আইবিএস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
আইবিএস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২২

শিশুর মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধই হচ্ছে না ! করনীয় কি

বাচ্চাদের রক্ত আমাশয়, এনাল ফিসার, আইবিডি, আইবিএস, বিরল ক্ষেত্রে পাইলস ইত্যাদি হলো মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণের অন্যতম কিছু কারণ যেগুলির কার্যকর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা রয়েছে। কোন শিশুর পায়খানার সময় মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে বহু ক্ষেত্রেই শিশুটির রক্ত আমাশয় হয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু যখন দেখা যায় এই সমস্যা কোন এন্টিবায়োটিক দিয়েও ঠিক হচ্ছে না তখন হয়তো শিশুর পিতামাতার টনক নড়ে উঠে।
 
রক্ত আমাশয় হলে শিশু পায়খানা করার সময় চাপ দিবে। রক্তের সঙ্গে পিচ্ছিল একটা পদার্থ এবং পায়খানাও থাকবে। আর যদি পলিপের জন্য হয় তাহলে টাটকা রক্ত যাবে। কোন ব্যথা থাকবে না।
শিশুর মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ
ক্রোন'স ডিজিস হলো শিশুদের মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরনের একটি বড় কারণ। এটি হলো আইবিডি এর একটি ধরণ এবং বড় রকমের একটি সংক্রমণ যা পাচন তন্ত্রের আস্তরণের আভ্যন্তরীণ অংশকে আক্রমণ করে। এছাড়াও এটি আবার কোলাইটিসের একটি রূপ হিসেবেও অভিহিত। এই সংক্রমণের ফলে অন্ত্রের মধ্যে আলসার হয়ে থাকে যা তীব্র প্রদাহের কারণ। এই আলসারগুলিই আবার মল পাস করার সময় ফেটে যেতে পারে এবং তার পরিণামে ডায়রিয়ার পাশাপাশি মলদ্বার থেকে রক্ত পড়তে থাকে।

আইবিএস IBS হিসেবে সুপরিচিত এই রোগটিতে বহু শিশু এবং প্রাপ্ত বয়স্করাও ভুগে থাকেন। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে অন্ত্র আলোড়ন বা মল ত্যাগ অনিয়মিত ধারায় হয়ে থাকে, যার পরিণামে কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে ডায়রিয়া বা আমাশয়ও হয়ে থাকে। এই লাগাতার আমাশয় অথবা ডায়রিয়ার উপস্থিতি এবং মল পাস করানোর জন্য অন্ত্রের পেশীগুলির তীব্র জোরাল আন্দোলন রক্ত কোষগুলিকে ফাটিয়ে দিতে পারে, যার ফলে মলদ্বারের মধ্যে রক্তক্ষরণ হতে থাকে।

আরেকটি কারণে শিশুদের পায়খানার সঙ্গে রক্ত যায় সেটি হলঃ এনাল ফিসার। আজকাল অতি আধুনিক পিতামাতার শিশুরা বাইরের খাবার, ফাস্টফুড, জাংফুড ইত্যাদির প্রতি অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। এগুলো খাওয়ার কারণে পায়খানা শক্ত হয় এবং এক সময় মলদ্বার ফেটে যায়। ফেটে গেলে পায়খানার সঙ্গে রক্ত আসে। একে আমরা বলি এনাল ফিসার। এটাতে কিন্তু শিশুরা পায়খানা করতে চাইবে না। দেখবেন যখন বেগ হবে, লাফালাফি করছে। বসতে চাচ্ছে না। আর পায়খানা আঠার মতো লেগে থাকে এবং ফোঁটা ফোঁটা রক্ত পড়ে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিশুদের পাইলসও হতে দেখা যায়।

শিশুর মলদ্বারে রক্তক্ষরণ: চিকিৎসা

কারণ যেটিই হোক, যখন দেখবেন এলোপ্যাথিক চিকিৎসকদের এন্টিবায়োটিক কেন তাদের কোন চিকিৎসাতেই কাজ হচ্ছে না বরং লাগাতার অযথা একের পর এক মেডিক্যাল টেস্ট দিয়ে দিয়ে শিশুর জীবন উল্টো দুর্বিষহ করে তুলছে তখন কাল বিলম্ব না করে দক্ষ এবং রেজিস্টার্ড একজন হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করে প্রোপার চিকিৎসা নিবেন। মনে রাখবেন, এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় নতুন রোগ অর্থাৎ একিউট ডিজিস ভালো হলেও পুরাতন রোগ বা ক্রনিক ডিজিস আদৌ ভালো হয় না। সেগুলির একমাত্র স্থায়ী চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি।

যা যা জেনেছেন 

  • বাচ্চাদের রক্ত আমাশয় হলে কি করনীয়
  • বাচ্চাদের রক্ত আমাশয় ঔষধ
  • পায়খানার রাস্তায় ব্যথা হলে করণীয়
  • বাচ্চাদের রক্ত আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত
  • বাচ্চাদের রক্ত আমাশয় কেন হয়
  • পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়ার চিকিৎসা
  • পায়খানার সাথে রক্ত পড়া কিসের লক্ষণ
বিস্তারিত

বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আইবিএস এর Tuberculosis TB যক্ষা ফ্যাক্টর ! IBS রোগীর বা নিকট আত্মীয়ের হিস্ট্রিতে টিবি বা যক্ষ্মা

আইবিএস IBS এর ক্ষেত্রে Tuberculosis (TB) যক্ষ্মা বা যক্ষা ফ্যাক্টর নিয়ে আজ আলোকপাত করবো। আপনারা হয়তো অনেকেই লক্ষ্য করে থাকবেন যিনি TB বা যক্ষাতে আক্রান্ত হন অথবা তার নিকট আত্মীয় কারো TB থাকলে তিনি বিভিন্ন রকম শারীরিক এবং মানুষিক সমস্যায় আক্রান্ত থাকেন। যেমন পেটের পীড়া, শ্বাসকষ্ট বা ঠান্ডার সমস্যা ইত্যাদি যেন সারা বছর লেগেই থাকে। বছরের পর বছর ধরে দেশ বিদেশে নানা এলোপ্যাথিক চিকিৎসকের পেছনে দৌড়াতে থাকে কিন্তু সমস্যার আদৌ কোন স্থায়ী সমাধান হয় না।

