিচার না করে ক্রমাগত গ্রহণের ফলে এবং বিভিন্ন রাসায়নিক ঔষধের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারের ফলে যখন আমাদের ভাইটাল ফোর্স ক্রমাগত দুর্বল হয়ে পড়ে তখন ডায়াবেটিসের মতো জটিল স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি জেগে উঠে।
৯০ শতাংশ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস হওয়ার কারন গুলো একই রকম। কেবল ১০ শতাংশ ক্ষেত্রে এটা ভিন্ন কারনে হতে পারে। দেখা যাচ্ছে, অগ্ন্যাশয়ের দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ অর্থ্যাৎ ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস এর ফলে অনেকেই প্যানক্রিয়াটাইটিসযুক্ত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হচ্ছেন তবে সেটা প্রোপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় স্থায়ীভাবে ঠিক হতে কয়েক মাসের বেশি সময় লাগে না।
ভাইটাল ফোর্স যে যে কারণে দুর্বল হতে পারে
নিম্নোক্ত কারণে ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হলে ডায়াবেটিস জেগে উঠতে পারে- বিভিন্ন প্রকার ভ্যাকসিন বা টিকা
- হাই-পাওয়ারের ক্ষতিকর সব এন্টিবায়োটিক
- ক্রমাগত বিভিন্ন এলোপ্যাথিক ঔষধ সেবন
- বড় ধরনের শারীরিক আঘাত
- বড় ধরণের মানসিক আঘাত
- এছাড়া বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ না করা, অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন করা ইত্যাদি
মানব দেহের অনেক দুরারোগ্য সমস্যার পেছনে দায়ী রয়েছে এই ডায়াবেটিস যেমন - চোখের সমস্যা, হৃদরোগ, স্ট্রোক বা কিডনির সমস্যা ইত্যাদি। ডায়াবেটিস হলে আপনি যদি প্রাকৃতিক উপায়ে সেটাকে না সারিয়ে রাসায়নিক ঔষধের মাধ্যমে শুধু নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করে যান তাহলে সেই সকল রাসায়নিক ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় আরো দুরারোগ্য রোগ তৈরী হবে আপনার শরীরে। এভাবে চলতে থাকলে এক সময় আপনাকে একটি দুঃসহ জীবন নিয়ে চলতে হবে।
ডায়াবেটিস হলে সেটিকে রাসায়নিক ঔষধের মাধ্যমে শুধু নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা না করে প্রোপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে সারিয়ে তুলুন। আপনি হয়তো জানেন না ডায়াবেটিস নির্মূলের একটি উন্নত চিকিৎসা হলো হোমিওপ্যাথি। তবে এর জন্য এক্সপার্ট একজন হোমিও চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন।
ডায়াবেটিস হলে শরীরে যা ঘটে
আমরা খাবার খাওয়ার পরে আমাদের শরীর খাবারের শর্করাকে ভেঙে সুগার বা চিনিতে (Glucose) রুপান্তর করে। ইনসুলিন নামের একটি হরমোন নিসৃত হয় অগ্ন্যাশয় থেকে যে হরমোন সুগার বা চিনিকে গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়ে থাকে আমাদের শরীরের কোষগুলোকে। এই চিনি শরীরের জ্বালানী বা শক্তি হিসেবে কাজ করে। শরীরে যখন ইনসুলিন তৈরি হতে পারে না বা ঠিক মতো কাজ করে না তখনই মূলত ডায়াবেটিস হয়। এর ফলে রক্তের মধ্যে চিনি জমা হতে শুরু করে।ব্লাড সুগার লেভেল অনুসারে ডায়াবেটিস নির্ণয়
