আলসারেটিভ কোলাইটিস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
আলসারেটিভ কোলাইটিস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ৩ মে, ২০২২

আলসারেটিভ কোলাইটিস, পেপটিক ও ডিওডেনাল আলসারের চিকিৎসা

আলসারেটিভ কোলাইটিস, মিউকাস কোলাইটিস, পেপটিক ও ডিওডেনাল আলসার ইত্যাদির জন্য হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা না নিয়ে যদি রোগীরা তাদের খাবার তালিকা রদবদল বা ডায়েট কন্ট্রোল করে চলেন তাহলে কিছুটা আরাম পেলেও রোগ কিন্তু আদৌ নির্মূল হয় না। এক্সপার্ট একজন হোমিও চিকিৎসক দ্বারা চিকিৎসিত না হলে আইবিডি এবং এই সকল রোগ থেকে মুক্তি লাভ করাও অসম্ভব। কারণ এই রোগের চিকিৎসা দিতে হলে চিকিৎসককে অবশ্যই এর চিকিৎসা দানে দক্ষ হতে হবে। কিন্তু সাধারণ মানুষ যে ভুলটি প্রথমেই করে থাকে সেটি হলো, তারা দক্ষ একজন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়। ফলশ্রুতিতে ফলাফল শুন্য।

অনেকেই আবার এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নিতে নিতে ফতুর হয়ে এক সময় বান্ডেল বান্ডেল ফাইল নিয়ে এসে হোমিও ডাক্তারকে বলেন - এই যে দেখুন বিগত ১০/১৫ বছর যাবৎ কত এলোপ্যাথিক ডাক্তার দেখিয়েছি, কত টেস্ট করিয়েছি কিন্তু কোন লাভ হয়নি। এই গুলি দেখে আপনি হোমিও চিকিৎসা দিন।
আলসারেটিভ কোলাইটিস, পেপটিক ও ডিওডেনাল আলসারের চিকিৎসাহোমিওপ্যাথি সম্পর্কে জ্ঞান না থাকার ফলেই মুলতঃ মানুষ এমনটি করে থাকে। প্রথমেই আপনাকে জানতে হবে বহু রোগ রয়েছে যেগুলির কোন এলোপ্যাথিক চিকিৎসাই নেই। আলসারেটিভ কোলাইটিস, মিউকাস কোলাইটিস, ডিওডেনাল আলসার ইত্যাদির কোন স্থায়ী এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নেই। তাই এই সব রোগের জন্য এলোপ্যাথিক চিকিৎসকদের পেছনে দৌড়ানো বৃথা সময় এবং অর্থ নষ্ট ছাড়া আর কিছুই নয়। শুরুতেই যারা দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করে প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিতে পারেন তারা সব দিক থেকেই ভালো থাকেন।

আপনি যখন এক্সপার্ট কোন হোমিও চিকিৎসকের কাছে যাবেন তখন মূলতঃ পূর্বেকার করা কোন মেডিক্যাল রিপোর্ট দেখে আপনার শরীরে হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রয়োগ করা হবে না। হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রয়োগ করার নির্দিষ্ট কিছু নিয়মনীতি রয়েছে। রোগীর শরীরে হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করতে হলে হোমিওপ্যাথিক নিয়মে ইনভেস্টিগেশন করতে হয়। এর জন্য চিকিৎসক আপনাকে যে যে প্রশ্ন করবেন সবকিছুর ঠিকঠাক উত্তর দিতে হবে আপনাকে।

এক্ষেত্রে রোগের জন্মলগ্ন থেকে এ পর্যন্ত কি কি স্বাস্থ সমস্যা হয়েছে সব জানবেন চিকিৎসক। রোগীর পিতা-মাতা, দাদা-দাদী, নানা-নানী কে কোন কোন অসুখবিসুখে কষ্ট করেছেন বা করছেন তার বিস্তারিত তথ্যাদি জানতে হবে। কারো কোন প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের হিস্ট্রি আছে কিনা, কারো যক্ষা বা টিবি রোগের হিস্ট্রি আছে কিনা, রোগীর জন্মের সময় কোন সমস্যা হয়েছিল কিনা এসব বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে সাহায্য করতে হবে চিকিৎসককে। অর্থাৎ এখানে প্রপার একটি ইনভেস্টিগেশন করে চিকিৎক খুঁজে বের করবেন ঠিক কোন জেনেটিক ম্যাটেরিয়ালস এর কারণে রোগীর সমস্যাটি ঠিক হচ্ছে না এবং সেটিকে দূর করার জন্যই মূলত শক্তিকৃত হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগ করা হবে। এভাবেই ধীরে ধীরে চিরতরে দূর হয়ে যায় আলসারেটিভ কোলাইটিস, পেপটিক ও ডিওডেনাল আলসারের মতো জটিল সমস্যাগুলি। 