কারণ এলোপ্যাথিতে মূলতঃ মূল রোগের চিকিৎসা করা হয় না বরং মূল রোগ বা তার জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল সৃষ্ট কিছু লক্ষণ ও উপসর্গের চিকিৎসা করা হয় তাও আবার স্থানিক ভাবে। যার কারণে এলোপ্যাথিতে ক্রনিক ডিজিস আদৌ স্থায়ীভাবে ভাল হয় না। ঠিক তেমনি ভাবে আইবিএস IBS এর পেছনে যখন মূল কারণ থাকে TB বা যক্ষা অথবা ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল তখন বুঝতেই পারছেন আপনি পেট ঠান্ডা রাখার জন্য যতই এলোপ্যাথিক ঔষধ সেবন করেন না কেন আপনার পেটের সমস্যা আদৌ নির্মূল হবে না। তবে ঔষধ খাওয়া অবস্থায় আরাম পাবেন মাত্র।
এক্ষেত্রে মূলত হোমিওপ্যাথিক নিয়মে প্রপার ইনভেস্টিগেশন করে TB বা যক্ষা অথবা ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়ালকে তার প্রিডোমিনান্ট অবস্থা থেকে রিসিসিভ করার জন্য চিকিৎসা দেয়াই হলো বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট এবং সর্বশ্রেষ্ঠ চিকিৎসা।
বিশ্বের যে দশটি রোগে বেশি মানুষ মারা যায় TB বা যক্ষা হলো তার একটি। যক্ষ্মা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ফুসফুসে। এছাড়া দেহের বিভিন্ন জয়েন্ট, গ্রন্থিসহ আমাদের মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে, ত্বক, অন্ত্র, লিভার, কিডনি, হাড়সহ দেহের যেকোন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে TB বা যক্ষার সংক্রমণ হতে পারে। বলতে গেলে আমাদের এমন কোন অঙ্গ নাই, যেখানে যক্ষ্মা হয়না। কারণ যক্ষ্মা হচ্ছে একটি বায়ুবাহিত ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক ব্যাধি যেটা মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকুলোসিস জীবাণুর সংক্রমণে হয়ে থাকে। যতগুলো যক্ষ্মা বা TB রয়েছে, এর মধ্যে ৮০ ভাগই ফুসফুসে হয়ে থাকে এবং এটি সবচেয়ে গুরুতর ও ভীষণ ছোঁয়াচে প্রকৃতির। শরীরের অন্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের যক্ষ্মা এতোটা ছোঁয়াচে নয়। তাই সেগুলি ফুসফুসে যক্ষ্মার মতো ঝুঁকিপূর্ণ নয়। 
আইবিএস এর Tuberculosis TB যক্ষা ফ্যাক্টর
তবে একবার কেউ এই রোগে আক্রান্ত হলে সেটা আর বের হতে পারে না। আপনি হয়তো আমাদের ট্রাডিশনাল চিকিৎসা ব্যবস্থায় ৬ মাস, ৯ মাস....১৮ মাস চিকিৎসা নিয়ে রোগের তীব্রতা সেই পরিমান কমিয়ে আনতে পারবেন যেটি আপনার জীবন নাশ করবে না। কিন্তু তারপরও যক্ষা বা এর জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল আপনার শরীরে থেকে যাবে এবং আপনার থেকে আপনার পরবর্তী প্রজন্মে DNA এর মাধ্যমে বিস্তার লাভ করবে। আপনার বংশধরদের মধ্যে যাকে সুবিধা করতে পারবে তার শরীরেই TB বা যক্ষা জেগে উঠবে অথবা শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে নানা প্রকার জটিল প্রকৃতির সমস্যা সৃষ্টি করে তাকে কষ্ট দিবে। যেমনঃ আইবিএসসহ নানা প্রকার পেটের অসুখ, হাঁপানি, হার্টের সমস্যা, কিডনি বা মূত্রতন্ত্রের নানা সমস্যা, লিভারের সমস্যা, পুরুষদের অর্কাইটিস, নারীদের ডিম্বাশয়ের নানা সমস্যা, বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি।

কাদের টিউবারকুলার ডায়াথেসিস প্রিডোমিনান্ট

এবার আসুন আমরা জেনে নিই কোন একজন রোগীর Family History তে কোন কোন দোষ উপস্থিত থাকলে তার মধ্যে Tubercular Diathesis, Predominant বলা যাবে। অর্থাৎ আপনার নিকট আত্মীয়ের অর্থাৎ মা-বাবা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী কারো নিন্মোক্ত রোগব্যাধি থাকলে আপনি বুঝে নিবেন আপনার মধ্যেও Tubercular Diathesis, Predominant অর্থাৎ IBS সহ নানা প্রকার পেটের পীড়া, ঠান্ডার দোষ বা হাঁপানি অথবা আরো নানা জটিল স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগতে পারেন। Pathological indications from Family History are as follows-
  • যক্ষা
  • কোষ্ঠরোগ
  • হৃদরোগ
  • ডায়াবেটিস
  • ব্যাত ব্যথা
  • ক্যান্সার
  • মাথাব্যথা, মাইগ্রেন
  • স্ট্রোক
  • আইবিএস, আইবিডি, পুরাতন আমাশয়, পুরাতন উদরাময়, পুরাতন কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি 
  • মলদ্বারের রোগ - অর্শ বা পাইলস, ভগন্দর বা ফিস্টুলা, রেক্টাল স্ট্রিক্টচার, মলদ্বার দিয়ে রক্ত আসা ইত্যাদি
  • শ্বাসতন্ত্র সম্পর্কিত রোগব্যাধি - হাঁপানি, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি
  • কিডনি ও মূত্রতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা 
  • Bronchiectasis - Permanent enlargement of parts of the airways of the lung
  • Laryngitis - Inflammation of voice box (larynx)
  • Different types of skin diseases especially ring-worm, Pityriasis, allergy etc.
  • Lice at different parts of the body
  • Breathing distress or Asthma
  • Mental or Psychiatric Problem - Schizophrenia, Mania, Insanity, Uncontrolled rage from beginning etc.
  • Massive Haemoptysis - Coughing of blood originating from the respiratory tract
তাই কোন একটি মানুষের Past History তে Tuberculosis (TB) থাকলে তার চিকিৎসার বিষয়ে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কারণ আপনাকে মনে রাখতে হবে-
Tuberculosis is results of disease and also one way disease.
একবার দেহ-মনে ঢুকলে আর বের হতে পারে না। দ্বিতীয় কারণটি হলো কোন মানুষ Tuberculosis এ আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে এবং পরে বিভিন্ন সমস্যায় বিশেষ করে ঠান্ডাজনিত সমস্যায় বার বার কষ্ট পেতে থাকে এবং বিভিন্ন ঔষধ খেতে থাকে যার ফলে PTS বা Trauma তৈরী হয় তবে সেটা কিন্তু Triple Trauma.
  • প্রথমতঃ আগে পিছে বিভিন্ন ঔষধ খাওয়ার জন্য Trauma
  • দ্বিতীয়তঃ Tuberculosis নিজেই Trauma তৈরী করছে
  • তৃতীয়তঃ Tuberculosis থেকে মুক্তির জন্য ঔষধ খেতে হয় যা পূনরায় Trauma তৈরী করে
সুতরাং বুঝতেই পারছেন IBS রোগীদের Past History তে Tuberculosis (TB) থাকলে অথবা নিকট আত্মীয়ের TB থাকলেও বুঝতে হবে তার শরীরেও ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল বিদ্যমান যেটি হয়তো সে পেয়েছে তার পূর্ব পুরুষ থেকে DNA এর মাধ্যমে বা অন্য কোন মাধ্যমে। তাই সেক্ষেত্রে Tuberculosis (TB) বা TD (Tubercular Diathesis) Predominant একজন IBS রোগীর চিকিৎসা করা মানেই হলো তার শরীর থেকে ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল রিসিসিভ করা। অর্থাৎ যতক্ষণ পর্যন্ত ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়ালকে নিস্তেজ করে করে সুপ্তাবস্থায় পাঠিয়ে রোগীর ভাইটাল ফোর্সকে শক্তিশালী করা না যাবে পেশেন্ট কখনই তার আইবিএস সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ করবেন না।
তাই এক্ষেত্রে IBS রোগীদের Past History তে Tuberculosis (TB) থাকলে অথবা নিকট আত্মীয়ের TB থাকলে দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করুন যিনি প্রপারলি ইনভেস্টিগেশন করে আপনাকে চিকিৎসা দিয়ে আপনার DNA তে Predominant ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল রিসিসিভ করার চিকিৎসা দিবেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই পেশেন্টকে কিছুটা ধৈর্য ধরে চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ এক্ষেত্রে রোগের তীব্রতা ভেদে ভালো হতে একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম সময় লাগতে পারে। ধন্যবাদ।
বিস্তারিত

শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আইবিএস চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথির সাফল্যের হার এবং কখন কোন অবস্থায় হোমিও চিকিৎসায় কিরূপ ফল পেতে পারেন

