স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের চিকিৎসা কৌশল বিষয়ে আলোকপাত করা হবে এই পর্বে। ইতিপূর্বে আপনারা IBS সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন বিগত দশটি অনুচ্ছেদে। সেগুলিতে আইবিএস সমস্যার প্রকৃত কারণ লক্ষণ চিকিৎসা এবং নির্মূলকৃত প্রামাণ্য কেইস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে বিস্তারিত ভাবে।
৫/১০/১৫ বছর যাবৎ আইবিএস সমস্যায় ভুগে চলেছেন। একের পর এক ডাক্তার পরিবর্তন করে চলেছেন আর একের পর এক মেডিক্যাল টেস্ট করে চলেছেন অযথাই। তারপরও আপনার টনক নড়ছে না - কেনই বা আপনি অযথা মেডিক্যাল টেস্ট করছেন আর কেনই বা আপনি বছরের পর বছর ধরে এলোপ্যাথিক বা বিভিন্ন রাসায়নিক ঔষধ খেয়ে চলেছেন যেগুলি শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক আরাম দেয়ার জন্য তৈরী করা হয়েছে রোগ নির্মূল করার জন্য নয়। অথচ ওয়ান টাইম ঔষধ গুলি আপনি খেয়ে চলেছেন বছর বছর ধরে। এতে রোগ সারার পরিবর্তে আপনার রোগ জটিলতা দিন দিন বেড়ে চলেছে আর ভাইটাল ফোর্স ক্রমাগত দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে। সাথে সাথে আরো নানা প্রকার জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এ দেশের অধিকাংশ মানুষই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শাস্ত্র সম্পর্কে খুব ভালো জ্ঞান রাখনে না বিধায় এলোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথির পার্থক্য তারা বুঝেন না। ক্রনিক রোগের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগ করতে হয় পেসেন্টের DNA তে সক্রিয় True Disease এর অবস্থার আলোকে। তাই এক্ষেত্রে এলোপ্যাথিতে রোগের স্থানিক কারণ নির্ণয়ের জন্য যে মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়ে থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলির কোন প্রয়োজন নেই বললেই চলে।
তাই হোমিপ্যাথিক প্রিন্সিপাল অনুযায়ী ইনভেস্টিগেশন করে রোগীর DNA তে সক্রিয় True Disease এর অবস্থার আলোকে চিকিৎসা করাই হলো কার্যকর চিকিৎসা কৌশল। তবে এখানে ডাক্তার এবং পেসেন্ট উভয়কেই কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে। কারণ এই চিকিৎসার মাধ্যমে রোগী একজন পরিপূর্ণ সুস্থ মানুষে পরিণত হবেন। বিষয়টি যে খুব একটা সহজ তা না আর যে খুব একটা কঠিন তাও নয়। চিকিৎসক নির্দিষ্ট অর্ডারে ঔষধ প্রয়োগ করে সেগুলির ইমপ্রুভমেন্ট দেখে দেখে সামনে আগাবেন এবং সাথে সাথে রোগীর মধ্যে পরিবর্তনও হতে থাকবে। এক সময় রোগী সুস্থতা লাভ করবেন। এটাই মূলত আইবিএস এবং যেকোন ক্রনিক রোগ স্থায়ী ভাবে নিরাময়ের প্রকৃত চিকিৎসা কৌশল।
আইবিএস এর প্রকৃত কারণ মূলতঃ কি?
আপনি যখন হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিতে এই সমস্যার চিকিৎসা নিতে যাবেন তখন সে চিকিৎসা পদ্ধতির চিকিৎসক রোগ লক্ষণকে অবলম্বন করে স্থানিকভাবে সমস্যাটির কারণ নির্ণয় করার প্রচেষ্টা চালাবে যদিও বহু ক্ষেত্রেই তারা কোন কারণই খুঁজে পায় না। আবার দেখা যায়, কিছু স্থানিক কারণ খুঁজে পেলেও সেটিকে অবলম্বন করে চিকিৎসা দিলে রোগ লক্ষন সাময়িক ভাবে উপশম হয় কিন্তু ঔষধ না খেলে কিছুটা সময় পরেই আবার ফিরে আসে। এর পেছনের বাস্তব কারণ হলো, আপনার পেটে অথবা অন্ত্রে ঘা, ক্ষত বা ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মূলত আপনার এই সমস্যা হওয়ার পেছনের প্রকৃত কারণ নয়।
