আইবিএস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
আইবিএস লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

সোমবার, ১০ জানুয়ারী, ২০২২

শিশুর মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ বন্ধই হচ্ছে না ! করনীয় কি

বাচ্চাদের রক্ত আমাশয়, এনাল ফিসার, আইবিডি, আইবিএস, বিরল ক্ষেত্রে পাইলস ইত্যাদি হলো মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণের অন্যতম কিছু কারণ যেগুলির কার্যকর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা রয়েছে। কোন শিশুর পায়খানার সময় মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ হলে বহু ক্ষেত্রেই শিশুটির রক্ত আমাশয় হয়েছে বলে মনে করা হয়। কিন্তু যখন দেখা যায় এই সমস্যা কোন এন্টিবায়োটিক দিয়েও ঠিক হচ্ছে না তখন হয়তো শিশুর পিতামাতার টনক নড়ে উঠে।
 
রক্ত আমাশয় হলে শিশু পায়খানা করার সময় চাপ দিবে। রক্তের সঙ্গে পিচ্ছিল একটা পদার্থ এবং পায়খানাও থাকবে। আর যদি পলিপের জন্য হয় তাহলে টাটকা রক্ত যাবে। কোন ব্যথা থাকবে না।
শিশুর মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরণ
ক্রোন'স ডিজিস হলো শিশুদের মলদ্বার দিয়ে রক্তক্ষরনের একটি বড় কারণ। এটি হলো আইবিডি এর একটি ধরণ এবং বড় রকমের একটি সংক্রমণ যা পাচন তন্ত্রের আস্তরণের আভ্যন্তরীণ অংশকে আক্রমণ করে। এছাড়াও এটি আবার কোলাইটিসের একটি রূপ হিসেবেও অভিহিত। এই সংক্রমণের ফলে অন্ত্রের মধ্যে আলসার হয়ে থাকে যা তীব্র প্রদাহের কারণ। এই আলসারগুলিই আবার মল পাস করার সময় ফেটে যেতে পারে এবং তার পরিণামে ডায়রিয়ার পাশাপাশি মলদ্বার থেকে রক্ত পড়তে থাকে।

আইবিএস IBS হিসেবে সুপরিচিত এই রোগটিতে বহু শিশু এবং প্রাপ্ত বয়স্করাও ভুগে থাকেন। এটি এমন একটি অবস্থা যেখানে অন্ত্র আলোড়ন বা মল ত্যাগ অনিয়মিত ধারায় হয়ে থাকে, যার পরিণামে কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে ডায়রিয়া বা আমাশয়ও হয়ে থাকে। এই লাগাতার আমাশয় অথবা ডায়রিয়ার উপস্থিতি এবং মল পাস করানোর জন্য অন্ত্রের পেশীগুলির তীব্র জোরাল আন্দোলন রক্ত কোষগুলিকে ফাটিয়ে দিতে পারে, যার ফলে মলদ্বারের মধ্যে রক্তক্ষরণ হতে থাকে।

আরেকটি কারণে শিশুদের পায়খানার সঙ্গে রক্ত যায় সেটি হলঃ এনাল ফিসার। আজকাল অতি আধুনিক পিতামাতার শিশুরা বাইরের খাবার, ফাস্টফুড, জাংফুড ইত্যাদির প্রতি অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে। এগুলো খাওয়ার কারণে পায়খানা শক্ত হয় এবং এক সময় মলদ্বার ফেটে যায়। ফেটে গেলে পায়খানার সঙ্গে রক্ত আসে। একে আমরা বলি এনাল ফিসার। এটাতে কিন্তু শিশুরা পায়খানা করতে চাইবে না। দেখবেন যখন বেগ হবে, লাফালাফি করছে। বসতে চাচ্ছে না। আর পায়খানা আঠার মতো লেগে থাকে এবং ফোঁটা ফোঁটা রক্ত পড়ে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিশুদের পাইলসও হতে দেখা যায়।

শিশুর মলদ্বারে রক্তক্ষরণ: চিকিৎসা

কারণ যেটিই হোক, যখন দেখবেন এলোপ্যাথিক চিকিৎসকদের এন্টিবায়োটিক কেন তাদের কোন চিকিৎসাতেই কাজ হচ্ছে না বরং লাগাতার অযথা একের পর এক মেডিক্যাল টেস্ট দিয়ে দিয়ে শিশুর জীবন উল্টো দুর্বিষহ করে তুলছে তখন কাল বিলম্ব না করে দক্ষ এবং রেজিস্টার্ড একজন হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করে প্রোপার চিকিৎসা নিবেন। মনে রাখবেন, এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় নতুন রোগ অর্থাৎ একিউট ডিজিস ভালো হলেও পুরাতন রোগ বা ক্রনিক ডিজিস আদৌ ভালো হয় না। সেগুলির একমাত্র স্থায়ী চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি।

যা যা জেনেছেন 

  • বাচ্চাদের রক্ত আমাশয় হলে কি করনীয়
  • বাচ্চাদের রক্ত আমাশয় ঔষধ
  • পায়খানার রাস্তায় ব্যথা হলে করণীয়
  • বাচ্চাদের রক্ত আমাশয় হলে কি খাওয়া উচিত
  • বাচ্চাদের রক্ত আমাশয় কেন হয়
  • পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়ার চিকিৎসা
  • পায়খানার সাথে রক্ত পড়া কিসের লক্ষণ
বিস্তারিত

বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আইবিএস এর Tuberculosis TB যক্ষা ফ্যাক্টর ! IBS রোগীর বা নিকট আত্মীয়ের হিস্ট্রিতে টিবি বা যক্ষ্মা

আইবিএস IBS এর ক্ষেত্রে Tuberculosis (TB) যক্ষ্মা বা যক্ষা ফ্যাক্টর নিয়ে আজ আলোকপাত করবো। আপনারা হয়তো অনেকেই লক্ষ্য করে থাকবেন যিনি TB বা যক্ষাতে আক্রান্ত হন অথবা তার নিকট আত্মীয় কারো TB থাকলে তিনি বিভিন্ন রকম শারীরিক এবং মানুষিক সমস্যায় আক্রান্ত থাকেন। যেমন পেটের পীড়া, শ্বাসকষ্ট বা ঠান্ডার সমস্যা ইত্যাদি যেন সারা বছর লেগেই থাকে। বছরের পর বছর ধরে দেশ বিদেশে নানা এলোপ্যাথিক চিকিৎসকের পেছনে দৌড়াতে থাকে কিন্তু সমস্যার আদৌ কোন স্থায়ী সমাধান হয় না।

কারণ এলোপ্যাথিতে মূলতঃ মূল রোগের চিকিৎসা করা হয় না বরং মূল রোগ বা তার জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল সৃষ্ট কিছু লক্ষণ ও উপসর্গের চিকিৎসা করা হয় তাও আবার স্থানিক ভাবে। যার কারণে এলোপ্যাথিতে ক্রনিক ডিজিস আদৌ স্থায়ীভাবে ভাল হয় না। ঠিক তেমনি ভাবে আইবিএস IBS এর পেছনে যখন মূল কারণ থাকে TB বা যক্ষা অথবা ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল তখন বুঝতেই পারছেন আপনি পেট ঠান্ডা রাখার জন্য যতই এলোপ্যাথিক ঔষধ সেবন করেন না কেন আপনার পেটের সমস্যা আদৌ নির্মূল হবে না। তবে ঔষধ খাওয়া অবস্থায় আরাম পাবেন মাত্র।
এক্ষেত্রে মূলত হোমিওপ্যাথিক নিয়মে প্রপার ইনভেস্টিগেশন করে TB বা যক্ষা অথবা ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়ালকে তার প্রিডোমিনান্ট অবস্থা থেকে রিসিসিভ করার জন্য চিকিৎসা দেয়াই হলো বিশ্বের সর্বোৎকৃষ্ট এবং সর্বশ্রেষ্ঠ চিকিৎসা।
বিশ্বের যে দশটি রোগে বেশি মানুষ মারা যায় TB বা যক্ষা হলো তার একটি। যক্ষ্মা সবচেয়ে বেশি দেখা যায় ফুসফুসে। এছাড়া দেহের বিভিন্ন জয়েন্ট, গ্রন্থিসহ আমাদের মস্তিষ্ক থেকে শুরু করে, ত্বক, অন্ত্র, লিভার, কিডনি, হাড়সহ দেহের যেকোন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে TB বা যক্ষার সংক্রমণ হতে পারে। বলতে গেলে আমাদের এমন কোন অঙ্গ নাই, যেখানে যক্ষ্মা হয়না। কারণ যক্ষ্মা হচ্ছে একটি বায়ুবাহিত ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রামক ব্যাধি যেটা মাইকোব্যাক্টেরিয়াম টিউবারকুলোসিস জীবাণুর সংক্রমণে হয়ে থাকে। যতগুলো যক্ষ্মা বা TB রয়েছে, এর মধ্যে ৮০ ভাগই ফুসফুসে হয়ে থাকে এবং এটি সবচেয়ে গুরুতর ও ভীষণ ছোঁয়াচে প্রকৃতির। শরীরের অন্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গের যক্ষ্মা এতোটা ছোঁয়াচে নয়। তাই সেগুলি ফুসফুসে যক্ষ্মার মতো ঝুঁকিপূর্ণ নয়। 
আইবিএস এর Tuberculosis TB যক্ষা ফ্যাক্টর
তবে একবার কেউ এই রোগে আক্রান্ত হলে সেটা আর বের হতে পারে না। আপনি হয়তো আমাদের ট্রাডিশনাল চিকিৎসা ব্যবস্থায় ৬ মাস, ৯ মাস....১৮ মাস চিকিৎসা নিয়ে রোগের তীব্রতা সেই পরিমান কমিয়ে আনতে পারবেন যেটি আপনার জীবন নাশ করবে না। কিন্তু তারপরও যক্ষা বা এর জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল আপনার শরীরে থেকে যাবে এবং আপনার থেকে আপনার পরবর্তী প্রজন্মে DNA এর মাধ্যমে বিস্তার লাভ করবে। আপনার বংশধরদের মধ্যে যাকে সুবিধা করতে পারবে তার শরীরেই TB বা যক্ষা জেগে উঠবে অথবা শরীরে বিভিন্ন অঙ্গে নানা প্রকার জটিল প্রকৃতির সমস্যা সৃষ্টি করে তাকে কষ্ট দিবে। যেমনঃ আইবিএসসহ নানা প্রকার পেটের অসুখ, হাঁপানি, হার্টের সমস্যা, কিডনি বা মূত্রতন্ত্রের নানা সমস্যা, লিভারের সমস্যা, পুরুষদের অর্কাইটিস, নারীদের ডিম্বাশয়ের নানা সমস্যা, বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি।

