ডায়াগনসিস বা মেডিক্যাল টেস্টের ফাঁদে আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা!
ধরা যাক, দু'দিনেও জ্বর ভালো না হওয়ায় আপনি ডাক্তারের কাছে গেলেন। ডাক্তার সাহেব আপনাকে শুরুতেই তিনটি পরীক্ষা (টেস্ট) দেবেন। টেস্ট রিপোর্ট-এ জ্বরের কারণ খুঁজে পাওয়া না গেলেও কোলেস্টেরল আর ব্লাড সুগার লেভেল একটু বেশি পাওয়া যাবে! এখন আপনি আর জ্বরের রোগী নন, ডাক্তারের কথায় আপনিও বিশ্বাস করবেন- আপনার কোলেস্টেরল বেশি আর প্যারা-ডায়াবেটিস হয়ে আছে। আপনাকে এখন থেকে কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণের ওষুধ খেতে হবে, সঙ্গে অনেকগুলো খাবারে নিষেধাজ্ঞা। আপনি খাবারের নিষেধাজ্ঞা ঠিকঠাক না মানলেও ওষুধ খেতে ভুল করবেন না।
এভাবে তিন মাস যাওয়ার পর আবার টেস্ট। এবারে দেখা যাবে কোলেস্টেরল-এর মাত্রা কিছুটা কমেছে, কিন্তু রক্তচাপ বেড়ে গেছে- যেটাকে নিয়ন্ত্রণ করতে আরেকটি ওষুধ লাগবে। এদিকে কখন কী হয়ে যায়; এখনো তো কোনোকিছুই গোছানো হয়নি- এমন দুশ্চিন্তায় আপনার রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেছে। ফলে ডাক্তারের পরামর্শে অথবা নিজের বুদ্ধিতে ঘুমের ওষুধ খাওয়া শুরু করে দেবেন! ওদিকে একসঙ্গে এতোগুলো ওষুধ খাওয়ামাত্রই বুক জ্বালাপোড়া করে বিধায় প্রতিবেলা খাওয়ার আগে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেয়ে নিতে হবে। মাঝে মধ্যে সোডিয়াম কমে যায়, সেজন্যও আছে সাপ্লিমেন্ট!
এভাবে বছর খানেক যাওয়ার পর আপনি বুকে ব্যাথা অনুভব করায় হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে ছুটে গেলেন। ডাক্তার সবকিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলবেন, সময়মতো আসায় এই যাত্রায় বেঁচে গেলেন, আরেকটু দেরি করলেই সর্বনাশ হয়ে যেত! তারপর আরো কিছু বিশেষায়িত পরীক্ষা করে বলা হবে, আপনি যে ওষুধগুলো খাচ্ছেন, ওভাবেই চলবে, সঙ্গে হার্ট-এর জন্য আরো দু’টো ওষুধ খেতে হবে আর অবিলম্বে একজন হরমোন বিশেষজ্ঞের সঙ্গে দেখা করুন। সেখানে যাওয়ার পরে যোগ হবে ডায়াবেটিস-এর ওষুধ! এভাবে আরো ছয় মাস চলার পর প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দেবে। রুটিন চেক-আপ করতে গিয়ে জানতে পারবেন- আপনার কিডনিতে সামান্য সমস্যা আছে; ক্রিটিনিন একটু বেশি, নিয়মিত ওষুধ খেলে আর কোনো চিন্তা নেই। ফলে মোট ওষুধের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো দশ-এ।
আপনি এখন খাবারের চেয়ে ওষুধ বেশি খান আর নানারকম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় খুব দ্রুত মৃত্যুর দিকে ধাবিত হচ্ছেন! অথচ যে জ্বরের জন্য আপনি সর্বপ্রথম ডাক্তারের কাছে গিয়েছিলেন, তিনি যদি বলতেন, তেল আর চিনি খাওয়া বাদ দিন, পর্যাপ্ত জল পান করুন, কার্বোহাইড্রেড কমিয়ে টাটকা শাকসবজি ও ফলমূল বেশি করে খান আর ভোরবেলা ঘুম থেকে উঠে হাঁটাহাটি করুন. তাহলেই আপনার শরীর ফিট হয়ে যেত। কোনোপ্রকার ওষুধের প্রয়োজনই হতো না। কিন্তু সেটা করলে ডাক্তার সাহেব আর ওষুধ কোম্পানিগুলোর পেট ভরবে কিভাবে?!? তারচেয়েও বড় প্রশ্ন হলো- কিসের ভিত্তিতে ডাক্তারগণ আপনাকে কোলেস্টেরল, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কিডনি বিকল আর হৃদরোগী ঘোষণা করছেন, কী সেই মানদন্ড- যা কিনা বিনা চ্যালেঞ্জ-এ সমগ্র বিশ্বব্যাপী ব্যাপক চর্চিত হয়ে আসছে আর সেটি নির্ধারণ করলেন কে বা কারা??? প্রথমেই ডায়াবেটিস।
মানুষকে যেভাবে কৌশলে ডায়াবেটিস রোগী বানানো হচ্ছে !
১৯৭৯ সালে রক্তে শর্করার মাত্রা 200ml/dl দেখালে ডায়াবেটিস হিসেবে গণ্য করা হতো। সেই হিসেবে তখন সমগ্র পৃথিবীর মাত্র ৩.৫% মানুষ টাইপ-২ ডায়াবেটিস-এ আক্রান্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়। তারপর ১৯৯৭ সালে ইনসুলিন প্রস্তুতকারকদের চাপে সেই মাত্রা এক লাফে কমিয়ে 126ml/dl করা হয়। ফলে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ৩.৫% থেকে এক লাফে বেড়ে ৮% হয়ে যায় অর্থাৎ রোগের কোনোরূপ বহিঃপ্রকাশ ছাড়াই স্রেফ ব্যবসায়িক স্বার্থে ৪.৫% মানুষকে রোগী বানিয়ে ফেলা হলো! ১৯৯৯ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও এই মানদন্ডে সায় দেয়। ওদিকে ফুলে-ফেঁপে ওঠা ইনসুলিন প্রস্তুতকারকেরা অঢেল মুনাফা বিনিয়োগ করে সারাবিশ্বে নিত্য-নতুন প্ল্যান্ট বসাতে থাকে। তাদের চাপে নতি স্বীকার করে American Diabetes Association (ADA) ২০০৩ সালে রক্তে শর্করার মাত্রা 100ml/dl-কে ডায়াবেটিস রোগের মানদন্ড হিসেবে গণ্য করার ঘোষণা দেয়। ফলে কোনো কারণ ছাড়াই ২৭% মানুষ ডায়াবেটিস রোগী হয়ে যায়!
বর্তমানে American Diabetes Association (ADA) কর্তৃক ঘোষিত মানদন্ড >140mg/dl (P.P) or >100mg/dl (Fasting) or >HbA1C>5.6% হিসেবে বিশ্বের ৫০.১% মানুষকে কৌশলে ডায়াবেটিস রোগী বানিয়ে ফেলা হয়েছে! এদের অধিকাংশ ডায়াবেটিস রোগী না হওয়া সত্ত্বেও নিয়মিত ওষুধ খেয়ে নানাবিধ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে অর্থনৈতিকভাবে নিঃস্ব হয়ে মারা যাচ্ছেন। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, টেস্ট করালেই যে কোনো মানুষ প্রি-ডায়াবেটিস রোগী হিসেবে গণ্য হবেন! প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯৫৪ সালে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কনভেনশনে সিদ্ধান্ত হয় যে, প্রচলিত ওষুধ দিয়ে ৪৮টি রোগের চিরস্থায়ী নিরাময় সম্ভব নয়; সেই তালিকায় ডায়াবেটিসও রয়েছে।
কিন্তু আমাদের দেশের ওষুধ কোম্পানিগুলো ডায়াবেটিস-এর মানদন্ড হিসেবে রক্তে শর্করার মাত্রা ৬.৫%-৭% থেকে ৫.৫%-এ নামিয়ে আনার জন্য তাদের এজেন্ট/প্রতিনিধিদের দ্বারা অবিরাম ডাক্তারদের মগজ ধোলাই করে চলেছেন এবং অনেকাংশে সফলও হয়েছেন। পরিণামে আর কিছু হোক বা না হোক দেশে ডায়াবেটিসের ওষুধ বিক্রিতে মাত্রাতিরিক্ত প্রবৃদ্ধি সুনিশ্চিত হয়েছে। যদিও অনেক প্রাকৃতিক চিকিৎসক মনে করেন- রক্তে শর্করার মাত্রা সর্বোচ্চ ১১% পর্যন্ত ডায়াবেটিস হিসেবে গণ্য করা যায় না। প্রসঙ্গক্রমে আরেকটি ঘটনার কথাও উল্লেখ করা যেতে পারে।
২০১২ সালে আমেরিকার সুপ্রিম কোর্ট বিশ্ববিখ্যাত এক ওষুধ কোম্পানিকে তিন বিলিয়ন ডলার জরিমানা করেছিল। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে যে, তারা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য যে ওষুধ বাজারজাত করছে, তা খেয়ে ২০০৭ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রোগীর মৃত্যুহার ৪৩% বেড়ে গেছে! পরে জানা যায়, ওই কোম্পানির কর্তৃপক্ষ আগে থেকেই ব্যাপারটি জানত এবং তাদের ট্রায়াল থেকেও একই রিপোর্ট এসেছিল। কিন্তু তারা সেদিকে দৃষ্টিপাত না করে মুনাফা অর্জনকে প্রাধান্য দিয়েছিল, মানুষের প্রাণের কোনো মূল্য তাদের বিবেচনায় ছিল না। ফলে ওই সময়ে তারা প্রায় ৩০০ বিলিয়ন মুনাফা করে।
সোরিক, সিফিলিটিক, সাইকোটিক এবং টিউবারকুলার মায়াজম এর প্রধান কিছু বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আলোকপাত করা হবে এই পর্বে। ইতিপূর্বে আপনারা মানব দেহের প্রকৃত রোগগুলি সম্পর্কে জেনেছেন যেগুলি আমরা বংশানুক্রমিক ভাবে পেয়ে থাকি। সকল মায়াজমই হলো প্রকৃত রোগ। সেগুলির মধ্যে কিছু প্রকৃত রোগের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে আসুন জেনে নিই-
সোরিক- চুলকানি বা খোসপাঁচড়া দেখা দেয়। মনোকন্ডুয়ন হতে চর্মকন্ডুনের সৃষ্টি। চর্মপীড়া চাপা পড়ে সর্দি। শুষ্ক ও রস শূন্য উদ্ভেদ।
সিফিলিটিক- জননেন্দ্রিয়ে ক্ষতের সৃষ্টি প্রাথমিক লক্ষণ। বাগি, তাম্র বর্ণের উদ্ভেদ।
সাইকোটিক- দূষিত সহবাসের পর জননেন্দ্রিয়ে আঁচিল। প্রমেহ বা প্রস্রাবের কষ্ট।
টিউবারকুলার- জরায়ুর গঠন বিকৃত। নিদ্রিত হওয়ার পর শয্যায় মূত্রত্যাগ, মূত্রে এলবুমেন, নিদ্রাঘোরে বিনাস্বপ্নে বীর্যপাত। প্রস্রাবদ্বার দিয়া রক্তস্রাব।
যে যে রোগে আক্রান্ত হয়
সোরিক- উদরাময়, পেটফাঁপা, অজীর্ণ, চুলকানিযুক্ত চর্মরোগ, চক্ষু ও নাসিকা হতে জ্বালাকর স্রাব নিঃসরণ। প্রদাহ ও জ্বালাযুক্ত স্বরভঙ্গ, যে কোন অঙ্গে জ্বালাযুক্ত প্রদাহ। নানা যন্ত্রের শুধু কার্যগত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করাই সোরার কাজ।
সিফিলিটিক- পচনশীল যে কোন রোগ, দুর্গন্ধ পুঁজ ও রস নিঃসরণকারী চর্মপীড়া, দুর্গন্ধযুক্ত ঋতুস্্রাব ও প্রদরস্রাব। কর্ণ, নাসিকা ইত্যাদিতে ক্ষত ও দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব। প্রস্রাব যন্ত্রের ক্ষত, গলক্ষত। মেরুমজ্জার ক্ষত, অস্থিক্ষয়, মুখে ক্ষত ও দুর্গন্ধ লালাস্রাব। পচন, উদরে ক্ষত, অন্ধত্ব, বধিরতা, উন্মাদ ইত্যাদি।
