সোমবার, ৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

ক্যান্সার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ও কেমোথেরাপির কার্যকারিতা

ক্যান্সার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ও কেমোথেরাপির কার্যকারীতার প্রশ্ন যদি আসে তাহলে জেনে নিবেন পৃথিবীতে ক্যান্সার নিরাময়ের যত চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে কোনটাই আপনাকে এই গ্যারান্টি দিবে না যে ট্রিটমেন্ট নিলেই আপনি সেরে উঠবেন। ফল দিক বা না দিক, কাজ তেমন করুক বা না করুক রোগটির জন্য চিকিৎসা আছে তাই প্রসিডিউর ফলো করা হয় এর বেশি কিছু নয়। এর মধ্যেই কেউ কেউ সারভাইব করে থাকেন। 

তবে অর্থনৈতিক অবস্থা, ঔষধের মারাত্মক সব পার্শপ্রিতিক্রিয়া, রোগীর শারীরিক অবস্থা ইত্যাদি  সব দিক বিবেচনা করলে ক্যান্সার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি স্রষ্টার এক আর্শীবাদ ছাড়া কিছুই নয়। 

কিছুদিন আগেও বিভিন্ন প্রকারের থেরাপি এবং সার্জারিকেই ক্যান্সার নিরাময়ের প্রধান উপায় হিসেবে বিবেচনা করা হতো। কিন্তু হোমিওপ্যাথিক ওষুধ প্রয়োগে ক্যান্সার রোগীরা আজ ভালো হওয়াতে অনেক ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীরা এখন আশার আলো দেখছেন। আপনি হয়তো আপনার আশেপাশে দেখে থাকবেন অথবা গুগল সার্চ করেই এর প্রমান পেয়ে যাবেন।
ক্যান্সার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি ও কেমোথেরাপি

ক্যান্সার চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথির কার্যকারীতা

জেনে রাখা ভালো, যেকোনো প্রকারের ক্যান্সার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় কতটা ফল দিবে তা নির্ভর করে রোগী কোন ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং রোগের কোন পর্যায়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিতে আসছেন তার উপর। লিভার ক্যান্সার, ব্রেন টিউমার, প্রস্টেট ক্যান্সার, ইউরিনারি ব্লাডার বা মূত্রথলির ক্যান্সার, অস্ট্রিওসারকোমা, স্কিন ক্যান্সার, মহিলাদের ব্রেস্ট ক্যানসার, জরায়ু বা সার্ভিক্স ক্যান্সারের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সবচেয়ে বেশি ফল দিয়ে থাকে।

তবে মনে রাখা ভালো, যিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছেন তার শারীরিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে রোগ আদৌ সারবে কিনা। দেখা গেছে, রোগীর ডায়াবেটিস এর মতো সমস্যা থাকলে তার ভাইটাল ফোর্স এমনিতেই দুর্বল থাকে। সেক্ষেত্রে ক্যান্সার রোগ সারানো কঠিন হয়ে পড়ে। তবু এসব ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা যথেষ্ট ভালো কাজ দিচ্ছে।

কখনো কখনো ক্যান্সার লক্ষণবিহীন অবস্থায়ও থাকতে পারে। আবার কিছু ক্ষেত্রে ক্যান্সার নিজে থেকেই সেরে যায়। ক্যান্সারের প্রথম স্টেজে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শুরু করলে অবশ্যই ভালো ফল পাওয়া যায়। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই জটিলতর অবস্থা নিয়ে রোগীরা আমাদের কাছে চিকিৎসা নিতে আসেন। এক্ষেত্রেও হোমিওপ্যাথি কাজ দেয়। প্রাথমিক স্টেজে কেউ যদি অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা করেন সেক্ষেত্রে অনেকটাই ভালো ফলাফল লাভ করা সম্ভব।

অন্যান্য রোগের মতো হোমিওপ্যাথিতে ক্যান্সার চিকিৎসাও নির্দিষ্ট কোনো ছকে আবদ্ধ নয়। মনে করবেন না যে, কিছু হোমিওপ্যাথিক ঔষধ খেলেই ক্যান্সারের মতো জটিল সমস্যা নির্মূল হয়ে যাবে।  কারণ হোমিওপ্যাথিতে নির্দিষ্ট রোগের নির্দিষ্ট কোন ঔষধ হয় না। হোমিও চিকিৎসা এলোপ্যাথির মতো নয়। এটি সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী একটি পার্শপ্রিতিক্রিয়াহীন যুগান্তকারী চিকিৎসা পদ্ধতি। 