প্রপার একটি হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে আইবিএস এর মতো জটিল পেটের পীড়া স্থায়ীভাবে নির্মূল করা যায়। তবে এক্ষেত্রে যদি সাফল্যের হার চিন্তা করেন তাহলে আমার কয়েক বছরের চিকিৎসার বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু তথ্য উপস্থাপন করতে পারি। যথা সময়ে প্রোপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিলে আইবিএস এর মতো জটিল পেটের পীড়া থেকে মুক্তি পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না যদিও শুরুতে অধিকাংশ পেশেন্টই হোমিও চিকিৎসার তথ্যাবধানে আসেন না। তাই সেক্ষেত্রে সাফল্যেটা সবার ক্ষেত্রে দ্রুত আসে না। কিছু ক্ষেত্রে আবার  চিকিৎসা নিয়েও খুব ফল হয়ে থাকে। তবে-
১০০% IBS পেশেন্টের মধ্যে ৭০% আইবিএস রোগীরা প্রায় নির্দোষভাবে সুস্থতা লাভ করে থাকেন চিকিৎসার বিভিন্ন পর্যায়ে। ২০% আইবিএস রোগীদের পূর্ণ সুস্থতা লাভ করতে কিছুটা সময় লাগে আর বাকি ১০% ক্ষেত্রে খুব কম ফলাফল পাওয়া যায় বিভিন্ন কারণে।
রোগের শুরুতেই প্রপার হোমিও চিকিৎসার তথ্যাবধানে আসলে প্রায় শতভাগ আইবিএস রোগীই আরোগ্য লাভ করে থাকেন। তবে পুরুপুরি ভালো হতে হয়তো একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম সময় লাগতে পারে। বছরের পর বছর ধরে রোগে ভুগার পর অথবা দেরিতে হোমিও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ক্ষেত্রে আমরা নিম্নোক্ত বিষয়গুলি দেখে থাকি-
আইবিএস চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথির সাফল্যের হার
দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসা পেশেন্টদের মধ্যে ৫০% আইবিএস রোগী নির্দোষ ভাবে এবং স্থায়ীভাবে হোমিও চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেন যাদের ফলাফল পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয় না। তবে পুরুপুরি ভালো হতে হয়তো একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম সময় লাগতে পারে।

আবার দেরিতে আসা ২০% আইবিএস রোগীদের ৮০-৯০% সমস্যাই দূর হয়ে যায় তবে চিকিৎসার পর তাদের জীবনধারায় হালকা কিছুটা পরিবর্তন নিয়ে আসলেই তারা প্রায় ১০০% সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন কোন প্রকার অসুবিধা ছাড়াই। তাই এক অর্থে বলা যায় ৭০% আইবিএস রোগীই স্থায়ী ভাবে আইবিএস থেকে মুক্তি পেয়ে থাকেন যাদের ফলাফল পেতে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে না।

এবার আসুন, দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসা ৩০% আইবিএস রোগীদের দিকে মনোযোগ দেই যাদের মধ্যে ২০% রোগীতে ফলাফল আসতে কিছুটা দেরি লাগলেও ১০% এর ক্ষেত্রে খুব কম ফলাফল পাওয়া যায় নিন্মোক্ত কারণে-
চিকিৎসক ও চিকিৎসা সংক্ৰান্ত ত্রুটি 
  • হোমিওপ্যাথি একটি মহা সমুদ্রতুল্য চিকিৎসা ব্যবস্থা। বিশ্বের আর সকল চিকিৎসা শাস্ত্রের ঔষধের পরিমান হোমিওপ্যাথির অর্ধেক ঔষধের সমপরিমাণ হবে না। হোমিওপ্যাথদের প্রতিনিয়ত পড়াশোনায় থাকতে হয়। একজন চিকিৎসক হিসেবে এবং মানুষ হিসেবে নির্দ্বিধায় স্বীকার করতেই হবে সর্বাধিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও চিকিৎসা দানের ক্ষেত্রে কিছু ক্ষেত্রে হয়তো কিছু না কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি থাকতে পারে যদিও চিকিৎসক সেটা খুব দ্রুতই শুধরে নিয়ে থাকেন।
  • তাছাড়া চিকিৎসক নির্বাচনে যদি আপনি ব্যর্থ হন তাহলেও আপনি এই সমস্যা থেকে পরিত্রানের কোন আশা করতে পারেন না। কারণ আপনি ভাববেন না যে, একজন হোমিও চিকিৎসকের কাছে গেলেন, কিছুদিন চিকিৎসা নিলেন আর তাতেই আপনি সেরে উঠবেন। এখানে মূলতঃ দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসক প্রপার ইনভেস্টিগেশনের মাধ্যমে আপনার  DNA তে প্রিডোমিনেন্ট True Disease নির্ণয় করে সেগুলিকে রেসিসিভ করবেন। তাই যে হোমিও চিকিৎসকের কাছে গেলেন তার যদি এই বিষয়গুলি নিয়ে পর্যাপ্ত পড়াশোনা না থাকে তাহলে তিনি আপনার দৃষ্টিতে যত নামী আর বিখ্যাত চিকিৎসকই হন না কেন আপনার আইবিএস নির্মূলের ক্ষেত্রে হয়তো সাফল্য নাও পেতে পারেন। 
  • তাছাড়া যেসব চিকিৎসকরা স্থূল মাত্রার হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করে ক্রনিক ডিজিসের চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করে থাকে তাদের চিকিৎসায় আইবিএস কখনই নির্মূল হবেনা আপনি সে বিষয়ে ১০০% নিশ্চিত থাকতে পারেন। কিভাবে বুঝবেন ? আপনি দেখবেন চিকিৎসার সময় ৪/৫টি হোমিওপ্যাথিক ঔষধের বোতল ধরিয়ে দিবে এবং ৬ মাস, ৮মাস, ১ বছর, ২ বছর ইত্যাদি কোর্স ধরিয়ে লাগাতার আপনার শরীরে নানা অসদৃশ হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করতে থাকবে। এমনটি হলে শুরুতেই চিকিৎসক পরিবর্তন করুন। তা নাহলে সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে হয়ত উল্টো PTS Predominant হয়ে উঠতে পারে। 
পেশেন্ট সংক্রান্ত বিশেষ ত্রুটি
  • ইনভেস্টিগেশনে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব। কিছু রোগীরা তাদের ফ্যামিলি হিস্ট্রি বলতেই পারেন না।
  • ইনভেস্টিগেশনে তথ্য লোকানো বা অসমাপ্ত কেইস টেকিং। চিকিৎসক যেহেতু আপনার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই আপনার DNA তে প্রিডোমিনেন্ট True Disease নির্ণয় করবেন তাই ভুল/অসত্য/অসম্পূর্ণ তথ্য বা তথ্য লোকানোর কারণে ইনভেস্টিগেশন অপূর্ণাঙ্গ থেকে যাবে সেটাই স্বাভাবিক। আর এক্ষেত্রে চিকিৎসক চিকিৎসা দিলে হয়তো বহুক্ষেত্রেই তাৎক্ষণিক ফলাফল আশা করা যায় না।
  • যেকোন দুরারোগ্য রোগের ক্ষেত্রে শুধু কারেন্ট সিম্পটোম অথবা পেশেন্টের সার্বদৈহিক অবস্থার আলোকে হোমিও ঔষধ সিলেক্ট করে চিকিৎসা দিলে অধিকাংশ পেশেন্টের ক্ষেত্রেই আশানুরূপ ফলাফল আসে না বিধায় এক্ষেত্রে পেশেন্টের পাস্ট হিস্ট্রি এবং ফ্যামিলি হিস্টিসহ পূর্ণাঙ্গ ইনভেস্টিগেশন জরুরি, যাতে চিকিৎসক বুঝতে পারেন আপনার DNA তে প্রিডোমিনেন্ট প্রকৃত রোগগুলির সম্যক অবস্থা এবং সেগুলি রেসিসিভ করতে পারলেই অধিকাংশ পেশেন্টরা এক প্রকার দ্রুতই সেরে উঠেন।
  • যিনি চিকিৎসা নিতে আসছেন অর্থাৎ রোগীর DNA তে প্রিডোমিনেন্ট মাল্টিপল True Disease এর উপস্থিতি তার চিকিৎসা কাল দীর্ঘায়িত করতে পারে।
  • দীর্ঘদিন বিভিন্ন হোমিওপ্যাথিক, আয়ুর্বেদিক, হারবাল এবং বিভিন্ন রাসায়নিক বা এলোপ্যাথিক ঔষধের নির্বিচার প্রয়োগের ফলে অনেকেরই PTS প্রকট হয়ে উঠে এবং ভাইটাল ফোর্স দুর্বল থেকে দুর্বলতর অবস্থায় পৌঁছায়।
  • কোন দুরারোগ্য রোগের ক্ষেত্রে (যেমনঃ যক্ষা) এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নেয়ার ফলে নানা প্রকার জটিল শারীরিক সমস্যা এবং এর সাথে পেটের অসুখ বা আইবিএস এর মতো সমস্যাও জেগে উঠেছে। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, খুব তাড়াতাড়ি আপনি সেরে উঠবেন না বা আদৌ সম্পূর্ণ ভাবে সুস্থ হবেন কিনা সেটাও কিছু ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। কারণ এক্ষেত্রে রোগীর ভাইটাল ফোর্সের অবস্থা চরম দুর্বলতর অবস্থায় পৌঁছায়। 
  • অনেকেই আবার সার্জারি বা বিভিন্ন অপচিকিৎসায় PTS প্রাপ্ত হয় এবং রোগ জটিলতা বহুগুণ বাড়িয়ে তুলেন তাদের অনেকের ক্ষেত্রে খুব দ্রুত আশানুরূপ ফলাফল আশা করা যায় না আবার কিছু ক্ষেত্রে মাত্র কিছুটা ফলাফল পাওয়া যায়।
  • কিছু পেশেন্ট আছে ২/১ বার এসেই কিছু না কিছু ফলাফল আসল কি আসলো না অমনি অন্য দিকে দৌড় দেয় অর্থ্যাৎ তারা চিকিৎসা নিতে আসে না বরং একের পর এক ডাক্তার পরিবর্তন করে করে এর দুর্নাম ওর কাছে বলে বেড়ায় অথবা দেশ বিদেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন তার গল্প বলে বেড়ায়। এক্ষেত্রে এটা তাদের এক প্রকার দূর্ভাগ্যই বলা চলে।
  • অধিকাংশ শিক্ষিত লোকজনই হোমিওপ্যাথির মতো অসাধারণ একটি ট্রিটমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে খুব একটা জ্ঞান রাখেন না। দেখা যায়, যে রোগটি এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় আদৌ ভালো হয় না সেক্ষেত্রেও তারা বছরের পর বছর এলোপ্যাথির পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে, বিভিন্ন দেশ-মহাদেশ ঘুরে এক সময় হোমিও চিকিৎসা নিতে আসে - ততদিনে জল হয়তো নদী পাড়ি দিয়ে সাগরে পৌঁছায়। অথচ সময় মতো প্রপার হোমিও চিকিৎসা নিলে হয়তো খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠত।
সবশেষে - তারপরও বলবো যারা খুব তাড়াতাড়ি চিকিৎসায় রেজাল্ট পাচ্ছেন না তারাও হতাশ হবেন না। কারণ যারা ধৈর্য ধারণ করে তারাও এক সময় ধৈর্যের সুমিষ্ট ফল লাভ করে থাকেন। হয়তো কিছুটা সময় পর আপনিও রোগ থেকে মুক্তি লাভ করে সুস্বাস্থ ফিরে পাবেন ইনশা-আল্লাহ।
বিস্তারিত

বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২১

আইবিএস IBS এর সার্জারি ও স্থানিক চিকিৎসা অকার্যকর এবং নির্দোষ রোগ নিরাময়ে ব্যর্থ

আইবিএস IBS এর সার্জারি ও স্থানিক চিকিৎসা অকার্যকর এবং নির্দোষ রোগ নিরাময়ে ব্যর্থ। আপনি যখন হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিতে এই সমস্যার চিকিৎসা নিতে যাবেন তখন সে চিকিৎসা পদ্ধতির চিকিৎসক রোগ লক্ষণকে অবলম্বন করে স্থানিকভাবে সমস্যাটির কারণ নির্ণয় করার প্রচেষ্টা চালাবে যদিও বহু ক্ষেত্রেই তারা কোন কারণই খুঁজে পায় না। আবার দেখা যায়, কিছু স্থানিক কারণ খুঁজে পেলেও সেটিকে অবলম্বন করে চিকিৎসা দিলে রোগ লক্ষন সাময়িক ভাবে উপশম হয় কিন্তু ঔষধ না খেলে কিছুটা সময় পরেই আবার ফিরে আসে। এর পেছনের বাস্তব কারণ হলো, আপনার পেটে অথবা অন্ত্রে ঘা, ক্ষত, ফোলা, নুডুলস বা ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মূলত আপনার এই সমস্যা হওয়ার পেছনের প্রকৃত কারণ নয়। এইগুলি হলো আপনার DNA তে বর্তমান True Disease বা প্রকৃত রোগ সৃষ্ট কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ মাত্র। আর এই সব লক্ষণ ও উপসর্গকে বিভিন্ন রোগের নাম দিয়ে মূলত চিকিৎসা দিয়ে থাকে বা ব্যবসা করে থাকে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা সিস্টেমের মেডিক্যাল মাফিয়ারা। 

আপনার রোগ স্থায়ীভাবে সারানোর আদৌ কোন উদ্দেশ্য থাকে থাকে না তাদের। তারা মূলত আপনার রোগ পুষে রেখে রেখে আপনাকে আজীবন ঔষধ খাওয়াবে এবং আপনার সাথে ব্যবসা করে যাবে আজীবন। বলতে গেলে কোন রোগেরই স্থায়ী চিকিৎসা নেই এলোপ্যাথিতে। তবে কোন দুর্ঘটনায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা, হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট বা একিউট রোগের ক্ষেত্রে এলোপ্যাথির স্থানিক চিকিৎসা বেশ ফলদায়ক সন্দেহ নেই। কিন্তু কোন রোগ নিয়ে আপনি এলোপ্যাথিতে গেলে আপনি দেখবেন আপনাকে সেই স্থানিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওয়ান টাইম রাসায়নিক ঔষধগুলিই জীবনভর ঔষধ খেয়ে যেতে বলছে তারা। ফলশ্রুতিতে রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বছর বছর ধরে সেই ঔষধ খেয়ে যাওয়ার কারণে ভেতরে ভেতরে রোগটি আরো জটিল আরো কঠিন হতে থাকে। এর সাথে ক্ষতিকর ঔষধের পার্শপ্রতিক্রিয়ায় আর জটিল জটিল সমস্যা শরীরে তৈরী হতে থাকে।

আপনার আইবিএস IBS এর সমস্যা আছে। এক্ষেত্রে হয়তো আপনার Obstructed Defecation Syndrome (ODS) আছে অর্থাৎ রেক্টাম প্রাকৃতিক ভাবে পরিষ্কার হচ্ছে না অর্থ্যাৎ বাধাগ্রস্থ মলত্যাগের প্রবৃত্তি। এছাড়া হয়তো রেক্টামে একটু ফোলা ভাব বা নুডুলস তৈরি করছে আপনার DNA তে বর্তমান প্রকৃত রোগটি। তবে নুডুলস বা ফোলাটি অথবা ODS মূলত একটি লক্ষণ বা উপসর্গ মাত্র। আপনার আইবিএস তৈরী হওয়ার পেছনে কিন্তু এই গুলির কোন ভূমিকা নেই। এই সমস্যার চিকিৎসা দিতে অক্ষম এমন কেউ হয়তো মূর্খতা বশতঃ আপনাকে বললো এই ফোলা ভাব বা নুডুলস বা এই ODS ই আপনার আইবিএস এর জন্য দায়ী। তাই আপনাকে সার্জারি করে সেটি কেটে ফেলে দিতে বলছে আর আপনিও যন্ত্রনা থেকে পরিত্রানের আশায় সেটিই করেছেন। ফলশ্রুতিতে কি হলো ?