সাইকোটিক- দেহের সকল ছিদ্র পথে যন্ত্রণাদায়ক স্রাব, স্রাব সংক্রান্ত বিশৃঙ্খলা ও ব্যথা, যন্ত্রণাদায়ক স্বরভঙ্গ, কাশি, শুষ্ক জাতীয় হাঁপানি, হুপিং কাশি, হৃদপিন্ডের যন্ত্রণা ও স্নায়বিক দুর্বলতা। মস্তিষ্ক আবরক ঝিল্লি প্রদাহ, বাত, স্নায়ুশূল, উদরশূল, গর্ভস্রাব, যন্ত্রণাদায়ক ঋতুস্রাব, অর্শ-ভগন্দর, বসন্ত, আঁচিল, টিউমার হওয়ার প্রবণতা, বন্ধ্যাত্ব, ক্যান্সার, অন্ডকোষ প্রদাহ ইত্যাদি।
টিউবারকুলার- শুষ্ক জাতীয় দাদ, একজিমা, উন্মাদ, কৃমি, ম্যালেরিয়া, ইনফ্লুয়েঞ্জা, যন্ত্রণাবিহীন স্বরভঙ্গ, অন্ধত্ব। দৈহিক শুষ্কতা। মেরুমজ্জার ক্ষয়, কার্বাংকল জাতীয় ফোড়া, শিশুদের বিছানায় প্রস্রাব করা, গলা ও স্তনের মধ্যে স্থায়ীভাবে গ্রন্থিস্ফীতি, শয্যাক্ষত, পাকস্থলী ও অন্ত্রের ক্ষত, উন্মাদ, মাথাব্যথা, কোমর ব্যথা, সর্দি কাশি, টনসিল ও গলদেশের গ্রন্থি স্ফীতি ইত্যাদি।
আকৃতি
সোরিক- কার্যগত পরিবর্তন
সিফিলিটিক- ক্ষত সৃষ্টি, ধ্বংস ও পরিবর্তন হয়
সাইকোটিক- অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। স্থানিক পরিবর্তন
টিউবারকুলার- ধ্বংসাত্মক ও কার্যগত পরিবর্তন
গোসল
সোরিক- গোসল করতে চায় না
সিফিলিটিক- সামান্য গরম পানি দিয়ে গোসল করে
সাইকোটিক- গোসল করতে ভালবাসে
টিউবারকুলার- গোসল করতে চায় কিন্তু গোসলে বৃদ্ধি হয়
ক্ষুধা
সোরিক- পেট ভর্তি থাকা সত্তে¡ও বার বার খাবার ইচ্ছা। খাওয়া সত্তে¡ও পেট খালি খালি মনে হয়।
সিফিলিটিক- খিদে কম বা বেশি কোনটাই সুস্পষ্ট নয়
সাইকোটিক- ক্ষুধামন্দা।
টিউবারকুলার- বেশ ক্ষুধা বা রাক্ষুসে ক্ষুধা।
পছন্দনীয় খাবার
সোরিক- গরম খাদ্য পছন্দ, দুধসহ্য হয় না
সিফিলিটিক- ঠান্ডা খাদ্য পছন্দ, দুধ ও মাখন ভালোবাসে
সাইকোটিক- অল্প গরম খাদ্য পছন্দ, মশলাযুক্ত খাদ্য বা মাখন সহ্য হয় না
টিউবারকুলার- গরম ও শীতল খাদ্য পছন্দ করে, ঠান্ডা দুধ পছন্দ করে
টিউবারকুলার- দাঁতগুলো শিশুকালেই পচে যাওয়া শিশু ভয়ানক খিটখিটে ও ঘ্যানঘ্যান করে।
শিশু চরিত্র
সোরিক- শিশু চর্মরোগসহ জন্ম হয়। জন্মের পর প্রস্রাব পায়খানা বন্ধ হয়।
সিফিলিটিক- ক্ষতসহ জন্ম। নাভি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ হয় না। চোখে ক্ষত।
সাইকোটিক- যে কোন প্রকারের অসম বৃদ্ধিসহ জন্ম। বৃদ্ধি জনিত বিকলাঙ্গ শিশু।
টিউবারকুলার- শিশুর জন্মকালে বংশগত ক্ষয়রোগের ইতিহাস থাকে।
মেধা
সোরিক- শিশু সুলভ চপলতা থাকে। পড়াশুনায় পটু। একবার বলে দিলেই বুঝতে পারে। অক্ষর পরিচয়ের সময় লেখা লিখতে বুঝাতে হয় না, দেখে দেখেই লিখতে পারে।
সিফিলিটিক- হাবলা গোছের ভাব খেলতে চায় না। ক্ষুধার অভাব, খাওয়ার জন্য বারবার বলতে হয়। রাতে খাইয়ে না দিলে খায় না। ঘুম থেকে জাগিয়ে খাওয়াতে হয়। বিনা চিকিৎসায় রক্তপাত বন্ধ হয় না, বহুদিন জের থেকে যায়। একরোখা, জেদী, রাগলে শান্ত করা যায় না।
সাইকোটিক- শিশুসুলভ চপলতার সঙ্গে ভীরুতা ও গোপনীয়তা। একা একা খেলা করার ইচ্ছা। ছোট ছেলেমেয়েদের সঙ্গমের প্রবৃত্তি।
টিউবারকুলার- চঞ্চলতা ও পরিবর্তনশীলতা, শিশুর এক খেলনায় দীর্ঘ সময় খেলা করিতে ভাল লাগে না। এক প্রকার খাদ্য দীর্ঘ দিন খেতে ভাল না লাগা। গৃহকর্মী হলে নিত্য নতুন বেশ-ভূষার আকাক্সক্ষায় গৃহকর্তাকে পাগল করে।
বেদনা
সোরিক- খেলে ও শীতকালে বাড়ে। গরমে ও সামান্য চাপে কমে।
সিফিলিটিক- সূর্যাস্তের পর থেকে ভোর পর্যন্ত বাড়ে। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত ও বারবার স্থান পরিবর্তনে কমে।
সাইকোটিক- যাবতীয় যন্ত্রণা বিশ্রামে, ভিজা ঠান্ডা ও বর্ষকালে বাড়ে। নড়াচড়ায় শীতকালে, সূর্যাস্তের পর থেকে ভোর পর্যন্ত কমে।
টিউবারকুলার- বর্ষাকালে ও ঝড় বৃষ্টির দিনে বৃদ্ধি, রাত্রিকালে ভয়াবহ বৃদ্ধি, অন্ধকারে থাকতে ভয় বা বৃদ্ধি। শুষ্ক আবহাওয়ায় ও মুক্ত বাতাসে উপশম।
মল
সোরিক- অতিভোজনের ফলে উদরাময়। সকালে বাড়ে। গরমে ও চাপে বেদনা কমে। দারুণ কোষ্ঠকাঠিন্য ও শক্ত মল।
সিফিলিটিক- গুহ্যদ্বারে ক্ষয়। মলত্যাগের পর অস্থিরতা।
সাইকোটিক- উদরাময় বা আমাশয়ের সঙ্গে পেট ব্যথা হলে কেঁদে ফেলে, উদরাময়, অর্শ, ভগন্দর প্রকৃতি, মল পরিবর্তনশীল।
টিউবারকুলার- নি¤œ উদরে শূন্যতার অনুভূতি, উদরাময়ের সাথে মস্তিষ্ক আক্রান্ত। শিশু জন্মের পর হতে ২/৩ বৎসর বয়স পর্যন্ত যখন তখন উদরাময়।
প্রস্রাব
সোরিক- প্রস্রাব বন্ধ, কাশতে কাশতে, হাঁচিতে হাঁচিতে অসাড়ে প্রস্রাব। প্রস্রাব জ্বালাকর। সাদা ফসফেট ও মরিচা রঙের প্রস্রাব।
সিফিলিটিক- যন্ত্রণাবিহীন মূত্রকৃচ্ছতা। বারবার প্রস্রাবের তীব্রতা ও
ক্ষয়কারীভাব।
সাইকোটিক- মূত্রনালী সঙ্কুচিত, প্রস্রাব ও প্রস্রাবকালীন যন্ত্রণা। একশিরা, মূত্র পাথরি ও মূত্রকোষের যাবতীয় রোগ।
টিউবারকুলার- বহুমূত্র, মূত্রপচা বা ভ্যাপসা গন্ধযুক্ত। স্বচ্ছ জলের ন্যায়
বর্ণশূন্য প্রচুর প্রস্রাব।
হৃৎপিন্ড
সোরিক- হৃৎপিন্ডের রক্তোচ্ছাসের অনুভূতি ও দুর্বলতা। বুকে শূন্যতাবোধ।
সোরিক- অসামঞ্জস্য পূর্ণ নানা রকম কাল্পনিক চিন্তা, লোকসঙ্গে ভীতস্পৃহা। নির্জন বিলাসী। নিজে না করলেও পরকে জ্ঞান দিতে বেশি আগ্রহী। মুখোশ পরা দার্শনিক।
সিফিলিটিক- মেলা মেশার অক্ষমতা। সব সময় মুখ বুজে থাকে। ক্ষিপ্রতার সঙ্গে কথা বলে। হঠকারিতা ও মুর্খতা।
সাইকোটিক- একই কথা বারবার বলে। নিজের স্ত্রী ও কন্যার প্রতিও সন্দেহ। হিংসা ও ক্রোধভাব, তুচ্ছ কারণে কলহ করে।
টিউবারকুলার- ভবঘুরে, অস্থিরতা, সামান্যক্ষণ মনোসংযোগ করতে পারে না। মন সর্বক্ষণ যেন উড়ে বেড়ায়।
চেহারা
সোরিক- ঠোট দুটি নীলাভ, আরক্তিম ও শুষ্ক। জিহ্বা ও মাঢ়ীতে জ্বালা। ভূক্ত দ্রব্যের গন্ধ।
সিফিলিটিক- মুখমন্ডল তৈলাক্ত, চকচকে চর্বি মাখানো ও গোল।
সাইকোটিক- মুখমন্ডল মৃত ব্যক্তির মত নীলাভ শোথগ্রস্ত।
টিউবারকুলার- ওষ্ঠদ্বয় হতে রক্ত বের হবার উপক্রম, সীমাবদ্ধ স্থানে লাল দাগসমূহ।
হাত ও পা
সোরিক- হাত ও পায়ের কার্যগত বিশৃঙ্খলা।
সিফিলিটিক- হাত ও পায়ের লম্বা হাড়ে ব্যথা। বিশেষ করে রাতে, অস্থিপুষ্টির অভাব।
সাইকোটিক- নানা ধরনের বাত, অসাড়তা ও শক্তিহীনতা, সামান্য পরিশ্রমে ক্লান্তি, হঠাৎ হাত পা মচকে যাওয়া।
টিউবারকুলার- অস্থিসমূহ সহজে শক্ত হতে চায় না। শিশুরোগী অনেক দেরিতে হাঁটতে শেখে। বৃদ্ধ রোগীর প্রায়ই পক্ষাঘাত।
মুখ গহ্বর
সোরিক- পানির পিপাসা, টনসিল বৃদ্ধি, দুর্গন্ধযুক্ত লালা। মুখে বিস্বাদ বা মিষ্টি স্বাদ তিক্ত ও অল্প স্বাদ।
সিফিলিটিক- ক্ষয়প্রাপ্ত দাঁত, মাড়িতে স্ফোটক ও পুঁজ জমে। মাড়ির গোড়া আলগা, মুখে দুর্গন্ধ। জিহ্বায় দাঁতের ছাপ। জিহ্বা ভিজা অথচ প্রবল পিপাসা। টনসিল বৃদ্ধি ও মাড়ি থেকে রক্ত ক্ষরণ। মুখে ধাতব স্বাদ।
সাইকোটিক- মুখের স্বাদ ও গন্ধ আঁষটে। জ্বালাকর তীব্র পিপাসা। হলদে, স্ফীত ফাঁটলযুক্ত জিহ্বা। মুখগহবরের গ্লান্ডগুলো স্ফীত ও শক্ত হয়।
টিউবারকুলার- দন্তমাড়ি ও মুখগহ্বর হতে প্রচুর পরিমাণে উজ্জ্বল লালবর্ণের রক্তস্রাব। দাঁত মাজার সময় মাঢ়ী হতে রক্তস্রাব, দন্তক্ষয় এবং দাঁতের অস্বাভাবিক গঠন, পুঁজ ও রক্তের স্বাদ।
নাক
সোরিক- সুগন্ধ ও দুর্গন্ধ কোনটাইসহ্য হয় না। অনেক রকম গন্ধে মুর্চ্ছা যায়।
সিফিলিটিক- প্রায়ই সর্দি লাগে। এ জন্য নাক সুড়সুড় করে। নাকে মামড়ি ও চটা পড়ে। দুর্গন্ধ নিঃশ্বাস।
টিউবারকুলার- নৈশকালীন স্বপ্নে তাদের অন্তর্জগতের প্রতিফলন দেখা যায়। ভ্রমণ, দলগত উৎসব, বিবাহ অনুষ্ঠান অথবা ভীতি ও উদ্বেগপূর্ণ কিংবা প্রথমে জলজ্যান্ত স্বপ্ন দেখে।
স্ত্রীরোগ
সোরিক- মাসিক ঋতুস্রাবের যাবতীয় বিশৃঙ্খলা, ক্ষয়কারী ভাব থাকে।
সিফিলিটিক- যোনি থেকে দুর্গন্ধ স্রাব। সুতোর মতো লম্বা স্রাব। ঋতুস্্রাব শেষে মুর্চ্ছা।
সাইকোটিক- জরায়ু ডিম্বাধার ও ডিম্বনালীর প্রদাহ, বন্ধ্যাত্ব, জ্বালাযুক্ত ঋতুস্রাব, স্তনদ্বয়ে ব্যথা, পচা মাছের গন্ধযুক্ত জমাট বাঁধা স্রাব। সব সময় যৌনচিন্তা।
টিউবারকুলার- প্রদরস্রাব, বাধক, মাথাঘোরা, দুর্বল, প্রচুর দীর্ঘস্থায়ী ঋতুস্রাব প্রবাহ, জরায়ু প্রলাপস, প্রসব সহজে ও অল্প সময়ে হয় না।
গর্ভ
সোরিক- গর্ভাবস্থায় বমি বমিভাব, মাথাঘোরা, কাশি কফ, টক পানি ওঠে।
সিফিলিটিক- অপরিণত শিশুদের জন্ম বা গর্ভ নষ্ট, মৃত সন্তান প্রসব।
টিউবারকুলার- প্রসবকালীন যন্ত্রণা কষ্টকর, ভয়ানক এবং দীর্ঘক্ষণ স্থায়ী এবং পরিশ্রান্ত। অনেকেই তাদের সন্তানকে স্তন্যপান করাতে পারে না।
মন - মানুষিকতা
সোরিক -মন
পবিত্র চিন্তা বা একনিষ্ঠ চিন্তা ও ধ্যান ধারণার অক্ষম। অনুচিত জেনেও সে কাজ না করে থাকতে পারে না। অন্তরে স্বার্থপরতা বাইরে উদারতার ভান।