কাদের টিউবারকুলার ডায়াথেসিস প্রিডোমিনান্ট

এবার আসুন আমরা জেনে নিই কোন একজন রোগীর Family History তে কোন কোন দোষ উপস্থিত থাকলে তার মধ্যে Tubercular Diathesis, Predominant বলা যাবে। অর্থাৎ আপনার নিকট আত্মীয়ের অর্থাৎ মা-বাবা, ভাই-বোন, দাদা-দাদী কারো নিন্মোক্ত রোগব্যাধি থাকলে আপনি বুঝে নিবেন আপনার মধ্যেও Tubercular Diathesis, Predominant অর্থাৎ IBS সহ নানা প্রকার পেটের পীড়া, ঠান্ডার দোষ বা হাঁপানি অথবা আরো নানা জটিল স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগতে পারেন। Pathological indications from Family History are as follows-
  • যক্ষা
  • কোষ্ঠরোগ
  • হৃদরোগ
  • ডায়াবেটিস
  • ব্যাত ব্যথা
  • ক্যান্সার
  • মাথাব্যথা, মাইগ্রেন
  • স্ট্রোক
  • আইবিএস, আইবিডি, পুরাতন আমাশয়, পুরাতন উদরাময়, পুরাতন কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি 
  • মলদ্বারের রোগ - অর্শ বা পাইলস, ভগন্দর বা ফিস্টুলা, রেক্টাল স্ট্রিক্টচার, মলদ্বার দিয়ে রক্ত আসা ইত্যাদি
  • শ্বাসতন্ত্র সম্পর্কিত রোগব্যাধি - হাঁপানি, ক্রনিক ব্রঙ্কাইটিস ইত্যাদি
  • কিডনি ও মূত্রতন্ত্রের বিভিন্ন সমস্যা 
  • Bronchiectasis - Permanent enlargement of parts of the airways of the lung
  • Laryngitis - Inflammation of voice box (larynx)
  • Different types of skin diseases especially ring-worm, Pityriasis, allergy etc.
  • Lice at different parts of the body
  • Breathing distress or Asthma
  • Mental or Psychiatric Problem - Schizophrenia, Mania, Insanity, Uncontrolled rage from beginning etc.
  • Massive Haemoptysis - Coughing of blood originating from the respiratory tract
তাই কোন একটি মানুষের Past History তে Tuberculosis (TB) থাকলে তার চিকিৎসার বিষয়ে বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন। কারণ আপনাকে মনে রাখতে হবে-
Tuberculosis is results of disease and also one way disease.
একবার দেহ-মনে ঢুকলে আর বের হতে পারে না। দ্বিতীয় কারণটি হলো কোন মানুষ Tuberculosis এ আক্রান্ত হওয়ার পূর্বে এবং পরে বিভিন্ন সমস্যায় বিশেষ করে ঠান্ডাজনিত সমস্যায় বার বার কষ্ট পেতে থাকে এবং বিভিন্ন ঔষধ খেতে থাকে যার ফলে PTS বা Trauma তৈরী হয় তবে সেটা কিন্তু Triple Trauma.
  • প্রথমতঃ আগে পিছে বিভিন্ন ঔষধ খাওয়ার জন্য Trauma
  • দ্বিতীয়তঃ Tuberculosis নিজেই Trauma তৈরী করছে
  • তৃতীয়তঃ Tuberculosis থেকে মুক্তির জন্য ঔষধ খেতে হয় যা পূনরায় Trauma তৈরী করে
সুতরাং বুঝতেই পারছেন IBS রোগীদের Past History তে Tuberculosis (TB) থাকলে অথবা নিকট আত্মীয়ের TB থাকলেও বুঝতে হবে তার শরীরেও ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল বিদ্যমান যেটি হয়তো সে পেয়েছে তার পূর্ব পুরুষ থেকে DNA এর মাধ্যমে বা অন্য কোন মাধ্যমে। তাই সেক্ষেত্রে Tuberculosis (TB) বা TD (Tubercular Diathesis) Predominant একজন IBS রোগীর চিকিৎসা করা মানেই হলো তার শরীর থেকে ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল রিসিসিভ করা। অর্থাৎ যতক্ষণ পর্যন্ত ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়ালকে নিস্তেজ করে করে সুপ্তাবস্থায় পাঠিয়ে রোগীর ভাইটাল ফোর্সকে শক্তিশালী করা না যাবে পেশেন্ট কখনই তার আইবিএস সমস্যা থেকে মুক্তি লাভ করবেন না।
তাই এক্ষেত্রে IBS রোগীদের Past History তে Tuberculosis (TB) থাকলে অথবা নিকট আত্মীয়ের TB থাকলে দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করুন যিনি প্রপারলি ইনভেস্টিগেশন করে আপনাকে চিকিৎসা দিয়ে আপনার DNA তে Predominant ঢিবির জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল রিসিসিভ করার চিকিৎসা দিবেন। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই পেশেন্টকে কিছুটা ধৈর্য ধরে চিকিৎসা নিতে হবে। কারণ এক্ষেত্রে রোগের তীব্রতা ভেদে ভালো হতে একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম সময় লাগতে পারে। ধন্যবাদ।
বিস্তারিত

শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

আইবিএস চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথির সাফল্যের হার এবং কখন কোন অবস্থায় হোমিও চিকিৎসায় কিরূপ ফল পেতে পারেন

প্রপার একটি হোমিও চিকিৎসার মাধ্যমে আইবিএস এর মতো জটিল পেটের পীড়া স্থায়ীভাবে নির্মূল করা যায়। তবে এক্ষেত্রে যদি সাফল্যের হার চিন্তা করেন তাহলে আমার কয়েক বছরের চিকিৎসার বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে কিছু তথ্য উপস্থাপন করতে পারি। যথা সময়ে প্রোপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিলে আইবিএস এর মতো জটিল পেটের পীড়া থেকে মুক্তি পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না যদিও শুরুতে অধিকাংশ পেশেন্টই হোমিও চিকিৎসার তথ্যাবধানে আসেন না। তাই সেক্ষেত্রে সাফল্যেটা সবার ক্ষেত্রে দ্রুত আসে না। কিছু ক্ষেত্রে আবার  চিকিৎসা নিয়েও খুব ফল হয়ে থাকে। তবে-
১০০% IBS পেশেন্টের মধ্যে ৭০% আইবিএস রোগীরা প্রায় নির্দোষভাবে সুস্থতা লাভ করে থাকেন চিকিৎসার বিভিন্ন পর্যায়ে। ২০% আইবিএস রোগীদের পূর্ণ সুস্থতা লাভ করতে কিছুটা সময় লাগে আর বাকি ১০% ক্ষেত্রে খুব কম ফলাফল পাওয়া যায় বিভিন্ন কারণে।
রোগের শুরুতেই প্রপার হোমিও চিকিৎসার তথ্যাবধানে আসলে প্রায় শতভাগ আইবিএস রোগীই আরোগ্য লাভ করে থাকেন। তবে পুরুপুরি ভালো হতে হয়তো একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম সময় লাগতে পারে। বছরের পর বছর ধরে রোগে ভুগার পর অথবা দেরিতে হোমিও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ক্ষেত্রে আমরা নিম্নোক্ত বিষয়গুলি দেখে থাকি-
আইবিএস চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথির সাফল্যের হার
দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসা পেশেন্টদের মধ্যে ৫০% আইবিএস রোগী নির্দোষ ভাবে এবং স্থায়ীভাবে হোমিও চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে উঠেন যাদের ফলাফল পেতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয় না। তবে পুরুপুরি ভালো হতে হয়তো একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম সময় লাগতে পারে।

আবার দেরিতে আসা ২০% আইবিএস রোগীদের ৮০-৯০% সমস্যাই দূর হয়ে যায় তবে চিকিৎসার পর তাদের জীবনধারায় হালকা কিছুটা পরিবর্তন নিয়ে আসলেই তারা প্রায় ১০০% সুস্থ জীবনযাপন করতে পারেন কোন প্রকার অসুবিধা ছাড়াই। তাই এক অর্থে বলা যায় ৭০% আইবিএস রোগীই স্থায়ী ভাবে আইবিএস থেকে মুক্তি পেয়ে থাকেন যাদের ফলাফল পেতে খুব বেশি সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে না।