নানা প্রকার সুপারফিশিয়াল বা উপরি উপরি চিন্তা করে অথবা নানা প্রকার ব্যর্থ মেডিক্যাল টেস্ট করে আইবিএস সমস্যার কারণ নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয়ে থাকে আর সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রে। কিন্তু এক্ষেত্রে আইবিএস কখনও নির্মূল করা সম্ভব হয়না সাময়িক আরাম পাওয়া যায় মাত্র। এলোপ্যাথিক সিস্টেমে মূলত রোগের স্থানিক কারণ নির্ণয় করেই চিকিৎসা দেয়া হয়। তাই সেটি না পেলে এলোপ্যাথিতে রোগের চিকিৎসাও হয় না ঠিক ঠাক ভাবে। যেহেতু এলোপ্যাথিসহ অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে উপরি উপরি অর্থাৎ ঐ স্থানের বর্তমান অবস্থা চিন্তা করে আইবিএস এর চিকিৎসা দেয়া হয় তাই সাময়িক একটু উপশম ছাড়া রোগ আদৌ নির্মূল হয় না। যেমন পাতলা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে তাৎক্ষনিক ভাবে সেটা ঠিক করার ঔষধ দেয়া হয়। সমস্যা সাময়িক ঠিক হয়ে রোগী আরাম পায় বটে কিন্তু ঔষধ না খেলেই সমস্যা আবার দেখা দেয়।
এর প্রধান কারণ হলো আপনি মূলত একটি প্রকৃত রোগের সৃষ্ট কিছু উপসর্গ বা লক্ষণ ঠিক করার চিকিৎসা করছেন। তাই লক্ষণ ঠিক হচ্ছে কিন্তু প্রকৃত রোগের চিকিৎসা না হওয়ায় লক্ষণ বা উপসর্গ আবার প্রকাশ পাচ্ছে আর ভেতরের প্রকৃত রোগ বা True Disease দিন দিন আরো জটিল হচ্ছে। সেই প্রকৃত রোগটি মূলত কি আর তা দূর করার উপায়ই বা কি? এ সম্পর্কে বর্তমান বিশ্বে একটি মাত্র চিকিৎসা শাস্ত্রই ধারণা দিয়ে থাকে তা হল - হোমিওপ্যাথি।
শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর মিলনে ঘন্টা খানেক হলো একটি জাইগোট তৈরি হয়েছে। সেখানে রয়েছে তার পিতা মাতা উভয়ের থেকে প্রাপ্ত ক্রোমোজোম যা হচ্ছে বংশগতির প্রধান উপাদান। মজার ব্যাপার হলো জাইগোটটির বয়স ১ ঘন্টা হলেও তার ভাইটাল ফোর্সকে ঘিরে যে ক্রোমোজোম রয়েছে তার বয়স কিন্তু কয়েক লক্ষ বছর। এর মাধ্যমেই আপনার পিতা-মাতা, দাদা-দাদী বা তারও পূর্ব পুরুষ থেকে সকল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল অর্জন করে রেখেছেন জন্ম থেকেই। এই রোগগুলির সবকটি সরাসরি আপনার মধ্যে হয়তো প্রকাশিত হবে না। তবে যেটির জেনেটিক মেটেরিয়াল প্রকট থাকবে সেটি নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিতে থাকবে, যতদিন না আপনি প্রপার হোমিও ট্রিটমেন্ট নিয়ে সেটিকে ঠিক করেছেন।
তাছাড়া যতদিন আপনার ভাইটাল ফোর্স শক্তিশালী অবস্থায় থাকবে তত দিন ভেতরের প্রকৃত রোগটি বা জটিল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল এমনিতেই নিস্তেজ অবস্থায় থাকবে। আর যখন ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়ে যাবে তখন ভেতরের সেই True Disease বা প্রকৃত রোগটি প্রকট হয়ে উঠবে অথবা নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিবে। আইবিএস মূলত তেমনই একটি প্রকৃত রোগের তৈরী করা কিছু উপসর্গ মাত্র।
স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের চিকিৎসা কৌশল
স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের চিকিৎসা হলো জন্মলগ্ন থেকে আপনার DNA তে বর্তমান সক্রিয় True Disease কে নিষ্ক্রিয় করা। আর সেটি বর্তমান বিশ্বে হোমিওপ্যাথি ছাড়া আর কোন চিকিৎসা শাস্ত্রই করতে পারে না। তাই সুস্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সর্বাধিক কার্যকর।
কিন্তু এর মানে এই নয় যে - আপনি একজন হোমিও ডাক্তারের কাছে গেলেন, কিছু দিন ঔষধ খেলেন আর ঠিক হয়ে গেলেন। আপনার DNA থেকে প্রকৃত রোগের জেনেটিক ম্যাটারিয়াল নিষ্ক্রিয় করা মানে হলো আপনি পা থেকে মাথা পর্যন্ত যাবতীয় রোগ থেকেই মুক্ত হয়ে যাচ্ছেন। এই মেথডে মূলত শুধু আপনার পেটের পীড়ার সিম্পটোম নেয়া হবে না। এখানে আপনার সারা জীবনের তথ্যাদি, আপনার ফ্যামিলি হিস্ট্রি নিয়ে আপনার DNA তে অবস্থানরত True Disease টি নির্ণয় করে চিকিৎসক সেটিকে প্রচ্ছন্ন করার ট্রিটমেন্ট দিবেন। এর জন্য কিছুটা সময় দরকার। কারণ DNA তে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হলে দরকারি মেডিসিনগুলি কয়েকটা সাইকেল তৈরী করে নির্দিষ্ট অর্ডারে প্রয়োগ করতে হয় যা ভালো বুঝেন রিয়েল হোমিওপ্যাথিক মেথডে দক্ষ একজন চিকিৎসক। আর তাই চিকিৎসা নেয়ার পূর্বে এই মেথডে এক্সপার্ট হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করাও আপনার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