ধনী ব্যক্তির জীর্ণবাসে গর্ব অনুভব। নিজের মল-মূত্র ঘ্রাণের প্রবৃত্তি, অপরিষ্কার, অপরিচ্ছন্ন্। চঞ্চল ও অস্থির । অপ্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র আকাক্সক্ষা, মনোবিকৃতি, শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমে অক্ষমতা, অলস, পূর্ণিমা ও প্রতিপদে মানসিক লক্ষণের বৃদ্ধি। ঋতু স্রাবের কাছাকাছি সময়ে মানসিক লক্ষণে বৃদ্ধি।
উৎপাত করে, শীতকাতর, ঈর্ষাপরায়ণ। কৃমি থাকে, রাতে গায়ের ঢাকনা খুলে ফেলে দেয়। কফ চেটে খাওয়ার অভ্যাস।
সর্ববিষয়ে হাহুতাশ করে। মানসিক অস্থিরতা বা অস্বাভাবিক মানসিক লক্ষণ, শীতকাতর, গাড়িবাড়ি করে ও আরও অধিক সম্পত্তির জন্য চিন্তা এবং তাতেই বিভোর। স্ত্রীর জন্যও খরচ করতে চায় না। নিজের জন্য যথাসম্ভব ব্যয় করে। সংসারের খরচ বেশি হলে বিরক্ত হয়। ওষুধের জন্য সহজে খরচ করতে চায় না। সংসার ভেঙ্গে আলাদা হয়ে যায়। পুত্রবধুকে আপন করতে পারে না। ভ্রমণবিলাসী তীর্থবাসী।
যৌনমিলনে ভয়। নারীর প্রতি ভীতি ভাব। বৈরাগ্য, কুমতলব, সংসারী হওয়ার পরেও অধিক বয়সে সন্ন্যাস গ্রহণ করে।
ধর্মোন্মত্ততা, কৃপণ বা অত্যাধিক খরচের ভয়। জীর্নবাসে গর্ববোধ। অপরকে জ্ঞান দেওয়ার প্রবৃত্তি, নিজে কিছুই করে না। নিজেকে বড় ভাবে, বাচাল, কুচিন্তা, চতুর।
নির্বোধ, অজ্ঞ। কোনটি গ্রহণীয় কোনটি বর্জনীয় বিবেচনা করতে পারে না।
নিজ পরিবারের প্রতি কর্তব্য পালনে অক্ষম চিন্তা শক্তির অক্ষমতা। আত্ম- বিশ্বাসের অভাব। কোন কথা বোঝার অক্ষমতা। কিছুক্ষণ পরে তার মনে বোঝার অক্ষমতা।
কৈশোরে চঞ্চলতার অভাব, বিমর্ষভাব। সহজে কিছুই বুঝে না। নির্বোধ, একটা পড়া বারবার পড়ে কিন্তু বুঝতে পারে না। হাজার শাস্তি দিলেও কোন ফল হয় না। বরং অপকারই হয়। নিজের ভাল মন্দ বোধটুকুও থাকে না। খাওয়ার সময় সাধতে হয়। খেলার প্রতি বিশেষ ঝোক থাকে। বর্শি দিয়ে মাছ ধরার ঝোক। কিটপতঙ্গ মারতে ওস্তাদ। হাতের লেখা অস্পষ্ট। অংক একবারেই পারে না। মা হওয়ার প্রবণতা।
বিমর্ষতা, অনুতাপ, জীবনে কিছুই করতে না পারায় অনুতপ্ত ও আত্মহত্যা করার প্রবল ইচ্ছা। কখনও কখনও আত্মহত্যা করে বসে।
নারী সঙ্গ স্পৃহা, বেপরোয়াভাব, নানাভাবে জৈবিক তৃপ্তির কুফল জনিত রোগ। যৌনাকাঙ্খাহীন, সঙ্গমে অক্ষমতাজনিত বিতৃষ্ণা। জননাঙ্গে ক্ষত, বন্ধ্যাত্ব। বির্মষ, তামাক এবং মাদকদ্রব্যে স্পৃহা, কুসঙ্গ বা অসৎ সঙ্গে পড়া। বিচার বিবেচনার অক্ষমতা। বিবেকহীন ও পশুপ্রবৃত্তি। অপরকে হত্যার ইচ্ছা বা হত্যা করা। পৃথিবী ভালো লাগে না।
প্রবঞ্চক, চিবিয়ে ধীরে ধীরে কথা বলে, স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলে, ক্ষণস্থায়ী বিস্মরণ, সাম্প্রতিক ঘটনা ও পরিচিত লোকের নাম বিস্মরণ, মনের নীচতা গোপনের আকাক্সক্ষা। ভীতিভাব। সন্ধিগ্ধচিত্ত। অসন্তোষ এবং চাঞ্চল্যসহ স্মৃতিশক্তির বিশৃঙ্খলা। সবসময় স্ত্রী লোকের চিন্তায় মনটি ভরে থাকে। ঝড়বৃষ্টির সময় ও ঋতু পরিবর্তনে বৃদ্ধি।
গরমকাতর। সর্দি কাশি হাঁপানি ও বাতের ব্যথা বর্ষায় বৃদ্ধি। লিঙ্গটি নিয়ে আপন মনে নাড়াচাড়া করতে থাকে।
হাঁপানি বা শ্বাস যন্ত্রের কষ্ট, পুত্র, কন্যা বা পুত্রবধুদের প্রতি সন্দেহ, অর্থ গোপনের তীব্র অভিলাস।
অধিকমাত্রায় গোপনে অবৈধভাবে শুক্রক্ষয়ের আকাক্সক্ষা, গনোরিয়া রোগ, মেয়েঘেষা, সর্বদা মেয়েদের সম্পর্র্কে বা যৌন সংসর্গের উদ্ভট কল্পনা। গোপনে নারী অঙ্গ দর্শনের তীব্র লালসা, পশু পাখির যৌনক্রীড়া বা অশ্লীল সিনেমা বা চিত্র দর্শনের এবং যৌনসংক্রান্ত নভেল পাঠের স্পৃহা।
টিউবারকুলার - মন
কর্মভীতি, অসহিষ্ণুতা বা অধৈর্য, মানসিক চাঞ্চল্য, পরিবর্তনশীলতা।
পেশা এবং চিকিৎসক পরির্বতন চায়। আরোগ্য সম্বন্ধে সর্বদাই আশান্বিত। অভ্যাস দ্রুত পরির্বতন করে, নিজের রোগের গুরুত্ব সম্পর্র্কে উদাসীন ও ভ্রুক্ষেপহীন।
অসংযমপূর্ণ জীবন যাত্রার অভ্যাস। অবৈধ উপায়ে শুক্রক্ষয়, অত্যাধিক কর্মস্পৃহা মনে সদা জাগ্রত থাকে।
পরিশেষে প্রস্রাব করার সময়, মলত্যাগকালে বা সামান্য মানসিক উত্তেজনায় বা অবসাদে বীর্য আপনা হতেই অসাড়ে পড়ে। ফলে মনটি সব সময় উৎসাহ শূন্য, বিষন্ন ও নিরুৎসাহ হয়ে পড়ে এবং স্মৃতিশক্তি কমে আসে।
স্বভাব - চরিত্র
সোরিক স্বভাব - চরিত্র
গোসল করতে চায় না। দুধে অনীহা। মিষ্টি দ্রব্যে স্পৃহা। নোংরা থাকা স্বভাব। নিজের মলমূত্র শোকে। যা পায় মুখে দেয়। ব্যবসা ব্যবসা খেলাতে ঝোঁক বেশি। খিদে প্রচন্ড, মিশতেও পারে তাড়াতাড়ি রাগ করলেও সহজেই শান্ত হয়। চর্মরোগ, প্রচন্ড চুলকানি। হাত মুখ না ধুয়ে খেতে বসে। ধুলো বালি নিয়ে খেলা করে।
সুখের, মান অভিমান ও চাঞ্চল্য ভরা অস্বাভাবিক আকাক্সক্ষা ও কামনার অপরিতৃপ্তিজনিত মনক্ষুন্নতা, নারী শ্বাশুড়ীর সঙ্গে ঝগড়া করে, অন্যায়ের প্রতিবাদে মুখর হয়
সিফিলিটিক স্বভাব - চরিত্র
অতি গরম বা অতি শীত কোনটাইসহ্য হয় না। চোর পুলিশ খেলার দিকে বেশি আগ্রহ। একই পড়া বারবার পড়তে হয়। স্কুল গমনে শিশুর সমস্যা।
পুতুল বিয়ে বিয়ে খেলা করে। পড়াশোনা করতে অনেক চেষ্টা করতে হয়, নতুবা হয় না। রেগে গেলে সহজে ভুলে না। এটা দিতে হবে ওটা দিতে হবে এরকম আবদার করে। বারে বারে অল্প অল্প খেতে চায় । খুত খুতে স্বভাব। এটা খাবে না ওটা খাবে না বলে জিদ করে। হাঁটা-চলা বা কথা বলতে দেরি হয়। গোসলে স্পৃহা কিন্তু সহজেই ঠান্ডা লাগে।
নির্দিষ্ট একটি বিষয় নিবিষ্টভাবে চিন্তা করা আশা করা যায় না। ছাত্র রোগী কিছুদিন বিজ্ঞান বিষয়ে অধ্যয়ন করে পুনরায় কলা বিষয়ে আকৃষ্ট হয় ও তার পরে আবার একটি নতুন বিষয়ে অনে¦ষণ করে। রোগী পরিবর্তনশীল আচরণ করে। রোগী ঠান্ডা পছন্দ করে, কিন্তু ঠান্ডায় তার বৃদ্ধি।
উদাসীনতা, জীবনে বিতৃষ্ণা ও নিজ জীবন নষ্ট করার প্রবৃত্তি, স্বার্থপর। যে খাদ্য হজম করিতে পারে না সেই খাদ্যে আকাক্সক্ষা। আশাবাদী।
বন্ধ্যাত্ব, ২/১ টি প্রসবের পর তাদের জরায়ু নানা জাতীয় স্থানচ্যুতি বা বহিনির্গমন, দিনের পর দিন প্রসব বেদনাটি চলতে থাকে। প্রসব করার শক্তি কমতে থাকে।
ডাক্তারী রিপোর্টে ধরা পড়লো ক্যান্সার, কিডনি ড্যামেজ বা ফেইলুর, প্যানক্রিয়াটাইটিস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ইত্যাদির মতো ক্রনিক ডিসিজ বা জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে আছেন। প্যাথলজিক্যাল বিভিন্ন টেস্ট করার পর যখন কেউ দেখেন তিনি দুরারোগ্য জটিল কোন রোগে আক্রান্ত তখন সেটা সারানোর জন্যই তার সর্বপ্রকার কর্ম প্রচেষ্টা শুরু হয়ে যায়। কিন্তু ততদিনে তিনি হয়তো বুঝতেই পারেন না যে বড্ড দেরী হয়ে গেছে।
আপনাদের জানা উচিত, প্যাথলজি টেষ্টে ধরা পড়ার সময় বা তার কিছু দিন আগেই কিন্তু কোন রোগ জন্মায় না, রোগের উৎপত্তি হয়েছিল ঐ ব্যক্তি মাতৃগর্ভে ভ্রূণরূপে জন্ম নেবার সময়, যা রোগীর জেনেটিক হিস্ট্রি এবং শৈশবের জীবন দর্শন (Early life philosophy) থেকে অনেক আগেই একজন অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসক নির্ণয় করতে পারেন এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারেন। যা এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় প্রায় অসম্ভব। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, যান্ত্রিক সভ্যতায় নিজেদের অতি আধুনিক মনে করা মানব সমাজ শারীরিক ও মানসিক কষ্টে ভোগার পরেও, কেবলমাত্র যান্ত্রিক কিছু মেডিক্যাল বা প্যাথলজি টেষ্টের ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করে। ততদিনে যা কিছু ধ্বংস হবার তা হয়ে যায়। পরবর্তীকালে তা ঠেকিয়ে রাখতে এলোপ্যাথিতে চিকিৎসার নামে যে সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়, তা মোটেও বাঁচার উপায় নয়। তা তিলে তিলে মৃত্যুরই ছায়া মাত্র বা প্রলয়ঙ্কারী ঝড়ের মাঝে সামান্য পাতার ছাউনি স্বরূপ। এখন প্রশ্ন হলো "অতি আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞান কোনটি?"
সারাজীবন ধরে নানাবিধ শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় ভোগান্তির চরমসীমায় পৌঁছনোর পরে কয়েক দফায় প্যাথলজি টেষ্টের রিপোর্ট অনুযায়ী রোগ ধরা পড়া?
নাকি রোগীর শারীরিক, মানসিক কষ্টের লক্ষণ উপসর্গ তার শৈশবের দর্শন এবং জেনেটিক হিস্ট্রি বিচার বিশ্লেষণ করে DNA তে থাকা True Disease বা প্রকৃত রোগটি নির্ণয় করে প্যাথলজি টেষ্টের অনেক আগেই এই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যে, ভবিষ্যতে ব্যক্তির ক্যান্সার বা কোন কোন জটিল রোগ হবার সম্ভাবনা রয়েছে এবং পূর্ববর্তী চিকিৎসার মাধ্যমে তা আগে থেকেই রোধ করা?
