Dr. Imran ডাঃ দেলোয়ার জাহান ইমরান ➤ রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক(রেজিঃ নং-৩৩৪৪২)
➤ ডিএইচএমএস (বিএইচএমসি এন্ড হসপিটাল), ডিএমএস; ঢাকা
➤ বিশেষত্বঃ প্যানক্রিয়াটাইটিস, আইবিএস, আইবিডি, অর্কাইটিস, ভেরিকোসিল...
➤ নিউটাউন হোমিও হল, নিউটাউন কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন, সাইনবোর্ড, ডেমরা, ঢাকা
➤ ফোন : +৮৮ ০১৬৭১-৭৬০৮৭৪ এবং ০১৯৭৭-৬০২০০৪
➤ সাক্ষাৎ : সকাল ১১ টা থেকে বিকাল ৩ টা (শুক্রবার বন্ধ)
➤ শুধু এপয়েন্টমেন্টের জন্য ফোনে যোগাযোগ করুন। ধন্যবাদ
➤ প্রোফাইল ➤ ফেইসবুক ➤ ইউটিউব

প্যানক্রিয়াটাইটিস

অ্যাকিউট ও ক্রনিক প্যানক্রিয়াটাইটিস এর কার্যকর চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি

ক্যান্সার

ক্যান্সার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি স্রষ্টার এক আর্শীবাদ

আইবিএস

পেটের পীড়া আইবিএস নির্মূলের স্থায়ী চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি

আইবিডি

আলসারেটিভ কোলাইটিস ও ক্রনস ডিজিজ এর কার্যকর চিকিৎসা

ভেরিকোসিল

ভেরিকোসিলের অপারেশনবিহীন কার্যকর চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি

মলদ্বারের রোগ

পাইলস, এনাল ফিশার এবং ফিস্টুলা সমস্যায় হোমিওপ্যাথি

পুরুষের স্বাস্থ্য

পুরুষদের বিভিন্ন রোগের কার্যকর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

নারী স্বাস্থ্য

নারীদের বিভিন্ন রোগের কার্যকর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

নারী স্বাস্থ্য স্ত্রীরোগ
নারীদের অর্থাৎ স্ত্রীরোগ সম্পর্কিত বিষয়াবলী
মা ও শিশু স্বাস্থ্য
মা ও শিশু স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়াবলী
পুরুষদের স্বাস্থ্য
পুরুষদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিষয়াবলী
রোগ-ব্যাধি অসুখবিসুখ
নানা প্রকার রোগ-ব্যাধি সম্পর্কিত বিষয়াবলী
স্বাস্থ্য বিষয়ক টিপস
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত যাবতীয় টিপস ও ট্রিকস

সাম্প্রতিক আপডেট

সোমবার, ১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

মলদ্বারের অর্শ্ব বা গেজ রোগে কার্যকরী হোমিওপ্যাথিক পাইলস ড্রপস

হোমিওপ্যাথিক পাইলস ড্রপস কার্যকর সেসকল রোগীদের জন্য যাদের অর্শ্ব রোগের ফলে মলদ্বারে ব্যথা, জ্বালা, ফোলা, পায়ুপথে রক্ত যাওয়ার মতো জটিলতাগুলি রয়েছে। পাকস্থলীর জটিল রোগগুলোর মধ্যে পাইলস অন্যতম। যখন পায়ুপথে এসব শিরার সংক্রমণ এবং প্রদাহ হয়, চাপ পড়ে তখন হেমোরয়েডস বা পাইলসে প্রদাহ হয়। যাকে সাধারণ ভাষায় অর্শরোগ বলা হয়।

পাইলসের প্রধান কারণগুলো হচ্ছে দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিণ্যে ভোগা, পুরনো ডায়রিয়া, মলত্যাগে দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে বসে থাকা ও দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা। এছাড়া পারিবারিক ইতিহাস, আঁশযুক্ত খাবার কম খাওয়া, ভারি মালপত্র বহন করা, স্থুলতা, কায়িক শ্রম কম করা। গর্ভকালীন সময়ে, পায়ুপথে যৌনক্রিয়া, যকৃত রোগ বা লিভার সিরোসিস ইত্যাদি কারণে রোগের আশংকা বেড়ে যায়। সর্বোপরি পোর্টাল ভেনাস সিস্টেমে কোনো ভাল্ব না থাকায় উপরিউক্ত যে কোনো কারণে পায়ু অঞ্চলে শিরাগুলোতে চাপ ফলে পাইলস সৃষ্টি হয়।
অর্শ্ব রোগে কার্যকরী হোমিওপ্যাথিক পাইলস ড্রপস

পাইলস হলে কি সমস্যা হয়

  • মলদ্বারে ফুলা ও ব্যথা
  • মলদ্বারে চুলকানি
  • মলদ্বার দিয়ে রক্ত যাওয়া
  • পায়খানার সঙ্গে টকটকে লাল রক্ত দেখা যায়
  • মলত্যাগের সময় মলদ্বার নিচের দিকে নেমে যাওয়া 

হোমিওপ্যাথিক পাইলস ড্রপস

এই সমস্যায় নিকটস্থ অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা নিন। এছাড়াও মলদ্বারের অর্শ্ব বা গেজ রোগে কার্যকরী হোমিওপ্যাথিক পাইলস ড্রপস ব্যবহারেও আপনি উপকার পেতে পারেন। 
এটি মূলত অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের দীর্ঘ চিকিৎসা জীবনের  অভিজ্ঞতা লব্ধ ফলাফল। যার মাধ্যমে আপনি পাইলস রোগের জটিল উপসর্গ বা কষ্টগুলি থেকে ধীরে ধীরে মুক্তি লাভ করতে পারেন। 
এর মূলত কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। কিছুটা সময় ধরে এই ড্রপস খেয়ে গেলে পাইলস এর জটিল উপসর্গ গুলি যেমন মলদ্বারে ব্যথা, জ্বালা, ফোলা, পায়ুপথে রক্ত যাওয়ার মতো জটিলতাগুলি ধীরে ধীরে দূর হতে থাকে এবং এক সময় রোগী পূর্ণ সুস্থতা লাভ করে থাকেন।
বিস্তারিত

রবিবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

দাম্পত্য স্বাস্থ্যের জন্য শক্তিকৃত হোমিওপ্যাথিক মেইল ড্রপস

হোমিওপ্যাথিক মেইল ড্রপস কাযর্কর সে সকল পুরুষ ভাইদের জন্য যারা এই নাগরিক জীবনে মানসিক চাপ, যৌন আধিক্য, ক্লান্তি এবং অন্যান্য মানসিক কারণে যৌন শক্তি হারিয়েছেন। যার ফলে পুরুষত্বহীনতা বা ইরেক্টাইল ক্ষমতা কমে গেছে, কামনা বা যৌন ইচ্ছা ও ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে, টাইমিং এ সমস্যা অর্থাৎ অকাল বীর্যপাতের মতো সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।  
এটি মূলত অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকদের দীর্ঘ চিকিৎসা জীবনের  অভিজ্ঞতা লব্ধ ফলাফল। যার মাধ্যমে  উপকৃত হচ্ছেন হাজার হাজার পুরুষ ভাইয়েরা। যার নেই কোন পার্শপ্রিতিক্রিয়া এবং যা জল খাবারের মতো সব সময়ই ব্যবহার করা যায়। পুরুষদের দাম্পত্য স্বাস্থ্যে এটি একটি সম্পূরক ও ফলপ্রদ পুষ্টি উপাদান হিসেবে কাজ করে। 
এই  শক্তিকৃত হোমিওপ্যাথিক মেইল ড্রপস পুরুষ ভাইদের যৌন কর্মক্ষমতা বাড়াতে, স্ট্যামিনা বাড়াতে এবং কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই সামগ্রিক জীবনীশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। 

