সোমবার, ১০ মে, ২০২১

পোস্ট কোভিড সিনড্রোম ! করোনা বা কোভিড পরবর্তী শারীরিক ও মানসিক জটিলতার চিকিৎসা

COVID-19 (coronavirus) করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর যারা এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় এর থেকে সেরে উঠছেন তাদের শরীরে নানা প্রকার শারীরিক ও মানসিক জটিলতার সৃষ্টি হয়ে থাকে সেগুলিকেই বলা হয় পোস্ট কোভিড সিনড্রোম Post COVID Syndrome অর্থ্যাৎ করোনা বা কোভিড পরবর্তী শারীরিক ও মানসিক জটিলতা। শুধু কোভিড নয় যেকোন সংক্রামক রোগ থেকে সেরে উঠার পর অনেকেরই শরীর খুব সহজেই স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে দেখা যায় না। ঠিক তেমনি, কোভিড-১৯ থেকে সেরে ওঠার পরও প্রায় এক তৃতীয়াংশ রোগী শারীরিক অথবা মানসিক কোন না কোন জটিলতায় ভুগছেন যা হোমিও চিকিৎসায় সফল ভাবে ঠিক করে নিয়ে আসা যায়।
কোভিড পরবর্তী শারীরিক ও মানসিক জটিলতাগুলির মধ্যে রয়েছে - কোভিড নিউমোনিয়া, হাইপারটেনশন, ফাঙ্গাল ইনফেকশন, ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন, নিউরোজিক্যাল সমস্যা, হৃদরোগ, লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, কিডনিতে সংক্রমণসহ বিভিন্ন প্রকার শারীরিক ও মানুষিক জটিলতা। যারা COVID-19 এ আক্রান্ত হলে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নিয়ে থাকেন তাদের ক্ষেত্রেই এই জটিলতাগুলি সবচেয়ে বেশি দেখা যায়।  
পোস্ট-কোভিড সিনড্রোম (Post COVID 19 Syndrome) গুলোর মধ্যে রয়েছে দীর্ঘস্থায়ী কাশি, শ্বাসকষ্ট, ফুসফুসের নানা সমস্যা, ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা, অগ্নাশয় প্রদাহ, অল্প পরিশ্রমে হাঁপিয়ে ওঠা, প্রচণ্ড শারীরিক দুর্বলতা, দুশ্চিন্তা, মেজাজ খিটখিটে হওয়া, মানসিক উদ্বেগ, বিষণ্ণতা, অবসন্নতা, নিদ্রাহীনতা, বুক ধড়ফড় করা, গায়ে ব্যথা, পেটে নানা গোলযোগ, পূর্বে কোন রোগে ভুগতে থাকলে যেমন ডায়াবেটিস উচ্চরক্তচাপ হার্টের রোগ ইত্যাদি গুরুতর আকার ধারণ করা। এছাড়াও ভাইটাল ফোর্সের দুর্বলতর অবস্থায় শরীরের নানা অঙ্গে নানা রকম জটিল প্রকৃতির লক্ষণ ও উপসর্গ জেগে উঠে যেগুলি একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম হয়ে থাকে অর্থাৎ ব্যক্তি ভেদে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।
পোস্ট কোভিড সিনড্রোম
ইতিমধ্যে আপনারা জেনেছেন আমরা জন্মলগ্ন থেকেই ক্রোমোজোমের মাধ্যমে বিভিন্ন দুরারোগ্য রোগের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল বা কিছু প্রকৃত রোগ নিয়ে আসি। করোনা ভাইরাস বা কোভিড ১৯ সে সকল লোকজনদেরই স্বাস্থ্যের বিপর্যস্থ অবস্থা সৃষ্টি করে থাকে যারা মূলত Tubercular Diathesis (TD) এর পেসেন্ট। যা তৈরি হয় Psora এবং Syphilis এর সম্মিলনে তবে কখনো কখনো Psora, Syphilis, Sycosis এর সম্মিলনও দেখা যায়, যাকে মেডিক্যালের ভাষায় বলা হয় Triple TDS. আবার কারো কারো ক্ষেত্রে সবগুলি True Disease এর উপস্থিতিও পরিলক্ষিত হয়। 
আপনি Tubercular Diathesis এর পেসেন্ট অথবা TB Predominant, আপনার ভাইটাল ফোর্স দুর্বল এবং কোন না কোন গুরুতর সংক্রামক পীড়া যেমনঃ কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন। এ অবস্থায় জেনে রাখুন, আপনার DNA তে বিদ্যমান True Disease প্রকট বা তীব্র হয়ে উঠবে এবং আপনার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে বিভিন্ন জটিল প্রকৃতির রোগ লক্ষণ জাগিয়ে তুলবে অথবা পূর্বে থেকে ভুগে আসছেন এমন রোগ লক্ষণগুলিকে আরো গুরুতর করে তুলবে। এরপর থেকে আপনি হয়তো আর কখনও ভালো থাকতে পারবেন না যতক্ষণ না আপনার DNA তে প্রিডোমিনেন্ট True Disease কে প্রোপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে Recessive না করেছেন।