খটকা লাগছে হইতো অনেকের কাছেই। আগের কিছু পর্বে আপনারা জেনেছেন, আমরা কিভাবে রোগাক্রান্ত হই। রোগ সৃষ্টিতে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার আদৌ কোন ভূমিকা রয়েছে কি? আমাদের মানব দেহে ভাইটাল ফোর্সের কাজ কি? যদি বিষয়গুলি সম্পর্কে আগে থেকে আপনার জানা না থাকে তাহলে নিন্মোক্ত আর্টিকেলগুলি ভালোভাবে একবার দেখে নিন।
উপরিউক্ত আর্টিক্যালগুলি থেকে জেনেছেন আমরা মূলতঃ আমাদের পূর্ব পুরুষ থেকেই রোগ-ব্যাধি বা বিভিন্ন প্রকৃত রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল পেয়ে থাকি যা একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম হয়ে থাকে। একেক জনের কনস্টিটিউশন একেক রকম হয়ে থাকে। আর তাই, পৃথিবীতে একেক শ্রেণীর মানুষ একেক রকম রোগে ভুগে থাকে। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষই তার DNA তে বর্তমান প্রকৃত রোগ এবং তার তীব্রতা অনুসারে নানা প্রকার শারীরিক ও মানুষিক সমস্যায় ভুগে থাকে। যখন ভাইটাল ফোর্স কোন কারণে দুর্বল হয়ে পড়ে তখনই তার DNA তে Predominant সেই প্রকৃত রোগটি শরীরের নানা অংঙ্গে অর্থ্যাৎ তার দেহ মনে নানা প্রকার লক্ষণ ও উপসর্গ তৈরী করে তাকে কষ্ট দিবে। যথা সময়ে প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসার মাধ্যমে DNA তে Predominant সেই প্রকৃত রোগ Recessive করা না হলে সেটি দিন দিন শক্তিশালী হয়ে উঠে এবং দেহমনে সৃষ্টি করা লক্ষণ ও উপসর্গকে ভয়ঙ্কর পর্যায়ে নিয়ে যায়।
কষ্ট যখন সহ্যের সীমা অতিক্রম করে তখন মানুষ ছুটে হাসপাতালে বা ডাক্তারের কাছে। করা হয় নানা মেডিক্যাল বা প্যাথলজিক্যাল টেস্ট। তখন হয়তো ধরা পড়ে ক্যান্সার, কিডনি ড্যামেজ, প্যানক্রিয়াটাইটিস, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ইত্যাদি নামক জটিল উপসর্গযুক্ত রোগ-ব্যাধি। আর তখন সেগুলি থেকে পরিত্রানের জন্য উঠেপড়ে লেগে যায়লোকজন। কিন্তু হায় ! ততদিনে যা কিছু ধ্বংস হবার তা হয়ে যায়। আগেই বলেছি, পরবর্তীকালে তা ঠেকিয়ে রাখতে এলোপ্যাথিতে চিকিৎসার নামে যে সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়, তা মোটেও বাঁচার উপায় নয়। তা তিলে তিলে মৃত্যুরই ছায়া মাত্র বা প্রলয়ঙ্কারী ঝড়ের মাঝে সামান্য পাতার ছাউনি স্বরূপ। এই চির সত্য অধিকাংশ মানুষই উপলব্ধি করতে পারে না।
অথচ রোগীর শারীরিক, মানসিক, আচরণগত কষ্টের লক্ষণ এবং জেনেটিক হিস্ট্রি ইত্যাদি বিচার বিশ্লেষণ পূর্বক DNA তে থাকা True Disease বা প্রকৃত রোগটি নির্ণয় করে মেডিক্যাল বা প্যাথলজিক্যাল টেষ্টের অনেক আগেই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া যায় ভবিষ্যতে ক্যান্সার বা অন্য কি কি জটিল রোগ হবার সম্ভাবনা রয়েছে এবং পূর্ববর্তী চিকিৎসার মাধ্যমেই তা আগে থেকেই রোধ করা যায় আর সেটা করতে পারে বর্তমান বিশ্বে একটি মাত্র ট্রিটমেন্ট সিস্টেম আর তা হলো - হোমিওপ্যাথি।
যে মানব শিশুটি তার ছোটবেলা থেকেই প্রপার হোমিও চিকিৎসার তত্থাবধানে চলে আসে সে উচ্চ জীবনীশক্তি নিয়ে বেড়ে উঠে। বিভিন্ন এলোপ্যাথিক বা রাসায়নিক ঔষধের ক্রমাগত প্রয়োগে মানব শরীরে আরো জটিল জটিল সমস্যা সৃষ্টি হতে থাকে। তাই দেখা যায় সেসব মানুষ এলোপ্যাথিক বা রাসায়নিক ঔষধ থেকে যত দূরে দূরে থাকেন তারা জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তত বেশি ভালো থাকেন।
আপনি দেখবেন যেকোন ক্রনিক ডিজিসের ক্ষেত্রে এলোপ্যাথিক চিকিৎসকরা জটিল জটিল পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াযুক্ত ওয়ান টাইম এলোপ্যাথিক বা রাসায়নিক ঔষধগুলি মানুষকে সারা জীবন ধরেই খেয়ে যেতে বলছে, যা তাৎক্ষণিক আরাম দিলেও জটিল জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা বা রোগ-ব্যাধি সৃষ্টি করে চলেছে মানব দেহে। তাছাড়া বিভিন্ন সময় এলোপ্যাথিক চিকিৎসকরা সাধারণ জ্বর-সর্দি থেকে শুরু করে অধিকাংশ রোগেই যখন তখন উচ্চ শক্তির এন্টিবায়োটিক ঔষধ প্রয়োগ করে চলেছে যা ব্যক্তির ভাইটাল ফোর্সকে চরম ভাবে দুর্বল করে তুলছে এবং এর ফলে খুব সহজেই আজকাল লোকজন (এলোপ্যাথিক চিকিৎসা গ্রহণকারীরা) অল্প বয়সেই জটিল জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ছে।
বর্তমান বিশ্বে ক্রনিক ডিজিসের চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের নামে জগন্যতম অপবিজ্ঞান, নোংরা এবং হাতুড়ে কাজগুলির মধ্যে এই অপচিকিৎসা হলো অন্যতম। তাই মেডিক্যাল মাফিয়ারা নিজেদের দোষ-ত্রুটি আড়াল করতে অন্যান্য চিকিৎসা ব্যবস্থাগুলির বিরুদ্ধে তাদেরই নিয়ন্ত্রিত বিভিন্ন প্রচার মাধ্যমে একচেটিয়া অপপ্রচার চালিয়ে আসছে শুধু থেকেই। কিন্তু আজকাল মিডিয়া প্রায় সবারই হাতের নাগালে রয়েছে। তাই চিকিৎসা নেয়ার ক্ষেত্রে যারা যাচাই বাছাই করে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তারা শুরু থেকেই লাভবান হোন। আর যারা মেডিক্যাল মাফিয়াদের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন অথবা কোন প্রকার যাচাই বাছাই করার মতো জ্ঞান রাখেন না তাদের অনেকেই চরম ক্ষতির মুখে পড়েন। কেউ কেউ আবার চিকিৎসা নিতে গিয়ে সহায় সম্পত্তি বিক্রি করে পথে পর্যন্ত বসে যান। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয় না।
মেডিক্যাল টেস্টে ধরা পড়লো ব্যক্তি জটিল রোগে আক্রান্ত। তখন ব্যক্তির কষ্ট লাঘব করার জন্য বিভিন্ন ওয়ান টাইম রাসায়নিক ঔষধ প্রয়োগ করে কষ্ট কিছুটা লাঘব করতে পারলেও রোগ কিন্তু নির্মূল করতে অপারগ এলোপ্যাথিক ট্রিটমেন্ট সিস্টেম। কারণ এলোপ্যাথিক ওয়ান টাইম ঔষধগুলি প্রযোগ করা হয়ে থাকে শরীরের নির্দিষ্ট স্থানের কষ্টকর লক্ষণ বা উপসর্গের ঠিক পেছনে কি কারণ বিদ্যমান সেটির সাময়িক উপশমের জন্য, স্থায়ীভাবে রোগ সারানোর জন্য নয়।
আজ ব্যক্তি যে রোগের রোগী সেটি সৃষ্টি হয়েছিল ব্যক্তির পিতামাতার মিলনে জাইগোটটি যেদিন তৈরী হয়েছিল সেইদিন। বুঝতেই পারছেন আমরা আমাদের পূর্বপুরুষের শত বছরের পুরাতন রোগের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল বহন করছি। আর সেটি ধীরে ধীরে বছরের পর বছর ধরে আমরা আমাদের শরীরে বাড়তে দিচ্ছি আমাদেরই নানা অজ্ঞতার কারণে। এক সময় সে যখন পূর্ণ শক্তি নিয়ে আবির্ভুত হয় তখন বিভিন্ন মেডিক্যাল টেস্ট করে আমরা সেই প্রকৃত রোগের সৃষ্টি করা কিছু ভয়ঙ্কর লক্ষন বা উপসর্গকে রোগের নাম দিয়ে চিকিৎসা করছি। আর তা ঠেকিয়ে রাখতে এলোপ্যাথিতে চিকিৎসার নামে যে সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়, তা মোটেও বাঁচার উপায় নয় বরং তা তিলে তিলে মৃত্যুরই ছায়া মাত্র বা প্রলয়ঙ্কারী ঝড়ের মাঝে সামান্য পাতার ছাউনি স্বরূপ।
এই অবস্থায় একেবারে সংকটময় মুহূর্তে রোগীর প্রপার হিস্ট্রি নিয়ে তার জেনেটিক অবস্থা বিচার বিশ্লেষণ পূর্বক যদি প্রপার একটি হোমিও চিকিৎসা দেয়া হয় তখন সবার ক্ষেত্রেই কিন্তু কার্যকর ফলাফল আসবে না। যাদের ক্ষেত্রে আসবে তারা বেঁচে যাবেন সন্দেহ নেই। আমি ডাঃ দেলোয়ার জাহান ইমরান আমারই চেম্বারে-
ব্লাড ক্যান্সার সেরে যেতে দেখেছি
কিডনি ফেইলুর রোগীর কিডনি পুনরায় ঠিক হয়ে যেতে দেখেছি
প্যানক্রিয়াটাইটিস এবং এর ফলে সৃষ্ট ডায়াবেটিস সম্পূর্ণ নির্মূল হতে দেখেছি
এক যুগেরও বেশি সময় ধরে ভুগা কষ্টকর হাঁপানি সম্পূর্ণ সেরে যেতে দেখেছি
আরো বিভিন্ন ক্রনিক ডিজিস সেরে যেতে দেখেছি
তবে এটাও জেনে রাখুন- প্যানক্রিয়াটাইটিস এর মতো জটিল সমস্যা যেমন প্রায় শতভাগ ঠিক করা যায়, কিছু ক্ষেত্রে একেবারে শেষ অবস্থায় যেমনঃ ক্যান্সার, কিডনি ফেইলুর মতো সমস্যায় সেই সৌভাগ্যটি সবার থাকে না। তবে এটা সত্য যে, সেই অবস্থায় বিশ্বের যত চিকিৎসা ব্যবস্থা রয়েছে সেগুলির মধ্যে একমাত্র হোমিওপ্যাথিই আপনাকে আশার আলো দেখাবে। কারণ হোমিওপ্যাথিই একমাত্র চিকিৎসা বিজ্ঞান যা আপনার DNA তে Predominant প্রকৃত রোগকে Recessive করার চিকিৎসা দিবে। তবে এটাও ভালো ভাবে জেনে রাখুন, যেখানে সেখানে হোমিও চিকিৎসা নিলেই আপনি ফল পাবেন এমনটি আদৌ আশা করবেন না। রেজিস্টার্ড এবং দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসকের তত্থাবধানে চিকিৎসা নেয়া জরুরী। ভালো থাকুন এবং সুস্থ থাকুন, ধন্যবাদ।
কোন বিষয়ে প্রচন্ড আসক্তি বা Intoxication নেশার সুচিকিৎসা হলো হোমিওপ্যাথি। আমরা রোগাক্রান্ত হলে আমাদের দেহ মনে যে লক্ষণ ও উপসর্গ পরিলক্ষিত হয় সেগুলিকে রোগের নাম দিয়ে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে বিভিন্ন ট্রিটমেন্ট সিস্টেমে। কিন্তু একমাত্র হোমিওপ্যাথি ছাড়া এই সকল সমস্যার পেছনের প্রকৃত কারণটি নির্ণয় করে সুচিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হয় অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রগুলি বিশেষ করে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্র। সাধারণত স্থানিকভাবে একটি লক্ষণ বা উপসর্গ নিয়ে কাজ করে এলোপ্যাথি কিন্তু হোমিওপ্যাথিতে রোগীর পা থেকে মাথা পর্যন্ত সমস্ত লক্ষণ বা উপসর্গকেই আমলে নেয়া হয়। তাছড়া রোগীর ডিএনএ DNA তে প্রিডোমিনেন্ট প্রকৃত রোগটি নির্ণয় করে সর্বোচ্চ কার্যকর চিকিৎসা নিশ্চিত করে থাকে হোমিওপ্যাথিক ট্রিটমেন্ট সিস্টেম।
নেশা বা প্রচন্ড আসক্তি কি কি হতে পারে?