হোমিওপ্যাথিক মেইল ড্রপস যে যে ক্ষেত্রে উপকারী

  • জীবনী শক্তির অভাব 
  • শারীরিক ও মানুষিক দুর্বলতা 
  • ধাতু দুর্বল্য 
  • যৌন দুর্বলতা 
  • পুরুষাঙ্গের শিথীলতা 
  • দ্রুত বীর্যপাত সমস্যা 
  • পুরুষের সামগ্রিক শারীরিক দুর্বলতা
  • কোন রোগের ক্ষতিকর প্রভাব ও কুফল 
  • হস্ত মৈথুনের অথবা ইন্দ্রিয়ের অতিরিক্ত ব্যবহারের কুফল 
  • অতিরিক্ত উত্তেজনা ও স্নায়বিক অবসাদ 
  • বৃদ্ধ বয়সের বিভিন্ন ধরনের অসুস্থতা
জেনে হয়তো কিছুটা আশ্চর্য হবেন যে, সব বিষয়গুলি ঘটবে ব্যক্তির ভাইটাল ফোর্সের সামর্থকে কেন্দ্র করে। অনেকই উপলোগধী করবেন তার দেহ মনে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসছে। কেউ কেউ কিছু দিনের মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন পেয়ে বাকি সময়ে ধীর গতির পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন। একেক জনের ক্ষেত্রে একেক ভাবে শক্তিকৃত হোমিওপ্যাথিক মেইল ড্রপস এর কার্যকারিতা প্রকাশ পেয়ে থাকে। 

যৌন দুর্বলতার জন্য শক্তিকৃত হোমিওপ্যাথিক মেইল ড্রপস

মনে রাখা ভালো, অনেকেই আছেন দীর্ঘ দিন যাবৎ নানা রোগে ভুগছেন এবং প্রতিনিয়ত কোন না কোন এলোপ্যাথিক ঔষধ খেয়ে যাচ্ছেন। একই সাথে যৌন সমস্যায়ও ভুগছেন। সে অবস্থায় পূর্ণাঙ্গ কেইস টেকিং করে তাদের চিকিৎসা শুরু করতে হয়। তারপরও হোমিওপ্যাথিক মেইল ড্রপস অনেক ভাইদের ক্ষেত্রেই ভালো ফলাফল দিচ্ছে। তবে একই সাথে সকল ধরণের শারীরিক ও মানুষিক জটিলতার জন্য অভিজ্ঞ এবং রেজিস্টার্ড একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা নিন।
বিস্তারিত

মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

হাই প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপের হোমিওপ্যাথিক প্রতিকার

হাই প্রেশার বা হাইপারটেনশন বা উচ্চ রক্তচাপের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা খুবই কার্যকর এবং পার্শপ্রিতিক্রিয়াবিহীন। যেখানে এলোপ্যাথিক পার্শপ্রিতিক্রিয়াযুক্ত ঔষধ সারা জীবন ধরে খেয়ে যেতে হয় সেখানে প্রাথমিক অবস্থায় প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দিলে বহু রোগীরাই ঠিক হয়ে উঠছেন। তবে জটিল ক্ষেত্রে একটি মাত্র হোমিওপ্যাথিক ঔষধ দিন একবার করে নিয়মিত খেয়ে গেলেও ভালো থাকছেন সবাই। হোমিওপ্যাথিতে এই সমস্যার যেমন ভালো ও কার্যকর ঔষধ রয়েছে তেমনি অনেক অভিজ্ঞ চিকিৎসকও রয়েছে।

উচ্চ রক্তচাপ কী

এবার আসুন হাইপারটেনশন সম্পর্কে কিছুটা জেনে নেই। হৃৎপিণ্ডের ধমনীতে রক্ত প্রবাহের চাপ অনেক বেশি থাকলে সেটিকে উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেশার বলা হয়ে থাকে। দু'টি মানের মাধ্যমে এই রক্তচাপ রেকর্ড করা হয় - যেটার সংখ্যা বেশি সেটাকে বলা হয় সিস্টোলিক প্রেশার, আর যেটার সংখ্যা কম সেটা ডায়াস্টলিক প্রেশার।

প্রতিটি হৃৎস্পন্দন অর্থাৎ হৃদপিণ্ডের সংকোচন ও সম্প্রসারণের সময় একবার সিস্টোলিক প্রেশার এবং একবার ডায়াস্টলিক প্রেশার হয়।
  • একজন প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের রক্তচাপ থাকে সিস্টোলিক ১২০ এবং ডায়াস্টোলিক ৮০ মিলিমিটার মার্কারি।
  • কারও ব্লাড প্রেশার রিডিং যদি সিস্টোলিক ১৪০ এবং ডায়াস্টোলিক ৯০ বা এর চেয়েও বেশি হয়, তখন বুঝতে হবে তার উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা আছে।
  • অন্যদিকে রক্তচাপ যদি সিস্টোলিক ৯০ এবং ডায়াস্টোলিক ৬০ বা এর আশেপাশে থাকে, তাহলে তাকে লো ব্লাড প্রেশার হিসেবে ধরা হয়।
  • যদিও বয়স নির্বিশেষে রক্তচাপ খানিকটা বেশি বা কম হতে পারে।
হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের হোমিওপ্যাথিক প্রতিকার

উচ্চ রক্তচাপের কারণ

উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার পেছনে যে কারণগুলিকে সাধারণত দায়ী করা হয়ে থাকে সেগুলি হলঃ 
  • বেশি লবণ গ্রহণ
  • অতিরিক্ত মেদ বা মাত্রাতিরিক্ত ওজন
  • কাজের চাপ বা স্ট্রেস
  • ধূমপান ও মদ্যপান করা 
  • অতিরিক্ত সোডিয়াম গ্রহণ
  • অতিরিক্ত চা-কফি, কোমল পানীয় পান করা 
  • পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম না করা
  • নিদ্রাহীনতা
  • বয়স ৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে হওয়া
  • নিকট আত্মীয়দের হাই ব্লাড প্রেশার থাকা
উচ্চরক্তচাপ সর্বাপেক্ষা সাধারণ জটিল উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত অসুস্থতার একটি। এখন পর্যন্ত ৫০ টির অধিক জিনকে চিহ্নিত করা হয়েছে উচ্চ রক্তচাপের গবেষণার জন্য এবং এই সংখ্যা দিনে দিনে বেড়ে চলেছে

এক সময় ধরে নেয়া হত কেবল বয়স্ক মানুষ অর্থাৎ ৪০ বছরের বেশি হলেই কারো উচ্চ রক্তচাপের আশঙ্কা তৈরি হয়। কিন্তু এখন চিকিৎসকেরা বলছেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অল্পবয়সীদের মধ্যেও এ রোগ দেখা যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় শঙ্কার ব্যাপার হচ্ছে, বেশিরভাগ মানুষ নিজেরাই জানেন না যে তারা  উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশনে ভুগছেন।

তবে যাদের অল্প বয়সে উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত হয়, তাদের রক্তচাপ বেশি থাকার কিছু কারণ দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছেঃ কিডনি সমস্যা, রক্তনালী সরু হয়ে গেছে, হরমোন সমস্যা, থাইরয়েড সমস্যা, পিটুইটারি গ্লান্ডের সমস্যা, মস্তিষ্কে কোন সমস্যা থাকলে, স্টেরয়েড গ্রহণের ধারাবাহিকতা ইত্যাদি। 
অনেকে মনে করেন, কারো অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করার প্রবণতা থাকলে হয়ত সেটিকে হাইপারটেনশন বলে। কেউ মনে করেন কারো উচ্চ রক্তচাপ থাকলে হয়ত উদ্বেগ উৎকণ্ঠার সময় যে বুক ধড়ফড় করে সেটাই হাইপারটেনশন।- এগুলি মূলত ভুল ধারণা 