মাত্র ৩ থেকে ৬ মাস কিছুটা আরাম পেলেন মাত্র, আপনার আইবিএস কিন্তু আদৌ সাড়েনি। কিছুটা আরাম পেলেও এর মধ্যেও কিন্তু আপনি ভাল নেই। কিছু ক্ষেত্রে আপনি কিছুটা সময়ের জন্য কিছুটা আরাম পেয়েছেন মাত্র। ৩ থেকে ৬ মাস এর মধ্যেই আবার কিন্তু আপনার রেক্টামে একটু ফোলা ভাব বা নুডুলস তৈরি হয়ে যেতে পারে বা উপসর্গ পরিবর্তন হয়ে শরীরে অন্য জায়গায় আরো জটিল উপসর্গ তৈরী হয়ে যেতে পারে। অথবা রেক্টামে সার্জারি করে কাটাছেঁড়া করার কারণে সমস্যাটি আরো জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠতে পারে। কারন, এখানে আপনি মূলত DNA তে বর্তমান প্রকৃত রোগ সৃষ্ট কিছু লক্ষণ এবং উপসর্গের স্থানিক চিকিৎসা করেছেন মাত্র আপনার প্রকৃত রোগের কোন চিকিৎসাই করেননি। যার কারণে প্রকৃত রোগটি বার বার আপনার আইবিএস IBS এর বিভিন্ন লক্ষণ ও উপসর্গ তৈরী করছে।
স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের চিকিৎসা হলো জন্মলগ্ন থেকে আপনার DNA তে বর্তমান সক্রিয় True Disease কে নিষ্ক্রিয় করা। আর সেটি বর্তমান বিশ্বে হোমিওপ্যাথি ছাড়া আর কোন চিকিৎসা শাস্ত্রই করতে পারে না। তাই সুস্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সর্বাধিক কার্যকর।

কিন্তু এর মানে এই নয় যে - আপনি একজন হোমিও ডাক্তারের কাছে গেলেন, কিছু দিন ঔষধ খেলেন আর ঠিক হয়ে গেলেন। আপনার DNA থেকে প্রকৃত রোগের জেনেটিক ম্যাটারিয়াল নিষ্ক্রিয় করা মানে হলো আপনি পা থেকে মাথা পর্যন্ত যাবতীয় রোগ থেকেই মুক্ত হয়ে যাচ্ছেন। এই মেথডে মূলত শুধু আপনার পেটের পীড়ার সিম্পটোম নেয়া হবে না। এখানে আপনার সারা জীবনের তথ্যাদি, আপনার ফ্যামিলি হিস্ট্রি নিয়ে আপনার DNA তে অবস্থানরত True Disease টি নির্ণয় করে চিকিৎসক সেটিকে প্রচ্ছন্ন করার ট্রিটমেন্ট দিবেন। এর জন্য কিছুটা সময় দরকার। কারণ DNA তে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হলে দরকারি মেডিসিনগুলি কয়েকটা সাইকেল তৈরী করে নির্দিষ্ট অর্ডারে প্রয়োগ করতে হয় যা ভালো বুঝেন রিয়েল হোমিওপ্যাথিক মেথডে দক্ষ একজন চিকিৎসক। আর তাই চিকিৎসা নেয়ার পূর্বে এই মেথডে এক্সপার্ট হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করাও আপনার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিস্তারিত

বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০

আইবিএস IBS রোগীদের হোমিওপ্যাথিক ঔষধ গ্রহণে বিশেষ সতর্কতা ! PTS তৈরি হচ্ছে যেভাবে

এলোপ্যাথিতে আইবিএস IBS এর কোন চিকিৎসা না থাকায় স্বভাবতই এই সমস্যায় আক্রান্তরা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিয়ে থাকেন যদিও অধিকাংশ রোগীরাই ডাক্তার নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়ার কারণে প্রপার চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হন। তাছাড়া এ দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ লোকজনই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সম্পর্কে তেমন কোন ধারণাই রাখেন না বিধায় যখন এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় বিফল হন তারা হোমিও চিকিৎসা নিতে গিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ে যান। নিজেদের অজ্ঞতার কারণে অধিকাংশ লোকজনই হোমিও চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন বিক্রেতাদের নিকট যাচ্ছে চিকিৎসা নিতে। ফলশ্রুতিতে একটি প্রপার হোমিও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নিজের অজান্তেই।

তাছাড়া বহু মেডিসিন বিক্রেতারাই অনলাইনে বিভিন্ন রোগের নাম দিয়ে ঔষধ বিক্রি করে বেড়াচ্ছে। অনেকেরই ধারণা এই সকল ঔষধ খেয়েই তারা সুস্থ হয়ে যাবেন। দেখা যায়, এভাবে হোমিওপ্যাথির নিয়মনীতি বহির্ভুত ভাবে হোমিও ঔষধ প্রয়োগের ফলে তাদের মধ্যে উল্টো Post Trauma Syndrome (PTS) তৈরী হচ্ছে অর্থাৎ নিজের অজান্তেই দিন দিন তারা আরো জটিল স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন।  একজন পেশেন্ট কর্তৃক নির্বিচারে প্রয়োগকৃত হোমিও মেডিসিনের একটি লিস্ট দেখুন যেটি তিনি নিজেই নিয়ে এসেছিলেন-
রোগী কর্তৃক সেবনকৃত হোমিও ঔষধসমূহ
যেকোন জটিল স্বাস্থ্য সমস্যায় রেজিস্টার্ড এবং অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসকের তথ্যাবধানে না থেকে হোমিও ঔষধ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ, ক্রনিক ডিজিসের ক্ষেত্রে ডায়নামিক হোমিও মেডিসিন প্রয়োগের জন্য হোমিওপ্যাথিক প্রিন্সিপাল অনুযায়ী কেইস টেকিং এবং ইনভেস্টিগেশন জরুরী। যা করতে পারেন অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসক। 
যার স্বাস্থ্য সমস্যা থাকবে তিনি সেটি থাকে রেহাই পাওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই চেষ্টা যদি ভুল পথে করা হয় তাহলে সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে উল্টো সেটা দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হবে তাতে সন্দেহ নেই। কিছু দিন পূর্বে একজন পেশেন্ট ২৪ হোমিও ঔষধের একটি লিস্ট নিয়ে এসে বলছেন তিনি এই ঔষধগুলি ছাড়াও আরো বহু ঔষধ খেয়েছেন বিভিন্ন হোমিওপ্যাথির বই পড়ে, ইন্টারনেটে বিভিন্ন ঔষধ বিক্রেতাদের সাজেশনে, নানা সময় নানা হোমিও ডাক্তারের পরামর্শক্রমে। কিন্তু সমস্যা দূর হওয়ার পরিবর্তে দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হতে লাগল। বিস্তারিত ভিডিওতে দেখুন-
আপনার DNA তে অর্জিত True Disease নির্ণয় করে সেটিকে প্রচ্ছন্ন না করলে এই সমস্যাগুলি বার বার ফিরে আসবে। হয়ত কিছু দিন স্থূল মাত্রার হোমিও ঔষধ খেয়ে আপনি আরাম পেতে পারেন কিন্তু আপনি হয়তো দেখে থাকবেন সমস্যা পরিপূর্ণ ভাবে আদৌ ঠিক হচ্ছে না বরং একদিকে আরাম পেলেও অন্য দিকে আরো জটিল জটিল লক্ষণ ও উপসর্গ প্রকাশ পাচ্ছে। যেকোন ক্রনিক ডিজিসের চিকিৎসার ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক নিয়মে ইনভেস্টিগেশন করে আপনার DNA তে অর্জিত True Disease গুলির মধ্যে কোনটি প্রি-ডোমিনেন্ট সেটি নির্ণয় করার পর সেই আলোকে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দেয়া বা নেয়া জরুরি।

বিস্তারিত

মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২০

আইবিএস IBS ও ক্রনিক ডিজিস নিরাময়ের পথে প্রকৃত বাধা এবং সেগুলি দূর করার কার্যকর উপায়

পেটের দুরারোগ্য পীড়া আইবিএস IBSআইবিডি IBD অথবা অন্য কোন ক্রনিক ডিজিসে কেউ আক্রান্ত হলে দেখা যায় আক্রান্ত ব্যক্তি খুব সহসাই সুস্থ হচ্ছেন না। হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য ট্রিটমেন্ট সিস্টেম মূলত এই সকল সমস্যায় যে লক্ষণগুলি প্রকাশ পায় সেগুলির পেছনের ঠিক কারণটি কি সেটা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করে স্থানিক সেই কারণটি ঠিক করার চেষ্টা করে থাকে। দেখা যায় চিকিৎসা দিলে বা ঔষধ খেলে সেই কারণটি দূর হয়ে যাচ্ছে এবং সাথে সমস্যাটিও ঠিক হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ঔষধ না খেলে সেটি আবার ফিরে আসে। অর্থাৎ স্থায়ীভাবে রোগ আদৌ নির্মূল হচ্ছে না। এই যে স্থায়ী ভাবে রোগ ভালো হচ্ছে না - এর পেছনের প্রকৃত কারণটি মূলতঃ কি?