এবার আসুন, দেরিতে চিকিৎসা নিতে আসা ৩০% আইবিএস রোগীদের দিকে মনোযোগ দেই যাদের মধ্যে ২০% রোগীতে ফলাফল আসতে কিছুটা দেরি লাগলেও ১০% এর ক্ষেত্রে খুব কম ফলাফল পাওয়া যায় নিন্মোক্ত কারণে-
চিকিৎসক ও চিকিৎসা সংক্ৰান্ত ত্রুটি 
  • হোমিওপ্যাথি একটি মহা সমুদ্রতুল্য চিকিৎসা ব্যবস্থা। বিশ্বের আর সকল চিকিৎসা শাস্ত্রের ঔষধের পরিমান হোমিওপ্যাথির অর্ধেক ঔষধের সমপরিমাণ হবে না। হোমিওপ্যাথদের প্রতিনিয়ত পড়াশোনায় থাকতে হয়। একজন চিকিৎসক হিসেবে এবং মানুষ হিসেবে নির্দ্বিধায় স্বীকার করতেই হবে সর্বাধিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও চিকিৎসা দানের ক্ষেত্রে কিছু ক্ষেত্রে হয়তো কিছু না কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি থাকতে পারে যদিও চিকিৎসক সেটা খুব দ্রুতই শুধরে নিয়ে থাকেন।
  • তাছাড়া চিকিৎসক নির্বাচনে যদি আপনি ব্যর্থ হন তাহলেও আপনি এই সমস্যা থেকে পরিত্রানের কোন আশা করতে পারেন না। কারণ আপনি ভাববেন না যে, একজন হোমিও চিকিৎসকের কাছে গেলেন, কিছুদিন চিকিৎসা নিলেন আর তাতেই আপনি সেরে উঠবেন। এখানে মূলতঃ দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসক প্রপার ইনভেস্টিগেশনের মাধ্যমে আপনার  DNA তে প্রিডোমিনেন্ট True Disease নির্ণয় করে সেগুলিকে রেসিসিভ করবেন। তাই যে হোমিও চিকিৎসকের কাছে গেলেন তার যদি এই বিষয়গুলি নিয়ে পর্যাপ্ত পড়াশোনা না থাকে তাহলে তিনি আপনার দৃষ্টিতে যত নামী আর বিখ্যাত চিকিৎসকই হন না কেন আপনার আইবিএস নির্মূলের ক্ষেত্রে হয়তো সাফল্য নাও পেতে পারেন। 
  • তাছাড়া যেসব চিকিৎসকরা স্থূল মাত্রার হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করে ক্রনিক ডিজিসের চিকিৎসা দেয়ার চেষ্টা করে থাকে তাদের চিকিৎসায় আইবিএস কখনই নির্মূল হবেনা আপনি সে বিষয়ে ১০০% নিশ্চিত থাকতে পারেন। কিভাবে বুঝবেন ? আপনি দেখবেন চিকিৎসার সময় ৪/৫টি হোমিওপ্যাথিক ঔষধের বোতল ধরিয়ে দিবে এবং ৬ মাস, ৮মাস, ১ বছর, ২ বছর ইত্যাদি কোর্স ধরিয়ে লাগাতার আপনার শরীরে নানা অসদৃশ হোমিও ঔষধ প্রয়োগ করতে থাকবে। এমনটি হলে শুরুতেই চিকিৎসক পরিবর্তন করুন। তা নাহলে সুস্থ হওয়ার পরিবর্তে হয়ত উল্টো PTS Predominant হয়ে উঠতে পারে। 
পেশেন্ট সংক্রান্ত বিশেষ ত্রুটি
  • ইনভেস্টিগেশনে পর্যাপ্ত তথ্যের অভাব। কিছু রোগীরা তাদের ফ্যামিলি হিস্ট্রি বলতেই পারেন না।
  • ইনভেস্টিগেশনে তথ্য লোকানো বা অসমাপ্ত কেইস টেকিং। চিকিৎসক যেহেতু আপনার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতেই আপনার DNA তে প্রিডোমিনেন্ট True Disease নির্ণয় করবেন তাই ভুল/অসত্য/অসম্পূর্ণ তথ্য বা তথ্য লোকানোর কারণে ইনভেস্টিগেশন অপূর্ণাঙ্গ থেকে যাবে সেটাই স্বাভাবিক। আর এক্ষেত্রে চিকিৎসক চিকিৎসা দিলে হয়তো বহুক্ষেত্রেই তাৎক্ষণিক ফলাফল আশা করা যায় না।
  • যেকোন দুরারোগ্য রোগের ক্ষেত্রে শুধু কারেন্ট সিম্পটোম অথবা পেশেন্টের সার্বদৈহিক অবস্থার আলোকে হোমিও ঔষধ সিলেক্ট করে চিকিৎসা দিলে অধিকাংশ পেশেন্টের ক্ষেত্রেই আশানুরূপ ফলাফল আসে না বিধায় এক্ষেত্রে পেশেন্টের পাস্ট হিস্ট্রি এবং ফ্যামিলি হিস্টিসহ পূর্ণাঙ্গ ইনভেস্টিগেশন জরুরি, যাতে চিকিৎসক বুঝতে পারেন আপনার DNA তে প্রিডোমিনেন্ট প্রকৃত রোগগুলির সম্যক অবস্থা এবং সেগুলি রেসিসিভ করতে পারলেই অধিকাংশ পেশেন্টরা এক প্রকার দ্রুতই সেরে উঠেন।
  • যিনি চিকিৎসা নিতে আসছেন অর্থাৎ রোগীর DNA তে প্রিডোমিনেন্ট মাল্টিপল True Disease এর উপস্থিতি তার চিকিৎসা কাল দীর্ঘায়িত করতে পারে।
  • দীর্ঘদিন বিভিন্ন হোমিওপ্যাথিক, আয়ুর্বেদিক, হারবাল এবং বিভিন্ন রাসায়নিক বা এলোপ্যাথিক ঔষধের নির্বিচার প্রয়োগের ফলে অনেকেরই PTS প্রকট হয়ে উঠে এবং ভাইটাল ফোর্স দুর্বল থেকে দুর্বলতর অবস্থায় পৌঁছায়।
  • কোন দুরারোগ্য রোগের ক্ষেত্রে (যেমনঃ যক্ষা) এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নেয়ার ফলে নানা প্রকার জটিল শারীরিক সমস্যা এবং এর সাথে পেটের অসুখ বা আইবিএস এর মতো সমস্যাও জেগে উঠেছে। আপনি নিশ্চিত থাকতে পারেন, খুব তাড়াতাড়ি আপনি সেরে উঠবেন না বা আদৌ সম্পূর্ণ ভাবে সুস্থ হবেন কিনা সেটাও কিছু ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অনিশ্চিত। কারণ এক্ষেত্রে রোগীর ভাইটাল ফোর্সের অবস্থা চরম দুর্বলতর অবস্থায় পৌঁছায়। 
  • অনেকেই আবার সার্জারি বা বিভিন্ন অপচিকিৎসায় PTS প্রাপ্ত হয় এবং রোগ জটিলতা বহুগুণ বাড়িয়ে তুলেন তাদের অনেকের ক্ষেত্রে খুব দ্রুত আশানুরূপ ফলাফল আশা করা যায় না আবার কিছু ক্ষেত্রে মাত্র কিছুটা ফলাফল পাওয়া যায়।
  • কিছু পেশেন্ট আছে ২/১ বার এসেই কিছু না কিছু ফলাফল আসল কি আসলো না অমনি অন্য দিকে দৌড় দেয় অর্থ্যাৎ তারা চিকিৎসা নিতে আসে না বরং একের পর এক ডাক্তার পরিবর্তন করে করে এর দুর্নাম ওর কাছে বলে বেড়ায় অথবা দেশ বিদেশে চিকিৎসা নিচ্ছেন তার গল্প বলে বেড়ায়। এক্ষেত্রে এটা তাদের এক প্রকার দূর্ভাগ্যই বলা চলে।
  • অধিকাংশ শিক্ষিত লোকজনই হোমিওপ্যাথির মতো অসাধারণ একটি ট্রিটমেন্ট সিস্টেম সম্পর্কে খুব একটা জ্ঞান রাখেন না। দেখা যায়, যে রোগটি এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় আদৌ ভালো হয় না সেক্ষেত্রেও তারা বছরের পর বছর এলোপ্যাথির পেছনে দৌড়াতে দৌড়াতে, বিভিন্ন দেশ-মহাদেশ ঘুরে এক সময় হোমিও চিকিৎসা নিতে আসে - ততদিনে জল হয়তো নদী পাড়ি দিয়ে সাগরে পৌঁছায়। অথচ সময় মতো প্রপার হোমিও চিকিৎসা নিলে হয়তো খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠত।
সবশেষে - তারপরও বলবো যারা খুব তাড়াতাড়ি চিকিৎসায় রেজাল্ট পাচ্ছেন না তারাও হতাশ হবেন না। কারণ যারা ধৈর্য ধারণ করে তারাও এক সময় ধৈর্যের সুমিষ্ট ফল লাভ করে থাকেন। হয়তো কিছুটা সময় পর আপনিও রোগ থেকে মুক্তি লাভ করে সুস্বাস্থ ফিরে পাবেন ইনশা-আল্লাহ।
বিস্তারিত

বৃহস্পতিবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২১

আইবিএস IBS এর সার্জারি ও স্থানিক চিকিৎসা অকার্যকর এবং নির্দোষ রোগ নিরাময়ে ব্যর্থ

আইবিএস IBS এর সার্জারি ও স্থানিক চিকিৎসা অকার্যকর এবং নির্দোষ রোগ নিরাময়ে ব্যর্থ। আপনি যখন হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিতে এই সমস্যার চিকিৎসা নিতে যাবেন তখন সে চিকিৎসা পদ্ধতির চিকিৎসক রোগ লক্ষণকে অবলম্বন করে স্থানিকভাবে সমস্যাটির কারণ নির্ণয় করার প্রচেষ্টা চালাবে যদিও বহু ক্ষেত্রেই তারা কোন কারণই খুঁজে পায় না। আবার দেখা যায়, কিছু স্থানিক কারণ খুঁজে পেলেও সেটিকে অবলম্বন করে চিকিৎসা দিলে রোগ লক্ষন সাময়িক ভাবে উপশম হয় কিন্তু ঔষধ না খেলে কিছুটা সময় পরেই আবার ফিরে আসে। এর পেছনের বাস্তব কারণ হলো, আপনার পেটে অথবা অন্ত্রে ঘা, ক্ষত, ফোলা, নুডুলস বা ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মূলত আপনার এই সমস্যা হওয়ার পেছনের প্রকৃত কারণ নয়। এইগুলি হলো আপনার DNA তে বর্তমান True Disease বা প্রকৃত রোগ সৃষ্ট কিছু লক্ষণ ও উপসর্গ মাত্র। আর এই সব লক্ষণ ও উপসর্গকে বিভিন্ন রোগের নাম দিয়ে মূলত চিকিৎসা দিয়ে থাকে বা ব্যবসা করে থাকে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা সিস্টেমের মেডিক্যাল মাফিয়ারা। 