কোন একজন রোগীর জীবন দর্শন পর্যালোচনা করলে আমরা এই সমস্ত ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির নিম্ন লিখিত বিষয়গুলিসহ অন্যান্য নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ের প্রতি প্রচন্ড আসক্তি বা নেশা থাকার প্রবণতা পেয়ে থাকি-
মদ্যপান (Liquor or Alcohol)
ড্রাগস এর প্রতি আসক্তি (Drugs)
জুয়া বা বাজী ধরার নেশা (Gambling)
সিগারেট বা তামাকের নেশা (Smoking)
লটারি কেনার নেশা (Buying Lottery Tickets)
প্রচণ্ড যৌন আসক্তি (The Intoxication of sexual Activity)
প্রচন্ড হস্তমৈথুন আসক্তি (Masturbation Addiction)
বিপরীত লিঙ্গের প্রতি প্রচন্ড আসক্তি (The Opposite Sex Intoxication)
সমকামিতা এবং সম-লিঙ্গের প্রতি প্রচন্ড আসক্তি (Intoxication Towards Homosexuals)
বিকৃত যৌনাচারে আসক্তি (Intoxication of Perverted Sex)
টাকা আয় করার প্রচন্ড তীব্র নেশা (Addiction to Make Money)
কাউকে নির্যাতন করার তীব্র নেশা (Addiction to Torture Someone)
কাউকে মারধর/আহত করার তীব্র নেশা (The Intoxication of Hurting Someone)
কাউকে সন্দেহ করার তীব্র নেশা (The Intoxication of Suspecting Someone)
ইত্যাদি
এই যে মানুষিক কিছু অবস্থার কথা আপনারা জেনেছেন এইগুলি মূলতো কোন রোগ নয় কিন্তু রোগীর ডিএনএ DNA তে প্রিডোমিনেন্ট প্রকৃত রোগ কর্তৃক সৃষ্ট কিছু লক্ষণ বা উপসর্গ অর্থাৎ রেজাল্ট অফ ডিজিস।
নেশা বা প্রচন্ড আসক্তির চিকিৎসা
ইতিপূর্বে আপনারা জেনেছেন, আমাদের ডিএনএ DNA তে প্রিডোমিনেন্ট প্রকৃত রোগগুলি আমাদের দেহ মনে যেসকল লক্ষণ ও উপসর্গ পরিলক্ষিত সৃষ্টি করে সেগুলিকে রোগের নাম দিয়ে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে বিভিন্ন ট্রিটমেন্ট সিস্টেমে। এক্ষত্রে এলোপ্যাথির মতো বিভিন্ন স্থানিক চিকিৎসা স্থায়ী ভাবে সমস্যাটি নির্মূলের ক্ষেত্রে প্রায় অকার্যকর। কারণ যেহেতু এখানে আপনার DNA তে প্রিডোমিনেন্ট প্রকৃত রোগটি এইসকল মানুষিক লক্ষণ বা সমস্যাগুলির জন্য দায়ী তাই হোমিওপ্যাথিক নিয়মে ইনভেষ্টিগেশন করে সেই প্রকৃত রোগটি নির্ণয় করে সেটিকে রিসিসিভ করে দিলেই এই সমস্ত নেশা বা কোন কিছুর প্রতি প্রচন্ড আসক্তি বা ঝোক ধীরে ধীরে দূর হয়ে যায়।
বিভিন্ন নেশা বা প্রচন্ড আসক্তির সমস্যায় আক্রান্ত যারা আছেন, প্রপার হোমিওপ্যাথিক ইনভেষ্টিগেশনে সে সকল পেশেন্টের শৈশবের জীবনদর্শনের আলোকে তাদের DNA তে নিম্নোক্ত True Disease গুলিই অধিকাংশ ক্ষেত্রে Predominant অবস্থায় পাওয়া যায়-
Psoric Predominant (Casual Individual)
Syphilitic Predominant (Selfish Individual)
PRS Predominant (Horrible Individual)
অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসক মূলতঃ রোগীর DNA তে প্রিডোমিনেন্ট True Disease টি নির্ণয় করে প্রপার হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে ধারাবাহিক ভাবে সেগুলি নিষ্ক্রিয় করার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার ড্রাগস, জুয়া বা বাজী ধরার নেশা, লটারি, সমকামীতা, মৈথন, বিকৃত যৌনাচার, সমকামিতাসহ অন্যান্য সকল প্রকার মানুষিক প্রবণতা দূর করে রোগীর সুস্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনবেন।
বিভিন্ন জটিল প্রকৃতির শারীরিক সমস্যার পেছনে Tuberculosis (TB)যক্ষ্মা বা যক্ষা ফ্যাক্টর এবং টিবি রোগের ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে আজ আলোকপাত করবো। আপনারা হয়তো অনেকেই লক্ষ্য করে থাকবেন যিনি TB বা যক্ষাতে আক্রান্ত হন অথবা তার নিকট আত্মীয় কারো TB থাকলে তিনি বিভিন্ন রকম শারীরিক এবং মানুষিক সমস্যায় আক্রান্ত থাকেন। যেমন পেটের পীড়া - আইবিএস, আইবিডি, কোষ্টকাঠিন্য, শ্বাসকষ্ট বা ঠান্ডার দোষ, বন্ধ্যাত্ব, হার্ট, কিডনি, চর্মরোগ, মানুষিক সমস্যা ইত্যাদি যেন লেগেই থাকে। বছরের পর বছর ধরে লোকজন দেশ বিদেশে এলোপ্যাথির নামকরা চিকিৎসকের পেছনে দৌড়াতে থাকে কিন্তু সমস্যার আদৌ কোন স্থায়ী সমাধান হয় না।
কারণ এলোপ্যাথিতে মূলতঃ মূল রোগের চিকিৎসা করা হয় না বরং মূল রোগ বা তার জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল দ্বারা সৃষ্ট কিছু লক্ষণ ও উপসর্গকে রোগের নাম দিয়ে চিকিৎসা করা হয় তাও আবার স্থানিক ভাবে। যার কারণে এলোপ্যাথিতে ক্রনিক ডিজিস আদৌ স্থায়ীভাবে ভাল হয় না। যখন কোন রোগের পেছনের মূল কারণ থাকে TB বা যক্ষা অথবা ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল তখন বুঝতেই পারছেন আপনি যতই এলোপ্যাথিক ঔষধ সেবন করেন না কেন আপনার সমস্যা আদৌ স্থায়ী ভাবে নির্মূল হবে না। তবে ঔষধ খাওয়া অবস্থায় কিছুটা আরাম পাবেন মাত্র অর্থাৎ রোগ যন্ত্রনা উপশম হবে কিন্তু রোগ আরোগ্য হবে না। তখন এলোপ্যাথিক চিকিৎসকগণ রোগীকে সারা জীবন ধরেই ঔষধ খেয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে। তাছাড়া মানুষকে সারা জীবন ধরে ঔষধ খাওয়ানোটা হল এলোপ্যাথিক মেডিক্যাল মাফিয়াদের একটা বিজনেস পলিসি।
মূলত হোমিওপ্যাথিক নিয়মে প্রপার ইনভেস্টিগেশন করে TB বা যক্ষা অথবা ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়ালকে তার প্রিডোমিনান্ট অবস্থা থেকে রিসিসিভ করার জন্য চিকিৎসা দেয়াই হলো বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট এবং কার্যকর একটি চিকিৎসা।
বিশ্বের যে দশটি রোগে বেশি মানুষ মারা যায় TB বা যক্ষা হলো তার একটি। যক্ষ্মা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ফুসফুসে। এছাড়া দেহের বিভিন্ন জয়েন্ট, গ্রন্থিসহ আমাদের মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে, ত্বক, অন্ত্র, লিভার, কিডনি, হাড়সহ দেহের যেকোন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে TB বা যক্ষার সংক্রমণ হতে পারে। বলতে গেলে আমাদের এমন কোন অঙ্গ নাই, যেখানে যক্ষ্মা হয়না। কারণ যক্ষ্মা হচ্ছে একটি বায়ুবাহিত ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক ব্যাধি যেটা মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকুলোসিস জীবাণুর সংক্রমণে হয়ে থাকে। যতগুলো যক্ষ্মা বা TB রয়েছে, এর মধ্যে ৮০ ভাগই ফুসফুসে হয়ে থাকে এবং এটি সবচেয়ে গুরুতর ও ভীষণ ছোঁয়াচে প্রকৃতির। শরীরের অন্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের যক্ষ্মা এতোটা ছোঁয়াচে নয়। তাই সেগুলি ফুসফুসের যক্ষ্মার মতো ছড়ানোর ক্ষেত্রে ততটা ঝুঁকিপূর্ণ নয়। যেহেতু যক্ষা বা TB নিয়ে কথা বলছি তাই আসুন এর লক্ষণ ও উপসর্গগুলি সম্পর্কেও কিছুটা জেনে নিই-
ফুসফুসের যক্ষার প্রধান উপসর্গ
ফুসফুসে যক্ষ্মা হলে হাল্কা জ্বর ও কাশি হতে পারে
কাশির সঙ্গে গলার ভিতর থেকে থুতুতে রক্তও বেরোতে পারে
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট হিসেবে ৫-৬ মাস জ্বর থাকার মূল কারণ এই টিবি
সাধারনত তিন সপ্তাহের বেশি কাশি
জ্বর থাকে
কাশির সাথে কফ এবং মাঝে মাঝে রক্ত বের হওয়া
অস্বাভাবিকভাবে ওজন হ্রাস পাওয়া
অবসাদ অনুভব করা
রাতে ঘাম হওয়া
বুকে ব্যথা, দুর্বলতা ও ক্ষুধামন্দা
ইত্যাদি
যক্ষা ফুসফুস থেকে অন্যান্য অঙ্গেও ছড়িয়ে পরতে পারে বিশেষ করে যাদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল তাদের এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রে। তখন একে অ-শ্বাসতন্ত্রীয় যক্ষা বা Extra pulmonary Tuberculosis বলা হয়, যেমন-
কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে মেনিনজাইটিস (TB Meningitis)
অনেক ক্ষেত্রে ফুসফুসীয় এবং অ-ফুসফুসীয় যক্ষা একসাথে বিদ্যমান থাক্তে পারে। পৃথিবীর যক্ষ্মা রোগীদের এক তৃতীয়াংশেরও বেশি অর্থাৎ প্রায় অর্ধেকই হল ভারতীয় উপমহাদেশবাসী।
তবে একবার কেউ এই রোগে আক্রান্ত হলে সেটা আর বের হতে পারে না। আপনি হয়তো আমাদের ট্রাডিশনাল চিকিৎসা ব্যবস্থায় ৬ মাস, ৯ মাস....১৮ মাস চিকিৎসা নিয়ে রোগের তীব্রতা সেই পরিমান কমিয়ে আনতে পারবেন যেটি আপনার জীবন নাশ করবে না। অর্থাৎ আপনি হয়তো টেস্ট করে দেখছেন আপনার শরীরে টিবির জীবাণু নেই। কিন্তু তারপরও যক্ষা বা এর জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল আপনার শরীরে থেকে যাবে এবং আপনার থেকে আপনার পরবর্তী প্রজন্মে DNA এর মাধ্যমে বিস্তার লাভ করবে। আপনার বংশধরদের মধ্যে যাকে সুবিধা করতে পারবে তার শরীরেই TB বা যক্ষা জেগে উঠবে অথবা তাদের শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে নানা প্রকার জটিল প্রকৃতির সমস্যা সৃষ্টি করে তাকে জীবনভর কষ্ট দিয়ে যাবে।
পূর্বে টিবি আক্রান্ত হলে বা নিকট আত্মীয়ের টিবি থাকলে
কারো পাস্ট হিস্ট্রিতে টিবি থাকলে অথবা তার নিকট আত্মীয় যেমন মা-বাবা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী কারো টিবি থাকলে তার মধ্যে নিম্নোক্ত স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি তার মধ্যে জেগে উঠতে পারে-
আইবিএস, ক্রনিক ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্যসহ নানা প্রকার পেটের অসুখ
হাঁপানি, শ্বাসকষ্ট বা ঠান্ডার দোষ
ফুসফুসের নানা সমস্যা
স্বরযন্ত্রের সমস্যা
হার্টের সমস্যা
লিভারের সমস্যা
কিডনি ও মূত্রতন্ত্রের সমস্যা
পুরুষদের অন্ডকোষের সমস্যা যেমনঃ অর্কাইটিস, ভেরিকোসিল, বন্ধ্যাত্বইত্যাদি
নারীদের ডিম্বাশয়ের সমস্যা, বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি
থাইরয়েডের সমস্যা
নানা প্রকার মানুষিক সমস্যা
নানা প্রকার চর্মরোগ
মাইগ্রেন বা দুরারোগ্য মাথাব্যথা
পাইলস, ফিস্টুলা, মলদ্বার দিয়ে রক্ত ক্ষরণ ইত্যাদি
বিভিন্ন প্রকার ক্যান্সার
চিকন স্বাস্থ বা শরীর শুকিয়ে যাওয়া
ইত্যাদি
কাদের টিউবারকুলার ডায়াথেসিস প্রিডোমিনান্ট
এবার আসুন আমরা জেনে নিই কোন একজন রোগীর Family History তে কোন কোন দোষ উপস্থিত থাকলে তার মধ্যে Tubercular Diathesis, Predominant বলা যাবে। Pathological indications from Family History are as follows-
Tuberculosis
Leprosy
Heart disease with or without valvular lessions
Diabetes
Rheumatism
Cancer
Headache
Cerebro vascular accident (CVA)
IBS, IBD, Chronic Dysentery Diarrhoea or Constipation
Anorectal Diseases - Piles, Fistula, Sinuses, stricture in rectum, Bleeding per rectum etc.
Bronchiectasis - Permanent enlargement of parts of the airways of the lung
Laryngitis - Inflammation of voice box (larynx)
Different types of skin diseases especially ring-worm, Pityriasis, allergy etc.
Lice at different parts of the body
Breathing distress or Asthma
Mental or Psychiatric Problem - Schizophrenia, Mania, Insanity, Uncontrolled rage from beginning etc.
Massive Haemoptysis - Coughing of blood originating from the respiratory tract
যক্ষা বা TB পরবর্তী জটিলতার চিকিৎসা
তাই কোন একটি মানুষের Past History তে Tuberculosis (TB) থাকলে তার চিকিৎসার বিষয়ে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কারণ আপনাকে মনে রাখতে হবে-
Tuberculosis is results of disease and also one way disease.