ডায়াবেটিস শনাক্ত করার জন্য সবচেয়ে সঠিক ও বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি হলো OGTT-Oral Glucose Tolerance Test. এই পদ্ধতিতে রোগীকে সকালে খালি পেটে একবার রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা করতে হয়, তারপর ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ শরবত পানের দুই ঘণ্টা পর আরেকবার রক্তে গ্লুকোজ পরীক্ষা করা হয়। এই পদ্ধতিতে নির্ভুলভাবে ডায়াবেটিস ও প্রি-ডায়াবেটিস নির্ণয় করা যায়।
আবার আঙুলে সূঁচ ফুটিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তের গ্লুকোজ পরীক্ষা করা হয়। রক্তের গ্লুকোজের লক্ষ্যমাত্রা প্রত্যেক মানুষের ক্ষেত্রে ভিন্ন হয়ে থাকে -
Plasma glucose test | Normal | Prediabetes | Diabetes |
---|---|---|---|
Random | Below 11.1 mmol/l Below 200 mg/dl | N/A | 11.1 mmol/l or more 200 mg/dl or more |
Fasting | Below 5.5 mmol/l Below 100 mg/dl | 5.5 to 6.9 mmol/l 100 to 125 mg/dl | 7.0 mmol/l or more 126 mg/dl or more |
2 hour post-prandial | Below 7.8 mmol/l Below 140 mg/dl | 7.8 to 11.0 mmol/l 140 to 199 mg/dl | 11.1 mmol/l or more 200 mg/dl or more |
যদিও সার্বজনীন ভাবে সুগারের কিছু মান নির্ধারণ করে ডায়াবেটিসের পর্যায় নির্ধারণ করা হয়েছে কিন্তু আপনি ভাববেনা এটাই চূড়ান্ত। কারণ কেউ কেউ ৬ অথবা ৭ তেই খুব অস্বস্থি বোধ করছেন আবার কেউ কেউ ১২/১৩ তেও বছরের পর বছর কোন সমস্যাই বোধ করছেন না। অর্থাৎ ব্যক্তি ভেদে বহু ক্ষেত্রেই ভিন্নতা দেখা যায়।
মেডিক্যালের ভাষায় ডায়াবেটিসের টাইপ
- প্রিডায়াবেটিস Prediabetes
- টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস Type 1 diabetes
- টাইপ টু ডায়াবেটিস Type 2 diabetes
- গর্ভকালীন ডায়াবেটিস Gestational diabetes (GDM)
- Diabetes LADA (Latent Autoimmune Diabetes of Adulthood)
- Diabetes MODY (Maturity Onset Diabetes of the Young)
- Double Diabetes
- Type 3 Diabetes
- Steroid Induced Diabetes
- Brittle Diabetes
তবে আপনাদের চিন্তিত হওয়ার মোটেও কোন কারণ নেই এই জন্যে যে, ডায়াবেটিস এর পরিপোষক কিছু কারন চিহ্নিত করে সেগুলি দূর করার জন্য খাবারের মেন্যু পরিবর্তন করে সব প্রকারের ডায়াবেটিসকেই নির্মূল করা যায় প্রোপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে।
প্রি-ডায়াবেটিস
প্রিডায়াবেটিস অবস্থাটি হল সেই অবস্থা যখন রক্তে শর্করারর মাত্রা বেড়ে যায়, কিন্তু ততটাও বাড়ে না যাকে পুরোপুরি ডায়াবেটিস বলা যায়। যদিও শর্করার এই মাত্রাটির ফলেও আক্রান্তের শরীরে বেশ কিছু অনভিপ্রেত লক্ষণ দেখা যায়। প্রিডায়াবেটিস অবস্থাটির যদি চিকিৎসা না করানো হয়, তাহলে অচিরেই এই অবস্থাটি টাইপ টু ডায়াবেটিসে উত্তীর্ণ হয়। প্রিডায়াবেটিস অবস্থার কিছু অতি সাধারণ লক্ষণ হল -
- অত্যধিক ক্ষুধা (Constant hunger)
- অত্যধিক তৃষ্ণা (Excessive thirst)
- ওজন বেড়ে যাওয়া (Weight gain)
- ঘন ঘন মূত্রত্যাগ (Frequent urination)
- ঝাপসা দৃষ্টি (Blurred vision) ইত্যাদি
টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস
