থ্যালাসেমিয়া Thalassemia একটি ব্লাড ডিজ়অর্ডার এবং জিনগত রোগ। বংশ পরম্পরায় শিশুর দেহে বাসা বাঁধে। এই রোগের ফলে শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমতে থাকে। এই রোগে আক্রান্ত রোগীদের রক্তে লোহিত রক্তকণিকা ও হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ মারাত্মক কমে যায়। খুব স্বাভাবিক ভাবেই রক্তাল্পতার সমস্যা দেখা দেয়। যদি বাবা-মা দু'জনেই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হন, সে ক্ষেত্রে সন্তান থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত হতে পারে।
আলফা থ্যালাসেমিয়া: এর জন্য ১৬ নম্বর ক্রোমোজ়োমে উপস্থিত আলফা-চেন উৎপাদনকারী জিনের মিউটেশন বা ডিলিশন দায়ী। চারটি জিন দিয়ে আলফা থ্যালাসেমিয়া চেন তৈরি হয়। বাবা-মায়ের থেকে প্রাপ্ত চারটির মধ্যে এক বা একাধিক জিন ত্রুটিপূর্ণ হলে আলফা থ্যালাসেমিয়া হয়। জিন যত ত্রুটিপূর্ণ হবে, সমস্যা তত বাড়বে।
মেডিকেশন ও সাপ্লিমেন্ট-আয়রন সিলেকশন:- দেহের অতিরিক্ত আয়রন বার করে দেওয়ার জন্য আয়রন চিলেটিং দেওয়া হয়ে থাকে। আয়রনযুক্ত খাবার এবং ওষুধ খাওয়া চলবে না। এর সঙ্গে ফলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে দেওয়া হয়ে থাকে। বাড়তি আয়রন শরীর থেকে বার করে দেওয়া যেমন প্রয়োজন, তেমনই নিয়মিত ফলিক অ্যাসিড এবং ক্যালসিয়াম খাওয়াও জরুরি।
প্লীহা ও গল ব্লাডার বাদ:- বারবার রক্ত দেওয়ার ফলে অনেকের প্লীহা বড় হয়ে যায়। তখন সেটি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাদ দিয়ে দেওয়া বাঞ্ছনীয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে গল ব্লাডারও বাদ দেওয়া হয়।
বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট:- অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বা বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন কার্যকর চিকিৎসা। তবে এই চিকিৎসা পদ্ধতি অনেক জটিল এবং খরচসাপেক্ষ।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা :- যেহেতু এটি একটি জেনেটিক বা জিনগত রোগ এবং এই রোগের ভাল একটি চিকিৎসা হলো হোমিওপ্যাথি। এ ক্ষেত্রে রিয়েল হোমিপ্যাথিক থেরাপিউটিক সিস্টেমে চিকিৎসা দিলে আশানুরূপ ফলাফল নিয়ে আসা যায়। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসক রোগীর এবং তার পিতা-মাতা, দাদা-দাদি, নানা-নানী অর্থাৎ পারিবারিক হিস্ট্রি নিয়ে চিকিৎসা শুরু করবেন। পেসেন্টের অভিভাবকের উচিত কেইস টেকিং এর সময় যথাযথ তথ্যাদি দিয়ে চিকিৎসককে সহায়তা করা। তবে এর জন্য রিয়েল হোমিপ্যাথিক থেরাপিউটিক সিস্টেমে দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করুন।
থ্যালাসেমিয়া - টাইপ
- আলফা থ্যালাসেমিয়া
- বিটা থ্যালাসেমিয়া
আলফা থ্যালাসেমিয়া: এর জন্য ১৬ নম্বর ক্রোমোজ়োমে উপস্থিত আলফা-চেন উৎপাদনকারী জিনের মিউটেশন বা ডিলিশন দায়ী। চারটি জিন দিয়ে আলফা থ্যালাসেমিয়া চেন তৈরি হয়। বাবা-মায়ের থেকে প্রাপ্ত চারটির মধ্যে এক বা একাধিক জিন ত্রুটিপূর্ণ হলে আলফা থ্যালাসেমিয়া হয়। জিন যত ত্রুটিপূর্ণ হবে, সমস্যা তত বাড়বে।
- একটি ত্রুটিপূর্ণ জিন হলে থ্যালাসেমিয়ার কোনও লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যাবে না। তবে আক্রান্ত ব্যক্তির মাধ্যমে তাঁর সন্তানের মধ্যে এই রোগ ছড়াতে পারে।
- দু'টি জিন ত্রুটিপূর্ণ হলে হালকা উপসর্গ দেখা যাবে। একে বলে আলফা থ্যালাসেমিয়া মাইনর বা আলফা থ্যালাসেমিয়া ট্রেট।
- তিনটি জিন ত্রুটিপূর্ণ হলে থ্যালাসেমিয়ার উপসর্গ মাঝারি থেকে মারাত্মক আকার ধারণ করে। একে বলা হয় হিমোগ্লোবিন এইচ ডিজ়িজ়।
- চারটি জিনই ত্রুটিপূর্ণ হলে বলা হয় আলফা থ্যালাসেমিয়া মেজর বা হাইড্রপস ফিটালিস।
- একটি জিন ত্রুটিপূর্ণ হলে কিছুটা কম উপসর্গ দেখা যায়। একে বলা হয় বিটা থ্যালাসেমিয়া মাইনর বা বিটা থ্যালাসেমিয়া ট্রেট।
- দু'টি জিন ত্রুটিপূর্ণ হলে মাঝারি থেকে মারাত্মক উপসর্গ দেখা যায়। একে বলে বিটা থ্যালাসেমিয়া মেজর অথবা হাইড্রপস ফিটালিস।
থ্যালাসেমিয়া - কীভাবে হয় ?