একবার দেহ-মনে ঢুকলে আর বের হতে পারে না। দ্বিতীয় কারণটি হলো কোন মানুষ Tuberculosis এ আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে এবং পরে বিভিন্ন সমস্যায় বিশেষ করে ঠান্ডাজনিত সমস্যায় বার বার কষ্ট পেতে থাকে এবং বিভিন্ন ঔষধ খেতে থাকে যার ফলে PTS বা Trauma তৈরী হয় তবে সেটা কিন্তু Triple Trauma.
প্রথমতঃ আগে পিছে বিভিন্ন ঔষধ খাওয়ার জন্য Trauma
দ্বিতীয়তঃ Tuberculosis নিজেই Trauma তৈরী করছে
তৃতীয়তঃ Tuberculosis থেকে মুক্তির জন্য ঔষধ খেতে হয় যা পূনরায় Trauma তৈরী করে
সুতরাং বুঝতেই পারছেন নানা জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের Past History তে Tuberculosis (TB) থাকলে অথবা নিকট আত্মীয়ের যেমন মা-বাবা,ভাই-বোন রোগ কারো TB থাকলেও বুঝতে হবে তার শরীরেও ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল বিদ্যমান যেটি হয়তো সে পেয়েছে তার পূর্ব পুরুষ থেকে DNA এর মাধ্যমে বা অন্য কোন মাধ্যমে। তাই সেক্ষেত্রে Tuberculosis (TB) বা TD (Tubercular Diathesis) Predominant একজন IBS রোগীর চিকিৎসা করা মানেই হলো তার শরীর থেকে ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল রিসিসিভ করা। অর্থাৎ যতক্ষণ পর্যন্ত ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়ালকে নিস্তেজ করে করে সুপ্তাবস্থায় পাঠিয়ে রোগীর ভাইটাল ফোর্সকে শক্তিশালী করা না যাবে পেশেন্ট কখনই তার অনান্য শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ করবেন না।
তাই যেকোন জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীদের Past History তে Tuberculosis (TB) থাকলে অথবা নিকট আত্মীয়ের TB থাকলে দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করুন যিনি প্রপারলি ইনভেস্টিগেশন করে আপনাকে চিকিৎসা দিয়ে আপনার DNA তে Predominant ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল রিসিসিভ করার চিকিৎসা দিবেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই পেশেন্টকে কিছুটা ধৈর্য ধরে চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ রোগের তীব্রতা ভেদে ভালো হতে একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম সময় লাগতে পারে। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এবং আল্লাহ পাক যেন আমাদের সকলকে এই প্রকার জটিল সমস্যা থেকে বাঁচিয়ে রাখেন - সেই কামনায়। ধন্যবাদ।
মানুষের সুস্থাবস্থায় বস্তুগত দেহকে অর্থাৎ শরীরযন্ত্রকে যে শক্তি বাচিঁয়ে রাখে তাকে অপার্থিব বা অশরীরী (Spiritual) স্বয়ংচালিত বা Autocracy জৈবশক্তি বলে। তা অসীম প্রভাবে দেহকে পরিচালিত করে। ইহা অনুভূতি ও কার্যকারিতায় দেহযন্ত্রের যাবতীয় অংশকে সুন্দররূপে ও সুশৃঙ্খলভাবে নিয়ন্ত্রিত করে। তার ফলেই অনুসন্ধিৎসু, যুক্তিবাদী মানুষ এই জীবন্ত, সুস্থ শরীরযন্ত্রকে মানবজীবনের মহত্তর উদ্দেশ্য সাধনে স্বাধীনভাবে সমর্থ হয়। - স্যার স্যামুয়েল হ্যানিম্যান।
জৈবশক্তি ব্যতীত জড় দেহ অনুভব করতে, কাজ করতে বা আত্বরক্ষা করতে পারে না। একমাত্র এই অশরীরী সত্তা (জৈবনিক মূলনীতি বা Vital Principal) হতেই জীবনের সর্বপ্রকার অনুভূতি ও কার্যকলাপ উদ্ভুত হয়। সুস্থ এবং অসুস্থ উভয় অবস্থাতে ইহাই এই জড় শরীরযন্ত্রকে সঞ্জীবিত রাখে। - স্যার স্যামুয়েল হ্যানিম্যান।
একজন আপাতঃ সুস্থ Apparently Healthy মানুষের ক্ষেত্রে Vital Force ভাইটাল ফোর্সের ভূমিকা -
কোন প্রতিবন্ধকতা ছাড়াই দেহযন্ত্রকে বাচিয়ে রাখে এবং নিয়ন্ত্রণ করে।
দেহযন্ত্রের স্বাভাবিক অনুভূতি এবং কার্যকারিতার সমন্বয় সাধন করে।
জীবন্ত, সুস্থ শরীরযন্ত্রকে মানবজীবনের মহত্তর উদ্দেশ্য সাধনে স্বাধীনভাবে নিযুক্ত করতে সমর্থ হয়।
রোগ শক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে এবং সুস্বাস্থ্য বজায় রাখে।
ভাইটাল ফোর্স মানব দেহযন্ত্রকে আয়ত্ত এবং নিয়ন্ত্রণে রেখে তার জীবন্ত সত্তাকে অটুট রাখে। ভাইটাল ফোর্সের অধীনে দেহযন্ত্র দৈহিক, মানুষিক বিভিন্ন ধরণের কাজ করে। জীবন্ত দেহযন্ত্রের বিভিন্ন চেতনা বা অনুভূতি এবং শরীরবৃত্তীয় কার্যকলাপ যেমনঃ শ্বাসপ্রশ্বাস, রক্ত চলাচল, পরিপাক, রেচন এবং অনাক্রমতা (নিরাপত্তা বা প্রতিরোধ ব্যবস্থা) সব কিছুই ভাইটাল ফোর্সের উপর নির্ভরশীল। দেহযন্ত্রের জীবন্ত সত্তার বিভিন্ন ধরণের প্রকাশ ভাইটাল ফোর্সের উপর নির্ভরশীল।
ভাইটাল ফোর্স দেহযন্ত্রের বিভিন্ন অঙ্গ, তন্ত্রের শরীরবৃত্তীয় বিভিন্ন কার্যকলাপ সুশৃঙ্খলভাবে সমন্বয় সাধন করে যেমনঃ হৃদপিন্ড স্পন্দিত হয়, ফুসফুস সম্প্রসারিত এবং সংকোচিত হয়, পরিপাকতন্ত্রের সঞ্চালন হয় ইত্যাদি। কিন্তু মজার ব্যাপার হল একজন সুস্বাস্থের অধিকারী মানুষ কিছুই বুঝতে পারে না যে তার দেহযন্ত্রের মধ্যে কত সব অঙ্গ-তন্ত্র রয়েছে এবং সেগুলির মধ্যে কত দ্রুত কত কিছু প্রতিনিয়ত অবিরাম ঘটেই চলেছে। সুস্বাস্থ্যকর অবস্থায় প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ঐ মানুষটির ইচ্ছা অনুসারে পরিচালিত হয় এবং দেহ ও মনের মধ্যে ভারসাম্যতা বজায় থাকে।
স্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতে দেহ এবং মনের মধ্যে যথাযথ ভারসাম্য বজায় থাকে বলে মানুষটি নিজেকে মাববজীবনের মহত্তর উদ্দেশ্য সাধনে স্বাধীনভাবে নিযুক্ত করতে সমর্থ হয়।
সুস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতিতে কোন মানুষ যে কোন ধরণের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে সমর্থ হয়। আমাদের পার্থিব অস্তিত্ব প্রতিনিয়ত সহস্র রোগশক্তির কাছে উন্মোচিত অর্থাৎ আমরা সবাই সর্বদা সহস্র রোগশক্তি দ্বারা পরিবেষ্টিত, তা সত্ত্বেও সবাই রোগের কবলে পতিত হয় না বা রোগ যন্ত্রনা ভোগ করি না, কারণ ভাইটাল ফোর্স প্রতিনিয়ত মারাত্মক ক্ষতিকারক রোগ শক্তির বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিয়ে চলেছে, যার জন্য আমরা সুস্থ থাকি।
ভাইটাল ফোর্সের দুর্বলতার জন্য দায়ী মূলতঃ দুটি ফ্যাক্টর
The Endogenous Factor
The Exogenous Factor
The Endogenous Factor গুলি জন্মগত (Innate) যা কোন মানুষের মধ্যে আসে বংশগতির মাধ্যমে Incurred from the heredity.
দুর্বল ভাইটাল ফোর্স কোন Individual এর মধ্যে আসতে পারে দুর্বল বাবা এবং মা অথবা দুজনের যেকোন একজন থেকে।
এক বা একাধিক Predominant প্রকট True disease নিয়ে জন্মাবার ফলে Vital Force দুর্বল হতে পারে।
Real Homoeopathic Therapeutic System অনুসরণ করে চিকিৎসা না করা হলে সুপ্ত সোরা Recessive Psoric Miasm প্রাকৃতিক নিয়মে প্রকট হবেই। Psora is the evolution of the state of man's will, the ultimate of his sin অর্থাৎ ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হবেই এবং তখনই অন্যান্য True disease গুলি ক্রমে ক্রমে প্রকট হবে
The Exogenous Factor গুলি হলো পরিবেশের বিভিন্ন অভ্যন্তরীন প্রভাব The various intimate details of the environment factors যা কোন মানুষকে জন্ম থেকে ক্রমাগত এবং নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে প্রভাবিত করতে থাকে যেমনঃ
জন্ম হয়েছিল অপরিণত অবস্থায় (আট মাসে), মায়ের রক্তচাপ অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় অসময়ে গর্ভপাত করাতে হয়েছিল, তখন মায়ের বুকের দুধ শুকিয়ে যায় অর্থাৎ শিশুটি কখনও মায়ের বুকের দুধ পায়নি বলে দুর্বল ভাইটাল ফোর্সের কারণে একের পর এক বিভিন্ন অসুখে কষ্ট পায়।
Acute Infectious disease (Pox/Measles/Typhoid) ইত্যাদিতে ভীষণ কষ্ট পাওয়ার পর ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়, তারপর থেকে বিভিন্ন দৈহিক সমস্যা একের পর এক লেগেই আছে।
মানুষিক আঘাত বা মানুষিক চাপের ফলে ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয় যেমনঃ দৈনন্দিন জীবনে কোন দুর্ঘটনা Accident ঘটে যাওয়ার পর (ভালো চাকরিটা চলে গেলো, একমাত্র সন্তানের কঠিন দুরারোগ্য অসুখ ধরা পড়লো বা মারা গেল) ইত্যাদিতে প্রচণ্ড মানুষিক আঘাত। ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হলে রক্তচাপ Blood Pressure বেড়ে গেল, Diabetes ধরা পড়ল, একের পর এক বিভিন্ন সমস্যা শুরু হতে লাগলো। ভীষণ ভয় বা আতঙ্কেও এমন হতে পারে।
পরিবেশের প্রতিকূলতায় ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়। বাসস্থান, কর্মক্ষেত্রে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি মনের উপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে এবং সেটি যদি দীর্ঘদিন চলতে থাকে তাহলে ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়।
Superficial Homeopathic Treatment অর্থাৎ যেক্ষেত্রে True disease এর চিকিৎসা না করে Result of the disease এর চিকিৎসা করা হয় অর্থাৎ Patient এর তাৎক্ষণিক Symptoms বা Rubrics কে গুরুত্ব দিয়ে ঔষধ নির্বাচন এবং প্রয়োগ করে কষ্টের উপশম দেয়া হয় ফলে ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়।
চিকিৎসা বিভ্রাটের ফলে ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয় যেমনঃ
একের পর এক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করতে বিভিন্ন ঔষধের প্রয়োগ।
বিভিন্ন প্রকার ভ্যাকসিন বা টিকা
হাই-পাওয়ারের ক্ষতিকর সব এন্টিবায়োটিক
ক্রমাগত বিভিন্ন এলোপ্যাথিক বা রাসায়নিক ঔষধ সেবন
ঔষধের ভুল প্রয়োগের ফলে।
ঔষধের পরিমাপ অযৌক্তিক ভাবে বেশি হলে।
ঔষধের Dose এবং Potency মাত্রাতিরিক্ত হলে।
বিভিন্ন Results of the disease এর সমাধান করতে বিভিন্ন ঔষধের এক সঙ্গে প্রয়োগের ফলে এমন ঘটনা ঘটে।
দীঘদিন ধরে বিষাক্ত পানি (Arsenic) যুক্ত এবং বিষাক্ত খাবার খেলেও ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হবে।
নেশা হয় এমন বস্তু Intoxicant দীর্ঘদিন ধরে শরীরে প্রবেশ করলে ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়।
রোগগ্রস্থ মানুষের সঙ্গে মেলামেশা করলে ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়।
ভাইটাল ফোর্সের বৈশিষ্ট
Spiritual
Autocratic
Automatic
Dynamic
Unintelligent and instinctive
Spiritual এর অর্থ অপার্থিব বা অশরীরী Immaterial. ভাইটাল ফোর্স ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয় অর্থাৎ একে প্রত্যক্ষ করা যায় না Imperceptible অর্থাৎ সূক্ষ্ম Subtle.
ভাইটাল ফোর্সের উপস্থিতি বা অস্তিত্ব বা বাস্তবতাকে উপলব্ধি করা যায় শুধুমাত্র তখনই যখন এটি পার্থিব দেহযন্ত্রের মাধ্যমে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেয়। ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেয় বলতে সর্বোচ্চ কর্তৃত্বকারী হিসেবে নিজের মতো করে দেহযন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে, যার ফলে দেহযন্ত্রের বিভিন্ন কোষ, কলা, সিস্টেম, অঙ্গপ্রতঙ্গের মধ্যে অখন্ডতা (Integrity) রক্ষা পায়।
বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও কেউ কেউ কিভাবে সুস্থ থাকে?
বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জীবন যাপন করা সত্ত্বেও কোন কোন মানুষ সুস্থ থাকে যার বদান্যতায় Generosity, তার নাম ভাইটাল ফোর্স। এই ভাইটাল ফোর্সের পাঁচটি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে একটি হলো Automatic or Self-acting যার অর্থ স্বয়ংক্রিয় সত্তা যা দেহযন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখে এবং যেকোন অপশক্তির বিরুদ্ধে স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তুলে। এই কাজে যে শক্তির প্রয়োজন তার জন্য ভাইটাল ফোর্সকে কারো উপর নির্ভর করতে হয় না। কারণ এটি স্বাবলম্বী বা আত্মনির্ভরশীল একটি সত্তা অর্থাৎ Self-powered. ভাইটাল ফোর্স সর্বোচ্চ কর্তৃত্বকারী হিসেবে দেহযন্ত্রকে বাঁচিয়ে রাখে বলে একে Autocratic বলে।
এই ভাইটাল ফোর্স দেহযন্ত্রের বিভিন্ন কোষ, কলা, সিস্টেম, অঙ্গপ্রতঙ্গের মধ্যে অখন্ডতা (Integrity) রক্ষা করে। এই গতিশীল সত্তা, ভাইটাল ফোর্স, মানব দেহযন্ত্রের প্রতিটি কোষে, প্রতিটি অনু-পরমাণুতে সমানভাবে প্রভাব বিস্তার করে। এই গতিশীল সত্তা মানব দেহযন্ত্রকে বিভিন্ন রোগ যন্ত্রণার হাত থেকে রক্ষা করে সদাসর্বদা প্রাণবন্ত Animated রাখে। তাই মানুষের ভাইটাল ফোর্স যদি Healthy থাকে তাহলে ঐ মানবদেহের প্রতিটি অনু-পরমাণু, কোষ, কলা, সিস্টেম, অঙ্গপ্রতঙ্গ বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতিকে জয় করতে সক্ষম হবে যার জন্য ঐ মানুষটি স্বাচ্ছন্দ Freedom উপভোগ করবে।
এরপরও কোন মানুষ রোগগ্রস্ত হয়, এই রোগগ্রস্ত হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতে চাইলে একটি মাত্র উপায় রয়েছে - সেটি হলো Real Homeopathic Therapeutic System এর রীতিনীতি কঠোরভাবে Strictly মেনে চিকিৎসা নেয়া বা চিকিৎসা দেয়া।
দুরারোগ্য পীড়াঅথবা কোন ক্রনিক ডিজিসে কেউ আক্রান্ত হলে দেখা যায় আক্রান্ত ব্যক্তি খুব সহসাই সুস্থ হচ্ছেন না। হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য ট্রিটমেন্ট সিস্টেম মূলত এই সকল সমস্যায় যে লক্ষণগুলি প্রকাশ পায় সেগুলির পেছনের ঠিক কারণটি কি সেটা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করে স্থানিক সেই কারণটি ঠিক করার চেষ্টা করে থাকে। দেখা যায় চিকিৎসা দিলে বা ঔষধ খেলে সেই কারণটি দূর হয়ে যাচ্ছে এবং সাথে সমস্যাটিও ঠিক হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ঔষধ না খেলে সেটি আবার ফিরে আসে। অর্থাৎ স্থায়ীভাবে রোগ আদৌ নির্মূল হচ্ছে না। এই যে স্থায়ী ভাবে রোগ ভালো হচ্ছে না - এর পেছনের প্রকৃত কারণটি মূলতঃ কি?
এর পেছনের প্রকৃত কারণ হলো - আপনার সমস্যাটি বার বার তৈরী করার পেছনে আরেকটি মূল বা প্রকৃত রোগ অর্থাৎ True Disease দায়ী যেটি রয়েছে আপনার DNA তে, আর সেটি জন্মকালীন সময়েই আপনি পেয়েছেন আপনার পিতা-মাতা থেকে।
DNA এবং এর কাজ কি ?
DNA এর পূর্ণরুপ হলো ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড (Deoxyribonucleic acid). ডিএনএ হলো একটি অণু যা কোনও জীবের বিকাশ, বাঁচতে এবং পূনরুৎপাদন করার প্রয়োজনীয় নির্দেশাবলী ধারণ করে। এই নির্দেশাবলী প্রতিটি সেল বা কোষের ভিতরে পাওয়া যায় এবং এর মাধ্যমে পিতামাতাদের বৈশিষ্ট্য তাদের সন্তানদের মধ্যে স্থানান্তরিত হয়ে থাকে। সুতরাং ডিএনএ হলো এক ধরনের নিউক্লিক এসিড যা ক্রোমোজোমে অবস্থিত জিনের রাসায়নিক রুপ। এর কাজ নিম্নরুপঃ
ক্রোমোজোমের গাঠনিক উপাদান হিসেবে কাজ করে।
বংশগতির আনবিক ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।
জীবের সকল বৈশিষ্ট্য ধারন করে এবং নিয়ন্ত্রন করে।
জীবের বৈশিষ্ট্যসমূহ বংশ পরম্পরায় পরবর্তী প্রজন্মে স্থানান্তরিত করে।
জীবের যাবতীয় বৈশিষ্ট্যের প্রকাশ ঘটায়।
জীবের সকল শারীরতাত্ত্বিক ও জৈবিক কাজকর্মের নিয়ন্ত্রক হিসেবে কাজ করে।
মিউটেশনের মাধ্যমে প্রকরন সৃষ্টি করে এবং তা বিবর্তনে মুখ্য কাঁচামাল হিসেবে কাজ।
DNA এর কাঠামোয় গোলোযোগ সৃষ্টি হলে, তা সে নিজেই সংশোধন করে।
মনে করুন, শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর মিলনে ঘন্টা খানেক হলো একটি জাইগোট তৈরি হয়েছে। সেখানে রয়েছে তার পিতা মাতা উভয়ের থেকে প্রাপ্ত ক্রোমোজোম যা হচ্ছে বংশগতির প্রধান উপাদান অর্থাৎ সেটি হচ্ছে বংশগতির ধারক এবং বাহক। মজার ব্যাপার হলো জাইগোটটির বয়স ১ ঘন্টা হলেও তার ভাইটাল ফোর্সকে ঘিরে যে ক্রোমোজোম রয়েছে তার বয়স কিন্তু কয়েক লক্ষ বছর।
বিঃদ্রঃ এখানে কয়েক লক্ষ বছর বলতে, লক্ষাধিক বছরের সেই একই ক্রোমোজোমকে বুঝানো হয়নি বরং এর মাধ্যমে পূর্বেকার বহু বছরের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল স্থানান্তরিত হয়েছে বুঝানো হয়েছে। ক্রোমােজোমের কাজ হলাে মাতাপিতা থেকে জিন (যা জীবের বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে) সন্তান সন্ততিতে বহন করে নিয়ে যাওয়া। আর জীবের সব দৃশ্য এবং অদৃশ্যমান লক্ষণ বা বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণকারী এককের নাম জিন যার অবস্থান জীবের ক্রোমােজোমে।
কারণ আপনার পিতা মাতা সেগুলি পেয়েছে তাদের পিতা মাতা থাকে আর তারাও পেয়েছে তাদের পূর্ব প্রজন্ম থেকে। অর্থাৎ এর মাধ্যমেই আপনার পিতা-মাতা, দাদা-দাদী বা তারও কয়েক লক্ষ বছর পূর্বের আপনারই পূর্ব প্রজন্ম থেকে সকল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল অর্জন করে রেখেছেন জন্ম সময় থেকেই। এই রোগগুলির সবকটি সরাসরি আপনার মধ্যে হয়তো প্রকাশিত হবে না। তবে যেটির জেনেটিক মেটেরিয়াল প্রকট থাকবে সেটি নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিতে থাকবে, যতদিন না আপনি প্রপার হোমিও ট্রিটমেন্ট নিয়ে সেটিকে ঠিক করছেন।
"That patient has the same disease he had when he was born" - Dr. James Tyler Kent
আপনার DNA তে বর্তমান True Disease মূলতঃ আপনার শরীরের নানা অঙ্গে বিভিন্ন লক্ষণ ও উপসর্গ তৈরি করবে তার তীব্রতা অনুসারে। হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য ট্রিটমেন্ট সিস্টেম মূলতঃ স্থানিক ভাবে প্রকাশিত লক্ষণ ও উপসর্গকে রোগের নাম দিয়ে স্থানিক ভাবে সেগুলির চিকিৎসা করে থাকে তাই সেগুলি স্থায়ীভাবে দূর হয় না বরং সেসকল চিকিৎসা শাস্ত্রের উদ্ভাবিত ওয়ান টাইম ঔষধগুলিই বার বার প্রয়োগ করে করে রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হয়। যেমন কোন কারণে আপনার শরীরে সুগার বেড়ে গেলো তাকে ডায়াবেটিস নাম দিয়ে সুগার নিয়ন্ত্রণের চিকিৎসা দিয়ে যাবে কিন্তু ডায়াবেটিস আদৌ নির্মূল হয় না। ঠিক তেমনি ভাবে DNA তে বর্তমান True Disease কর্তৃক শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে সৃষ্টি করা লক্ষণ ও উপসর্গকে আরো বিভিন্ন নামে নামকরণ করা হয়ে থাকে যেমনঃ Cancer, Headache, CVA, Bronchitis, Laryngitis, Asthma, Varicocele, Schizophrenia, Constipation, IBS, IBD, Sinusitis, Goiter, Arthritis, Rheumatoid Arthritis, Ankylosing Spondylitis, Cervical Spondylosis, Scoliosis, Anal Fissure, Piles, Anal Fistula, Constipation, Cerebral Palsy, Down Syndrome, Gangrene ইত্যাদি।
যতদিন আপনার ভাইটাল ফোর্স শক্তিশালী অবস্থায় থাকবে তত দিন ভেতরের প্রকৃত রোগটি বা জটিল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল এমনিতেই নিস্তেজ অবস্থায় থাকবে। আর যখন ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়ে যাবে তখন ভেতরের সেই True Disease বা প্রকৃত রোগটি প্রকট হয়ে উঠবে অথবা নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিবে।
ভাইটাল ফোর্স যে যে কারণে দুর্বল হতে পারে
নিম্নোক্ত কারণে ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হলে রোগ জেগে উঠতে পারে
বিভিন্ন প্রকার ভ্যাকসিন বা টিকা
হাই-পাওয়ারের ক্ষতিকর সব এন্টিবায়োটিক
ক্রমাগত বিভিন্ন এলোপ্যাথিক বা রাসায়নিক ঔষধ সেবন
বড় ধরনের শারীরিক আঘাত
বড় ধরণের মানসিক আঘাত
এছাড়া বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ না করা, অনিয়ন্ত্রিত জীবন-যাপন করা ইত্যাদি
আপনাকে ঠিক রাখছে আপনার ভাইটাল ফোর্স এবং শত-সহস্র জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে আপনাকে রক্ষা করে চলেছে আপনার ভাইটাল ফোর্স। শুধু তাই নয়, রোগাক্রান্ত হলে আপনাকে সুস্থ করে তুলছে আপনার ভাইটাল ফোর্স। রোগ হলে আমরা যে ঔষধ প্রয়োগ করি সেগুলি আপনার ভাইটাল ফোর্সকেই সঞ্জীবিত করে তুলে আর ভাইটাল ফোর্সই আপনাকে সারিয়ে তুলে। - এটা মূলতঃ আল্লাহ পাক প্রদত্ত একটি বিশেষ সেটআপ।
ভাইটাল ফোর্সের বৈশিষ্ট
Spiritual
Autocratic
Automatic
Dynamic
Unintelligent and instinctive
ভাইটাল ফোর্সের উপস্থিতি বা অস্তিত্ব বা বাস্তবতাকে উপলব্ধি করা যায় শুধুমাত্র তখনই যখন এটি পার্থিব দেহযন্ত্রের মাধ্যমে ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেয়। ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ায় অংশ নেয় বলতে সর্বোচ্চ কর্তৃত্বকারী হিসেবে নিজের মতো করে দেহযন্ত্রকে নিয়ন্ত্রণ করে, যার ফলে দেহযন্ত্রের বিভিন্ন কোষ, কলা, সিস্টেম, অঙ্গপ্রতঙ্গের মধ্যে অখন্ডতা (Integrity) রক্ষা পায়। বিস্তারিত আরো দেখুন...