এ ধরনের ডায়বেটিসের ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তখন রক্তের প্রবাহে গ্লুকোজ জমা হতে শুরু করে। বিজ্ঞানীরা এখনও বের করতে পারেন নি কী কারণে এমনটা ঘটে। তবে তারা বিশ্বাস করেন যে এর পেছনে জিনগত কারণ থাকতে পারে। এছাড়া ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণে অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলো নষ্ট হয়ে গেলেও এমন হতে পারে বলে মনে করা হয়। ডায়বেটিস আক্রান্তদের মধ্যে সারা বিশ্বে ১০ শতাংশ এই টাইপ ওয়ানে আক্রান্ত। এই ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণতঃ ৪০ বছর বয়সের আগে দেখা দেয়। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসকে একসময় জুভেনাইল ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন-ডিপেন্ডডেন্ট ডায়াবেটিস বলা হত।
জিনগত কারন বা অন্য যে কারণেই ডায়াবেটিসের সমস্যা তৈরী হোক না কেন তার প্রোপার ট্রিটমেন্ট রয়েছে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস সাধারণ ভাবে শৈশব বা বয়ঃসন্ধিকালে দেখা গেলেও প্রাপ্তবয়স্কদেরও টাইপ ১ ডায়াবেটিস হয়। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা দেয় -
এই অবস্থা শিশু এবং মায়ের জন্য একটি মারাত্বক রিস্ক ফ্যাক্টর। পরবর্তি সময়ে সেই শিশুর ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডায়াবেটিসের এটাও একটা রিস্ক ফ্যাক্টর। যার কারনে ডায়াবেটিস রোগে ভুগতে পারে। জীবনের কোন এক পর্যায়ে এই ধরনের সমস্যায় মা ও শিশু উভয়ই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। বাচ্চা প্রসবের পর থেকে এই ধরনের সমস্যা যদিও থাকে না।
আপনি হয়ত দেখে থাকবেন, বিভিন্ন রাসায়নিক ঔষধ খেয়ে খেয়ে রোগ জটিলতা দিন দিন বেড়ে চলেছে ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষদের। তাই যারা এই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত আছেন তারা অবিলম্বে এই সকল রাসায়নিক ঔষধ খাওয়া বন্ধ না করলে সামনের দিকে আরো জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। এখন হয়তো প্রশ্ন আসবে তাহলে কিভাবে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাবেন?
এ ধরনের ডায়বেটিসের ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। তখন রক্তের প্রবাহে গ্লুকোজ জমা হতে শুরু করে। বিজ্ঞানীরা এখনও বের করতে পারেন নি কী কারণে এমনটা ঘটে। তবে তারা বিশ্বাস করেন যে এর পেছনে জিনগত কারণ থাকতে পারে। এছাড়া ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণে অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলো নষ্ট হয়ে গেলেও এমন হতে পারে বলে মনে করা হয়। ডায়বেটিস আক্রান্তদের মধ্যে সারা বিশ্বে ১০ শতাংশ এই টাইপ ওয়ানে আক্রান্ত। এই ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণতঃ ৪০ বছর বয়সের আগে দেখা দেয়। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিসকে একসময় জুভেনাইল ডায়াবেটিস বা ইনসুলিন-ডিপেন্ডডেন্ট ডায়াবেটিস বলা হত।