উচ্চ রক্তচাপের লক্ষণসমূহ

উচ্চ রক্তচাপের একেবারে সুনির্দিষ্ট কোন লক্ষণ সেভাবে প্রকাশ পায় না। তবে সাধারণ কিছু লক্ষণের মধ্যে রয়েছে:
  • প্রচণ্ড মাথা ব্যথা করা
  • মাথা গরম হয়ে যাওয়া
  • মাথা ঘোরানো
  • ঝাপসা দৃষ্টি বা দাগ দেখা
  • ঘাড় ব্যথা করা
  • বুকে ব্যথা বা চাপ
  • অস্বাভাবিক ক্লান্তি
  • বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া
  • মাঝে মাঝে কানে শব্দ হওয়া
  • অল্পতেই রেগে যাওয়া
  • অস্থির হয়ে শরীর কাঁপতে থাকা
  • রাতে ভালো ঘুম না হওয়া
  • নাক দিয়ে রক্ত ​​পড়া
  • অনেক সময় জ্ঞান হারিয়ে ফেলা

উচ্চ রক্তচাপ হলে কী করবেন

জীবনযাপনে পরিবর্তন আনা দরকার এবং কয়েকটি বিষয়ে মনোযোগী হতে হবে-
  • নিয়মিত ব্যায়াম বা কায়িক পরিশ্রম করা
  • ধূমপান ও মদ্যপান পরিহার করা 
  • খাবারে লবণের পরিমাণ কমিয়ে দেয়া 
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ করা
  • মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তা কম করা
  • খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা 

উচ্চ রক্তচাপের হোমিও প্রতিকার

হাই প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপের রোগীদের আশার আলো দেখাচ্ছে হোমিওপ্যাথি। এমন কিছু হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রয়েছে যেগুলি এই সমস্যায় ম্যাজিকের মতো ফল দিয়ে থাকে। মিডিয়ার কল্যানে আজ মানুষজন এই বিষয়গুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারছেন এবং হোমিওপ্যাথিক ঔষধ খেয়ে উপকৃত হচ্ছেন।
বহু চিকিৎসকরা হাই প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপের সমস্যায় ব্যক্তি ভেদে এবং লক্ষণ সাদৃশ্যে কিছু হোমিও ঔষধ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন যেগুলি ব্যবহার করে অনেক রোগীদের ব্লাড প্রেশার স্বাভাবিক রাখা যাচ্ছে অনায়াসেই। যেমনঃ Natrum Mur, Glonoinum, Crataegus, Strophanthus, Passiflora, Veratrum Viride, Rauvolfia Serp, Adrinalin, Zincum met ইত্যাদি। 
সাধারণ অবস্থায় কোনো প্রকার জটিলতা ছাড়াই লক্ষণ সাদৃশ্যে এই রকম কিছু ঔষধ গ্রহণ করেও অনেক রোগীরা উপকৃত হচ্ছেন। এই সমস্ত হোমিওপ্যাথিক ঔষধের এলোপ্যাথির মতো কোন সাইড ইফেক্ট নেই। তবে আপনি যদি চিকিৎসক না হয়ে থাকেন তাহলে নিজ নির্বাচনে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। 

অভিজ্ঞ একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে ঔষধ গ্রহণ করা জরুরি। কারণ এছাড়াও বহু হোমিওপ্যাথিক ঔষধ রয়েছে যা কেইস টেকিং করে প্রয়োগ করলে বেশ ভালো ফল পাওয়া যায়। আসুন রেপার্টরীতে হাই প্রেশার চিকিৎসার জন্য নির্বাচিত কিছু ঔষধ দেখে আসি....
উচ্চ রক্তচাপের হোমিও ঔষধ
ইতিপূর্বে আমি বলেছি উচ্চ রক্তচাপ এর এলোপ্যাথিতে যে চিকিৎসা রয়েছে সেখানে সারাজীবন ধরেই ওষুধ খেয়ে যেতে হয়। যেগুলি বিভিন্ন পার্শপ্রিতিক্রিয়া তৈরী করে। কিন্তু আপনি হয়তো জেনে থাকবেন, যখনই কারো উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা তৈরি হয় তার পিছনে কোন না কোন কারণ বিদ্যমান থাকে। সঠিক কারণটির নির্ণয় করে প্রথম অবস্থায় যদি এই ধরনের রোগীদের প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার তত্ত্বাবধানে নিয়ে আসা যায় তাহলে তখনই তারা সুস্থ হয়ে ওঠেন। 

কিন্তু দেখা যায়, যারা হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিতে আসেন তারা মূলত দীর্ঘদিন যাবত এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নিতে নিতে ক্লান্ত হয়ে পড়েন এবং দীর্ঘদিন যাবৎ এলোপ্যাথিক ওষুধ খাওয়ার কারণে তাদের শরীরে বিভিন্ন রোগ জটিলতা জেগে উঠে। এক্ষেত্রেও হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রয়োগ করা হলে জটিল রোগীরাও ভালো থাকছেন। সুতরাং আমরা বলতে পারি, উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য হোমিওপ্যাথি স্রষ্টার একটি আশীর্বাদ ছাড়া আর কিছুই নয়।
বিস্তারিত

সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

ক্যান্সার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ও কেমোথেরাপির কার্যকারিতা

ক্যান্সার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ও কেমোথেরাপির কার্যকারীতার প্রশ্ন যদি আসে তাহলে জেনে নিবেন পৃথিবীতে ক্যান্সার নিরাময়ের যত চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে কোনটাই আপনাকে এই গ্যারান্টি দিবে না যে ট্রিটমেন্ট নিলেই আপনি সেরে উঠবেন। ফল দিক বা না দিক, কাজ তেমন করুক বা না করুক রোগটির জন্য চিকিৎসা আছে তাই প্রসিডিউর ফলো করা হয় এর বেশি কিছু নয়। এর মধ্যেই কেউ কেউ সারভাইব করে থাকেন। 

তবে অর্থনৈতিক অবস্থা, ঔষধের মারাত্মক সব পার্শপ্রিতিক্রিয়া, রোগীর শারীরিক অবস্থা ইত্যাদি  সব দিক বিবেচনা করলে ক্যান্সার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি স্রষ্টার এক আর্শীবাদ ছাড়া কিছুই নয়। 

কিছুদিন আগেও বিভিন্ন প্রকারের থেরাপি এবং সার্জারিকেই ক্যান্সার নিরাময়ের প্রধান উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু হোমিওপ্যাথিক ওষুধ প্রয়োগে ক্যান্সার রোগীরা আজ ভালো হওয়াতে অনেক ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীরা এখন আশার আলো দেখছেন। আপনি হয়তো আপনার আশেপাশে দেখে থাকবেন অথবা গুগল সার্চ করেই এর প্রমান পেয়ে যাবেন।
ক্যান্সার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ও কেমোথেরাপি

ক্যান্সার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথির কার্যকারীতা

জেনে রাখা ভালো, যেকোনো প্রকারের ক্যান্সার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় কতটা ফল দিবে তা নির্ভর করে রোগী কোন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং রোগের কোন পর্যায়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিতে আসছেন তার উপর। লিভার ক্যান্সার, ব্রেন টিউমার, প্রস্টেট ক্যান্সার, ইউরিনারি ব্লাডার বা মূত্রথলির ক্যান্সার, অস্ট্রিওসারকোমা, স্কিন ক্যান্সার, মহিলাদের ব্রেস্ট ক্যানসার, জরায়ু বা সার্ভিক্স ক্যান্সারের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সবচেয়ে বেশি ফল দিয়ে থাকে।