আপনার রোগ স্থায়ীভাবে সারানোর আদৌ কোন উদ্দেশ্য থাকে থাকে না তাদের। তারা মূলত আপনার রোগ পুষে রেখে রেখে আপনাকে আজীবন ঔষধ খাওয়াবে এবং আপনার সাথে ব্যবসা করে যাবে আজীবন। বলতে গেলে কোন রোগেরই স্থায়ী চিকিৎসা নেই এলোপ্যাথিতে। তবে কোন দুর্ঘটনায় তাৎক্ষণিক চিকিৎসা, হসপিটাল ম্যানেজমেন্ট বা একিউট রোগের ক্ষেত্রে এলোপ্যাথির স্থানিক চিকিৎসা বেশ ফলদায়ক সন্দেহ নেই। কিন্তু কোন রোগ নিয়ে আপনি এলোপ্যাথিতে গেলে আপনি দেখবেন আপনাকে সেই স্থানিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওয়ান টাইম রাসায়নিক ঔষধগুলিই জীবনভর ঔষধ খেয়ে যেতে বলছে তারা। ফলশ্রুতিতে রোগ নিয়ন্ত্রণে থাকলেও বছর বছর ধরে সেই ঔষধ খেয়ে যাওয়ার কারণে ভেতরে ভেতরে রোগটি আরো জটিল আরো কঠিন হতে থাকে। এর সাথে ক্ষতিকর ঔষধের পার্শপ্রতিক্রিয়ায় আর জটিল জটিল সমস্যা শরীরে তৈরী হতে থাকে।

আপনার আইবিএস IBS এর সমস্যা আছে। এক্ষেত্রে হয়তো আপনার Obstructed Defecation Syndrome (ODS) আছে অর্থাৎ রেক্টাম প্রাকৃতিক ভাবে পরিষ্কার হচ্ছে না অর্থ্যাৎ বাধাগ্রস্থ মলত্যাগের প্রবৃত্তি। এছাড়া হয়তো রেক্টামে একটু ফোলা ভাব বা নুডুলস তৈরি করছে আপনার DNA তে বর্তমান প্রকৃত রোগটি। তবে নুডুলস বা ফোলাটি অথবা ODS মূলত একটি লক্ষণ বা উপসর্গ মাত্র। আপনার আইবিএস তৈরী হওয়ার পেছনে কিন্তু এই গুলির কোন ভূমিকা নেই। এই সমস্যার চিকিৎসা দিতে অক্ষম এমন কেউ হয়তো মূর্খতা বশতঃ আপনাকে বললো এই ফোলা ভাব বা নুডুলস বা এই ODS ই আপনার আইবিএস এর জন্য দায়ী। তাই আপনাকে সার্জারি করে সেটি কেটে ফেলে দিতে বলছে আর আপনিও যন্ত্রনা থেকে পরিত্রানের আশায় সেটিই করেছেন। ফলশ্রুতিতে কি হলো ?

মাত্র ৩ থেকে ৬ মাস কিছুটা আরাম পেলেন মাত্র, আপনার আইবিএস কিন্তু আদৌ সাড়েনি। কিছুটা আরাম পেলেও এর মধ্যেও কিন্তু আপনি ভাল নেই। কিছু ক্ষেত্রে আপনি কিছুটা সময়ের জন্য কিছুটা আরাম পেয়েছেন মাত্র। ৩ থেকে ৬ মাস এর মধ্যেই আবার কিন্তু আপনার রেক্টামে একটু ফোলা ভাব বা নুডুলস তৈরি হয়ে যেতে পারে বা উপসর্গ পরিবর্তন হয়ে শরীরে অন্য জায়গায় আরো জটিল উপসর্গ তৈরী হয়ে যেতে পারে। অথবা রেক্টামে সার্জারি করে কাটাছেঁড়া করার কারণে সমস্যাটি আরো জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠতে পারে। কারন, এখানে আপনি মূলত DNA তে বর্তমান প্রকৃত রোগ সৃষ্ট কিছু লক্ষণ এবং উপসর্গের স্থানিক চিকিৎসা করেছেন মাত্র আপনার প্রকৃত রোগের কোন চিকিৎসাই করেননি। যার কারণে প্রকৃত রোগটি বার বার আপনার আইবিএস IBS এর বিভিন্ন লক্ষণ ও উপসর্গ তৈরী করছে।
স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের চিকিৎসা হলো জন্মলগ্ন থেকে আপনার DNA তে বর্তমান সক্রিয় True Disease কে নিষ্ক্রিয় করা। আর সেটি বর্তমান বিশ্বে হোমিওপ্যাথি ছাড়া আর কোন চিকিৎসা শাস্ত্রই করতে পারে না। তাই সুস্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সর্বাধিক কার্যকর।

কিন্তু এর মানে এই নয় যে - আপনি একজন হোমিও ডাক্তারের কাছে গেলেন, কিছু দিন ঔষধ খেলেন আর ঠিক হয়ে গেলেন। আপনার DNA থেকে প্রকৃত রোগের জেনেটিক ম্যাটারিয়াল নিষ্ক্রিয় করা মানে হলো আপনি পা থেকে মাথা পর্যন্ত যাবতীয় রোগ থেকেই মুক্ত হয়ে যাচ্ছেন। এই মেথডে মূলত শুধু আপনার পেটের পীড়ার সিম্পটোম নেয়া হবে না। এখানে আপনার সারা জীবনের তথ্যাদি, আপনার ফ্যামিলি হিস্ট্রি নিয়ে আপনার DNA তে অবস্থানরত True Disease টি নির্ণয় করে চিকিৎসক সেটিকে প্রচ্ছন্ন করার ট্রিটমেন্ট দিবেন। এর জন্য কিছুটা সময় দরকার। কারণ DNA তে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হলে দরকারি মেডিসিনগুলি কয়েকটা সাইকেল তৈরী করে নির্দিষ্ট অর্ডারে প্রয়োগ করতে হয় যা ভালো বুঝেন রিয়েল হোমিওপ্যাথিক মেথডে দক্ষ একজন চিকিৎসক। আর তাই চিকিৎসা নেয়ার পূর্বে এই মেথডে এক্সপার্ট হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করাও আপনার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বিস্তারিত

বুধবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২০

আইবিএস IBS রোগীদের হোমিওপ্যাথিক ঔষধ গ্রহণে বিশেষ সতর্কতা ! PTS তৈরি হচ্ছে যেভাবে

এলোপ্যাথিতে আইবিএস IBS এর কোন চিকিৎসা না থাকায় স্বভাবতই এই সমস্যায় আক্রান্তরা হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিয়ে থাকেন যদিও অধিকাংশ রোগীরাই ডাক্তার নির্বাচনে ব্যর্থ হওয়ার কারণে প্রপার চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হন। তাছাড়া এ দেশের শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর অধিকাংশ লোকজনই হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা সম্পর্কে তেমন কোন ধারণাই রাখেন না বিধায় যখন এলোপ্যাথিক চিকিৎসায় বিফল হন তারা হোমিও চিকিৎসা নিতে গিয়ে বিভ্রান্তিতে পড়ে যান। নিজেদের অজ্ঞতার কারণে অধিকাংশ লোকজনই হোমিও চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন বিক্রেতাদের নিকট যাচ্ছে চিকিৎসা নিতে। ফলশ্রুতিতে একটি প্রপার হোমিও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নিজের অজান্তেই।

তাছাড়া বহু মেডিসিন বিক্রেতারাই অনলাইনে বিভিন্ন রোগের নাম দিয়ে ঔষধ বিক্রি করে বেড়াচ্ছে। অনেকেরই ধারণা এই সকল ঔষধ খেয়েই তারা সুস্থ হয়ে যাবেন। দেখা যায়, এভাবে হোমিওপ্যাথির নিয়মনীতি বহির্ভুত ভাবে হোমিও ঔষধ প্রয়োগের ফলে তাদের মধ্যে উল্টো Post Trauma Syndrome (PTS) তৈরী হচ্ছে অর্থাৎ নিজের অজান্তেই দিন দিন তারা আরো জটিল স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হচ্ছেন।  একজন পেশেন্ট কর্তৃক নির্বিচারে প্রয়োগকৃত হোমিও মেডিসিনের একটি লিস্ট দেখুন যেটি তিনি নিজেই নিয়ে এসেছিলেন-
রোগী কর্তৃক সেবনকৃত হোমিও ঔষধসমূহ
যেকোন জটিল স্বাস্থ্য সমস্যায় রেজিস্টার্ড এবং অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসকের তথ্যাবধানে না থেকে হোমিও ঔষধ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ, ক্রনিক ডিজিসের ক্ষেত্রে ডায়নামিক হোমিও মেডিসিন প্রয়োগের জন্য হোমিওপ্যাথিক প্রিন্সিপাল অনুযায়ী কেইস টেকিং এবং ইনভেস্টিগেশন জরুরী। যা করতে পারেন অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসক। 
যার স্বাস্থ্য সমস্যা থাকবে তিনি সেটি থাকে রেহাই পাওয়ার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু সেই চেষ্টা যদি ভুল পথে করা হয় তাহলে সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে উল্টো সেটা দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হবে তাতে সন্দেহ নেই। কিছু দিন পূর্বে একজন পেশেন্ট ২৪ হোমিও ঔষধের একটি লিস্ট নিয়ে এসে বলছেন তিনি এই ঔষধগুলি ছাড়াও আরো বহু ঔষধ খেয়েছেন বিভিন্ন হোমিওপ্যাথির বই পড়ে, ইন্টারনেটে বিভিন্ন ঔষধ বিক্রেতাদের সাজেশনে, নানা সময় নানা হোমিও ডাক্তারের পরামর্শক্রমে। কিন্তু সমস্যা দূর হওয়ার পরিবর্তে দিন দিন জটিল থেকে জটিলতর হতে লাগল। বিস্তারিত ভিডিওতে দেখুন-
আপনার DNA তে অর্জিত True Disease নির্ণয় করে সেটিকে প্রচ্ছন্ন না করলে এই সমস্যাগুলি বার বার ফিরে আসবে। হয়ত কিছু দিন স্থূল মাত্রার হোমিও ঔষধ খেয়ে আপনি আরাম পেতে পারেন কিন্তু আপনি হয়তো দেখে থাকবেন সমস্যা পরিপূর্ণ ভাবে আদৌ ঠিক হচ্ছে না বরং একদিকে আরাম পেলেও অন্য দিকে আরো জটিল জটিল লক্ষণ ও উপসর্গ প্রকাশ পাচ্ছে। যেকোন ক্রনিক ডিজিসের চিকিৎসার ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক নিয়মে ইনভেস্টিগেশন করে আপনার DNA তে অর্জিত True Disease গুলির মধ্যে কোনটি প্রি-ডোমিনেন্ট সেটি নির্ণয় করার পর সেই আলোকে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দেয়া বা নেয়া জরুরি।