এর পেছনের প্রকৃত কারণ হলো - আপনার সমস্যাটি বার বার তৈরী করার পেছনে আরেকটি মূল বা প্রকৃত রোগ অর্থাৎ True Disease দায়ী যেটি রয়েছে আপনার DNA তে, আর সেটি জন্মকালীন সময়েই আপনি পেয়েছেন আপনার পিতা-মাতা থেকে। কিন্তু কিভাবে? 

মনে করুন, শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর মিলনে ঘন্টা খানেক হলো একটি জাইগোট তৈরি হয়েছে। সেখানে রয়েছে তার পিতা মাতা উভয়ের থেকে প্রাপ্ত ক্রোমোজোম যা হচ্ছে বংশগতির প্রধান উপাদান অর্থাৎ সেটি হচ্ছে বংশগতির ধারক এবং বাহক। মজার ব্যাপার হলো জাইগোটটির বয়স ১ ঘন্টা হলেও তার ভাইটাল ফোর্সকে ঘিরে যে ক্রোমোজোম রয়েছে তার বয়স কিন্তু কয়েক লক্ষ বছর। 
বিঃদ্রঃ এখানে কয়েক লক্ষ বছর বলতে, লক্ষাধিক বছরের সেই একই ক্রোমোজোমকে বুঝানো হয়নি বরং এর মাধ্যমে পূর্বেকার বহু বছরের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল স্থানান্তরিত হয়েছে বুঝানো হয়েছে। ক্রোমােজোমের কাজ হলাে মাতাপিতা থেকে জিন (যা জীবের বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে) সন্তান সন্ততিতে বহন করে নিয়ে যাওয়া।
কারণ আপনার পিতা মাতা সেগুলি পেয়েছে তাদের পিতা মাতা থাকে আর তারাও পেয়েছে তাদের পূর্ব প্রজন্ম থেকে। অর্থাৎ এর মাধ্যমেই আপনার পিতা-মাতা, দাদা-দাদী বা তারও কয়েক লক্ষ বছর পূর্বের আপনারাই পূর্ব প্রজন্ম থেকে সকল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল অর্জন করে রেখেছেন জন্ম সময় থেকেই। এই রোগগুলির সবকটি সরাসরি আপনার মধ্যে হয়তো প্রকাশিত হবে না। তবে যেটির জেনেটিক মেটেরিয়াল প্রকট থাকবে সেটি নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিতে থাকবে, যতদিন না আপনি প্রপার হোমিও ট্রিটমেন্ট নিয়ে সেটিকে ঠিক করেছেন।
জন্মের সময় প্রাপ্ত True Disease
যতদিন আপনার ভাইটাল ফোর্স শক্তিশালী অবস্থায় থাকবে তত দিন ভেতরের প্রকৃত রোগটি বা জটিল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল এমনিতেই নিস্তেজ অবস্থায় থাকবে। আর যখন ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়ে যাবে তখন ভেতরের সেই True Disease বা প্রকৃত রোগটি প্রকট হয়ে উঠবে অথবা নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিবে। আইবিএস মূলত তেমনই একটি প্রকৃত রোগের তৈরী করা কিছু উপসর্গ মাত্র। 
অন্যভাবে বলতে গেলে-আপনাকে ঠিক রাখছে আপনার ভাইটাল ফোর্স এবং শত-সহস্র জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে আপনাকে রক্ষা করে চলেছে আপনার ভাইটাল ফোর্স। শুধু তাই নয়, রোগাক্রান্ত হলে আপনাকে সুস্থ করে তুলছে আপনার ভাইটাল ফোর্স। রোগ হলে আমরা যে ঔষধ প্রয়োগ করি সেগুলি মূলতঃ আপনার ভাইটাল ফোর্সকেই সঞ্জীবিত করে তুলে আর ভাইটাল ফোর্সই আপনাকে সারিয়ে তুলে। 
ধরুন, কিছু পঁচা খাবার খেয়ে আপনার পেটের পীড়া হলো। পঁচা খাবারের সাথে যে জীবানু ছিল সেটি মূলত আপনার DNA তে বর্তমান True Disease গুলি থেকে তার Diathesis কেই অর্থাৎ তার স্বজাতীয় True Disease কেই জাগিয়ে তুলবে। অর্থাৎ রোগ আপনার ভেতরেই রয়েছে। আপনি যদি পরিবেশ তৈরী করে দেন তাহলে প্রচ্ছন্ন অবস্থা থেকেও তা জেগে উঠবে। 
ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া রোগ সৃষ্টি করে না, এগুলি হলো রোগের চূড়ান্ত অবস্থার একটি বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
DNA তে বর্তমান True Disease
বিভিন্ন ট্রিটমেন্ট সিস্টেম রোগ নির্ণয়ের জন্য শত প্রকার মেডিক্যাল টেস্ট করেই আপনাকে ঔষধ দিচ্ছে কিন্তু আদৌ আপনি ভালো হচ্ছেন না। এর কারণ মূলত আপনার DNA তে থাকা True Disease বা প্রকৃত রোগটি যার চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি ছাড়া আর কোন ট্রিটমেন্ট সিস্টেমই ঠিক ভাবে দিতে পারে না। এই প্রকৃত রোগগুলি ভাইটাল ফোর্সকে কেন্দ্র করে শক্তিশালী বাধা বা দেয়াল তৈরী করে রাখে। 
ভাইটাল ফোর্সকে কেন্দ্র করে শক্তিশালী বাধা বা দেয়াল
যেহেতু একেক জনের ক্ষেত্রে একেক প্রকার True Disease প্রি-ডোমিনেন্ট থাকে তাই একেক জনের ক্ষেত্রে ভাইটাল ফোর্সকে কেন্দ্র করে তৈরীকৃত বাধার ধরণটাও একেক রকম। দেখবেন, একই রোগে আক্রান্ত হয়েছে অথচ একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম লক্ষণ ও উপসর্গ তৈরি হচ্ছে। একজন দক্ষ হোমিও চিকিৎসক হোমিওপ্যাথির নিয়মনীতি অনুসারে ইনভেস্টিগেশন করে মূলত পেসেন্টের DNA তে  প্রি-ডোমিনেন্ট True Disease কে নির্ণয় করবেন এবং সে আলোকেই ডাইনানিক হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগ করে সবগুলি বাধা ভেঙে আপনার দুর্বল ভাইটাল ফোর্সকে শক্তিশালী করবেন। তখন দেখবেন আপনি যে রোগেই আক্রান্ত থাকেন না কেন আর সেগুলি যত প্রকার উপসর্গই প্রকাশ করুক না কেন একে একে সবগুলি দূর হয়ে আপনার মধ্যে সুস্বাস্থ্য ফিরে আসবে ইনশা-আল্লাহ। বিষয়গুলি বিস্তারিত আরো বুঝতে চাইলে ভিডিওটি দেখুন। ধন্যবাদ।
নানা প্রকার সুপারফিশিয়াল বা উপরি উপরি চিন্তা করে অথবা নানা প্রকার ব্যর্থ মেডিক্যাল টেস্ট করে আইবিএস সমস্যার কারণ নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয়ে থাকে আর সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রে। কিন্তু এক্ষেত্রে আইবিএস কখনও নির্মূল করা সম্ভব হয়না সাময়িক আরাম পাওয়া যায় মাত্র। এলোপ্যাথিক সিস্টেমে মূলত রোগের স্থানিক কারণ নির্ণয় করেই চিকিৎসা দেয়া হয়। তাই সেটি না পেলে এলোপ্যাথিতে রোগের চিকিৎসাও হয় না ঠিক ঠাক ভাবে। যেহেতু এলোপ্যাথিসহ অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে উপরি উপরি অর্থাৎ ঐ স্থানের বর্তমান অবস্থা চিন্তা করে আইবিএস এর চিকিৎসা দেয়া হয় তাই সাময়িক একটু উপশম ছাড়া রোগ আদৌ নির্মূল হয় না। যেমন পাতলা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে তাৎক্ষনিক ভাবে সেটা ঠিক করার ঔষধ দেয়া হয়। সমস্যা সাময়িক ঠিক হয়ে রোগী আরাম পায় বটে কিন্তু ঔষধ না খেলেই সমস্যা আবার দেখা দেয়।