তবে মনে রাখা ভালো, যিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে রোগ আদৌ সারবে কিনা। দেখা গেছে, রোগীর ডায়াবেটিস এর মতো সমস্যা থাকলে তার ভাইটাল ফোর্স এমনিতেই দুর্বল থাকে। সেক্ষেত্রে ক্যান্সার রোগ সারানো কঠিন হয়ে পড়ে। তবু এসব ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা যথেষ্ট ভালো কাজ দিচ্ছে।

কখনো কখনো ক্যান্সার লক্ষণবিহীন অবস্থায়ও থাকতে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সার নিজে থেকেই সেরে যায়। ক্যান্সারের প্রথম স্টেজে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শুরু করলে অবশ্যই ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জটিলতর অবস্থা নিয়ে রোগীরা আমাদের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। এক্ষেত্রেও হোমিওপ্যাথি কাজ দেয়। প্রাথমিক স্টেজে কেউ যদি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করেন সেক্ষেত্রে অনেকটাই ভালো ফলাফল লাভ করা সম্ভব।

অন্যান্য রোগের মতো হোমিওপ্যাথিতে ক্যান্সার চিকিৎসাও নির্দিষ্ট কোনো ছকে আবদ্ধ নয়। মনে করবেন না যে, কিছু হোমিওপ্যাথিক ঔষধ খেলেই ক্যান্সারের মতো জটিল সমস্যা নির্মূল হয়ে যাবে।  কারণ হোমিওপ্যাথিতে নির্দিষ্ট রোগের নির্দিষ্ট কোন ঔষধ হয় না। হোমিও চিকিৎসা এলোপ্যাথির মতো নয়। এটি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি পার্শপ্রিতিক্রিয়াহীন যুগান্তকারী চিকিৎসা পদ্ধতি। 

রোগীর ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক হিস্ট্রি, তার ক্যান্সার সম্পর্কিত লক্ষণসমূহ বিবেচনা করে চিকিৎসা করা হয়। মনে রাখা ভালো, একেক জনের একেক রকম কস্টিটিউশন থাকে বিধায় একই কারণে ব্যক্তি ভেদে ক্যান্সারসহ যেকোন রোগের লক্ষণ সমূহ আলাদা হয়ে থাকে। তাই চিকিৎসার জন্য ঔষধও ভিন্ন হবে এটাই স্বাভাবিক। ক্যান্সারের পেছনে শারীরিক বা মানসিক কারণ, পরিবেশগত ও পারিবারিক কারণ ইত্যাদি বিবেচনা করে হোমিওপ্যাথিতে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। কী ধরনের ক্যান্সার, সেটা কীভাবে ছড়াচ্ছে, যন্ত্রণার মাত্রা কিরূপ, এছাড়া রোগীর সার্বদৈহিক লক্ষণসমূহ বিবেচনাপূর্বক পরিপূর্ণ কেইস টেকিং এর মাধ্যমে হোমিওপ্যাথিতে চিকিৎসা শুরু করা হয়।

ক্যান্সার চিকিৎসায় কেমোথেরাপির কার্যকারীতা

কেমোথেরাপি হচ্ছে বিভিন্ন ওষুধের মাধ্যমে শরীরে থাকা ক্যানসারের কোষকে ধ্বংস করা। এক্ষেত্রে ওষুধ ইনজেকশনের মাধ্যমে রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা হয়। অনেক দিন ধরে একটু একটু করে ওষুধ রক্তে মিশে যায়। কেমোথেরাপি নিলে ভয়াবহ রকমের বমির পাশাপাশি শরীরে খিচুনি হয়। ক্ষুধা একেবারে কমে যায়। শরীর প্রচণ্ড রকম দুর্বল এবং মানসিক অবসাদ দেখা দেয়। মাথার চুল এবং চোখের ভ্রু পড়ে যায়।

প্রশ্ন হচ্ছে, ক্যানসার হওয়ার পর কেমোথেরাপি দিলে রোগটি নির্মূলের হার কতখানি? কেমোথেরাপিকে ক্যানসার নিরাময়ের সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বলে মনে করা হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য হলো প্রাণঘাতী ক্যানসারে মানুষ মারা যাওয়ার পেছনে প্রধান দায়ী এই কেমোথেরাপি।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. হার্ডিন বি জোনস ক্যানসার চিকিৎসায় কেমো ও বিভিন্ন থেরাপির ব্যবহার নিয়ে ২৫ বছর ধরে গবেষণা শেষে এমন তথ্য দিয়েছেন। গবেষণায় তিনি উল্লেখ করেন, ক্যান্সার চিকিৎসা এক ধরনের ব্যবসা, যা শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার চেয়েও বেশি লাভজনক। এই ব্যবসায় প্রতিটি ডাক্তার, হাসপাতাল, ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি এবং সংশ্লিষ্ট সবাই জড়িত।

ব্যবসাটা তখনই শুরু হয়, যখন কোনও রোগী মারাত্মক রোগের তথাকথিত চিকিৎসা, যেমন: কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন বা শরীরের কোনও অংশের জটিল চিকিৎসার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। রোগীদের যারা কেমো নিতে আসেন, তারা একটি ভয়ংকর পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যান। কেমো নেওয়া রোগী অন্য যে কোনও চিকিৎসা পদ্ধতির চেয়ে দ্রুত মারা যান এবং অধিক যন্ত্রণা ভোগ করেন। এসব বিষয়গুলো কঠিন গোপনীয়তার মধ্যে করা হয়। কারণ এখানে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা জড়িত।

নিউইয়র্ক একাডেমি অব সায়েন্সে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, কেমোথেরাপি নেননি, এমন রোগী কেমো গ্রহণকারীর চেয়ে সাড়ে ১২ বছর বেশি বাঁচেন। কেমোথেরাপি নেয়ার তিন বছরের মধ্যে রোগী মারা যান। এমনকি কেমোথেরাপি শুরুর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অনেকে মারা যান। স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত নারীরা যারা প্রচলিত বিভিন্ন থেরাপি নেননি তারা অন্যদের চেয়ে চারগুণ বেশি সময় বাঁচেন।

তিনি বলেন, এসব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় না। যাতে করে কেমোথেরাপি ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সবচেয়ে কার্যকর ওষুধ- এরকম মিথ ছড়ানো অব্যাহত থাকে।

১৯৭৯ সালের আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের একটি গবেষণায় দেখা যায়, চিকিৎসায় ব্যবহৃত এখন পর্যন্ত কোনও থেরাপি প্রকৃতপক্ষে ক্যানসারের নিরাময়ে কিংবা মানুষকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকা রাখতে পারেনি।

ক্যানসার নিরাময়ে বিভিন্ন থেরাপির ভূমিকা নিয়ে ১৯৭৮ সালেও দুটি গবেষণা করা হয়েছিল। যার একটি হয়েছিল ইসরায়েলে ও অন্যটি ব্রিটেনে। এই দুই গবেষণায় ক্যানসারের চিকিৎসায় কেমো বা বিভিন্ন থেরাপি তেমন কোনও ভূমিকা রাখতে পারে না বলে তথ্য দেয়া হয়। তথ্য সূত্রঃ আরটিভি অনলাইন

কোথায় কোন পদ্ধতির চিকিৎসা নিবেন?