বিস্তারিত

মঙ্গলবার, ১ ডিসেম্বর, ২০২০

আইবিএস IBS ও ক্রনিক ডিজিস নিরাময়ের পথে প্রকৃত বাধা এবং সেগুলি দূর করার কার্যকর উপায়

পেটের দুরারোগ্য পীড়া আইবিএস IBSআইবিডি IBD অথবা অন্য কোন ক্রনিক ডিজিসে কেউ আক্রান্ত হলে দেখা যায় আক্রান্ত ব্যক্তি খুব সহসাই সুস্থ হচ্ছেন না। হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য ট্রিটমেন্ট সিস্টেম মূলত এই সকল সমস্যায় যে লক্ষণগুলি প্রকাশ পায় সেগুলির পেছনের ঠিক কারণটি কি সেটা বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার মাধ্যমে নির্ণয় করে স্থানিক সেই কারণটি ঠিক করার চেষ্টা করে থাকে। দেখা যায় চিকিৎসা দিলে বা ঔষধ খেলে সেই কারণটি দূর হয়ে যাচ্ছে এবং সাথে সমস্যাটিও ঠিক হয়ে যাচ্ছে কিন্তু ঔষধ না খেলে সেটি আবার ফিরে আসে। অর্থাৎ স্থায়ীভাবে রোগ আদৌ নির্মূল হচ্ছে না। এই যে স্থায়ী ভাবে রোগ ভালো হচ্ছে না - এর পেছনের প্রকৃত কারণটি মূলতঃ কি?

এর পেছনের প্রকৃত কারণ হলো - আপনার সমস্যাটি বার বার তৈরী করার পেছনে আরেকটি মূল বা প্রকৃত রোগ অর্থাৎ True Disease দায়ী যেটি রয়েছে আপনার DNA তে, আর সেটি জন্মকালীন সময়েই আপনি পেয়েছেন আপনার পিতা-মাতা থেকে। কিন্তু কিভাবে? 

মনে করুন, শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর মিলনে ঘন্টা খানেক হলো একটি জাইগোট তৈরি হয়েছে। সেখানে রয়েছে তার পিতা মাতা উভয়ের থেকে প্রাপ্ত ক্রোমোজোম যা হচ্ছে বংশগতির প্রধান উপাদান অর্থাৎ সেটি হচ্ছে বংশগতির ধারক এবং বাহক। মজার ব্যাপার হলো জাইগোটটির বয়স ১ ঘন্টা হলেও তার ভাইটাল ফোর্সকে ঘিরে যে ক্রোমোজোম রয়েছে তার বয়স কিন্তু কয়েক লক্ষ বছর। 
বিঃদ্রঃ এখানে কয়েক লক্ষ বছর বলতে, লক্ষাধিক বছরের সেই একই ক্রোমোজোমকে বুঝানো হয়নি বরং এর মাধ্যমে পূর্বেকার বহু বছরের জেনেটিক ম্যাটেরিয়াল স্থানান্তরিত হয়েছে বুঝানো হয়েছে। ক্রোমােজোমের কাজ হলাে মাতাপিতা থেকে জিন (যা জীবের বৈশিষ্ট্য নিয়ন্ত্রণ করে) সন্তান সন্ততিতে বহন করে নিয়ে যাওয়া।
কারণ আপনার পিতা মাতা সেগুলি পেয়েছে তাদের পিতা মাতা থাকে আর তারাও পেয়েছে তাদের পূর্ব প্রজন্ম থেকে। অর্থাৎ এর মাধ্যমেই আপনার পিতা-মাতা, দাদা-দাদী বা তারও কয়েক লক্ষ বছর পূর্বের আপনারাই পূর্ব প্রজন্ম থেকে সকল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল অর্জন করে রেখেছেন জন্ম সময় থেকেই। এই রোগগুলির সবকটি সরাসরি আপনার মধ্যে হয়তো প্রকাশিত হবে না। তবে যেটির জেনেটিক মেটেরিয়াল প্রকট থাকবে সেটি নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিতে থাকবে, যতদিন না আপনি প্রপার হোমিও ট্রিটমেন্ট নিয়ে সেটিকে ঠিক করেছেন।
জন্মের সময় প্রাপ্ত True Disease
যতদিন আপনার ভাইটাল ফোর্স শক্তিশালী অবস্থায় থাকবে তত দিন ভেতরের প্রকৃত রোগটি বা জটিল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল এমনিতেই নিস্তেজ অবস্থায় থাকবে। আর যখন ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়ে যাবে তখন ভেতরের সেই True Disease বা প্রকৃত রোগটি প্রকট হয়ে উঠবে অথবা নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিবে। আইবিএস মূলত তেমনই একটি প্রকৃত রোগের তৈরী করা কিছু উপসর্গ মাত্র। 
অন্যভাবে বলতে গেলে-আপনাকে ঠিক রাখছে আপনার ভাইটাল ফোর্স এবং শত-সহস্র জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করে আপনাকে রক্ষা করে চলেছে আপনার ভাইটাল ফোর্স। শুধু তাই নয়, রোগাক্রান্ত হলে আপনাকে সুস্থ করে তুলছে আপনার ভাইটাল ফোর্স। রোগ হলে আমরা যে ঔষধ প্রয়োগ করি সেগুলি মূলতঃ আপনার ভাইটাল ফোর্সকেই সঞ্জীবিত করে তুলে আর ভাইটাল ফোর্সই আপনাকে সারিয়ে তুলে। 
ধরুন, কিছু পঁচা খাবার খেয়ে আপনার পেটের পীড়া হলো। পঁচা খাবারের সাথে যে জীবানু ছিল সেটি মূলত আপনার DNA তে বর্তমান True Disease গুলি থেকে তার Diathesis কেই অর্থাৎ তার স্বজাতীয় True Disease কেই জাগিয়ে তুলবে। অর্থাৎ রোগ আপনার ভেতরেই রয়েছে। আপনি যদি পরিবেশ তৈরী করে দেন তাহলে প্রচ্ছন্ন অবস্থা থেকেও তা জেগে উঠবে। 
ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া রোগ সৃষ্টি করে না, এগুলি হলো রোগের চূড়ান্ত অবস্থার একটি বহিঃপ্রকাশ মাত্র।
DNA তে বর্তমান True Disease
বিভিন্ন ট্রিটমেন্ট সিস্টেম রোগ নির্ণয়ের জন্য শত প্রকার মেডিক্যাল টেস্ট করেই আপনাকে ঔষধ দিচ্ছে কিন্তু আদৌ আপনি ভালো হচ্ছেন না। এর কারণ মূলত আপনার DNA তে থাকা True Disease বা প্রকৃত রোগটি যার চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি ছাড়া আর কোন ট্রিটমেন্ট সিস্টেমই ঠিক ভাবে দিতে পারে না। এই প্রকৃত রোগগুলি ভাইটাল ফোর্সকে কেন্দ্র করে শক্তিশালী বাধা বা দেয়াল তৈরী করে রাখে। 
ভাইটাল ফোর্সকে কেন্দ্র করে শক্তিশালী বাধা বা দেয়াল
যেহেতু একেক জনের ক্ষেত্রে একেক প্রকার True Disease প্রি-ডোমিনেন্ট থাকে তাই একেক জনের ক্ষেত্রে ভাইটাল ফোর্সকে কেন্দ্র করে তৈরীকৃত বাধার ধরণটাও একেক রকম। দেখবেন, একই রোগে আক্রান্ত হয়েছে অথচ একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম লক্ষণ ও উপসর্গ তৈরি হচ্ছে। একজন দক্ষ হোমিও চিকিৎসক হোমিওপ্যাথির নিয়মনীতি অনুসারে ইনভেস্টিগেশন করে মূলত পেসেন্টের DNA তে  প্রি-ডোমিনেন্ট True Disease কে নির্ণয় করবেন এবং সে আলোকেই ডাইনানিক হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগ করে সবগুলি বাধা ভেঙে আপনার দুর্বল ভাইটাল ফোর্সকে শক্তিশালী করবেন। তখন দেখবেন আপনি যে রোগেই আক্রান্ত থাকেন না কেন আর সেগুলি যত প্রকার উপসর্গই প্রকাশ করুক না কেন একে একে সবগুলি দূর হয়ে আপনার মধ্যে সুস্বাস্থ্য ফিরে আসবে ইনশা-আল্লাহ। বিষয়গুলি বিস্তারিত আরো বুঝতে চাইলে ভিডিওটি দেখুন। ধন্যবাদ।
নানা প্রকার সুপারফিশিয়াল বা উপরি উপরি চিন্তা করে অথবা নানা প্রকার ব্যর্থ মেডিক্যাল টেস্ট করে আইবিএস সমস্যার কারণ নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয়ে থাকে আর সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রে। কিন্তু এক্ষেত্রে আইবিএস কখনও নির্মূল করা সম্ভব হয়না সাময়িক আরাম পাওয়া যায় মাত্র। এলোপ্যাথিক সিস্টেমে মূলত রোগের স্থানিক কারণ নির্ণয় করেই চিকিৎসা দেয়া হয়। তাই সেটি না পেলে এলোপ্যাথিতে রোগের চিকিৎসাও হয় না ঠিক ঠাক ভাবে। যেহেতু এলোপ্যাথিসহ অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে উপরি উপরি অর্থাৎ ঐ স্থানের বর্তমান অবস্থা চিন্তা করে আইবিএস এর চিকিৎসা দেয়া হয় তাই সাময়িক একটু উপশম ছাড়া রোগ আদৌ নির্মূল হয় না। যেমন পাতলা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে তাৎক্ষনিক ভাবে সেটা ঠিক করার ঔষধ দেয়া হয়। সমস্যা সাময়িক ঠিক হয়ে রোগী আরাম পায় বটে কিন্তু ঔষধ না খেলেই সমস্যা আবার দেখা দেয়।