এ দেশের অধিকাংশ মানুষই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শাস্ত্র সম্পর্কে খুব ভালো জ্ঞান রাখনে না বিধায় এলোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথির পার্থক্য তারা বুঝেন না। আইবিএস এবং অন্যান্য ক্রনিক সমস্যার ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগ করতে হয় পেসেন্টের DNA তে সক্রিয় True Disease এর অবস্থার আলোকে। তাই এক্ষেত্রে এলোপ্যাথিতে রোগের স্থানিক কারণ নির্ণয়ের জন্য যে মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়ে থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলির কোন প্রয়োজন নেই বললেই চলে।
বিস্তারিত

বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২০

স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের প্রকৃত চিকিৎসা কৌশল এবং হোমিওপ্যাথিক ইনভেস্টিগেশন

স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের চিকিৎসা কৌশল বিষয়ে আলোকপাত করা হবে এই পর্বে। ইতিপূর্বে আপনারা IBS সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন বিগত দশটি অনুচ্ছেদে। সেগুলিতে আইবিএস সমস্যার প্রকৃত কারণ লক্ষণ চিকিৎসা এবং নির্মূলকৃত প্রামাণ্য কেইস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে বিস্তারিত ভাবে।

আইবিএস এর প্রকৃত কারণ মূলতঃ কি?

আপনি যখন হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিতে এই সমস্যার চিকিৎসা নিতে যাবেন তখন সে চিকিৎসা পদ্ধতির চিকিৎসক রোগ লক্ষণকে অবলম্বন করে স্থানিকভাবে সমস্যাটির কারণ নির্ণয় করার প্রচেষ্টা চালাবে যদিও বহু ক্ষেত্রেই তারা কোন কারণই খুঁজে পায় না। আবার দেখা যায়, কিছু স্থানিক কারণ খুঁজে পেলেও সেটিকে অবলম্বন করে চিকিৎসা দিলে রোগ লক্ষন সাময়িক ভাবে উপশম হয় কিন্তু ঔষধ না খেলে কিছুটা সময় পরেই আবার ফিরে আসে। এর পেছনের বাস্তব কারণ হলো, আপনার পেটে অথবা অন্ত্রে ঘা, ক্ষত বা ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মূলত আপনার এই সমস্যা হওয়ার পেছনের প্রকৃত কারণ নয়।
স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের প্রকৃত চিকিৎসা কৌশল
নানা প্রকার সুপারফিশিয়াল বা উপরি উপরি চিন্তা করে অথবা নানা প্রকার ব্যর্থ মেডিক্যাল টেস্ট করে আইবিএস সমস্যার কারণ নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয়ে থাকে আর সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রে। কিন্তু এক্ষেত্রে আইবিএস কখনও নির্মূল করা সম্ভব হয়না সাময়িক আরাম পাওয়া যায় মাত্র। এলোপ্যাথিক সিস্টেমে মূলত রোগের স্থানিক কারণ নির্ণয় করেই চিকিৎসা দেয়া হয়। তাই সেটি না পেলে এলোপ্যাথিতে রোগের চিকিৎসাও হয় না ঠিক ঠাক ভাবে। যেহেতু এলোপ্যাথিসহ অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে উপরি উপরি অর্থাৎ ঐ স্থানের বর্তমান অবস্থা চিন্তা করে আইবিএস এর চিকিৎসা দেয়া হয় তাই সাময়িক একটু উপশম ছাড়া রোগ আদৌ নির্মূল হয় না। যেমন পাতলা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে তাৎক্ষনিক ভাবে সেটা ঠিক করার ঔষধ দেয়া হয়। সমস্যা সাময়িক ঠিক হয়ে রোগী আরাম পায় বটে কিন্তু ঔষধ না খেলেই সমস্যা আবার দেখা দেয়।

এর প্রধান কারণ হলো আপনি মূলত একটি প্রকৃত রোগের সৃষ্ট কিছু উপসর্গ বা লক্ষণ ঠিক করার চিকিৎসা করছেন। তাই লক্ষণ ঠিক হচ্ছে কিন্তু প্রকৃত রোগের চিকিৎসা না হওয়ায় লক্ষণ বা উপসর্গ আবার প্রকাশ পাচ্ছে আর ভেতরের প্রকৃত রোগ বা True Disease দিন দিন আরো জটিল হচ্ছে। সেই প্রকৃত রোগটি মূলত কি আর তা দূর করার উপায়ই বা কি? এ সম্পর্কে বর্তমান বিশ্বে একটি মাত্র চিকিৎসা শাস্ত্রই ধারণা দিয়ে থাকে তা হল - হোমিওপ্যাথি।

শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর মিলনে ঘন্টা খানেক হলো একটি জাইগোট তৈরি হয়েছে। সেখানে রয়েছে তার পিতা মাতা উভয়ের থেকে প্রাপ্ত ক্রোমোজোম যা হচ্ছে বংশগতির প্রধান উপাদান। মজার ব্যাপার হলো জাইগোটটির বয়স ১ ঘন্টা হলেও তার ভাইটাল ফোর্সকে ঘিরে যে ক্রোমোজোম রয়েছে তার বয়স কিন্তু কয়েক লক্ষ বছর। এর মাধ্যমেই আপনার পিতা-মাতা, দাদা-দাদী বা তারও পূর্ব পুরুষ থেকে সকল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল অর্জন করে রেখেছেন জন্ম থেকেই। এই রোগগুলির সবকটি সরাসরি আপনার মধ্যে হয়তো প্রকাশিত হবে না। তবে যেটির জেনেটিক মেটেরিয়াল প্রকট থাকবে সেটি নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিতে থাকবে, যতদিন না আপনি প্রপার হোমিও ট্রিটমেন্ট নিয়ে সেটিকে ঠিক করেছেন।
তাছাড়া যতদিন আপনার ভাইটাল ফোর্স শক্তিশালী অবস্থায় থাকবে তত দিন ভেতরের প্রকৃত রোগটি বা জটিল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল এমনিতেই নিস্তেজ অবস্থায় থাকবে। আর যখন ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়ে যাবে তখন ভেতরের সেই True Disease বা প্রকৃত রোগটি প্রকট হয়ে উঠবে অথবা নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিবে। আইবিএস মূলত তেমনই একটি প্রকৃত রোগের তৈরী করা কিছু উপসর্গ মাত্র। 