কে কোথায় চিকিৎসা নিবেন সেটা মূলত ব্যক্তির পছন্দের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। তাই ক্যান্সারের চিকিৎসা আপনি কোথায় করবেন সেটাও আপনার নিজেরই পছন্দ। পূর্বেই বলেছি পৃথিবীতে যত প্রকার চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে অর্থাৎ আপনি যে চিকিৎসা পদ্ধতিতেই ক্যান্সারের চিকিৎসা নেন না কেন অথবা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা নেন না কেন কেউ কিন্তু আপনাকে এই গ্যারান্টি দেবে না যে, চিকিৎসা নিলেই ভালো হয়ে যাবেন। 

বিভিন্ন চিকিৎসা ব্যবস্থায় ক্যান্সারের চিকিৎসা বিভিন্ন ভাবে করা হয়ে থাকে। কিছু কিছু চিকিৎসা পদ্ধতিতে আপনার খরচ অনেক বেশি পড়বে, একই সাথে জটিল পার্শপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। আবার কোন কোন চিকিৎসা পদ্ধতিতে খরচ কম পড়বে এবং তেমন কোন পার্শপ্রতিক্রিয়ার সম্ভবনাও নেই। যেমন ধরুন, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে যদি আপনি ক্যান্সারের চিকিৎসা নেন সেক্ষেত্রে কেমোথেরাপির মতো খরচ এবং জটিল কোনো পার্শপ্রতিক্রিয়ার সম্ভবনা নেই।

সব দিক বিবেচনা করলে হোমিওপ্যাথি ক্যান্সার চিকিৎসায় স্রষ্টার আর্শীবাদ ছাড়া কিছুই নয়। তবে এক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড এবং অভিজ্ঞ কোনো হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা নিন।
বিস্তারিত

শুক্রবার, ১০ মে, ২০২৪

মানব দেহে ফ্রি-রেডিক্যাল নিষ্ক্রিয় করতে এন্টি অক্সিডেন্টযুক্ত সুপারফুড কাদের জন্য উপকারী

ফ্রি-রেডিক্যাল নিষ্ক্রিয় করতে এন্টি অক্সিডেন্টযুক্ত যে সকল সুপারফুড আমাদের দেশে অনলাইনে বিক্রি হচ্ছে সেগুলি আদৌ কি আপনার কোন উপকারে আসছে ? অনেকেই নানা প্রকার চটকদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে সয়া, চিয়া সীড, বীটরুট, মরিঙ্গা বা সজিনা পাতা ইত্যাদির পাউডার বা বিভিন্ন কোম্পানির তৈরী করা ন্যাচারাল সুপার ফুড কিনে কিনে মুড়ির মতো খেয়ে চলেছেন। সেগুলির আদৌ কি আপনার শরীরের জন্য প্রয়োজন আছে? আপনি কি কখনো এই বিষয়টি চিন্তা করে দেখেছেন? প্রথমেই আসুন ফ্রি-রেডিক্যাল এবং এন্টি অক্সিডেন্ট সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেই।  

ফ্রি রেডিক্যাল Free radicals হচ্ছে অক্সিজেন বিপাক ক্রিয়ার ফলে সৃষ্ট সক্রিয় অণু বা একটি বিষাক্ত উপজাত Byproducts যা আমাদের শরীরে মুক্তভাবে চলাফেরা করে। এই মুক্ত অণু অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রক্রিয়ায় শরীরের ডি.এন.এ এবং জীবিত কোষসমুহকে ধ্বংস সাধন করে, ফলশ্রুতিতে আমাদের শরীর ক্যান্সার, হৃদরোগ, প্রদাহজনিত রোগ, চোখে ছানি ইত্যাদি দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়।

আমাদের বেঁচে থাকার জন্য শক্তি দরকার। এই শক্তি উৎপাদনের বায়বীয় জ্বালানি হলো অক্সিজেন। অক্সিজেন ছাড়া খাদ্য হজম হয় না, হজম হওয়া খাদ্য ব্যবহৃতও হয় না। যে গ্লুকোজ, ফ্যাটি এসিড ও অ্যামাইনো ভেঙে শক্তি উৎপন্ন হয়, সেই শক্তি উৎপাদন অক্সিজেন জ্বালানি ছাড়া কখনো সম্ভব নয়। আমাদের শরীরের ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন সেল থেকে অনবরত নানান রিয়েকশনের মাধ্যমে এই শক্তি উৎপাদিত হচ্ছে।
এন্টি অক্সিডেন্টযুক্ত সুপারফুড কতটা জরুরী
মানব শরীরে যত শক্তি বা এনার্জি উৎপন্ন হয় তা জারণ বা অক্সিডেশনের প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হয়। প্রকৃতির সর্বত্রই এই নিয়ম মেনে চলে। যেমন- আমরা যখন আগুন জ্বালাই তখন বাতাসের অক্সিজেন ব্যবহৃত তথা বিজারিত হয়ে আগুন জ্বলতে সাহায্য করে, আর কাঠ বা কয়লা অক্সিজেন গ্রহণ করে জারিত হয় এবং এর মাধ্যমে আমরা তাপ ও আলোক শক্তি পাই।

সাধারণভাবে কোষগুলোতে চলা সব কেমিক্যাল রিয়েকশনের সময় অক্সিজেন পুরোপুরিভাবে বিজারিত হয়ে শক্তি উৎপন্ন হয়। কিন্তু কখনো কখনো যখন অক্সিজেনের এই বিজারণ প্রক্রিয়া আংশিকভাবে ঘটে যায় তখনই অনাকাংখিত ভাবে বাই-প্রডাক্ট হিসেবে যে প্রডাক্ট বের হয়ে আসে তাকেই রিয়েকটিভ অক্সিজেন স্পেসিস বলে। এদের মাধ্যমে শরীরে যে ড্যামেজ প্রক্রিয়া সংঘটিত হয় তাকেই ফ্রি রেডিক্যাল ইনজুরি বলে, আর যারা এই ড্যামেজ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে তাদের এক কথায় ক্ষতিকর অক্সিডেন্টও বলে।

ফ্রি রেডিক্যালগুলো আসলে কী?

আমরা জানি, প্রত্যেকটি পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা হলো পরমাণু। এই পরমাণু গঠিত হয় ইলেকট্র্রন, প্রোটন ও নিউট্রন দিয়ে যার কেন্দ্রে জড়াজড়ি করে থাকে প্রোটন ও নিউট্রন আর কেন্দ্রের বাইরে বিভিন্ন কক্ষপথে ঘুরতে থাকে বিভিন্ন সংখ্যক ইলেকট্র্রন। আসলে কেমিক্যাল রিয়েকশন বলতে বাইরে কক্ষপথে ঘুরতে থাকা ইলেকট্র্রনের যোগ-বিয়োগকে বোঝায়।
ফ্রি-রেডিক্যাল
সুতরাং ফ্রি রেডিক্যাল হলো এমন এক ধরনের কেমিক্যাল স্পেসিজ Chemical Species যাদের সর্ব বাইরের কক্ষ পথে বেজোড় সংখ্যক ইলেকট্রন থাকে, যা খুবই অস্থির, ক্ষণস্থায়ী ও আনপ্রেডিক্টেবল বা অপ্রত্যাশিত। এই অস্থায়ী ইলেকট্রনগুলো জোড়ার অভাবে সর্বদাই রিয়েকটিভ অবস্থায় থাকতে চায়, ফলে বারবার অনাকাঙ্খিত রিয়েকশন হয়ে নতুন নতুন রিয়েকটিভ অক্সিজেন স্পেসিজ তৈরি হতে থাকে আর ফলে কোষের মধ্যে থাকা প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট উপাদানগুলো আঘাতপ্রাপ্ত হতে থাকে।

ক্ষতিকর এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ দিতে ন্যাচারালি শরীরে প্রস্তুত থাকা এন্টি অক্সিডেন্টগুলো আনপ্রেডিক্টেবল অক্সিজেন স্পেসিজগুলোকে নানারকম রিয়েকশনের মাধ্যমে নিষ্ক্রিয় করে ফেলে। এই নিষ্ক্রিয় করে ফেলার কাজ যত বেশি হবে তত বেশি আমরা ফ্রি রেডক্যাল ইনজুরির ক্ষতিকর প্রভাব থেকে মুক্ত থাকতে পারব।

ফ্রি রেডিক্যাল স্পেসিজ কখন উৎপাদিত হয়?

