সিওপিডি এবং এর হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ও চিকিৎসা সম্পর্কে থাকছে এ পর্বে। ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারী ডিজিজ (COPD - Chronic Obstructive Pulmonary Disease) যাকে সহজ বাংলায় পুরাতন বা দীর্ঘস্থায়ী অবরোধক অর্থাৎ রুদ্ধ শ্বাস ফুসফুসীয় ব্যাধি বলে অবহিত করা হয়। সিওপিডি এর প্রচলিত পরিস্থিতি হল ক্রনিক ব্রংকাইটিস (Chronic Bronchitis), এম্ফাইসেমা (Emphysema) এবং স্থায়ীভাবে শ্বাসকষ্ট। কোন ব্যক্তির দীর্ঘস্থায়ী বা ক্রনিক ব্রংকাইটিস হলে তার উপসর্গগুলি হবে এক নাগাড়ে কাশি আর তার সঙ্গে শ্লেষ্মা ক্ষরণ।
এম্ফাইসেমার ক্ষেত্রে, অ্যালভিওলাই অর্থাৎ আমাদের ফুসফুসের মধ্যে থাকা ছোটো ছোটো বায়ুথলি আক্রান্ত হয় এবং বিভিন্ন বায়বীয় অস্বস্তিকারক পদার্থ যেমন: সিগারেটের ধোঁয়া, ক্রমাগত ধূলোবালিতে থাকা, কারখানার দূষিত ধোঁয়া ইত্যাদির কারণে ধীরে ধীরে ধ্বংস হয়ে যায়। এখানে মূলতঃ বায়ু থলিগুলির বেশ কিছু দেয়াল নষ্ট হয়ে যায়। যেহেতু এই দেয়ালের মাধ্যমেই আমাদের রক্ত প্রয়োজনীয় অক্সিজেন পায়, নষ্ট দেয়ালের জন্যে আমাদের শরীর যথেষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন পায় না।
সিওপিডি খুবই জটিল প্রকৃতির রোগ কারণ এটি ধীরে ধীরে ডেভেলপ করে এবং প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে ঠিক করতেও বেশ সময় নিয়ে থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই। যাদের বয়স চল্লিশের উপর তাদের ক্ষেত্রেই এই রোগের প্রকোপটা বেশি দেখা যায় অর্থাৎ এটা মধ্য বয়সে বা বৃদ্ধ অবস্থায় ধরা পড়ে। আর সে বয়সে লোকজন আরো বিভিন্ন প্রকার স্বাস্থ্য সমস্যায়ও আক্রান্ত থাকেন। সিওপিডি শুরু হয় ধীরে ধীরে। কিন্তু বাড়তে বাড়তে এমন অবস্থায় পৌঁছায় যে, হাঁটাচলা করাও কঠিন হয়ে ওঠে। এটি সারানোর কোন এলোপ্যাথিক ওষুধ নেই। তবে বিভিন্ন এলোপ্যাথিক বা রাসায়নিক ঔষধ দিয়ে উপসর্গকে কিছুটা প্রশমিত রাখা যায় এবং রোগী আরাম পায়।
সিওপিডি সমস্যায় বহুলোক তাদের কর্মক্ষমতা হারাচ্ছে এবং বহু লোক মারাও যাচ্ছে। এটা যে ধীর গতিতে ডেভেলপ করে তাতে অনেকেই বুঝতেই পারে না যে তারা এই সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক কোটি কুড়ি লক্ষ লোকে এই অসুখে ভুগছে। আসল সংখ্যা হয়ত তার থেকেও বেশী। তাদের অনেকেই প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় আওতাধীনে না এসে এলোপ্যাথিক রাসায়নিক ঔষধ গ্রহণ করে থাকে যার কারণে এই সমস্যায় তাদের মৃত্যু হারও বেশি।
এই রোগের কার্যকার কোন এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নেই তবে জটিলতা বা কষ্ট কমায় এবং আরাম দেয়। তবে হোমিওপ্যাথিতে এই সমস্যার স্থায়ী চিকিৎসা রয়েছে। সিপিওডি সমস্যায় ঠিকঠাক চিকিৎসা না হলে জটিলতা গুরুতর আকার ধারণ করে যেমন হৃৎপিণ্ডের সমস্যা এবং শ্বাস সংক্রান্ত ক্রনিক সংক্রমণ ইত্যাদি।সিওপিডি COPD সমস্যায় প্রাথমিক অবস্থায় যেমন কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ প্রকাশ পায় ঠিক তেমনি সমস্যার বিলম্বিত অবস্থায়ও জটিল কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ প্রকাশ পায়। তবে এটি কষ্টদায়ক রোগ হওয়ায় যথাসময়ে প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহণ করা উচিত।