জিনগত কারন বা অন্য যে কারণেই ডায়াবেটিসের সমস্যা তৈরী হোক না কেন তার প্রোপার ট্রিটমেন্ট রয়েছে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা বিজ্ঞানে। টাইপ ওয়ান ডায়াবেটিস সাধারণ ভাবে শৈশব বা বয়ঃসন্ধিকালে দেখা গেলেও প্রাপ্তবয়স্কদেরও টাইপ ১ ডায়াবেটিস হয়। টাইপ ১ ডায়াবেটিসে নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা দেয় -
- অস্বাভাবিক ভাবে পিপাসা বেড়ে যায় এবং মুখ শুকিয়ে যায় (Abnormal thirst and dry mouth)
- হটাৎ করে অস্বাভাবিক ভাবে ওজন কমে যায় (Sudden weight loss)
- বার বার প্রস্রাব করা (Frequent urination)
- অতিরিক্ত ক্ষুধা লাগা (Constant hunger)
- ছোটদের ক্ষেত্রে হঠাৎ করে বিছানা ভেজানো শুরু হওয়া (Bed wetting)
- ক্লান্তি এবং দুর্বলতা অনুভব করা (Lack of energy, tiredness)
- দৃষ্টিশক্তিতে অসচ্ছতা (Blurred vision)
টাইপ টু ডায়াবেটিস
এই ধরনের ডায়াবেটিসের আক্রান্তদের ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয়ে যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না অথবা এই হরমোনটি ঠিক মতো কাজ করে না। ঠিক কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটে তা আজও স্পষ্ট ভাবে অজানা। তবে বংশগতি এবং কিছু পরিবেশগত শর্ত যেমন, স্থুলতা ও সক্রিয়তার অভাব অর্থাৎ দৈনন্দিন স্বাস্থ বিধি পালন না করে জীবনযাপন করার ফলে টাইপ টু ডায়াবেটিস জেগে উঠতে পারে।
এই ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণত ৪০ বছরের বেশি বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা দেয়, যদিও এটা ৪০ বছর বয়সের আগেও হতে পারে। বোঝার সুবিধার জন্য টাইপ ২ ডায়াবেটিসকে প্রাপ্তবয়স্ককালীন ডায়াবেটিস বলা হয় কারণ মূলত বয়স্ক লোকেরাই এই রোগে আক্রান্ত হন। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্যি যে আজকাল বহু শিশু এই রোগের শিকার। সম্ভবত শৈশবকালীন স্থুলতা শিশুদের মধ্যে এই রোগ হওয়ার বড় কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
টাইপ ২ ডায়াবেটিসে লক্ষণ ধীরে ধীরে বাড়ে। এমনও হতে পারে বছরের পরে বছর ধরে এই রোগে আক্রান্ত হয়েও অনেকে বুঝতেই পারেন না যে তাঁর এই রোগ হয়েছে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা দেয় -
গর্ভাস্থায় যখন কোন মায়ের সুগারের লেভেল বেশি থাকে তাকে গর্ভাস্থায় ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes) বলে থাকে। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন হরমোনের প্রভাবে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গর্ভাবস্থায় প্রথমবারের মতো ডায়াবেটিস ধরা পড়লে তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বা জি ডি এম) বলা হয়। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস মা ও শিশু দু'জনেরই ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এই ঝুঁকি প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন সঠিক সময়ে ডায়াবেটিস নির্ণয় ও এর চিকিৎসা।
গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতেই ঝুঁকিপূর্ণ সকল গর্ভবতী মহিলার ডায়াবেটিস শনাক্তকারী পরীক্ষা OGTT-Oral Glucose Tolerance Test করে ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে হয়। এই পরীক্ষায় খালি পেটে ও ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার ২ঘণ্টা পর রক্তের সুগার পরীক্ষা করা হয়। প্রথম সাক্ষাতে এই পরীক্ষা স্বাভাবিক থাকলে গর্ভকালীন ২৪-২৮ সপ্তাহে আবার একই ভাবে পরীক্ষা করে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আছে কিনা নিশ্চিত হতে হবে।
এই ধরনের ডায়াবেটিসের আক্রান্তদের ক্ষেত্রে অগ্ন্যাশয়ে যথেষ্ট ইনসুলিন উৎপন্ন হয় না অথবা এই হরমোনটি ঠিক মতো কাজ করে না। ঠিক কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটে তা আজও স্পষ্ট ভাবে অজানা। তবে বংশগতি এবং কিছু পরিবেশগত শর্ত যেমন, স্থুলতা ও সক্রিয়তার অভাব অর্থাৎ দৈনন্দিন স্বাস্থ বিধি পালন না করে জীবনযাপন করার ফলে টাইপ টু ডায়াবেটিস জেগে উঠতে পারে।
এই ধরনের ডায়াবেটিস সাধারণত ৪০ বছরের বেশি বয়সের ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা দেয়, যদিও এটা ৪০ বছর বয়সের আগেও হতে পারে। বোঝার সুবিধার জন্য টাইপ ২ ডায়াবেটিসকে প্রাপ্তবয়স্ককালীন ডায়াবেটিস বলা হয় কারণ মূলত বয়স্ক লোকেরাই এই রোগে আক্রান্ত হন। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও এটা সত্যি যে আজকাল বহু শিশু এই রোগের শিকার। সম্ভবত শৈশবকালীন স্থুলতা শিশুদের মধ্যে এই রোগ হওয়ার বড় কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
টাইপ ২ ডায়াবেটিসে লক্ষণ ধীরে ধীরে বাড়ে। এমনও হতে পারে বছরের পরে বছর ধরে এই রোগে আক্রান্ত হয়েও অনেকে বুঝতেই পারেন না যে তাঁর এই রোগ হয়েছে। টাইপ ২ ডায়াবেটিসে নিম্নলিখিত লক্ষণ দেখা দেয় -
- পিপাসা তীব্রভাবে বেড়ে যায় (Excessive thirst and dry mouth)
- বার বার প্রস্রাব করা (Frequent urination)
- ক্লান্তি এবং দুর্বলতা অনুভব করা (Lack of energy, tiredness)
- ক্ষত সারতে সাময় লাগা (Slow healing wounds)
- বার বার ত্বকে সংক্রমণ হওয়া (Recurrent infections in the skin)
- দৃষ্টিশক্তিতে অসচ্ছতা (Blurred vision)
- হাত অথবা পায়ে অসাড়তা (Tingling or numbness in hands and feet)
গর্ভাস্থায় যখন কোন মায়ের সুগারের লেভেল বেশি থাকে তাকে গর্ভাস্থায় ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes) বলে থাকে। গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন হরমোনের প্রভাবে ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা হ্রাস পাওয়ায় রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। গর্ভাবস্থায় প্রথমবারের মতো ডায়াবেটিস ধরা পড়লে তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (জেস্টেশনাল ডায়াবেটিস বা জি ডি এম) বলা হয়। গর্ভকালীন ডায়াবেটিস মা ও শিশু দু'জনেরই ঝুঁকি বৃদ্ধি করে। এই ঝুঁকি প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজন সঠিক সময়ে ডায়াবেটিস নির্ণয় ও এর চিকিৎসা।
গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাতেই ঝুঁকিপূর্ণ সকল গর্ভবতী মহিলার ডায়াবেটিস শনাক্তকারী পরীক্ষা OGTT-Oral Glucose Tolerance Test করে ডায়াবেটিস শনাক্ত করতে হয়। এই পরীক্ষায় খালি পেটে ও ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ খাওয়ার ২ঘণ্টা পর রক্তের সুগার পরীক্ষা করা হয়। প্রথম সাক্ষাতে এই পরীক্ষা স্বাভাবিক থাকলে গর্ভকালীন ২৪-২৮ সপ্তাহে আবার একই ভাবে পরীক্ষা করে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আছে কিনা নিশ্চিত হতে হবে।