যে কোন সাধারন ব্যাক্তির শরীরে ৪৬ টি ক্রোমোজম থাকে, তার ২৩টি পিতা থেকে এবং বাকি ২৩টি তার মায়ের থেকে আসে। যে কোন ধরনের থ্যালাসেমিয়াই বংশগত হয়, অর্থাৎ কোন পিতা মাতার শরীরের DNA তে থ্যালাসেমিয়া জীন থাকলে, তা তাদের শিশুর শরীরে চলে আসে ও সেই শিশুটি থালাসেমিয়া রোগে আক্রান্ত হয় ।- মাতা বা পিতা কারো শরীরেই যদি থ্যালাসেমিয়ার জীন না থাকে, তাহলে শিশুটি সম্পূর্ন সুস্থ হয়
- যদি মাতা বা পিতার মধ্যে কোন একজনের শরীরে থ্যালাসেমিয়ার জীন থাকে তাহলে, শিশুর থ্যালাসেমিয়া হওয়ার ৫০ শতাংশ সম্ভাবনা থাকে
- যদি মাতা বা পিতা দুজনের শরীরেই থ্যালাসেমিয়ার জীন থাকে, তাহলে শিশুরও থ্যালাসেমিয়া হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা থাকে
থ্যালাসেমিয়া - লক্ষণসমূহ
- রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়া
- হলদে ত্বক বা জন্ডিস
- প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া
- লিভার বেরে যায়
- সংক্রমণ বা ইনফেকশন
- বুক ধড়ফড় করা
- অস্বস্তি এবং শ্বাসকষ্ট
- দুর্বলতা এবং অবসাদ অনুভব
- হাড়ের গঠন অস্বাভাবিক হয়
- গাঢ় রঙের প্রস্রাব
- হৃৎপিণ্ডে সমস্যা
- মুখ-মন্ডল ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
- মুখের হাড়ের বিকৃতি
- ধীরগতিতে শারীরিক বৃদ্ধি
থ্যালাসেমিয়া - রোগ শনাক্ত
- এইচপিএলসি - হাই পাওয়ার লিকুইড ক্রোমাটোগ্রাফি
- কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট
- ডিএনএ টেস্ট
- হিমোগ্লোবিন ইলেকট্রোফোরেসিস টেস্ট
এখানে কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট অর্থাৎ রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তে লোহিত রক্তকণিকার মাত্রা, লোহিত রক্ত কণিকার আকারের পরিবর্তন, বিবর্ণ লোহিত রক্ত কণিকা, লোহিত রক্ত কণিকায় হিমোগ্লোবিনের অসম থাকা, শিশুর রক্তে আয়রনের পরিমাণ, হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ইত্যাদি জানা যায়। আবার ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে রোগীর থ্যালাসেমিয়া আছে কিনা অথবা রোগী ত্রটিপূর্ণ হিমোগ্লোবিন জিন বহন করছে কিনা তা নির্ণয় করা যায়। গর্ভস্থ সন্তানের থ্যালাসেমিয়া আছে কিনা তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য কোরিওনিক ভিলিয়াস স্যাম্পলিং, এ্যামনিওসেনটিসিস, ফিটাল ব্লাড স্যাম্পলিং ইত্যাদি পরীক্ষা করা যেতে পারে।
থ্যালাসেমিয়া - চিকিৎসা
ব্লাড ট্রান্সফিউশন:- এ ক্ষেত্রে রোগীকে নিয়মিত রক্ত বদলাতে হয়। রক্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে তিনটি ভাগ রয়েছে।- সুপার ট্রান্সফিউশন: শিশুর জন্মের প্রথম ছ'মাসের মধ্যে মেজর থ্যালাসেমিয়ার জন্য সুপার ট্রান্সফিউশন প্রোগ্রাম নেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে রক্তে হিমোগ্লোবিন ১২ গ্রাম/ডিএল-এর কমে নামতে দেওয়া হয় না। এই চিকিৎসার ফলে একজন রোগী তিরিশ বছর পর্যন্ত ভাল থাকতে পারেন।
- হাইপার ট্রান্সফিউশন: অন্য দিকে পূর্ণবয়স্কদের জন্য প্রয়োগ করা হয় হাইপার ট্রান্সফিউশন। এখানে রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ১০ থেকে ১২ গ্রাম/ডিএল-এর মধ্যে রাখা হয়।