রোগীর ব্যাক্তিগত ও পারিবারিক হিস্ট্রি, তার ক্যান্সার সম্পর্কিত লক্ষণসমূহ বিবেচনা করে চিকিৎসা করা হয়। মনে রাখা ভালো, একেক জনের একেক রকম কস্টিটিউশন থাকে বিধায় একই কারণে ব্যক্তি ভেদে ক্যান্সারসহ যেকোন রোগের লক্ষণ সমূহ আলাদা হয়ে থাকে। তাই চিকিৎসার জন্য ঔষধও ভিন্ন হবে এটাই স্বাভাবিক। ক্যান্সারের পেছনে শারীরিক বা মানসিক কারণ, পরিবেশগত ও পারিবারিক কারণ ইত্যাদি বিবেচনা করে হোমিওপ্যাথিতে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে। কী ধরনের ক্যান্সার, সেটা কীভাবে ছড়াচ্ছে, যন্ত্রণার মাত্রা কিরূপ, এছাড়া রোগীর সার্বদৈহিক লক্ষণসমূহ বিবেচনাপূর্বক পরিপূর্ণ কেইস টেকিং এর মাধ্যমে হোমিওপ্যাথিতে চিকিৎসা শুরু করা হয়।

ক্যান্সার চিকিৎসায় কেমোথেরাপির কার্যকারীতা

কেমোথেরাপি হচ্ছে বিভিন্ন ওষুধের মাধ্যমে শরীরে থাকা ক্যানসারের কোষকে ধ্বংস করা। এক্ষেত্রে ওষুধ ইনজেকশনের মাধ্যমে রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা হয়। অনেক দিন ধরে একটু একটু করে ওষুধ রক্তে মিশে যায়। কেমোথেরাপি নিলে ভয়াবহ রকমের বমির পাশাপাশি শরীরে খিচুনি হয়। ক্ষুধা একেবারে কমে যায়। শরীর প্রচণ্ড রকম দুর্বল এবং মানসিক অবসাদ দেখা দেয়। মাথার চুল এবং চোখের ভ্রু পড়ে যায়।

প্রশ্ন হচ্ছে, ক্যানসার হওয়ার পর কেমোথেরাপি দিলে রোগটি নির্মূলের হার কতখানি? কেমোথেরাপিকে ক্যানসার নিরাময়ের সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা বলে মনে করা হয়। কিন্তু আশ্চর্যজনক হলেও সত্য হলো প্রাণঘাতী ক্যানসারে মানুষ মারা যাওয়ার পেছনে প্রধান দায়ী এই কেমোথেরাপি।

ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা বিজ্ঞানের অধ্যাপক ড. হার্ডিন বি জোনস ক্যানসার চিকিৎসায় কেমো ও বিভিন্ন থেরাপির ব্যবহার নিয়ে ২৫ বছর ধরে গবেষণা শেষে এমন তথ্য দিয়েছেন। গবেষণায় তিনি উল্লেখ করেন, ক্যান্সার চিকিৎসা এক ধরনের ব্যবসা, যা শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠার চেয়েও বেশি লাভজনক। এই ব্যবসায় প্রতিটি ডাক্তার, হাসপাতাল, ফার্মাসিউটিক্যালস কোম্পানি এবং সংশ্লিষ্ট সবাই জড়িত।

ব্যবসাটা তখনই শুরু হয়, যখন কোনও রোগী মারাত্মক রোগের তথাকথিত চিকিৎসা, যেমন: কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন বা শরীরের কোনও অংশের জটিল চিকিৎসার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। রোগীদের যারা কেমো নিতে আসেন, তারা একটি ভয়ংকর পদ্ধতির মধ্যে দিয়ে যান। কেমো নেওয়া রোগী অন্য যে কোনও চিকিৎসা পদ্ধতির চেয়ে দ্রুত মারা যান এবং অধিক যন্ত্রণা ভোগ করেন। এসব বিষয়গুলো কঠিন গোপনীয়তার মধ্যে করা হয়। কারণ এখানে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলারের ব্যবসা জড়িত।