ফ্রি রেডিক্যাল ও অন্যান্য রিয়েকটিভ অক্সিজেন স্পেসিজ মানবদেহে স্বাভাবিক প্রয়োজনীয় বিপাকীয় প্রক্রিয়া চলাকালীন সময়ে, এক্স-রে, ওজোন, ধূমপান, অত্যন্ত মানসিক ও শারীরিক চাপে থাকা ব্যক্তির শরীরে, বায়ুদূষণকারী ও শিল্প রাসায়নিকের এক্সপোজারের মতো বাহ্যিক উৎসের উত্তেজকের ভূমিকার কারণে তৈরি হতে থাকে। 

এ ছাড়া উদ্বেগের সাথেই বলতে হচ্ছে, চিনি জাতীয় খাবার, প্রক্রিয়াজাত খাবার, বেকিং, ডিপ ফ্রাইং ফুড, টিনজাত খাবার, ট্রান্সফ্যাট, মদ্যপান, মিষ্টি আচার, চকোলেট, চিপস, বিস্কুট এবং কেবল সুস্বাদু ও স্থায়ী করার উদ্দেশে ডালডা, পার্শিয়ালি হাইড্রোজেনেটেড খাবার ইত্যাদি মানবসৃষ্ট পুষ্টিহীন খাবার ফ্রি রেডিক্যাল ইনজুরি তৈরি করার ভাগাড়।

ফ্রি রেডিক্যাল বেড়ে যাওয়ার কারণ কি?

এমন কিছু নিয়ামক রয়েছে যাদের প্রভাবে আমাদের শরীরে ফ্রি রেডিক্যালের আধিক্য দেখা দিয়ে তা অক্সিডেটিভ স্ট্রেসে রূপ নিতে পারে। এর কিছু কারন হলো - রেডিয়েশন, কীটনাশক ও রাসায়নিক সার, ধূমপান, এলকোহল, তেলে ভাজা খাবার, স্থুলতা, সুষম খাবারের অভাব, কিছু কিছু এলোপ্যাথিক ঔষধ সেবন, নানা প্রকারের দূষণ ইত্যাদি। 

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মূলতঃ কি?

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট Antioxydant হলো একটি অণু যা অন্যান্য অণুর জারণ Oxidation ক্রিয়ায় বাধা দেয়। বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় আমাদের দেহে অনবরত উৎপাদিত হচ্ছে ক্ষতিকর ফ্রি রেডিক্যালস। এই ফ্রি রেডিক্যালকে নিষ্ক্রিয় করতে ভূমিকা পালন করে থাকে এন্টি অক্সিডেন্ট।

দেখা গেছে যারা সুদীর্ঘ বছর বেঁচে থাকেন তাদের দেহে সুপার অক্সাইড ডিসমুটেজ নামক এনজাইম তৈরি হয় যা ফ্রি রেডিক্যালকে নিষ্ক্রিয় করতে পারে। মানুষের দেহের অভ্যন্তরেও ফ্রি রেডিক্যালকে নিষ্ক্রিয় করার মতো পদার্থ আছে। যেমন বিলিরুবিন, গ্লুটাথিওন ইত্যাদি। আবার কিছু খাদ্য-উপাদান থেকেও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়। যেমন বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন 'সি' ও ভিটামিন 'ই'। 

এসব অ্যান্টি অক্সিডেন্টগুলো প্রবলভাবে কাজ করতে দেখা যায় না। তবে ধীরে ধীরে হলেও এরা মুক্ত মৌলের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের বিরোধিতা করে এবং কোষকে রক্ষা করতে সচেষ্ট হয়। 

কিছু গবেষণায় বলা হয়েছে, অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ক্ষেত্র বিশেষে শরীরের ক্ষতি করে। অনেক সময় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, যেমন:- ভিটামিন 'সি' এবং বিটা ক্যারোটিন শরীরে ইতিমধ্যে বেড়ে ওঠা ক্যানসার কোষকে মদদ জোগায়। ভিটামিন 'ই'  ছাড়া অন্য কোনো অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উচ্চ মাত্রায় শরীরে গ্রহণ করলে বিশেষ কোনো উপকার হয় বলে জানা যায়নি। তারপরও ভিটামিন 'ই' এর কার্যকারিতার ক্ষেত্রে সবসময় 'হতে পারে' শব্দটি বেশ জোড়েসোরেই উচ্চারিত হয়ে আসছে। এটি ভিটামিন 'ই' এর গুরুত্বকে কিছুটা হলেও ম্লান করে দিচ্ছে।

কোন ধরনের খাবারে পাওয়া যায় অ্যান্টি অক্সিডেন্ট

অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট আমাদের প্রাত্যহিক খাবারের মধ্যে পাওয়া সম্ভব। যেমন- গ্রীন টি, কফি, শসা, বেগুন, টমেটো, বাধাকপি, গাজর, গোলমরিচ, ওলকপি, পালং শাক, উদ্ভিজ্জ তেল, শিম, লাউ, কলা, পেয়ারা, তরমুজ, আমলকী, লেবু, বাতাবি লেবু, আনারস, কমলা লেবু, কাচা মরিচ, পুদিনা পাতা এবং এক রাশিয়ান গবেষনায় বলা হয়েছে হিমায়িত শাকসবজি এবং ফলমুলে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পরিমাণে বেশি থাকে। অ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবার মূলত বয়স বাড়ার গতিকে ধীর করতে সহায়ক হয়। কারও কারও মতে অ্যান্টি অক্সিডেন্টগুলো হৃৎপিণ্ডকেও রক্ষা করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। 
অক্সিডেন্টযুক্ত শাকসবজি ও ফল
তাই এই আধুনিক এবং শহরে জীবনে ফরমালিন, ইথিলিন, কার্বাইড বা অন্য কোন ধরনের ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য মিশানো শাক সবজি বা ফলমূল যেমন আমাদের জীবনকে তিল তিল করে ধ্বংস করে দিচ্ছে। ঠিক তেমনি যেকোন ক্ষতিকর রাসায়নিক দ্রব্য বিহীন টাটকা শাক সবজি বা ফলমূলই হতে পারে আমাদের জন্য দীর্ঘায়ু লাভের উপায়। কারণ সেগুলিই মূলত আমাদের প্রত্যাহিক জীবনে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এর চাহিদা পূরণ করে চলেছে। এর জন্য আদৌ সব সময় বাজার থেকে কোন না কোন কোম্পানির তৈরী করা ফ্রি-রেডিক্যাল প্রোটেক্টর সুপার ফুড কিনে খাওয়ার খুব একটা প্রয়োজন পড়ে না। তবে হ্যা, এই রকম সুপার ফুড কিছু কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে কিছু কিছু মানুষের জন্য ক্ষেত্র বিশেষে প্রয়োজন হতে পারে। তাই, আজকাল ইন্টারনেটে সুপারফুড নামক নানা প্রকার চটকদার বিজ্ঞাপনে প্রলুব্ধ হবেন না। 

অ্যান্টি অক্সিডেন্টযুক্ত সুপারফুড কতটা নিরাপদ?