আইবিএস চিকিৎসার জন্য রোগীরা পূর্বেকার করা অপ্রয়োজনীয় মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে আসলে বহু ক্ষেত্রেই আমি তাদের বলি - যাওয়ার সময় সামনের ডাস্টবিনে সেগুলি ফেলে যাবেন। কারণ এখানে প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দিতে হলে হোমিওপ্যাথিক প্রিন্সিপ্যাল অনুযায়ী রোগীর ইনভেস্টিগেশন প্রয়োজন সেটার দিকে রোগীর পূর্ণ মনোযোগ থাকলে ঠিক ঠাক ভাবে চিকিৎসা আগানো সম্ভব। কিন্তু নিজেদের অজ্ঞতা বা মূর্খতা বশতঃ বহু রোগীরাই সেদিকে তেমন মনোযোগ দেন না। অনেককে বুঝালেও বুঝতে চান না। আগেই বলেছি হোমিওপ্যাথি এবং এলোপ্যাথি সম্পূর্ণ আলাদা ট্রিটমেন্ট সিস্টেম। দুটিতে রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতিও আলাদা। এলোপ্যাথিতে রোগ নির্ণয়ের জন্য মেডিক্যাল টেস্ট করে আপনার হাজার হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। অথচ হোমিওপ্যাথিতে আপনার অযথা কোন খরচ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে হোমিও চিকিৎসক রোগীর এবং তার ফ্যামিলি হিস্ট্রি নিয়ে বিদ্যমান প্রকৃত রোগটি নির্ণয় করবেন। একত্রে যে যে তথ্যগুলি বেশি দরকার হয়ে পড়ে -
একটি প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দিতে হলে উপরিউক্ত ইনভেস্টিগেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি আপনার লাখ থাকার মেডিক্যাল টেস্ট থেকেও বহুগুন বেশি মূল্যবান। কারণ, মেডিক্যাল টেস্ট করে স্থানিক লক্ষণের পেছনের কারণটি জানা যায় মাত্র। তখন এর চিকিৎসা দিলে স্থানিক কারণটি কিছুটা সময়ের জন্য দূর হয় সাথে সাথে রোগী কিছুটা আরাম পে কিন্তু ভেতরের প্রকৃত রোগ কখনই দূর হয় না বিধায় রোগী স্থায়ীভাবে আরোগ্য লাভ করেন না।- বর্তমান কষ্টের বিবরণ
- এর সাথে সম্পর্কিত লক্ষণ
- শিশু কাল থেকে কখন কি কি রোগে ভুগছেন বা ভুগেছেন
- এক থেকে ছয় মাস বয়সের মধ্যে রোগীর পায়খানার অবস্থা কেমন ছিল
- এক থেকে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত রোগীর জীবন দর্শন
- কুকর, সাপ, বিড়াল, বেজি, বানর বা অন্যকোন প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের হিস্ট্রি
- কোন প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের ফলে টিকা নেয়ার হিস্ট্রি
- রোগীর মা, বাবা, দাদা, দাদী, নানা, নানী কে কখন কি কি রোগে ভুগছেন
- আনুসঙ্গিক আরো তথ্যাদি....
যা যা জেনেছেন
- আইবিএস থেকে মুক্তির উপায়
- আইবিএস এর হোমিও চিকিৎসা
- আইবিএস রোগের চিকিৎসা
- আইবিএস হোমিও চিকিৎসা
ডাঃ দেলোয়ার জাহান ইমরান
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক (রেজিঃ নং-৩৩৪৪২)
ডিএইচএমএস (বিএইচএমসি এন্ড হসপিটাল), ডিএমএস; ঢাকা
যোগাযোগঃ নিউটাউন হোমিও হল, নিউটাউন কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন, সাইনবোর্ড, ডেমরা, ঢাকা
Phone: +88 01671-760874; 01977-602004 (শুধু এপয়েন্টমেন্টের জন্য)
About Me: Profile ➤ Facebook ➤ YouTube ➤
রেজিস্টার্ড হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক (রেজিঃ নং-৩৩৪৪২)
ডিএইচএমএস (বিএইচএমসি এন্ড হসপিটাল), ডিএমএস; ঢাকা
যোগাযোগঃ নিউটাউন হোমিও হল, নিউটাউন কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন, সাইনবোর্ড, ডেমরা, ঢাকা
Phone: +88 01671-760874; 01977-602004 (শুধু এপয়েন্টমেন্টের জন্য)
About Me: Profile ➤ Facebook ➤ YouTube ➤