এই অবস্থা শিশু এবং মায়ের জন্য একটি মারাত্বক রিস্ক ফ্যাক্টর। পরবর্তি সময়ে সেই শিশুর ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। ডায়াবেটিসের এটাও একটা রিস্ক ফ্যাক্টর। যার কারনে ডায়াবেটিস রোগে ভুগতে পারে। জীবনের কোন এক পর্যায়ে এই ধরনের সমস্যায় মা ও শিশু উভয়ই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারে। বাচ্চা প্রসবের পর থেকে এই ধরনের সমস্যা যদিও থাকে না।
ডায়াবেটিস এর ঝুঁকি
- রক্তে চিনির পরিমাণ বেশি হলে রক্তনালীর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।
- শরীরে যদি রক্ত ঠিক মতো প্রবাহিত হতে না পারে, যেসব জায়গায় রক্তের প্রয়োজন সেখানে যদি এই রক্ত পৌঁছাতে না পারে, তখন স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
- এর ফলে মানুষ দৃষ্টি শক্তি হারাতে পারে।
- ইনফেকশন হতে পারে পায়ে।
- বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, অন্ধত্ব, কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়া, হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক ইত্যাদির পেছনে একটি বড় কারণ ডায়াবেটিস।
যেসব কারণে রক্তে সুগারের পরিমাণ বাড়তে পারে
- সাধারণ সর্দি, ফ্লু বা অন্য কোনও ভাইরাস-যেমন করোনা ভাইরাস (COVID-19)
- পেট খারাপ
- গলা ব্যথা
- মূত্রনালির সংক্রমণ
- বুকের সংক্রমণ
- ফোড়া
- হাড় ভাঙা
- অন্য অবস্থার জন্য স্টেরয়েড ট্যাবলেট বা ইঞ্জেকশন গ্রহণ
- যেসব নারীর পলিসিসটিক ওভারিয়ান সিনড্রম আছে তাদের টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
ডায়াবেটিসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজ উপায়
হয়তো মেডিক্যাল মাফিয়ারা আপনাকে এতদিন তাদের মিডিয়ার মাধ্যমে বুঝিয়ে আসছে ডায়াবেটিস ভালো হয় না, এটি ঔষধ খেয়ে খেয়ে নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। মিডিয়া সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে থাকায় তাদের একচেটিয়া প্রচারে মানুষ জানতোই না যে - ডায়াবেটিস একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা ছাড়া আর কিছুই নয়। আজ মিডিয়া সকলের হাতের লাগালে থাকায় মানুষ সত্যটা জানতে পারছে এবং যাচাই করতে পারছে। প্রোপার হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে তারা এই রোগ থেকে মুক্তি পাচ্ছে ৪/৬ মাসের মধ্যেই।আপনি হয়ত দেখে থাকবেন, বিভিন্ন রাসায়নিক ঔষধ খেয়ে খেয়ে রোগ জটিলতা দিন দিন বেড়ে চলেছে ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষদের। তাই যারা এই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত আছেন তারা অবিলম্বে এই সকল রাসায়নিক ঔষধ খাওয়া বন্ধ না করলে সামনের দিকে আরো জটিল রোগে আক্রান্ত হওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র। এখন হয়তো প্রশ্ন আসবে তাহলে কিভাবে ডায়াবেটিস থেকে মুক্তি পাবেন?