- সেফ লেভেল: আরও একটি পদ্ধতি হল সেফ লেভেল। এই স্তরে সপ্তাহে এক দিন রোগীকে হিমোগ্লোবিনের লেভেল বা স্তর ধরে রাখতে রক্ত দিতে হয়।
মেডিকেশন ও সাপ্লিমেন্ট-আয়রন সিলেকশন:- দেহের অতিরিক্ত আয়রন বার করে দেওয়ার জন্য আয়রন চিলেটিং দেওয়া হয়ে থাকে। আয়রনযুক্ত খাবার এবং ওষুধ খাওয়া চলবে না। এর সঙ্গে ফলিক অ্যাসিড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে দেওয়া হয়ে থাকে। বাড়তি আয়রন শরীর থেকে বার করে দেওয়া যেমন প্রয়োজন, তেমনই নিয়মিত ফলিক অ্যাসিড এবং ক্যালসিয়াম খাওয়াও জরুরি।
প্লীহা ও গল ব্লাডার বাদ:- বারবার রক্ত দেওয়ার ফলে অনেকের প্লীহা বড় হয়ে যায়। তখন সেটি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে বাদ দিয়ে দেওয়া বাঞ্ছনীয়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে গল ব্লাডারও বাদ দেওয়া হয়।
বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট:- অস্থিমজ্জা প্রতিস্থাপন বা বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্টেশন কার্যকর চিকিৎসা। তবে এই চিকিৎসা পদ্ধতি অনেক জটিল এবং খরচসাপেক্ষ।
হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা :- যেহেতু এটি একটি জেনেটিক বা জিনগত রোগ এবং এই রোগের ভাল একটি চিকিৎসা হলো হোমিওপ্যাথি। এ ক্ষেত্রে রিয়েল হোমিপ্যাথিক থেরাপিউটিক সিস্টেমে চিকিৎসা দিলে আশানুরূপ ফলাফল নিয়ে আসা যায়। এ ক্ষেত্রে চিকিৎসক রোগীর এবং তার পিতা-মাতা, দাদা-দাদি, নানা-নানী অর্থাৎ পারিবারিক হিস্ট্রি নিয়ে চিকিৎসা শুরু করবেন। পেসেন্টের অভিভাবকের উচিত কেইস টেকিং এর সময় যথাযথ তথ্যাদি দিয়ে চিকিৎসককে সহায়তা করা। তবে এর জন্য রিয়েল হোমিপ্যাথিক থেরাপিউটিক সিস্টেমে দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করুন।
যা যা জেনেছেন
- থ্যালাসেমিয়া কি
- থ্যালাসেমিয়া রোগীর লক্ষণ
- থ্যালাসেমিয়ার লক্ষণ
- থ্যালাসেমিয়া রোগের কারন
- থ্যালাসেমিয়া কি কারনে হয়
- থ্যালাসেমিয়া রোগ কেন হয়
- থ্যালাসেমিয়া রোগীর বিয়ে
- থ্যালাসেমিয়া রোগীর খাবার
- থ্যালাসেমিয়া ডাক্তার
- থ্যালাসেমিয়া পরীক্ষা
- হিমোগ্লোবিন ই বিটা থ্যালাসেমিয়া
- থ্যালাসেমিয়া টেস্ট
- থ্যালাসেমিয়া হাসপাতাল
- থ্যালাসেমিয়া চিকিৎসা
- থ্যালাসেমিয়া কি ধরনের রোগ
ডাঃ দেলোয়ার জাহান ইমরান
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক (রেজিঃ নং-৩৩৪৪২)
ডিএইচএমএস (বিএইচএমসি এন্ড হসপিটাল), ডিএমএস; ঢাকা
যোগাযোগঃ নিউটাউন হোমিও হল, নিউটাউন কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন, সাইনবোর্ড, ডেমরা, ঢাকা
Phone: +88 01671-760874; 01977-602004 (শুধু এপয়েন্টমেন্টের জন্য)
About Me: Profile ➤ Facebook ➤ YouTube ➤
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক (রেজিঃ নং-৩৩৪৪২)
ডিএইচএমএস (বিএইচএমসি এন্ড হসপিটাল), ডিএমএস; ঢাকা
যোগাযোগঃ নিউটাউন হোমিও হল, নিউটাউন কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন, সাইনবোর্ড, ডেমরা, ঢাকা
Phone: +88 01671-760874; 01977-602004 (শুধু এপয়েন্টমেন্টের জন্য)
About Me: Profile ➤ Facebook ➤ YouTube ➤