রোগ সৃষ্টিতে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়ার ভূমিকা
ধরুন, কিছু বাসি-পঁচা খাবার খেয়ে আপনার পেটের পীড়া হলো। পঁচা খাবারের সাথে যে জীবানু ছিল সেটি মূলত আপনার DNA তে বর্তমান True Disease গুলি থেকে তার Diathesis কেই অর্থাৎ তার স্বজাতীয় True Disease কেই জাগিয়ে তুলবে। অর্থাৎ রোগ আপনার ভেতরেই রয়েছে আপনি যদি পরিবেশ তৈরী করে দেন তাহলে প্রচ্ছন্ন অবস্থা থেকেও তা জেগে উঠবে।
অর্থাৎ ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া কোন রোগ সৃষ্টি করে না, এগুলি হলো রোগের চূড়ান্ত অবস্থার একটি বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
আধুনিক বিজ্ঞানে বিভিন্ন রোগের কারণ বা উৎস হিসেবে ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়াকে দায়ী করা হয় যদিও হোমিওপ্যাথিক বাস্তব অভিজ্ঞতা ভিন্ন করা বলে। হোমিওপ্যাথিক দর্শন অনুসারে, কোন মানুষ অসুস্থ হতে হলে বিশেষ সত্তা অর্থাৎ প্রকট Psoric Miasm এর উপস্থিতি প্রয়োজন। Psoric Miasm প্রকট হলে Vital Force বিশৃঙ্খলাগ্রস্ত (Disordered) হয়। এই বিশৃঙ্খল বা বিকৃতি যখন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় তখন মানুষটি রোগগ্রস্থ হয়। এই অবস্থায় রক্ত পরীক্ষা করলে বিভিন্ন Virus বা Bacteria এর উপস্থিতির প্রমান পাওয়া যায়।
অন্য কথায় Vital Force যেহেতু অশরীরী (Spiritual), স্বয়ংক্রিয় (Automatic) চিরগতিশীল (Dynamic) একটি সত্তা। সুতরাং বিশৃঙ্খলাগ্রস্ত করতে পারে শুধুমাত্র অনুরূপ জীবন বিরোধী রোগজনক রূপান্তর সাধক অশরীরী সত্তার (Morbific agent inimical to life) গতিশীল প্রভাব (Dynamic influence)।এক্ষেত্রে Vital Force কে বিশৃঙ্খলাগ্রস্ত করতে বা Psoric Miasm কে প্রকট করতে Virus/Bacteria এর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ কোন সম্পর্ক নেই।
Virus বা Bacteria হচ্ছে উদ্ভুত পরিস্থিতি জাত ফল বা রোগজাত সত্তা। রোগের সর্বশেষ বা চূড়ান্ত পরিস্থিতিতে Virus তার আকৃতি এবং প্রকৃতিগত ভয়ঙ্কর সত্তাকে প্রদর্শন করে। চূড়ান্ত পরিস্থিতির কারণ ভাইরাস বা ব্যাক্টেরিয়া নয় বরং অশরীরী বা অপার্থিব কোন সত্তা।
কোন মানুষ অসুস্থ বা রোগগ্রস্থ হতে হলে অভ্যন্তরীন মানুষটির (Inner Man)মধ্যে বিশেষ সত্তার উপস্থিতির প্রয়োজন যা Vital Force কে বিশৃঙ্খলাগ্রস্ত করে শরীরযন্ত্রে কষ্টকর অনুভূতি সমূহের সৃষ্টি করে এবং রকমারী অনিয়মিত ক্রিয়াকলাপের জন্ম দেয়, যাকে রোগ বলে অবহিত করা হয়। বিশেষ সত্তা প্রকৃত পক্ষে Psoric Miasm এর প্রকট অবস্থা যার উপস্থিতি ছাড়া Acute বা Chronic কোন রোগেই আক্রান্ত হওয়া একেবারে অসম্ভব।
Had Psora never ben establish as a miasm upon the human race, the other two chronic disease would have been impossible, .... All the diseases of man are build upon psora; hence it is the foundation of sickness; all other sickness came afterwards. -- [James Tyler Kent]
প্রকৃতপক্ষে Psora প্রকট হলে Vital Force disordered বিশৃঙ্খলাগ্রস্ত হতে শুরু করে, এই বিশৃঙ্খলা বা বিকৃতি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে মানুষ রোগাক্রান্ত হয়।
Psora বা Psoric Miasm সম্পর্কে প্রাথমিক ধারণা
Psora বা Psoric Miasm হচ্ছে কোন মানুষের ভাবনা চিন্তার উর্দ্ধতন বা ক্রমবিকাশ। একটি মানুষের ভাবনা-চিন্তা যতক্ষণ Healthy বা Positive থাকে ঐ মানুষটির মধ্যে অবস্থানকারী Psora বা Psoric Miasm প্রচ্ছন্ন Recessive থাকে। এই সময় জীবন বিরোধী কোন শক্তি ভাইটাল ফোর্সকে বিশৃঙ্খলাগ্রস্থ করতে পারে না। তখন মানুষটি পূর্ণ স্বাচ্ছন্দবোধ উপভোগ করেন এবং মানুষটিকে Healthy Individual বলা যেতে পারে। ক্রমে ক্রমে কোন মানুষের ভাবনা-চিন্তার যখন বিকৃতি হতে থাকে যার অর্থ হলো Psora প্রকট হতে শুরু করে, তখন Vital Force বিশৃঙ্খলাগ্রস্থ হতে শুরু করে অর্থাৎ অসুস্থতা শুরু হয় এবং বাড়তে থাকে। এরপর বিকৃতি অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেলে শরীরযন্ত্রে কষ্টকর অনুভূতিসমূহের সৃষ্টি হয় এবং রকমারী অনিয়মিত ক্রিয়াকলাপের জন্ম হয়, যাকে রোগ Disease বলে অভিহিত করা হয়।
Psora is the evolution of the state of man's will, the ultimate of his sin.
কিন্তু ভাইটাল ফোর্সের প্রাথমিক বিশৃঙ্খলাগ্রস্থ অবস্থায় মানুষটির অনুভুতিতে বিরূপ পরিবর্তনের সূচনা করলেও তখনই সেই পরিবর্তন জীবন্ত দেহযন্ত্রে বাহ্যিকভাবে প্রকাশিত হয় না, তবে রোগী নিজে জীবন বিরোধী পরিবর্তন অনুভব করতে পারে। তবে চিকিৎসক যদি যথেষ্ট দূরদর্শী, জ্ঞানী এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন হন তাহলে মানুষটির বিভিন্ন বিশৃঙ্খল আচার আচরণ এবং সেগুলির অর্থ ঐ চিকিৎসকের গোচরে আসবেই। আবার আপনারা ইতিমধ্যেই জেনেছেন যে - ভাইটাল ফোর্স অস্বাভাবিকভাবে বিকৃত হলে শরীরযন্ত্রে কষ্টকর অনুভুতিসমূহের সৃষ্টি করে এবং রকমারী অনিয়মিত ক্রিয়াকলাপের জন্ম হয়, যাকে রোগ Disease বলে অভিহিত করা হয়।
ক্রনিক ডিজিসের কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি কি?
সুতরাং আপনারা বুঝতেই পারছেন, প্যাথলজি টেষ্টে ধরা পড়ার সময় বা তার কিছু দিন আগেই কিন্তু কোন রোগ জন্মায় না, রোগের উৎপত্তি হয়েছিল ঐ ব্যাক্তি মাতৃগর্ভে ভ্রূণরূপে জন্ম নেবার সময়, যা রোগীর জেনেটিক হিস্ট্রি ও আচরণ থেকে অনেক আগেই একজন অভিজ্ঞ হোমিও চিকিৎসক নির্ণয় করতে ও চিকিৎসা দিতে পারেন ।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, যান্ত্রিক সভ্যতায় নিজেদের অতি আধুনিক মনে করা মানব সমাজ শারীরিক ও মানসিক কষ্টে ভোগার পরেও, কেবলমাত্র যান্ত্রিক প্যাথলজি বা কিছু মেডিক্যাল টেষ্টের ছাড়পত্রের জন্য অপেক্ষা করে। ততদিনে যা কিছু ধ্বংস হবার তা হয়ে যায়। পরবর্তীকালে তা ঠেকিয়ে রাখতে চিকিৎসার নামে যে সকল ব্যবস্থা নেয়া হয়, তা মোটেও বাঁচার উপায় নয়। তা তিলে তিলে মৃত্যুরই ছায়া মাত্র বা প্রলয়ঙ্কারী ঝড়ের মাঝে সামান্য পাতার ছাউনি স্বরূপ।
এখন প্রশ্ন হলো "অতি আধুনিক বিজ্ঞান কোনটি?"
সারাজীবন ধরে নানাবিধ শারীরিক ও মানসিক যন্ত্রণায় ভোগান্তির চরম সীমায় পৌঁছানোর পরে কয়েক দফায় প্যাথলজি টেষ্টের রিপোর্ট অনুযায়ী রোগ ধরা পড়া?
নাকি রোগীর শারীরিক, মানসিক, আচরণগত কষ্টের লক্ষণ এবং জেনেটিক হিস্ট্রি ইত্যাদি বিচারে DNA তে থাকা True Disease বা প্রকৃত রোগটি নির্ণয় করে প্যাথলজি টেষ্টের অনেক আগেই সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া ব্যাক্তির ভবিষ্যতে ক্যান্সার বা অন্য কোন জটিল রোগ হবার সম্ভাবনা রয়েছে এবং পূর্ববর্তী চিকিৎসার মাধ্যমেই তা আগে থেকেই রোধ করা?
আবার রোগাক্রান্ত হওয়ার পর, বিভিন্ন ট্রিটমেন্ট সিস্টেম রোগ নির্ণয়ের জন্য শত প্রকার মেডিক্যাল টেস্ট করেই আপনাকে ঔষধ দিচ্ছে কিন্তু আদৌ আপনি ভালো হচ্ছেন না। এর কারণ মূলত আপনার DNA তে থাকা True Disease বা প্রকৃত রোগটি যার চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি ছাড়া আর কোন ট্রিটমেন্ট সিস্টেমই ঠিক ভাবে দিতে পারে না। এই প্রকৃত রোগগুলি ভাইটাল ফোর্সকে কেন্দ্র করে শক্তিশালী বাধা বা দেয়াল তৈরী করে রাখে।
যেহেতু একেক জনের ক্ষেত্রে একেক প্রকার True Disease প্রি-ডোমিনেন্ট থাকে তাই একেক জনের ক্ষেত্রে ভাইটাল ফোর্সকে কেন্দ্র করে তৈরীকৃত বাধার ধরণটাও একেক রকম। দেখবেন, একই রোগে আক্রান্ত হয়েছে অথচ একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম লক্ষণ ও উপসর্গ তৈরি হচ্ছে। একজন দক্ষ হোমিও চিকিৎসক হোমিওপ্যাথির নিয়মনীতি অনুসারে ইনভেস্টিগেশন করে মূলত পেসেন্টের DNA তে প্রি-ডোমিনেন্ট True Disease কে নির্ণয় করবেন এবং সে আলোকেই ডাইনানিক হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগ করে সবগুলি বাধা ভেঙে আপনার দুর্বল ভাইটাল ফোর্সকে শক্তিশালী করবেন। তখন দেখবেন আপনি যে রোগেই আক্রান্ত থাকেন না কেন আর সেগুলি যত প্রকার উপসর্গই প্রকাশ করুক না কেন একে একে সবগুলি দূর হয়ে আপনার মধ্যে সুস্বাস্থ্য ফিরে আসবে ইনশা-আল্লাহ।
নানা প্রকার সুপারফিশিয়াল বা উপরি উপরি চিন্তা করে অথবা নানা প্রকার মেডিক্যাল টেস্ট করে একটি সমস্যার ঠিক পেছনের কারণটি নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয়ে থাকে আর সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রে। কিন্তু এক্ষেত্রে রোগ কিন্তু কখনও নির্মূল করা সম্ভব হয়না সাময়িক আরাম পাওয়া যায় মাত্র। আমাদের এলোপ্যাথিক সিস্টেমে মূলত রোগের স্থানিক কারণ নির্ণয় করেই চিকিৎসা দেয়া হয়। তাই সেটি না পেলে এলোপ্যাথিতে রোগের চিকিৎসাও হয় না ঠিক ঠাক ভাবে।
যেহেতু এলোপ্যাথিসহ অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে উপরি উপরি অর্থাৎ ঐ স্থানের বর্তমান অবস্থা চিন্তা করে রোগের চিকিৎসা দেয়া হয় তাই সাময়িক একটু উপশম ছাড়া ক্রনিক রোগ আদৌ নির্মূল হয় না। যেমন ক্রনিক অবস্থায় আইবিএস বা আইবিডি তে পাতলা পায়খানা, আমাশয় বা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে তাৎক্ষনিক ভাবে সেটা ঠিক করার ঔষধ দেয়া হয়। সমস্যা সাময়িক ঠিক হয়ে রোগী আরাম পায় বটে কিন্তু ঔষধ না খেলেই সমস্যা আবার দেখা দেয়। কারণ সেই ঔষধগুলি স্থানিক লক্ষণের ভিত্তিতে প্রয়োগ করা হয়, বলতে গেলে সেগুলি ওয়ান টাইম মেডিসিন। আর ওয়ান টাইম ঔষধগুলি যদি আপনি দিনের পর দিন আপনার শরীরে প্রয়োগ করতে থাকেন তাহলে সেগুলি আপনার মধ্যে PTS - Post Trauma Syndrome (লিংকে ক্লিক করে আর্টিকেলটি পড়ুন) তৈরি করবে। আপনার ইন্টারনাল ভাইটাল অর্গানগুলি দিনের পর দিন দুর্বল থেকে দুর্বলতর হতে থাকবে সাথে সাথে আপনার ভাইটাল ফোর্সও দুর্বল থেকে দুর্বলতর হতে থাকবে। ফলশ্রুতিতে আপনার মধ্যে আরো নতুন নতুন রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ জেগে উঠতে থাকবে।
এ দেশের অধিকাংশ মানুষই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শাস্ত্র সম্পর্কে খুব ভালো জ্ঞান রাখনে না বিধায় এলোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথির পার্থক্য তারা বুঝেন না। ক্রনিক রোগের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগ করতে হয় পেসেন্টের DNA তে সক্রিয় True Disease এর অবস্থার আলোকে। এর জন্য দরকার হোমিওপ্যাথিক প্রিন্সিপ্যাল অনুযায়ী রোগ নির্ণয়। তাই এক্ষেত্রে এলোপ্যাথিতে রোগের স্থানিক কারণ নির্ণয়ের জন্য যে মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়ে থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলির তেমন কোন প্রয়োজন পড়ে না। ভিডিওটি দেখুন আরো কিছু বলা আছে বিস্তারিত ভাবে। ধন্যবাদ।