এ দেশের অধিকাংশ মানুষই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শাস্ত্র সম্পর্কে খুব ভালো জ্ঞান রাখনে না বিধায় এলোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথির পার্থক্য তারা বুঝেন না। আইবিএস এবং অন্যান্য ক্রনিক সমস্যার ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগ করতে হয় পেসেন্টের DNA তে সক্রিয় True Disease এর অবস্থার আলোকে। তাই এক্ষেত্রে এলোপ্যাথিতে রোগের স্থানিক কারণ নির্ণয়ের জন্য যে মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়ে থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলির কোন প্রয়োজন নেই বললেই চলে।
বিস্তারিত

বুধবার, ২৫ নভেম্বর, ২০২০

স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের প্রকৃত চিকিৎসা কৌশল এবং হোমিওপ্যাথিক ইনভেস্টিগেশন

স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের চিকিৎসা কৌশল বিষয়ে আলোকপাত করা হবে এই পর্বে। ইতিপূর্বে আপনারা IBS সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন বিগত দশটি অনুচ্ছেদে। সেগুলিতে আইবিএস সমস্যার প্রকৃত কারণ লক্ষণ চিকিৎসা এবং নির্মূলকৃত প্রামাণ্য কেইস নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে বিস্তারিত ভাবে।

আইবিএস এর প্রকৃত কারণ মূলতঃ কি?

আপনি যখন হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসা পদ্ধতিতে এই সমস্যার চিকিৎসা নিতে যাবেন তখন সে চিকিৎসা পদ্ধতির চিকিৎসক রোগ লক্ষণকে অবলম্বন করে স্থানিকভাবে সমস্যাটির কারণ নির্ণয় করার প্রচেষ্টা চালাবে যদিও বহু ক্ষেত্রেই তারা কোন কারণই খুঁজে পায় না। আবার দেখা যায়, কিছু স্থানিক কারণ খুঁজে পেলেও সেটিকে অবলম্বন করে চিকিৎসা দিলে রোগ লক্ষন সাময়িক ভাবে উপশম হয় কিন্তু ঔষধ না খেলে কিছুটা সময় পরেই আবার ফিরে আসে। এর পেছনের বাস্তব কারণ হলো, আপনার পেটে অথবা অন্ত্রে ঘা, ক্ষত বা ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মূলত আপনার এই সমস্যা হওয়ার পেছনের প্রকৃত কারণ নয়।
স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের প্রকৃত চিকিৎসা কৌশল
নানা প্রকার সুপারফিশিয়াল বা উপরি উপরি চিন্তা করে অথবা নানা প্রকার ব্যর্থ মেডিক্যাল টেস্ট করে আইবিএস সমস্যার কারণ নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয়ে থাকে আর সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রে। কিন্তু এক্ষেত্রে আইবিএস কখনও নির্মূল করা সম্ভব হয়না সাময়িক আরাম পাওয়া যায় মাত্র। এলোপ্যাথিক সিস্টেমে মূলত রোগের স্থানিক কারণ নির্ণয় করেই চিকিৎসা দেয়া হয়। তাই সেটি না পেলে এলোপ্যাথিতে রোগের চিকিৎসাও হয় না ঠিক ঠাক ভাবে। যেহেতু এলোপ্যাথিসহ অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে উপরি উপরি অর্থাৎ ঐ স্থানের বর্তমান অবস্থা চিন্তা করে আইবিএস এর চিকিৎসা দেয়া হয় তাই সাময়িক একটু উপশম ছাড়া রোগ আদৌ নির্মূল হয় না। যেমন পাতলা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে তাৎক্ষনিক ভাবে সেটা ঠিক করার ঔষধ দেয়া হয়। সমস্যা সাময়িক ঠিক হয়ে রোগী আরাম পায় বটে কিন্তু ঔষধ না খেলেই সমস্যা আবার দেখা দেয়।

এর প্রধান কারণ হলো আপনি মূলত একটি প্রকৃত রোগের সৃষ্ট কিছু উপসর্গ বা লক্ষণ ঠিক করার চিকিৎসা করছেন। তাই লক্ষণ ঠিক হচ্ছে কিন্তু প্রকৃত রোগের চিকিৎসা না হওয়ায় লক্ষণ বা উপসর্গ আবার প্রকাশ পাচ্ছে আর ভেতরের প্রকৃত রোগ বা True Disease দিন দিন আরো জটিল হচ্ছে। সেই প্রকৃত রোগটি মূলত কি আর তা দূর করার উপায়ই বা কি? এ সম্পর্কে বর্তমান বিশ্বে একটি মাত্র চিকিৎসা শাস্ত্রই ধারণা দিয়ে থাকে তা হল - হোমিওপ্যাথি।

শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর মিলনে ঘন্টা খানেক হলো একটি জাইগোট তৈরি হয়েছে। সেখানে রয়েছে তার পিতা মাতা উভয়ের থেকে প্রাপ্ত ক্রোমোজোম যা হচ্ছে বংশগতির প্রধান উপাদান। মজার ব্যাপার হলো জাইগোটটির বয়স ১ ঘন্টা হলেও তার ভাইটাল ফোর্সকে ঘিরে যে ক্রোমোজোম রয়েছে তার বয়স কিন্তু কয়েক লক্ষ বছর। এর মাধ্যমেই আপনার পিতা-মাতা, দাদা-দাদী বা তারও পূর্ব পুরুষ থেকে সকল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল অর্জন করে রেখেছেন জন্ম থেকেই। এই রোগগুলির সবকটি সরাসরি আপনার মধ্যে হয়তো প্রকাশিত হবে না। তবে যেটির জেনেটিক মেটেরিয়াল প্রকট থাকবে সেটি নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিতে থাকবে, যতদিন না আপনি প্রপার হোমিও ট্রিটমেন্ট নিয়ে সেটিকে ঠিক করেছেন।
তাছাড়া যতদিন আপনার ভাইটাল ফোর্স শক্তিশালী অবস্থায় থাকবে তত দিন ভেতরের প্রকৃত রোগটি বা জটিল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল এমনিতেই নিস্তেজ অবস্থায় থাকবে। আর যখন ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়ে যাবে তখন ভেতরের সেই True Disease বা প্রকৃত রোগটি প্রকট হয়ে উঠবে অথবা নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিবে। আইবিএস মূলত তেমনই একটি প্রকৃত রোগের তৈরী করা কিছু উপসর্গ মাত্র। 

স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের চিকিৎসা কৌশল

স্থায়ীভাবে আইবিএস নিরাময়ের চিকিৎসা হলো জন্মলগ্ন থেকে আপনার DNA তে বর্তমান সক্রিয় True Disease কে নিষ্ক্রিয় করা। আর সেটি বর্তমান বিশ্বে হোমিওপ্যাথি ছাড়া আর কোন চিকিৎসা শাস্ত্রই করতে পারে না। তাই সুস্বাস্থ্য ফিরিয়ে আনতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সর্বাধিক কার্যকর।
কিন্তু এর মানে এই নয় যে - আপনি একজন হোমিও ডাক্তারের কাছে গেলেন, কিছু দিন ঔষধ খেলেন আর ঠিক হয়ে গেলেন। আপনার DNA থেকে প্রকৃত রোগের জেনেটিক ম্যাটারিয়াল নিষ্ক্রিয় করা মানে হলো আপনি পা থেকে মাথা পর্যন্ত যাবতীয় রোগ থেকেই মুক্ত হয়ে যাচ্ছেন। এই মেথডে মূলত শুধু আপনার পেটের পীড়ার সিম্পটোম নেয়া হবে না। এখানে আপনার সারা জীবনের তথ্যাদি, আপনার ফ্যামিলি হিস্ট্রি নিয়ে আপনার DNA তে অবস্থানরত True Disease টি নির্ণয় করে চিকিৎসক সেটিকে প্রচ্ছন্ন করার ট্রিটমেন্ট দিবেন। এর জন্য কিছুটা সময় দরকার। কারণ DNA তে পরিবর্তন নিয়ে আসতে হলে দরকারি মেডিসিনগুলি কয়েকটা সাইকেল তৈরী করে নির্দিষ্ট অর্ডারে প্রয়োগ করতে হয় যা ভালো বুঝেন রিয়েল হোমিওপ্যাথিক মেথডে দক্ষ একজন চিকিৎসক। আর তাই চিকিৎসা নেয়ার পূর্বে এই মেথডে এক্সপার্ট হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করাও আপনার জন্য একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।