পোস্ট কোভিড সিনড্রোম

করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর যারা এর থেকে সেরে উঠেছেন পরবর্তীতে তারা বিভিন্ন শারীরিক এবং মানসিক জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন। করোনা বা কোভিড পরবর্তী শারীরিক ও মানসিক জটিলতারগুলির মধ্যে যেগুলি বেশি দেখা দিতে পারে -
  • ভীষণ দুর্বলতা ও ক্লান্তিবোধ।
  • অনেকের ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়, ওজন খুব দ্রুত কমে যায়।
  • ফুসফুসের দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট, ঘন ঘন ঠান্ডা লাগা ও কাশির সমস্যা হতে পারে।
  • ফুসফুসের দেয়ালে প্রদাহের সৃষ্টি করে, ফুসফুসে পানি জমে যেতে পারে ।
  • যেসব রোগীদের আইসিইউ বা জরুরি অক্সিজেন নিতে হয়েছে তাদের অনেকের ফুসফুসে পালমোনারি ফাইব্রোসিস সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সমস্যায় শ্বাস প্রশ্বাসে কষ্ট, শুকনো কাশি, ক্লান্তি অবসাদ, ওজন কমে যাওয়ার মতো লক্ষণ প্রকাশ পেতে পারে। 
  • কোভিড রোগীরা পরবর্তীতে হৃদপিণ্ডের নানা জটিলতায় আক্রান্ত হয়ে থাকেন। শ্বাসকষ্ট, বুকে ব্যথা ইত্যাদি এক্ষেত্রে একেবারেই সাধারণ বিষয়। 
  • অনেক রোগী একিউট প্যানক্রিয়াটাইটিস বা অগ্নাশয় প্রদাহ জনিত জটিলতায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর ফলে রোগীদের পেটে তীব্র ব্যথা হয়।
  • যাদের আগে থেকেই হাই প্রেশার, লো প্রেশার, কোলেস্টোরেল বা ডায়বেটিসজনিত সমস্যা আছে কোভিড পরবর্তী সময়ে সেগুলির জটিলতা আরো বেড়ে যেতে পারে। 
  • যারা হাইপার টেনশনে ভোগেন তাদেরও প্রেশার হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে। 
  • যারা ডায়াবেটিসে ভুগছেন তাদের রক্তে সুগারের পরিমাণ খুব দ্রুত ওঠা নামা করতে পারে।
  • করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হওয়ার পরও অনেক রোগী দেখা গেছে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক উদ্বেগ, বিষণ্ণতায় ভুগেছেন। অনেকেই কাজে মনোযোগ দিতে পারছেন না।
  • এছাড়াও হৃদরোগ, লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া, কিডনিতে সংক্রমণসহ আরো বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিতে পারে। কারো কারো মনে হবে কোভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর থেকে আর ভালো নেই। একটার পর একটা সমস্যা যেন লেগেই আছে। 

পোস্ট কোভিড সিনড্রোম - চিকিৎসা 

কোভিড ১৯ চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথি রোগের শুরুতেই তাকে বিনষ্ট করে দিতে পারে। কিন্তু যারা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে যথাসময়ে প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা না নিয়ে নানা প্রকার রাসায়নিক বা এলোপ্যাথিক ঔষধের মাধ্যমে চিকিৎসা নিয়েছেন তাদের ক্ষেত্রে কোভিড পরবর্তী সময়ে নানা প্রকার জটিল শারীরিক ও মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হয়ে থাকে। 

পূর্ব থেকে উচ্চরক্তচাপ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন এমন রোগীরা যারা কোভিডে আক্রান্ত হয়েছিলেন তাদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে দেখেছি, নানা প্রকার মনোদৈহিক জটিলতায় তারা দিন পার করছেন। তাছাড়া TB Predominant এমন পেশেন্ট যারা কোভিডে আক্রান্ত হয়ে এর থেকে সেরে উঠেছেন তাদের তো আর কথাই নেই। একের পর এক নানা প্রকার শারীরিক ও মানসিক সমস্যা যেন তাদের নিত্য সঙ্গী। উচ্চ ডিগ্রীধারী ডাক্তার দেখাচ্ছেন, একের পর এক বিভিন্ন মেডিক্যাল টেস্ট করে চলেছেন কিন্তু কোন সমস্যাই ধরা পড়ছে না অথচ শরীর মন কোনটাই তার ভালো নেই। দিন দিন স্বাস্থ্যের অবস্থা খারাপ থেকে খারাপের দিকে যাচ্ছে।  কি থেকে কি হচ্ছে তারা বুঝতেই পারছেন না। 

দেখা যাচ্ছে, কোভিডে আক্রান্ত হয়ে এর থেকে সেরে উঠার পর লোকজন আর ভালো থাকেন না। একের পর এক নানা প্রকার শারীরিক ও মানসিক জটিলতার সৃষ্টি হচ্ছে। তারা বুঝতেই পারছেন না, কি থেকে কি হচ্ছে। অথচ কোভিড পরবর্তী যাবতীয় শারীরিক ও মানসিক জটিলতা অনায়াসেই নির্মূল হচ্ছে হোমিও চিকিৎসায়। এই সমস্যা থেকে পুরুপুরি মুক্তি পেতে রেজিস্টার্ড এবং দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে প্রপার চিকিৎসা নিন। কারণ পোস্ট কোভিড সিনড্রোম (Post-COVID Syndrome) নির্মূলে হোমিওপ্যাথি দুর্দান্ত চমক দেখাচ্ছে। ধন্যবাদ।
Dr. Delowar Jahan Imran
ডাঃ দেলোয়ার জাহান ইমরান
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক (রেজিঃ নং-৩৩৪৪২)
ডিএইচএমএস (বিএইচএমসি এন্ড হসপিটাল), ডিএমএস; ঢাকা
যোগাযোগঃ নিউটাউন হোমিও হল, নিউটাউন কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন, সাইনবোর্ড, ডেমরা, ঢাকা
Phone: +88 01671-760874; 01977-602004 (শুধু এপয়েন্টমেন্টের জন্য)
About Me: Profile ➤ Facebook ➤ YouTube ➤