নিউইয়র্ক একাডেমি অব সায়েন্সে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, কেমোথেরাপি নেননি, এমন রোগী কেমো গ্রহণকারীর চেয়ে সাড়ে ১২ বছর বেশি বাঁচেন। কেমোথেরাপি নেয়ার তিন বছরের মধ্যে রোগী মারা যান। এমনকি কেমোথেরাপি শুরুর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে অনেকে মারা যান। স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত নারীরা যারা প্রচলিত বিভিন্ন থেরাপি নেননি তারা অন্যদের চেয়ে চারগুণ বেশি সময় বাঁচেন।

তিনি বলেন, এসব গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় না। যাতে করে কেমোথেরাপি ক্যানসারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার সবচেয়ে কার্যকর ওষুধ- এরকম মিথ ছড়ানো অব্যাহত থাকে।

১৯৭৯ সালের আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের একটি গবেষণায় দেখা যায়, চিকিৎসায় ব্যবহৃত এখন পর্যন্ত কোনও থেরাপি প্রকৃতপক্ষে ক্যানসারের নিরাময়ে কিংবা মানুষকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে বেঁচে থাকার ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকা রাখতে পারেনি।

ক্যানসার নিরাময়ে বিভিন্ন থেরাপির ভূমিকা নিয়ে ১৯৭৮ সালেও দুটি গবেষণা করা হয়েছিল। যার একটি হয়েছিল ইসরায়েলে ও অন্যটি ব্রিটেনে। এই দুই গবেষণায় ক্যানসারের চিকিৎসায় কেমো বা বিভিন্ন থেরাপি তেমন কোনও ভূমিকা রাখতে পারে না বলে তথ্য দেয়া হয়। তথ্য সূত্রঃ আরটিভি অনলাইন

কোথায় কোন পদ্ধতির চিকিৎসা নিবেন?

কে কোথায় চিকিৎসা নিবেন সেটা মূলত ব্যক্তির পছন্দের ভিত্তিতে হয়ে থাকে। তাই ক্যান্সারের চিকিৎসা আপনি কোথায় করবেন সেটাও আপনার নিজেরই পছন্দ। পূর্বেই বলেছি পৃথিবীতে যত প্রকার চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে অর্থাৎ আপনি যে চিকিৎসা পদ্ধতিতেই ক্যান্সারের চিকিৎসা নেন না কেন অথবা পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা নেন না কেন কেউ কিন্তু আপনাকে এই গ্যারান্টি দেবে না যে, চিকিৎসা নিলেই ভালো হয়ে যাবেন। 

বিভিন্ন চিকিৎসা ব্যবস্থায় ক্যান্সারের চিকিৎসা বিভিন্ন ভাবে করা হয়ে থাকে। কিছু কিছু চিকিৎসা পদ্ধতিতে আপনার খরচ অনেক বেশি পড়বে, একই সাথে জটিল পার্শপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। আবার কোন কোন চিকিৎসা পদ্ধতিতে খরচ কম পড়বে এবং তেমন কোন পার্শপ্রতিক্রিয়ার সম্ভবনাও নেই। যেমন ধরুন, হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে যদি আপনি ক্যান্সারের চিকিৎসা নেন সেক্ষেত্রে কেমোথেরাপির মতো খরচ এবং জটিল কোনো পার্শপ্রতিক্রিয়ার সম্ভবনা নেই।

সব দিক বিবেচনা করলে হোমিওপ্যাথি ক্যান্সার চিকিৎসায় স্রষ্টার আর্শীবাদ ছাড়া কিছুই নয়। তবে এক্ষেত্রে রেজিস্টার্ড এবং অভিজ্ঞ কোনো হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চিকিৎসা নিন।
Dr. Delowar Jahan Imran
ডাঃ দেলোয়ার জাহান ইমরান
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক (রেজিঃ নং-৩৩৪৪২)
ডিএইচএমএস (বিএইচএমসি এন্ড হসপিটাল), ডিএমএস; ঢাকা
যোগাযোগঃ নিউটাউন হোমিও হল, নিউটাউন কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন, সাইনবোর্ড, ডেমরা, ঢাকা
Phone: +88 01671-760874; 01977-602004 (শুধু এপয়েন্টমেন্টের জন্য)
About Me: Profile ➤ Facebook ➤ YouTube ➤