৫/১০/১৫ বছর যাবৎ আইবিএস সমস্যায় ভুগে চলেছেন। একের পর এক ডাক্তার পরিবর্তন করে চলেছেন আর একের পর এক মেডিক্যাল টেস্ট করে চলেছেন অযথাই। তারপরও আপনার টনক নড়ছে না - কেনই বা আপনি অযথা মেডিক্যাল টেস্ট করছেন আর কেনই বা আপনি বছরের পর বছর ধরে এলোপ্যাথিক বা বিভিন্ন রাসায়নিক ঔষধ খেয়ে চলেছেন যেগুলি শুধুমাত্র তাৎক্ষণিক আরাম দেয়ার জন্য তৈরী করা হয়েছে রোগ নির্মূল করার জন্য নয়। অথচ ওয়ান টাইম ঔষধ গুলি আপনি খেয়ে চলেছেন বছর বছর ধরে। এতে রোগ সারার পরিবর্তে আপনার রোগ জটিলতা দিন দিন বেড়ে চলেছে আর ভাইটাল ফোর্স ক্রমাগত দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে। সাথে সাথে আরো নানা প্রকার জটিল রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
এ দেশের অধিকাংশ মানুষই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা শাস্ত্র সম্পর্কে খুব ভালো জ্ঞান রাখনে না বিধায় এলোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথির পার্থক্য তারা বুঝেন না। ক্রনিক রোগের ক্ষেত্রে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন প্রয়োগ করতে হয় পেসেন্টের DNA তে সক্রিয় True Disease এর অবস্থার আলোকে। তাই এক্ষেত্রে এলোপ্যাথিতে রোগের স্থানিক কারণ নির্ণয়ের জন্য যে মেডিক্যাল টেস্ট করা হয়ে থাকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলির কোন প্রয়োজন নেই বললেই চলে।

আইবিএস চিকিৎসার জন্য রোগীরা পূর্বেকার করা অপ্রয়োজনীয় মেডিক্যাল রিপোর্ট নিয়ে আসলে বহু ক্ষেত্রেই আমি তাদের বলি - যাওয়ার সময় সামনের ডাস্টবিনে সেগুলি ফেলে যাবেন। কারণ এখানে প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দিতে হলে হোমিওপ্যাথিক প্রিন্সিপ্যাল অনুযায়ী রোগীর ইনভেস্টিগেশন প্রয়োজন সেটার দিকে রোগীর পূর্ণ মনোযোগ থাকলে ঠিক ঠাক ভাবে চিকিৎসা আগানো সম্ভব। কিন্তু নিজেদের অজ্ঞতা বা মূর্খতা বশতঃ বহু রোগীরাই সেদিকে তেমন মনোযোগ দেন না। অনেককে বুঝালেও বুঝতে চান না। আগেই বলেছি হোমিওপ্যাথি এবং এলোপ্যাথি সম্পূর্ণ আলাদা ট্রিটমেন্ট সিস্টেম। দুটিতে রোগ নির্ণয়ের পদ্ধতিও আলাদা। এলোপ্যাথিতে রোগ নির্ণয়ের জন্য মেডিক্যাল টেস্ট করে আপনার হাজার হাজার টাকা খরচ করতে হচ্ছে। অথচ হোমিওপ্যাথিতে আপনার অযথা কোন খরচ হচ্ছে না। এক্ষেত্রে হোমিও চিকিৎসক রোগীর এবং তার ফ্যামিলি হিস্ট্রি নিয়ে বিদ্যমান প্রকৃত রোগটি নির্ণয় করবেন। একত্রে যে যে তথ্যগুলি বেশি দরকার হয়ে পড়ে -
  • বর্তমান কষ্টের বিবরণ
  • এর সাথে সম্পর্কিত লক্ষণ
  • শিশু কাল থেকে কখন কি কি রোগে ভুগছেন বা ভুগেছেন
  • এক থেকে ছয় মাস বয়সের মধ্যে রোগীর পায়খানার অবস্থা কেমন ছিল
  • এক থেকে ১২ বছর বয়স পর্যন্ত রোগীর জীবন দর্শন
  • কুকর, সাপ, বিড়াল, বেজি, বানর বা অন্যকোন প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের হিস্ট্রি
  • কোন প্রাণীর কামড় বা আঁচড়ের ফলে টিকা নেয়ার হিস্ট্রি
  • রোগীর মা, বাবা, দাদা, দাদী, নানা, নানী কে কখন কি কি রোগে ভুগছেন 
  • আনুসঙ্গিক আরো তথ্যাদি....
একটি প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা দিতে হলে উপরিউক্ত ইনভেস্টিগেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যাদি আপনার লাখ থাকার মেডিক্যাল টেস্ট থেকেও বহুগুন বেশি মূল্যবান। কারণ, মেডিক্যাল টেস্ট করে স্থানিক লক্ষণের পেছনের কারণটি জানা যায় মাত্র। তখন এর চিকিৎসা দিলে স্থানিক কারণটি কিছুটা সময়ের জন্য দূর হয় সাথে সাথে রোগী কিছুটা আরাম পে কিন্তু ভেতরের প্রকৃত রোগ কখনই দূর হয় না বিধায় রোগী স্থায়ীভাবে আরোগ্য লাভ করেন না।

তাই হোমিপ্যাথিক প্রিন্সিপাল অনুযায়ী ইনভেস্টিগেশন করে রোগীর DNA তে সক্রিয় True Disease এর অবস্থার আলোকে চিকিৎসা করাই হলো কার্যকর চিকিৎসা কৌশল। তবে এখানে ডাক্তার এবং পেসেন্ট উভয়কেই কিছুটা ধৈর্য ধরতে হবে। কারণ এই চিকিৎসার মাধ্যমে রোগী একজন পরিপূর্ণ সুস্থ মানুষে পরিণত হবেন। বিষয়টি যে খুব একটা সহজ তা না আর যে খুব একটা কঠিন তাও নয়। চিকিৎসক নির্দিষ্ট অর্ডারে ঔষধ প্রয়োগ করে সেগুলির ইমপ্রুভমেন্ট দেখে দেখে সামনে আগাবেন এবং সাথে সাথে রোগীর মধ্যে পরিবর্তনও হতে থাকবে। এক সময় রোগী সুস্থতা লাভ করবেন। এটাই মূলত আইবিএস এবং যেকোন ক্রনিক রোগ স্থায়ী ভাবে নিরাময়ের প্রকৃত চিকিৎসা কৌশল।

যা যা জেনেছেন 

  • আইবিএস থেকে মুক্তির উপায়
  • আইবিএস এর হোমিও চিকিৎসা
  • আইবিএস রোগের চিকিৎসা
  • আইবিএস হোমিও চিকিৎসা
বিস্তারিত

মঙ্গলবার, ২৭ অক্টোবর, ২০২০

IBS থেকে মুক্তি - প্রামাণ্য কেইস শাওন, আইবিএস এর হোমিও চিকিৎসা

শাওন যিনি জন্মলগ্ন থেকেই পেটের দুরারোগ্য সমস্যায় ভুগছিলেন। বহু বছর যাবৎ চিকিৎসা নিয়েও কোন ফল হচ্ছিলো না। অবশেষে প্রপার একটি হোমিও চিকিৎসায় আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবানীতে তিনি এই সমস্যা থেকে পরিত্রান পান। 

আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম IBS - Irritable Bowel Syndrome পেটের এই দুরারোগ্য সমস্যা নির্মূলের একমাত্র উন্নত চিকিৎসা হলো হোমিওপ্যাথি যার মাধ্যমে IBS পুরুপুরি নির্মূল হয়ে যায় । পেটের এই পীড়া সম্পূর্ণ ভাবে দূর করার জন্য হোমিওতে রয়েছে বহু কার্যকর ঔষধ। এক্সপার্ট একজন হোমিও চিকিৎসক রোগীর সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচনকৃত ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে এই সমস্যা দূর করে থাকেন।
বিস্তারিত

আইবিএস থেকে মুক্তির উপায় রিয়েল হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা - প্রামাণ্য কেইস রায়হান

আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম IBS - Irritable Bowel Syndrome পেটের এই দুরারোগ্য সমস্যা নির্মূলের একমাত্র উন্নত চিকিৎসা হলো হোমিওপ্যাথি যার মাধ্যমে IBS পুরুপুরি নির্মূল হয়ে যায় । পেটের এই পীড়া সম্পূর্ণ ভাবে দূর করার জন্য হোমিওতে রয়েছে বহু কার্যকর ঔষধ। এক্সপার্ট একজন হোমিও চিকিৎসক রোগীর সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচনকৃত ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে এই সমস্যা দূর করে থাকেন।

রায়হান, ডেমরা ঢাকা। যিনি দীঘদিন যাবৎ আইবিএস সমস্যায় ভুগছিলেন। তার ২ বছর বয়সের শিশুও দুরারোগ্য পেটের পীড়ায় জন্মলগ্ন থেকেই ভুগছিল যাকে এলোপ্যাথিক চিকিৎসকগণ ক্রমাগত এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে আসছিল কিন্তু সমস্যা কোন ক্রমেই দূর হচ্ছিলো না। একসময় শিশুটি আমার চিকিৎসাধীন আসে এবং আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবানীতে কিছু দিনের মধ্যেই স্থায়ীভাবে সুস্থ্যতা লাভ করে।
তারপর রায়হান সাহেব তার নিজের সমস্যার কথা আমাকে জানান এবং দীঘদিন যাবৎ ভুগতে থাকা আইবিএস সমস্যা চিকিৎসা নিতে ইচ্ছা পোষণ করেন। তিনিও এই সমস্যায় বহু ডাক্তার দেখিয়ে বিফল হন। অবশেষে প্রপার একটি হোমিও চিকিৎসায় মাত্র তিন মাসেই আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবানীতে এই সমস্যা থেকে স্থায়ীভাবে মুক্তি লাভ করেন।
বিস্তারিত