বেশি দিন সুস্থ দেহে যৌবনময় জীবনযাপনের জন্য কেউ কেউ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ওষুধ বা ফুড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে খাচ্ছেন। তবে এসব ওষুধ বা ফুড সাপ্লিমেন্ট মানুষের জন্য যথেষ্ট উপকারী হওয়ার সম্ভাবনা কম। তার প্রধান কারণ হল, এই সকল ফুড সাপ্লিমেন্টে যে পরিমান অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে তা একজন মানুষের প্রাত্যহিক চাহিদার চেয়ে বহু গুণ বেশি থাকে।
একজন স্বাভাবিক মানুষের জন্য অতিরিক্ত অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোষের অক্সিডেটিভ প্রক্রিয়া কমাবে না, কোষের শক্তি উৎপাদনকে ব্যাহত করবে। পরিণামে কোষের মৃত্যু তাড়াতাড়ি হবে।
একই সঙ্গে বিপুল পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট দেহের জন্য ক্ষতিকর হবে। এদিকে আমরা প্রতিদিনের খাদ্য থেকেও কিছু পরিমাণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট পেয়ে থাকি। এদের সম্মিলিত প্রভাবে কোষের মৃত্যুই শুধু এগিয়ে আসবে। তাই ইন্টারনেটে বিভিন্ন প্রচারণায় প্রলুব্ধ হয়ে নানা প্রকার অ্যান্টি অক্সিডেন্টযুক্ত সুপারফুড বা ফুড সাপ্লিমেন্ট চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। 

মনে রাখবেন, ঋতুভেদে প্রকৃতি থেকে পাওয়া ফ্রি-রেডিক্যাল প্রোটেক্টর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাদ্য উপাদানসমূহ প্রতিদিন যথেষ্ট পরিমাণে খাওয়া যেতে পারে। একই সঙ্গে প্রাণিজ আমিষ, বিশেষ করে গরু ও ছাগলের মাংস খাওয়া কমিয়ে আনা, প্রতিদিন না হলেও সপ্তাহে তিন দিন পরিমিত ব্যায়াম করা এবং শৃঙ্খলিত জীবন যাপন করা আমাদের দীর্ঘায়ু লাভে সহায়ক।

অ্যান্টি অক্সিডেন্টযুক্ত সুপারফুড কাদের জন্য উপকারী 

ফ্যামিলি হিস্ট্রি নিয়ে দেখা গেছে, যাদের Tubercular অথবা PRS প্রিডোমিনেন্ট তাদের ভাইটাল ফোর্স খুবই দুর্বল থাকে এবং তারা জীবন ভর ক্রমাগত নানা প্রকার রোগে কষ্ট পেতে থাকেন। চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে সেই সকল ব্যক্তিদের জন্য কিছু কিছু সুপারফুড আশীর্বাদ বয়ে আনতে পারে।

যা যা জেনেছেনঃ 

  • এন্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারের তালিকা
  • এন্টি অক্সিডেন্ট কাকে বলে
  • এন্টি অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে কোন ভিটামিন
  • এন্টি অক্সিডেন্ট এর কাজ কি
  • এন্টি অক্সিডেন্ট ট্যাবলেট
  • প্রাকৃতিক এন্টি অক্সিডেন্ট কোনটি
  • দুটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর নাম
  • অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর উদাহরণ
বিস্তারিত

সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪

হোমিওপ্যাথিতে মায়াজম পরিচিতি বা রোগের মূল কারণ

মহাত্মা হ্যানিম্যান বলেন, যাবতীয় রোগ মায়াজমের অশুভ প্রভাবে সৃষ্টি হয়। মায়াজম শব্দের অর্থ উপবিষ, কলুষ, পুতিবাষ্প, ম্যালেরিয়ার বিষ প্রভৃতি। যাবতীয় রোগের কারণই হল এই মায়াজম। তরুণ পীড়া তরুণ মায়াজমের অশুভ প্রভাবে এবং চিররোগ চির মায়াজমের অশুভ প্রভাবে সৃষ্টি হয়। ইহা প্রাকৃতিক রোগ সৃষ্টিকারী দানব। 
হোমিওপ্যাথিতে মায়াজম
ডাক্তার হ্যানিম্যান এর মতে মায়াজম হচ্ছে একটি অদৃশ্য রোগবীজ। তৎক্ষালীন সময়ে যদি মাইক্রোবায়োলজির উন্নত অবস্থা থাকতো তাহলে হয়তো হ্যানিম্যান মায়াজম না লিখে মাইক্রোঅর্গানিজম শব্দটি ব্যবহার করতেন। বর্তমান যুগের হোমিওপ্যাথি ফিলোসোফার প্রফেসর জর্জ ভিথুলকাস এর মতে মায়াজমের তিনটি চরিত্র রয়েছে -
  • দেহে মায়াজম সংঘটিত হতে হলে ইনফেশন থাকতে হবে। 
  • এর ইফেক্ট এর পরবর্তী ইফেক্ট থাকতে হবে। 
  • জেনারেশন ট্রান্সফার হওয়ার ক্ষমতা থাকতে হবে। 

তবে মায়াজমকে যখন বিস্তারিতভাবে দেখবেন, তখন আর রোগ বীজ থাকেনা, তখন মায়াজম হয়ে যায় অবস্থা। মায়াজম যে ব‍্যক্তিটি অর্জন করে তার শরীরে শুধুমাত্র রোগবীজ হিসেবেই থাকে কিন্তু যখনই পরবর্তী প্রজন্মে স্থানান্তরিত হয় তখন আর মাইক্রোঅনু বা জীবাণু অবস্থায় থাকে না। ধরুন, কোন এক ব্যক্তি সিফিলিস মায়াজম কে অর্জন করলেন দুষিত সহবাসে, এতে তার সিফিলিস বা অন্যান্য 

রোগগুলো হলো, আমরা জানি এই ব‍্যক্তি যদি কুচিকিৎসায় তার সিফিলিস ক্ষত রোগটি চাপা দেয় তাহলে ব‍্যক্তিটির মধ্যে এর মায়াজমিক অবস্থা তৈরি হয়। এবং সেই মায়াজম আবার তার পরবর্তী প্রজন্মে যাবেই।

সোরিক, সিফিলিটিক, সাইকোটিক এবং টিউবারকুলার মায়াজমের প্রধান কিছু বৈশিষ্ট্য
কিন্তু এই ব্যক্তির সন্তানদের সিফিলিস হবে? অথবা ওই ব্যক্তির সন্তানের সন্তানদের বা নাতি নাতনিদের অথবা তারও পরের প্রজন্মের কি ওই সিফিলিস রোগই হবে? উত্তর - না, সিফিলিস অর্জনকারী ব্যক্তির পরের প্রজন্মের কারোরই সিফিলিস রোগ হবে না। তাদের সিফিলিস রোগ না হয়ে, সিফিলিস রোগের ওই রোগ বীজ পরবর্তী প্রজন্মের শারীরিক, গাঠনিক, মানুষিক ও রোগজ পরিবর্তন করবে। হ‍্যা বংশগত প্রাপ্ত হওয়ার পাশাপাশি কোনো ব‍্যক্তি যদি নিজ জীবনেও পূণরায় একই মায়াজম অর্জন করে দূষিত সহবাসের মাধ্যমে তাহলে তার সিফিলিস ক্ষত বা গনোরিয়া জাতীয় রোগ হতেই পারে।

