ক্রনস ডিজিজ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
ক্রনস ডিজিজ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২২

শিশুর মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধই হচ্ছে না ! করনীয় কি

বাচ্চাদের রক্ত আমাশয়, এনাল ফিসার, আইবিডি, আইবিএস, বিরল ক্ষেত্রে পাইলস ইত্যাদি হলো মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণের অন্যতম কিছু কারণ যেগুলির কার্যকর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা রয়েছে। কোন শিশুর পায়খানার সময় মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে বহু ক্ষেত্রেই শিশুটির রক্ত আমাশয় হয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু যখন দেখা যায় এই সমস্যা কোন এন্টিবায়োটিক দিয়েও ঠিক হচ্ছে না তখন হয়তো শিশুর পিতামাতার টনক নড়ে উঠে।
 
রক্ত আমাশয় হলে শিশু পায়খানা করার সময় চাপ দিবে। রক্তের সঙ্গে পিচ্ছিল একটা পদার্থ এবং পায়খানাও থাকবে। আর যদি পলিপের জন্য হয় তাহলে টাটকা রক্ত যাবে। কোন ব্যথা থাকবে না।
শিশুর মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ
ক্রোন'স ডিজিস হলো শিশুদের মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরনের একটি বড় কারণ। এটি হলো আইবিডি এর একটি ধরণ এবং বড় রকমের একটি সংক্রমণ যা পাচন তন্ত্রের আস্তরণের আভ্যন্তরীণ অংশকে আক্রমণ করে। এছাড়াও এটি আবার কোলাইটিসের একটি রূপ হিসেবেও অভিহিত। এই সংক্রমণের ফলে অন্ত্রের মধ্যে আলসার হয়ে থাকে যা তীব্র প্রদাহের কারণ। এই আলসারগুলিই আবার মল পাস করার সময় ফেটে যেতে পারে এবং তার পরিণামে ডায়রিয়ার পাশাপাশি মলদ্বার থেকে রক্ত পড়তে থাকে।

আইবিএস IBS হিসেবে সুপরিচিত এই রোগটিতে বহু শিশু এবং প্রাপ্ত বয়স্করাও ভুগে থাকেন। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে অন্ত্র আলোড়ন বা মল ত্যাগ অনিয়মিত ধারায় হয়ে থাকে, যার পরিণামে কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে ডায়রিয়া বা আমাশয়ও হয়ে থাকে। এই লাগাতার আমাশয় অথবা ডায়রিয়ার উপস্থিতি এবং মল পাস করানোর জন্য অন্ত্রের পেশীগুলির তীব্র জোরাল আন্দোলন রক্ত কোষগুলিকে ফাটিয়ে দিতে পারে, যার ফলে মলদ্বারের মধ্যে রক্তক্ষরণ হতে থাকে।

আরেকটি কারণে শিশুদের পায়খানার সঙ্গে রক্ত যায় সেটি হলঃ এনাল ফিসার। আজকাল অতি আধুনিক পিতামাতার শিশুরা বাইরের খাবার, ফাস্টফুড, জাংফুড ইত্যাদির প্রতি অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। এগুলো খাওয়ার কারণে পায়খানা শক্ত হয় এবং এক সময় মলদ্বার ফেটে যায়। ফেটে গেলে পায়খানার সঙ্গে রক্ত আসে। একে আমরা বলি এনাল ফিসার। এটাতে কিন্তু শিশুরা পায়খানা করতে চাইবে না। দেখবেন যখন বেগ হবে, লাফালাফি করছে। বসতে চাচ্ছে না। আর পায়খানা আঠার মতো লেগে থাকে এবং ফোঁটা ফোঁটা রক্ত পড়ে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিশুদের পাইলসও হতে দেখা যায়।

শিশুর মলদ্বারে রক্তক্ষরণ: চিকিৎসা

কারণ যেটিই হোক, যখন দেখবেন এলোপ্যাথিক চিকিৎসকদের এন্টিবায়োটিক কেন তাদের কোন চিকিৎসাতেই কাজ হচ্ছে না বরং লাগাতার অযথা একের পর এক মেডিক্যাল টেস্ট দিয়ে দিয়ে শিশুর জীবন উল্টো দুর্বিষহ করে তুলছে তখন কাল বিলম্ব না করে দক্ষ এবং রেজিস্টার্ড একজন হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করে প্রোপার চিকিৎসা নিবেন। মনে রাখবেন, এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় নতুন রোগ অর্থাৎ একিউট ডিজিস ভালো হলেও পুরাতন রোগ বা ক্রনিক ডিজিস আদৌ ভালো হয় না। সেগুলির একমাত্র স্থায়ী চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি।

যা যা জেনেছেন 

  • বাচ্চাদের রক্ত আমাশয় হলে কি করনীয়
  • বাচ্চাদের রক্ত আমাশয় ঔষধ
  • পায়খানার রাস্তায় ব্যথা হলে করণীয়
  • বাচ্চাদের রক্ত আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত
  • বাচ্চাদের রক্ত আমাশয় কেন হয়
  • পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়ার চিকিৎসা
  • পায়খানার সাথে রক্ত পড়া কিসের লক্ষণ
বিস্তারিত

বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০

ক্রনস ডিজিজ Crohn's disease - ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ আইবিডি IBD