যা যা জেনেছেন

  • আলসার কত দিনে ভালো হয়
  • গ্যাস্ট্রিক আলসারের ঔষধ
  • আলসারের ঔষধ
  • কী খেলে আলসার ভাল হয়
  • গ্যাস্ট্রিক আলসারের হোমিও ঔষধ
  • ডিওডেনাল আলসারের লক্ষণ
  • গ্যাস্ট্রিক আলসার থেকে মুক্তির উপায়
  • আলসারের ঘরোয়া চিকিৎসা
  • আলসারেটিভ কোলাইটিস হোমিও চিকিৎসা
  • কোলন ইনফেকশন লক্ষণ
  • কোলাইটিস ট্রিটমেন্ট
  • কোলন ইনফেকশন কী
  • কোলাইটিস কেন হয়
  • কোলাইটিস ডায়েট
বিস্তারিত

বৃহস্পতিবার, ৭ মে, ২০২০

আলসারেটিভ কোলাইটিস - ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ বা আইবিডি IBD

ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ আইবিডি Inflammatory bowel disease - IBD একটি রূপ হলো Ulcerative Colitis আলসারেটিভ কোলাইটিস। আমাদের কোলন বা বৃহদান্ত্রের প্রদাহকেই মূলত কোলাইটিস বলা হয়ে থাকে। এ রোগ বৃহদান্ত্রের প্রদাহ হয়ে অন্ত্রের মিউকাস মেমব্রেনে ক্ষত সৃষ্টি করে। কোন অঞ্চলে হয়েছে এবং রোগের মাত্রা কেমন তার ওপর নির্ভর করে এর ধরন নির্ণয় করা হয়। যেমন -
  • আলসারেটিভ প্রক্টাইটিস (Ulcerative proctitis) - রেক্টাম বা মলদ্বার পর্যন্ত সীমিত থাকে
  • প্রক্টসিগময়েডাইটিস (Proctosigmoiditis) - রেক্টাম ও সিগময়েড জড়িত
  • লেফট সাইডেড কোলাইটিস (Left-sided colitis) - বাঁ দিকের কোলনটি জড়িত
  • প্যানকোলাইটিস (Pancolitis) - পুরো কোলনকেই আক্রান্ত করে
  • অ্যাকিউট সিভিয়ার আলসারেটিভ কোলাইটিস (Acute severe ulcerative colitis) - পুরো কোলনকেই আক্রান্ত করে
পেটের একটি দুরারোগ্য পীড়া বলেই বিবেচিত হয় আলসারেটিভ কোলাইটিস। হোমিওপ্যাথি ছাড়া প্রচলিত অন্যান্য ট্রিটমেন্ট সিস্টেমে এর তেমন কোন ভাল চিকিৎসা নেই। শুধুমাত্র প্রপার হোমিও চিকিৎসা নিলেই এই সমস্যাটি ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে যায়। অন্য সকল চিকিৎসা শাস্ত্র এই রোগের উপসর্গকে সাময়িক ভাবে কমিয়ে রাখার চিকিৎসা দিতে থাকে এবং সাথে সাথে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনতে উপদেশ দিয়ে থাকে।

পূর্বে ইউরোপ ও আমেরিকায় এ রোগটি দেখা গেলেও আমাদের উপমহাদেশের জনগণের মধ্যে তেমন দেখা যেত না। তাই আমাদের দেশের মানুষের এই অসুখটি সাথে খুব একটা পরিচিতি ছিল না। তবে বর্তমানে পশ্চিমা দেশগুলোর খাদ্যাভ্যাস ও সংস্কৃতি অনুকরণের ফলে আমাদের দেশের মানুষের মধ্যেও আলসারেটিভ কোলাইটিস এবং ক্রনস ডিজিজ হতে দেখা যাচ্ছে।
অলসারেটিভ কোলাইটিস
আলসারেটিভ কোলাইটিস হচ্ছে পেটের প্রদাহজনিত যন্ত্রণাদায়ক সমস্যা। এর ফলে কোলনে প্রদাহ ও ঘা হয় যা রোগীর পেটে মর্মান্তিক ব্যথার সৃষ্টি করে। ছোট ছোট আলসার বা ঘা গুলো পুরো কোলনকে ক্ষতিগ্রস্থ করে। আলসারগুলো একে অন্যের সাথে আটকে থাকে। এই রোগ জীনগত কারণে বা পরিবেশগত কারণে হতে পারে। এর লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে -

আলসারেটিভ কোলাইটিস - উপসর্গসমূহ

  • ডায়রিয়ার সাথে রক্ত পড়া বা রক্ত আমাশয় হলো আলসারেটিভ কোলাইটিসের প্রধান লক্ষণ
  • রক্ত বা পুঁজ মিশ্রিত পাতলা পায়খানা হতে থাকে
  • রোগের তীব্রতা কম থাকলে দিনে মোটামুটি ৪/৫ বার পাতলা পায়খানা হতে পারে
  • রোগের তীব্রতা খুব বেশি হলে দিনে ৬-১০ বার পর্যন্ত পায়খানা হতে পারে
  • পায়খানার সাথে আমাশাও থাকতে পারে
  • মলদ্বার দিয়ে অনেক সময় মিউকাস বের হয়
  • পায়খানার বেগ আসা মাত্রই ছুটতে হয়
  • তল পেট মোচড় দেয় এবং অনেক সময় তীব্র পায়খানার বেগ হয়
  • সাধারণত তলপেটের বাম পাশে ব্যথা থাকে যা পায়খানা হবার পর কিছুটা কমে যায়
  • গায়ে জ্বর থাকতে পারে
  • পায়খানার সাথে রক্ত যাবার ফলে রোগীর রক্তসল্পতা দেখা দেয়
  • মলদ্বারে ব্যথা হতে পারে
  • অরুচি, অস্বস্তি হয়, ওজন কমে যেতে পারে
আলসারেটিভ কোলাইটিস হচ্ছে ইনফ্ল্যামেটোরি বাওয়েল ডিজিজ-এর (আইবিডি) একটা রূপ কিন্তু তা ইরিটেব্‌ল বাওয়েল সিনড্রোম - আইবিএস বা ক্রনস ডিজিজ থেকে আলাদা। ইরিটেব্‌ল বাওয়েল সিনড্রোম হলো একটি পরিচিত পেটের পীড়া যা পাতলা পায়খানা, কোষ্ঠকাঠিন্যসহ পেটের আরো কিছু উপসর্গ সৃষ্টি করে। যাই হোক, আলসারেটিভ কোলাইটিস-এ বৃহদন্ত্রের প্রদাহ ঘা এবং ক্ষত দেখা যায়।

ক্রনস ডিজিজ পরিপাক নালীর যেকোন অংশকে আক্রমণ করতে পারে কিন্তু আলসারেটিভ কোলাইটিস প্রধানতঃ বৃহদন্ত্রের নীচের অংশ (মলদ্বার) আক্রমণ করে। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে এটা সম্পূর্ণ কোলনকে আক্রমণ করতে পারে।

আলসারেটিভ কোলাইটিস - কারণ

আলসারেটিভ কোলাইটিসের নির্দিষ্ট কারণ এখনো অজানা। তবে উপরি উপরি চিন্তা করে যে সব কারণে রোগটি হবার সম্ভাবনা বেশি দেখা যায় সেগুলো হল -
  • জিনগত বা পারিবারিক ইতিহাস
  • অত্যধিক মানসিক দুশ্চিন্তা
  • ইনফেকশন জনিত কারণ
  • গ্যাসট্রোএন্টেরাইটিস জনিত কারণ
  • অনিয়ন্ত্রিত অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ গ্রহণ
  • NSAID গ্রুপের ওষুধ অত্যধিক গ্রহণ

আলসারেটিভ কোলাইটিস - রোগ নির্ণয়ের পরীক্ষা

  • রক্ত পরীক্ষা করলে হিমোগ্লবিন কমে যায় এবং ইএসআর বেড়ে যায়
  • সিগময়ডোস্কোপি
  • কোলোনোস্কপি
  • বেরিয়াম ইনেমা
  • আলট্রাসনোগ্রাফি
  • এমআরআই
  • সিআরপি
কোলনস্কপি এবং সিগময়েডস্কপি যান্ত্রিক এই পদ্ধতি ছাড়া আর কোনও বিকল্প নেই এই রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে। প্রথমে কোলনস্কপিই করা হয়। এই রিপোর্টে পুরো কোলন ক্ষতিগ্রস্ত ধরা পড়লে, বারবার কোলনস্কপিই করতে হয়। আর কোলনের বাঁ দিকটা ক্ষতিগ্রস্ত কি না সেটা দেখতে করা হয় সিগময়েডস্কপি।

আলসারেটিভ কোলাইটিস - জটিলতা

সময় মতো চিকিৎসা না করলে বিভিন্ন জটিলতা তৈরী হতে পারে যদিও জটিলতাগুলি ব্যক্তি বিশেষে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে।
  • কোলন ক্যান্সার হতে পারে
  • দেহের বিভিন্ন জয়েন্টে ব্যথা হতে পারে, যেমন-কোমর,মেরুদণ্ড, হাঁটু, পায়ের গোড়ালি, হাতের জয়েন্টে
  • চামড়ার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের লাল দাগ অথবা আলসার হতে পারে
  • চোখের বিভিন্ন ধরনের প্রদাহজনিত রোগ হয়ে অন্ধ হয়ে যেতে পারে
  • মুখ, হাত ও পায়ে পানি এসে শরীর ফুলে যেতে পারে এবং 
  • জন্ডিস হতে পারে, লিভারের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয় লিভার নষ্ট হয়ে যেতে পারে

আলসারেটিভ কোলাইটিস - চিকিৎসা 

হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে আলসারেটিভ কোলাইটিস এর কোন স্থায়ী চিকিৎসা নেই। বর্তমান বিশ্বে এর একমাত্র স্থায়ী চিকিৎসা হল হোমিওপ্যাথি। অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে এই সমস্যার উপসর্গকে কমিয়ে রাখার চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে এবং জীবন যাত্রার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়ে থাকে। কিন্তু রোগীর নিজের বিস্তারিত জেনে এবং নিকট আত্মীয়ের হিস্ট্রি পর্যালোচনা করে যত্ন নিয়ে চিকিৎসা করলে ধীরে ধীরে এই সমস্যা স্থায়ীভাবে সেরে উঠে এক মাত্র হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায়। 
বিস্তারিত