এই যে সিফিলিস রোগের পরিবর্তিত অবস্থা মানুষকে শারীরিক, গাঠনিক, মানুষিক ও রোগজ ভাবে পরিবর্তন করছে এর জন্যই মায়াজমকে রোগ বীজ না বলে অবস্থা বলা হয়। অর্থাৎ ব্যক্তির এখন সিফিলিস না দেখে, শারীরিক, মানসিক, গাঠনিক ও রোগজ অবস্থা দেখে মায়াজম চিনতে হয়, তাই আমরা সহজভাবে বলতে পারি ব্যক্তির শারীরিক, গাঠনিক ও মানসিক অবস্থাকে মায়াজম বলে।
বিস্তারিত

শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারী, ২০২৪

স্লিপ ডিস্ক বা হার্নিয়েশন বা ডিস্ক প্রলাপ্স! কোমর ব্যথার কার্যকর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

স্লিপ ডিস্ক বা হার্নিয়েশন বা ডিস্ক প্রলাপ্স (PLID, Disc Prolapse, Slipped or Herniated Disc) বা কোমর ব্যথার কার্যকর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা রয়েছে। বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে জীবনের কোন না কোন সময় ৬০% থেকে ৮০% মানুষ কোমর, পিঠ বা ঘাড়ের ব্যথায় কষ্ট পেয়ে থাকেন। এদের বেশির ভাগই হয়ে থাকেন মধ্য বয়সী অথবা ৩৫ থেকে ৬০ বছর বয়স্ক ব্যক্তি। বিভিন্ন কারণে মেরুদণ্ডের অসুবিধা হলে ঘাড়, পিঠ আর কোমরের ব্যথায় কাতর হতে হয়। এই ব্যথার একটি অন্যতম কারণ হলো স্লিপ ডিস্ক বা ডিস্ক হার্নিয়েশন।
স্লিপ ডিস্ক বা হার্নিয়েশন বা ডিস্ক প্রলাপ্স
যে কোন বয়সের মানুষের যে কোন সময়ে ডিস্ক হার্নিয়েশনের ঝুঁকি থাকলেও ছেলেদের ক্ষেত্রে এই  ঝুঁকি মেয়েদের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বেশি। আসলে ভারী কাজ, বৃষ্টি ভিজতে গিয়ে পিছলে পড়ে যাওয়া, মাঠে ফুটবল খেলা, সাইকেল নিয়ে কসরত করা বা অতিরিক্ত দৌড় ঝাঁপ করার কারণে এই অসুখের সম্ভাবনা বাড়ে। ইদানীং আবার প্রপার ট্রেনার ছাড়া জিম ও ওয়েট লিফটিং করতে গিয়েও স্লিপ ডিস্কের ঝুঁকি বাড়ে। ৩৫ ঊত্তীর্ণদের মধ্যে ৫% পুরুষ ও ২.৫% মহিলা এই অসুখের শিকার হন। সমীক্ষায় জানা গিয়েছে যে বংশে থাকলে এই অসুখের ঝুঁকি বাড়ে। তবে নিয়মিত শিরদাঁড়ার সঠিক এক্সারসাইজ ও যত্ন এই রোগ প্রতিরোধ করতে পারে।

ডিস্ক প্রলেপস - কারণগুলি কি কি ?

  • আঘাত পেলে বা উঁচু স্থান থেকে পড়ে গেলে।
  • দীর্ঘক্ষণ নিচে বসে কাজ করলে।
  • সামনে ঝুঁকে ভারী জিনিস তোলা ডিস্ক হার্নিয়েশনের অন্যতম রিস্ক ফ্যাক্টর। 
  • অটো, বাস অথবা রিকশার ঝাঁকুনিতে আঘাত পাওয়া যা সাথে সাথে বোঝা যায় না। 
  • অতিরিক্ত পরিশ্রম, মাসল বা পেশীতে আঘাত ।
  • মেরুদন্ডের জন্মগত ও গঠনগত ত্রুটি ।
  • বেশি বয়সে হাড় ক্ষয়ে গিয়ে ডিজেনারেটিভ ডিস্ক ডিজিজ ।
  • আমাদের মেরুদণ্ডের সঙ্গে যে স্পাইনাল লিগামেন্ট ও মাংসপেশি থাকে এগুলো দুর্বল হয়ে গেলে।
  • অসচেতনভাবে সামনের দিকে ঝুকে ভারী কিছু উঠাতে গেলে।
  • সামনের দিকে ঝুঁকে জুতার ফিতা বাঁধতে গেলে 
  • বেসিনে মুখ ধুতে গেলেও ডিস্ক প্রলেপস হতে পারে।

ডিস্ক প্রলেপস - কোথায় হয়?

সাধরণত ডিস্ক প্রলেপস আমাদের ঘাড় বা সারভাইক্যাল স্পাইন ও কোমর বা লাম্বার স্পাইনে বেশি হয়। সারভাইক্যাল স্পাইনের সি ৫-৬ ও সি ৬-৭ লেভেলে ও লাম্বার স্পাইনে এল ৪-৫ ও এল ৫ – এস ১ লেভেলে বেশি হয়।

ডিস্ক প্রলেপস - লক্ষণগুলি কি কি ?

  • লক্ষণ ও উপসর্গ একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম হয়ে থাকে। 
  • কারো ক্ষেত্রে ব্যথা ঘাড় থেকে হাতের দিকে ছড়ায় ও হাতে তীব্র ব্যথা হয়।
  • হাত ঝুলিয়ে রাখলে ও বিছানায় শুলে বেশি ব্যথা করে।
  • হাত ঝিনঝিন করে বা অবশ অবশ মনে হয়।
  • হাতের শক্তি কমে যায় বা হাত দুর্বল হয়ে আসে
  • অনেকক্ষেত্রে হাতের মাংসপেশি শুকিয়ে আসে ইত্যাদি।
  • কারো ক্ষেত্রে কোমরে ব্যথা হয়।
  • ব্যথা কোমর থেকে পায়ের দিকে ছড়ায়।
  • পা ঝিন ঝিন করে, অবশ অবশ মনে হয়।
  • খানিকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকলে কিংবা হাটলে আর হাঁটার ক্ষমতা থাকে না। তবে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে আবার হাঁটতে পারে।
  • পা ভারী বা অধিক ওজন মনে হয়।
  • পায়ে জ্বালাপোড়া অনুভূত হয়।
  • পায়ের শক্তি কমে যায় এবং অনেক ক্ষেত্রে মাংসপেশী শুকিয়ে যায়।
  • অনেক ক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রসাব ও পায়খানায় নিয়ন্ত্রণ থাকে না।

ডিস্ক প্রলেপস - নির্ণয় পদ্ধতি

আক্রান্ত স্পাইনের এম আর আই বা ম্যাগনেটিক রিজোনেনস ইমেজিং পরীক্ষার মাধ্যমে কোন লেভেলে কতটুকু ডিস্ক প্রলেপস তা সঠিকভাবে নির্ণয় করে থাকেন।

স্লিপ ডিস্ক বা হার্নিয়েশন - চিকিৎসা

এই সমস্যার প্রপার হোমিওপ্যাথিক ট্রিটমেন্ট রয়েছে তবে এর পাশাপাশি কারো কারো ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেয়া দরকার হয়ে থাকে। অর্থাৎ সেই সময় খুব বেশি হাঁটাচলা করা যাবে না। স্লিপ ডিস্ক বা হার্নিয়েশন বা ডিস্ক প্রলাপ্স চিকিৎসার জন্য রেজিস্টার্ড এবং অভিজ্ঞ একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন আশা করি ভাল ফলাফল পাবেন ইনশা আল্লাহ।
বিস্তারিত