আপনার চিন্তা করার আদৌ কোন কারণ নেই। ৪/৬ মাসের মধ্যেই আপনি একটি ম্যাজিক রেজাল্ট পেয়ে যাবেন শুধুমাত্র রিয়েল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা আর খাবারের মেন্যু পরিবর্তন করার মাধ্যমেই। পরবর্তী পর্বেই এই সম্পর্কে বিস্তারিত দিক নির্দেশনা থাকছে যেগুলি আপনি ঘরে বসেই অনুসরণ করে নিজেই নিজের ডায়াবেটিস সারাতে পারবেন ইনশা-আল্লাহ। প্রাকৃতিক ভাবে ডায়াবেটিস নির্মূলের জন্য থাকছে ম্যাজিক থেরাপি। যদিও একেক জনের রোগ জটিলতা একেক রকম থাকে তারপরও প্রায় ৭০% ডায়াবেটিস রোগীরাই আমার ফর্মূলা অনুসরণ করলে কোন প্রকার ঔষধ ছাড়াই ডায়াবেটিস থেকে সেরে উঠবেন ইনশা-আল্লাহ। তাছাড়া যাদের রোগ জটিলতা বেশি অর্থাৎ চিকিৎসার প্রয়োজন, ম্যানেজমেন্টের শুরু থেকেই তাঁরা রেজাল্ট পেতে শুরু করবেন।
যারা দীর্ঘদিন যাবৎ ইনসুলিন নিচ্ছেন এবং সাথে আরো দুরারোগ্য জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে দুর্বিসহ জীবন যাপন করছেন, তাদের জন্য রয়েছে অল্প সময়ে ইনসুলিন ফ্রি হওয়ার হোমিওপ্যাথিক ম্যাজিক ট্রিটমেন্ট।এ ক্ষেত্রে মূলত রোগীর সার্বদৈহিক অবস্থা এবং ফ্যামিলি হিস্ট্রি নিয়ে একক মাত্রায় ডায়নামিক হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগ করা হয় যা রোগীর ভাইটাল ফোর্সকে অতি দ্রুত দুর্বল অবস্থা থেকে শক্তিশালী অবস্থায় নিয়ে যায়। তখন রোগী কল্পনাতীত ভাবে শারীরিক এবং মানুষিকভাবে সুস্থ বোধ করতে থাকেন।
যে বিষয়গুলি আপনি জেনেছেন -
- ডায়াবেটিস মাত্রা
- ডায়াবেটিস কমানোর উপায়
- ডায়াবেটিস কত হলে বিপদ
- ডায়াবেটিস সারানোর উপায়
- ডায়াবেটিস কত হলে ইনসুলিন নিতে হয়
- ডায়াবেটিস পরীক্ষার নিয়ম
- ভরা পেটে ডায়াবেটিস নরমাল কত পয়েন্ট
- ডায়াবেটিস সারানোর উপায়
- ডায়াবেটিস মাপার নিয়ম
- প্রি ডায়াবেটিস এর লক্ষন
- ডায়াবেটিস এর পয়েন্ট কত
- ডায়াবেটিসের লক্ষণ সমূহ
- ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
- ডায়াবেটিস নরমাল কত পয়েন্ট
- ডায়াবেটিস রোগীর খাবার
- ডায়াবেটিস প্রতিরোধের উপায়
- ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ
- ডায়াবেটিস কত হলে নরমাল
- ডায়াবেটিস কমে যাওয়ার লক্ষণ
- ডায়াবেটিস নরমাল কত পয়েন্ট
- টাইপ ২ ডায়াবেটিসের লক্ষণ
ডাঃ দেলোয়ার জাহান ইমরান
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক (রেজিঃ নং-৩৩৪৪২)
ডিএইচএমএস (বিএইচএমসি এন্ড হসপিটাল), ডিএমএস; ঢাকা
যোগাযোগঃ নিউটাউন হোমিও হল, নিউটাউন কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন, সাইনবোর্ড, ডেমরা, ঢাকা
Phone: +88 01671-760874; 01977-602004 (শুধু এপয়েন্টমেন্টের জন্য)
About Me: Profile ➤ Facebook ➤ YouTube ➤
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক (রেজিঃ নং-৩৩৪৪২)
ডিএইচএমএস (বিএইচএমসি এন্ড হসপিটাল), ডিএমএস; ঢাকা
যোগাযোগঃ নিউটাউন হোমিও হল, নিউটাউন কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন, সাইনবোর্ড, ডেমরা, ঢাকা
Phone: +88 01671-760874; 01977-602004 (শুধু এপয়েন্টমেন্টের জন্য)
About Me: Profile ➤ Facebook ➤ YouTube ➤