যন্ত্রণাদায়ক পেটের পীড়া ক্রনস ডিজিজ Crohn's disease হল ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ - আইবিডি বা Inflammatory bowel disease - IBD এর একটি রূপ। এই রোগে মুখ থেকে শুরু করে পায়ুপথ পর্যন্ত যেকোন স্থান আক্রান্ত হতে পারে। সাধারণত  স্মল ইনটেসটাইনের একটি বিশেষ অংশ ইলিয়াম বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কখনো কখনো কোলনও আক্রান্ত হতে দেখা যায়। এ রোগে পরিপাকতন্ত্রের নালির গাত্রে স্কার (ক্ষত) বা ফাইব্রোসিস হতে থাকে এবং নালি সরু হয়ে যেতে থাকে। জটিলতা হিসেবে পায়খানার সমস্যা হওয়া, ফোড়া, ফিস্টুলাও হতে পারে।

পুরুষ মহিলা যে কেউ এই সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারে। বর্তমানে প্রায় ৩ মিলিয়ন আমেরিকান আইবিডি এর সমস্যায় ভুগছেন। এই রোগ যেকোন বয়সেই হতে পারে তবে ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সীদের মধ্যেই বেশি হতে দেখা যায়।

পূর্বে ইউরোপ ও আমেরিকায় এ রোগটি দেখা গেলেও আমাদের উপমহাদেশের জনগণের মধ্যে তেমন দেখা যেত না। তবে বর্তমানে পশ্চিমা দেশগুলোর খাদ্যাভ্যাস ও সংস্কৃতি অনুকরণের ফলে আমাদের দেশের মানুষের মধ্যেও ক্রনস ডিজিজ এবং আলসারেটিভ কোলাইটিস হতে দেখা যাচ্ছে। একটি তুলনামুলক সমীক্ষাতে জানা গেছে যে, এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে এই রোগের প্রাদুর্ভাব ভারতেই সবচাইতে বেশি।
ক্রনস ডিজিজ

ক্রনস ডিজিজ -টাইপ

পরিপাক তন্ত্রের কোন স্থানে হচ্ছে এর উপর ভিত্তি করে একে বিভিন্ন টাইপে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন -
  • Ileocolitis - ক্ষুদ্রান্ত বা স্মল ইন্টেস্টাইনের শেষ প্রান্ত যাকে বলা হয় ইলিয়ামের শেষ প্রান্ত এবং কোলনকে আক্রান্ত করে। 
  • Ileitis - শুধু ইলিয়ামকে আক্রান্ত করে 
  • Gastroduodenal Crohn's Disease - পাকস্থলি এবং ক্ষুদ্রান্ত বা স্মল ইন্টেস্টাইনের প্রথম দিক অর্থাৎ ডিউডেনামকে আক্রান্ত করে 
  • Jejunoileitis - ক্ষুদ্রান্ত বা স্মল ইন্টেস্টাইনের উপরের অর্ধাংশ অর্থাৎ জেজুনাম আক্রান্ত করে 
  • Crohn's (Granulomatous) Colitis - বৃহদান্ত্র অথাৎ কোলনকে আক্রান্ত করে 

ক্রনস ডিজিজ - উপসর্গ

  • ক্রমাগত ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা
  • জ্বর, ক্লান্তিবোধ
  • মুখে ঘা হওয়া
  • পেটে ব্যথা, পেট ফাঁপা এবং টান ধরা
  • পেটে জ্বালাপোড়াসহ ব্যথা
  • বমি বমি ভাব বা বমি
  • ঢেঁকুর আসা, বুক জ্বালা
  • মলের সাথে রক্ত যাওয়া
  • মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ
  • পায়ুপথে ব্যথা হওয়া
  • ওজন কমে যাওয়া

ক্রনস ডিজিজ - কারণ

  • বংশে কারো ক্রনস ডিজিজ থাকলে এই রোগে হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অভাব
  • পরিবেশের প্রভাব, যেমন শহরে বসবাস করা 
  • ফ্যাট সমৃদ্ধ ও পরিশোধিত খাবার খেলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে
  • পূর্ব ইউরোপীয় বংশোদ্ভূতদের এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি

ক্রনস ডিজিজ - প্রতিরোধ

ক্রোনস ডিজিজ প্রতিরোধ করার জন্য যেগুলি করা দরকার
  • এনিম্যাল ফুড বা প্রাণীজ খাদ্য পরিহার করুন
  • প্লান্ট বা উদ্ভিজ্জ খাদ্য খাওয়ার অভ্যাস করুন 
  • ধূমপান থেকে দূরে থাকুন। চেষ্টা করুন ধূমপানের অভ্যাস পরিত্যাগ করার। তাহলে এই রোগ থেকে কিছুটা হলেও দূরে থাকতে পারবেন
  • মদ্য পানের অভ্যাস থাকলে পরিত্যাগ করুন 
  • রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলার জন্য নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করুন
  • গবেষণায় দেখা গেছে, শিল্প,কারখানা আছে এরকম জায়গার আশেপাশে বাস করলে ক্রোন ডিজিজের পরিমাণ বেড়ে যায়। তাই, স্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকা দরকার। আর পরিবেশ সম্পর্কে একটু বেশি সচেতন থাকা প্রয়োজন

ক্রনস ডিজিজ - চিকিৎসা

হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে ক্রনস ডিজিজ এর কোন স্থায়ী চিকিৎসা নেই। বর্তমান বিশ্বে এর একমাত্র স্থায়ী চিকিৎসা হল হোমিওপ্যাথি। অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে এই সমস্যার উপসর্গকে কমিয়ে রাখার চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে এবং জীবন যাত্রার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়ে থাকে। কিন্তু রোগীর নিজের বিস্তারিত জেনে এবং নিকট আত্মীয়ের হিস্ট্রি পর্যালোচনা করে যত্ন নিয়ে চিকিৎসা করলে ধীরে ধীরে এই সমস্যা স্থায়ীভাবে সেরে উঠে এক মাত্র হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায়। 
বিস্তারিত