স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের চিকিৎসা কৌশল

স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের চিকিৎসা হলো জন্মলগ্ন থেকে আপনার DNA তে বর্তমান সক্রিয় True Disease কে নিষ্ক্রিয় করা। আর সেটি বর্তমান বিশ্বে হোমিওপ্যাথি ছাড়া আর কোন চিকিৎসা শাস্ত্রই করতে পারে না। তাই সুস্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সর্বাধিক কার্যকর।
কিন্তু এর মানে এই নয় যে - আপনি একজন হোমিও ডাক্তারের কাছে গেলেন, কিছু দিন ঔষধ খেলেন আর ঠিক হয়ে গেলেন। আপনার DNA থেকে প্রকৃত রোগের জেনেটিক ম্যাটারিয়াল নিষ্ক্রিয় করা মানে হলো আপনি পা থেকে মাথা পর্যন্ত যাবতীয় রোগ থেকেই মুক্ত হয়ে যাচ্ছেন। এই মেথডে মূলত শুধু আপনার পেটের পীড়ার সিম্পটোম নেয়া হবে না। এখানে আপনার সারা জীবনের তথ্যাদি, আপনার ফ্যামিলি হিস্ট্রি নিয়ে আপনার DNA তে অবস্থানরত True Disease টি নির্ণয় করে চিকিৎসক সেটিকে প্রচ্ছন্ন করার ট্রিটমেন্ট দিবেন। এর জন্য কিছুটা সময় দরকার। কারণ DNA তে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হলে দরকারি মেডিসিনগুলি কয়েকটা সাইকেল তৈরী করে নির্দিষ্ট অর্ডারে প্রয়োগ করতে হয় যা ভালো বুঝেন রিয়েল হোমিওপ্যাথিক মেথডে দক্ষ একজন চিকিৎসক। আর তাই চিকিৎসা নেয়ার পূর্বে এই মেথডে এক্সপার্ট হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করাও আপনার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

৫/১০/১৫ বছর যাবৎ আইবিএস সমস্যায় ভুগে চলেছেন। একের পর এক ডাক্তার পরিবর্তন করে চলেছেন আর একের পর এক মেডিক্যাল টেস্ট করে চলেছেন অযথাই। তারপরও আপনার টনক নড়ছে না - কেনই বা আপনি অযথা মেডিক্যাল টেস্ট করছেন আর কেনই বা আপনি বছরের পর বছর ধরে এলোপ্যাথিক বা বিভিন্ন রাসায়নিক ঔষধ খেয়ে চলেছেন যেগুলি শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক আরাম দেয়ার জন্য তৈরী করা হয়েছে রোগ নির্মূল করার জন্য নয়। অথচ ওয়ান টাইম ঔষধ গুলি আপনি খেয়ে চলেছেন বছর বছর ধরে। এতে রোগ সারার পরিবর্তে আপনার রোগ জটিলতা দিন দিন বেড়ে চলেছে আর ভাইটাল ফোর্স ক্রমাগত দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে। সাথে সাথে আরো নানা প্রকার জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এ দেশের অধিকাংশ মানুষই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শাস্ত্র সম্পর্কে খুব ভালো জ্ঞান রাখনে না বিধায় এলোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথির পার্থক্য তারা বুঝেন না। ক্রনিক রোগের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগ করতে হয় পেসেন্টের DNA তে সক্রিয় True Disease এর অবস্থার আলোকে। তাই এক্ষেত্রে এলোপ্যাথিতে রোগের স্থানিক কারণ নির্ণয়ের জন্য যে মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়ে থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলির কোন প্রয়োজন নেই বললেই চলে।

আইবিএস চিকিৎসার জন্য রোগীরা পূর্বেকার করা অপ্রয়োজনীয় মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে আসলে বহু ক্ষেত্রেই আমি তাদের বলি - যাওয়ার সময় সামনের ডাস্টবিনে সেগুলি ফেলে যাবেন। কারণ এখানে প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দিতে হলে হোমিওপ্যাথিক প্রিন্সিপ্যাল অনুযায়ী রোগীর ইনভেস্টিগেশন প্রয়োজন সেটার দিকে রোগীর পূর্ণ মনোযোগ থাকলে ঠিক ঠাক ভাবে চিকিৎসা আগানো সম্ভব। কিন্তু নিজেদের অজ্ঞতা বা মূর্খতা বশতঃ বহু রোগীরাই সেদিকে তেমন মনোযোগ দেন না। অনেককে বুঝালেও বুঝতে চান না। আগেই বলেছি হোমিওপ্যাথি এবং এলোপ্যাথি সম্পূর্ণ আলাদা ট্রিটমেন্ট সিস্টেম। দুটিতে রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতিও আলাদা। এলোপ্যাথিতে রোগ নির্ণয়ের জন্য মেডিক্যাল টেস্ট করে আপনার হাজার হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। অথচ হোমিওপ্যাথিতে আপনার অযথা কোন খরচ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে হোমিও চিকিৎসক রোগীর এবং তার ফ্যামিলি হিস্ট্রি নিয়ে বিদ্যমান প্রকৃত রোগটি নির্ণয় করবেন। একত্রে যে যে তথ্যগুলি বেশি দরকার হয়ে পড়ে -
  • বর্তমান কষ্টের বিবরণ
  • এর সাথে সম্পর্কিত লক্ষণ
  • শিশু কাল থেকে কখন কি কি রোগে ভুগছেন বা ভুগেছেন
  • এক থেকে ছয় মাস বয়সের মধ্যে রোগীর পায়খানার অবস্থা কেমন ছিল
  • এক থেকে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত রোগীর জীবন দর্শন
  • কুকর, সাপ, বিড়াল, বেজি, বানর বা অন্যকোন প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের হিস্ট্রি
  • কোন প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের ফলে টিকা নেয়ার হিস্ট্রি
  • রোগীর মা, বাবা, দাদা, দাদী, নানা, নানী কে কখন কি কি রোগে ভুগছেন 
  • আনুসঙ্গিক আরো তথ্যাদি....
একটি প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দিতে হলে উপরিউক্ত ইনভেস্টিগেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি আপনার লাখ থাকার মেডিক্যাল টেস্ট থেকেও বহুগুন বেশি মূল্যবান। কারণ, মেডিক্যাল টেস্ট করে স্থানিক লক্ষণের পেছনের কারণটি জানা যায় মাত্র। তখন এর চিকিৎসা দিলে স্থানিক কারণটি কিছুটা সময়ের জন্য দূর হয় সাথে সাথে রোগী কিছুটা আরাম পে কিন্তু ভেতরের প্রকৃত রোগ কখনই দূর হয় না বিধায় রোগী স্থায়ীভাবে আরোগ্য লাভ করেন না।

তাই হোমিপ্যাথিক প্রিন্সিপাল অনুযায়ী ইনভেস্টিগেশন করে রোগীর DNA তে সক্রিয় True Disease এর অবস্থার আলোকে চিকিৎসা করাই হলো কার্যকর চিকিৎসা কৌশল। তবে এখানে ডাক্তার এবং পেসেন্ট উভয়কেই কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে। কারণ এই চিকিৎসার মাধ্যমে রোগী একজন পরিপূর্ণ সুস্থ মানুষে পরিণত হবেন। বিষয়টি যে খুব একটা সহজ তা না আর যে খুব একটা কঠিন তাও নয়। চিকিৎসক নির্দিষ্ট অর্ডারে ঔষধ প্রয়োগ করে সেগুলির ইমপ্রুভমেন্ট দেখে দেখে সামনে আগাবেন এবং সাথে সাথে রোগীর মধ্যে পরিবর্তনও হতে থাকবে। এক সময় রোগী সুস্থতা লাভ করবেন। এটাই মূলত আইবিএস এবং যেকোন ক্রনিক রোগ স্থায়ী ভাবে নিরাময়ের প্রকৃত চিকিৎসা কৌশল।

যা যা জেনেছেন 

  • আইবিএস থেকে মুক্তির উপায়
  • আইবিএস এর হোমিও চিকিৎসা
  • আইবিএস রোগের চিকিৎসা
  • আইবিএস হোমিও চিকিৎসা
বিস্তারিত