সিওপিডি সমস্যায় প্রাথমিক লক্ষণ ও উপসর্গ
- ক্রনিক স্থায়ী কাশি বা নিরন্তর কাশি
- কাশতে কাশতে বুকে চাপবোধ এবং দমবন্ধ ভাব
- কাশির সাথে শ্লেষ্মা নির্গত হওয়া
- শ্বাসকষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক
- শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় শব্দ হওয়া
- বুকের মধ্যে সাই সাই শব্দ হতে থাকে
- হাঁটাচলা করলে নিদারুন ক্লান্তি
সিওপিডি সমস্যায় বিলম্বিত লক্ষণ ও উপসর্গ
- হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া
- জিহ্বা নীল বর্ণ ধারণ করা
- নখ ও ঠোঁটের রঙ নীলাভ হয়ে যাওয়া
- হাতের আঙুলের অংগ্রভাগ ফুলে উঠা
- পা, পায়ের পাতা, গোড়ালী ফুলে উঠা
- মানুষিক ভাবে অন্যমনস্ক থাকা
যে যে কারণে সিওপিডি জেগে উঠতে পারে
- যাদের এই সমস্যার পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে।
- রোগীর নিজের বা নিকট আত্মীয়ের কারো টিবি বা যক্ষার ইতিহাস রয়েছে।
- যারা হাঁপানি বা শ্বাসকষ্ট সমস্যায় ভোগছেন এবং এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নিয়ে রোগ নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
- সিওপিডি সমস্যার পেছনে যে বিষয়টি বাহ্যিক ভাবে সবচেয়ে বেশি ট্রিগার করে তা হল - ধুমপান। অ্যাক্টিভ ও প্যাসিভ ধূমপায়ীরা সমান ঝুঁকি থাকে।
- দীর্ঘদিন ধরে কর্মস্থলের ক্ষতিকারক ধোঁয়া, ধুলো, উগ্র রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শ সিওপিডি সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলে।
- দীর্ঘদিন যাবৎ যারা হার্টের সমস্যা ও ডায়াবেটিস আক্রান্ত আছেন এবং এ সমস্যায় এলোপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহণ করে রোগ নিয়ন্ত্রণ করছেন।
- বায়ু দূষণ, যানবাহনের ধোয়াও এ রোগ জেগে উঠার ক্ষেত্রে ট্রিগার করে।
আপনি হয়তো দেখে থাকবেন একই সাথে বহুলোক একই রকম পরিবেশে বসবাস করলেও তাদের সবাই কিন্তু এই সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছে না। তাদের থেকে কিছু মানুষ এই সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন। একই পরিবেশে বাকিদের সমস্যা হচ্ছে না কেন ? একটা প্রশ্ন থেকে যায়। আসুন উত্তরটাও জেনে নিই।
সিওপিডি সমস্যার চিকিৎসা
সিওপিডি এর কার্যকর এবং স্থায়ী কোন এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নেই। কারণ এই রোগগুলি জেগে উঠে আমাদের ডিএনএ তে বিদ্যমান প্রিডোমিন্যান্ট কিছু প্রকৃত রোগ অর্থাৎ True Disease এর কারণে যা মূলত মানুষ জন্মগত ভাবে প্রাপ্ত হয়। বয়স বাড়ার সাথে বিভিন্ন পরিপোষক কারণ, অস্বাস্থ্যকর জীবন ধারা, পরিবেশগত বা অন্যকোন কারণে যখন ব্যক্তির ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হতে থাকে তখন ব্যক্তির ডিএনএ তে বিদ্যমান প্রকৃত রোগটি তার ফুসফুসে বিভিন্ন লক্ষণ উপসর্গ জাগিয়ে তুলে। এইসব লক্ষণ উপসর্গকে বিভিন্ন নামে চিহ্নিত করে চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে বিভিন্ন থেরাপিউটিক সিস্টেমে। ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ COPD (Chronic Obstructive Pulmonary Disease) হলো তেমনি কিছু লক্ষণ বা উপসর্গের সমষ্টি।
ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ - সিওপিডি নির্মূলের সর্বাধিক কার্যকর চিকিৎসা হলো হোমিওপ্যাথি। তবে এর জন্য দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসক নির্বাচন করা প্রয়োজন যিনি এই সমস্যাগুলির চিকিৎসা দিতে জানেন।
প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যাকে স্থায়ী ভাবে ঠিক করতে হলে ব্যক্তির শিশু কালের হিস্ট্রি, তার নিকট আত্মীয় যেমন মা-বাবা, ভাই-বোন, দাদা-দাদি, নানা-নানীর হিস্ট্রি প্রয়োজন। তারা কে কোন কোন রোগে ভুগেছেন কে কোন রোগে মারা গিয়েছেন সেগুলির বিস্তারিত তথ্য জেনেই দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসক রোগীর ডিএনএ তে প্রিডোমিন্যান্ট প্রকৃত রোগটি নির্ণয় করে চিকিৎসা শুরু করবেন এবং সমস্যার পেছনে কোন পরিপোষক কারণ থাকলে সেটা থেকেও পেশেন্টকে দূরে থাকতে বলবেন।
যেহেতু একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম প্রকৃত রোগ বা True Disease বিদ্যমান থাকতে পারে এবং একেক জনের রোগের তীব্রতা বা জটিলতা একেক রকম হয়ে থাকে তাই একেক জনের ক্ষেত্রে আরোগ্য হওয়ার ধরণ এবং সময়ও ভিন্ন হয়ে থাকে। তবে পেশেন্টের উচিত ইনভেস্টিগেশনের সময় বিস্তারিত তথ্য দিয়ে চিকিৎসকে সাহায্য করা এবং ধৈর্য ধরে চিকিৎসা নেয়া। কারণ হোমিওপ্যাথিক পদ্ধতিতে স্টেপ বাই স্টেপ চিকিৎসার মাধ্যমে এই সমস্যা এক সময় স্থায়ীভাবে নির্মূল হয়ে যায় এবং রোগী স্থায়ী আরোগ্য লাভ করে থাকে।
সিওপিডি সমস্যায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধ
ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারী ডিজিজ এর ক্ষেত্রে ক্রনিক ব্রংকাইটিস, এম্ফাইসেমা এবং স্থায়ীভাবে শ্বাসকষ্ট সমস্যায় (Synthesis Repertory) রেপার্টরীতে যে যে হোমিও ঔষধ রয়েছে-যা যা জেনেছেন
- সিওপিডির ঔষধ
- সিওপিডি কি
- সিওপিডির লক্ষণ
- সিওপিডি রোগ কি
- সিওপিডি রোগের লক্ষণ
- সিওপিডি রোগ নির্ণয়
- সিওপিডি ও এজমা
- সিওপিডি এর কারণ কি
- সিওপিডি এর চিকিৎসা
- সিওপিডি এর পুরো নাম কি
- ব্রংকাইটিস এর লক্ষণ
- ব্রংকাইটিস কি ভালো হয়
- ব্রংকাইটিস কেন হয়
- ব্রংকাইটিস এর হোমিও চিকিৎসা
- ব্রংকাইটিস চিকিৎসা
- ব্রংকাইটিস রোগের চিকিৎসা
- Copd লক্ষণ
- ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস কি
- Copd বাংলা
- Copd কি
- ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ
ডাঃ দেলোয়ার জাহান ইমরান
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক (রেজিঃ নং-৩৩৪৪২)
ডিএইচএমএস (বিএইচএমসি এন্ড হসপিটাল), ডিএমএস; ঢাকা
যোগাযোগঃ নিউটাউন হোমিও হল, নিউটাউন কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন, সাইনবোর্ড, ডেমরা, ঢাকা
Phone: +88 01671-760874; 01977-602004 (শুধু এপয়েন্টমেন্টের জন্য)
About Me: Profile ➤ Facebook ➤ YouTube ➤
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক (রেজিঃ নং-৩৩৪৪২)
ডিএইচএমএস (বিএইচএমসি এন্ড হসপিটাল), ডিএমএস; ঢাকা
যোগাযোগঃ নিউটাউন হোমিও হল, নিউটাউন কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন, সাইনবোর্ড, ডেমরা, ঢাকা
Phone: +88 01671-760874; 01977-602004 (শুধু এপয়েন্টমেন্টের জন্য)
About Me: Profile ➤ Facebook ➤ YouTube ➤