আইবিএস এর হোমিও চিকিৎসা, IBS থেকে মুক্তি - প্রামাণ্য কেইস রাসেল

হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় আইবিএস IBS সমস্যা দূর হয়ে যায় চিরতরে। কখন বুঝবেন আপনি আইবিএস থেকে আরোগ্য লাভ করেছেন। যখন দেখবেন আপনি যে খাবারগুলি আগে খেতে পারতেন না কিন্তু চিকিৎসার পর খেতে পারছেন এবং কোন প্রকার ঔষধ ছাড়াই সুস্থ আছেন তখন বুঝে নিবেন আল্লাহ পাক আপনাকে আইবিএস IBS থেকে শেফা দান করেছেন।
রাসেল সাহেব যিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কর্মরত আছেন। দীর্ঘদিন যাবৎ পেটের জটিল পীড়া আইবিএস সমস্যায় ভুগছিলেন। এই সমস্যার কোন এলোপ্যাথিক চিকিৎসা না থাকায় বারবার Combined Military Hospital Or CMH গিয়েও তিনি তার সমস্যার কোন সমাধান পাননি। অবশেষে প্রপার একটি হোমিও চিকিৎসায় আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবানীতে পেটের এই জটিল পীড়া থেকে মুক্তি লাভ করেন।
বিস্তারিত

IBS থেকে মুক্তির স্থায়ী উপায়, আইবিএস এর চিকিৎসা হোমিওপ্যাথি - প্রামাণ্য কেইস সোহান

আইবিএস IBS - Irritable Bowel Syndrome পেটের এই দুরারোগ্য সমস্যা নির্মূলের একমাত্র উন্নত চিকিৎসা হলো হোমিওপ্যাথি যার মাধ্যমে আইবিএস IBS পুরুপুরি নির্মূল করা যায়। পেটের এই পীড়া সম্পূর্ণ ভাবে দূর করার জন্য হোমিওতে রয়েছে বহু ঔষধ। এক্সপার্ট একজন হোমিও চিকিৎসক রোগীর সার্বিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে নির্দিষ্ট ঔষধ প্রয়োগের মাধ্যমে এই সমস্যা দূর করে থাকেন। তবে এর চিকিৎসার জন্য অভিজ্ঞ কোন হোমিও চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন। ইতিপূর্বে বহু পেসেন্টই আইবিএস নামক এই দুরারোগ্য পেটের পীড়া থেকে মুক্তি লাভ করেছেন প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায়।
সোহান বহুদিন যাবৎ এই সমস্যায় ভুগছিলেন এবং বহু এলোপ্যাথিক এবং হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক দেখিয়েও কোন ফল পাচ্ছিলেন না। ইন্ডিয়াতেও ডাক্তার দেখিয়েছেন কিন্তু তেমন কোন ফল পাননি। অবশেষে প্রপার একটি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায় আল্লাহ পাকের অশেষ মেহেরবানীতে তিনি এই সমস্যা থেকে স্থায়ী ভাবে মুক্তি লাভ করেন।
বিস্তারিত

মঙ্গলবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২০

IBS কি? আইবিএস রোগ কি ভালো হয়? - হ্যা সম্পূর্ণ নিরাময় হয়

ইরিটেবল বাউয়েল সিনড্রোম বা  আইবিএস Irritable bowel syndrome (IBS) একটি উপসর্গ ভিত্তিক জটিল প্রকৃতির পেটের পীড়া যা সম্পূর্ণ নিরাময় হয় একমাত্র প্রোপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসায়। এর বৈশিষ্ট্যাবলী হচ্ছে পেটব্যথা, পেটফাঁপা, পেটে অস্বস্তি, আমাশয়, পাতলা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা দুটিই, মেজাজের ভারসাম্যহীনতা ইত্যাদি। এর কোন জৈবিক কারণ না পাওয়ায় চিকিৎসা বিজ্ঞানে এই সমস্যাকে একটি ফাংশনাল গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টিনাল ডিসওর্ডার বলা হয়ে থাকে। এই সমস্যায় আক্রান্ত হলে, কারো ক্ষেত্রে দেখা যায় ঘুম থেকে উঠেই অথবা কারো ক্ষেত্রে আবার খাওয়ার পর পরই টয়লেটে দৌড়াতে হচ্ছে।

সাধারণ ভাবে বলতে গেলে - আইবিএসকে পেটের বিভিন্ন উপসর্গের সমাহার হিসেবে বিবেচনা করা হয়। মানবদেহে অন্ত্র ও খাদ্যনালী মাংসপেশি দ্বারা তৈরি টিউব বা নল। এই মাংস পেশির যখন অতিরিক্ত সঙ্কোচন ও প্রসারণ হয় তখন অন্ত্রের মধ্যে থাকা ও মলের গতি ব্যাহত হয়। এরপর পালাক্রমে শুরু হয় কোষ্ঠকাঠিন্য বা ডায়রিয়া এবং এর সাথে পেটের নানা প্রকার উপসর্গ তো থাকেই। হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্র এই সমস্যাকে বিভিন্ন টাইপে ভাগ করে থাকে যেমনঃ-
  • IBS-C : Constipation Symptoms
  • IBS-D : Diarrhea Symptoms
হোমিওপ্যাথি সার্বিক ভাবে পুরো মানুষটির চিকিৎসা দিয়ে থাকে বলে হোমিওতে এই সকল প্রকারভেদের তেমনি কোন মূল্যায়ন নেই কারণ হোমিও চিকিৎসায় মাত্র একটি বা দুটি লক্ষণ নিয়েই শুধু চিন্তা করবে না বরং একটি মানুষের পা থেকে মাথা পর্যন্ত যাবতীয় সিম্পটম পর্যালোচনা করে চিকিৎসা কার্য পরিচালনা করে হোমিওপ্যাথি। বিশ্বের অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্র যারা এরূপ একটি বা দুটি লক্ষণ দেখেই চিকিৎসা দিয়ে থাকে তারা মানুষের আইবিএস এর মতো ক্রনিক ডিজিজ নির্মূল করতে ব্যর্থ হচ্ছে। হোমিও চিকিৎসায় ভেতরের মানুষটিকে নিয়ে চিন্তা করা হয়, আরো চিন্তা করা হয় ব্যক্তির পা থেকে মাথা পর্যন্ত সার্বিক কি কি সমস্যা আছে সেগুলিকে নিয়ে। কারণ মানুষের প্রতিটি অর্গানের মধ্যেই ইন্টার-কানেক্শন থাকে। তাই শরীরের যাবতীয় সমস্যাগুলি বিবেচনায় নিয়ে চিকিৎসা প্রদান করতে হবে যা হোমিওপ্যাথি ছাড়া বিশ্বের আর কোন চিকিৎসা পদ্ধতি করতে পারে না।

পাশ্চাত্য দেশে প্রতি ১০ জনে একজন অন্তত তার জীবদ্দশায় এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে যারা কখনই স্থায়ী ভাবে ভালো হয় না কারণ তারা মূলত এলোপ্যাথিক ঔষধ খেয়ে বেঁচে থাকে। সমীক্ষায় দেখা যায়, একটি দেশের লোকসংখ্যার ২০ শতাংশ আইবিএসের লক্ষণ বহন করে এবং ১০ শতাংশ ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়। পুরুষদের চেয়ে নারীরা দুই থেকে তিন গুণ বেশি এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। অন্ত্রের ক্যান্সারের সাথে এ রোগের মিল পাওয়া যায়। তবে আইবিএস থেকে ক্যান্সারের সৃষ্টি হয় না।
IBS কি? আইবিএস রোগ কি ভালো হয়? - হ্যা সম্পূর্ণ নিরাময় হয়
আশা করি আইবিএস সম্পর্কে একটি ভালো ধারণা হয়েছে আপনাদের। ইতিপূর্বে সেড়েছেন এমন অনেক পেসেন্টই ছিলেন যাদের কেউ কেউ ২০/২৫ বছর যাবৎ এই সমস্যা নিয়ে একটি দুর্বিসহ জীবন পার করে আসছিলেন। কিন্তু কেন?
স্যার, আইবিএস সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে যাই। সেখানে বড় একজন এলোপ্যাথিক ডাক্তার বলে দিয়েছে - আমার এই রোগ কখনো ভালো হবে না। সারা জীবন ঔষধ খেয়ে বাঁচতে হবে !! আমার বড় ভাই এমবিবিএস (MBBS) কোর্সের এলোপ্যাথিক ডাক্তার। তিনিও আমার চিকিৎসা করেছেন আর বলেছেন এই রোগ ভালো হয় না। সেই থেকে ১৮ বছর যাবৎ এই সমস্যা নিয়ে আছি। কিন্তু এখন কোন ঔষধেই কাজ করছে না। 
কথাগুলি বলছিলেন কুমিল্লা থেকে (১৬-১২-২০১৯) তারিখে আগত ২৫ বছর বয়সী আমার একজন  পেসেন্ট। তিনি আরো বলছিলেন - আমার এলোপ্যাথিক ডাক্তার ভাই আমাকে যখন যে ঔষধ দিতেন সেভাবেই খেয়ে কোন ভাবে ভালো থাকতাম কিন্তু কিছু না কিছু শারীরিক সমস্যা লেগেই থাকতো। কিন্তু বিগত ১ মাস যাবৎ কোন ঔষধই আমার শরীরে আর কাজ করছে না। আমার ডাক্তার ভাইও কিছু করতে পারছেন না। পেটের অবস্থা খুবই খারাপ এখন। কোন খাবারই খেতে পারি না, কোন ঔষধই কোন ফল হচ্ছে না।
  • পেট সব সময় ফেঁপে থাকে
  • খাওয়ার পরই পেটের অস্বস্থি আরো বেড়ে যায়
  • খাওয়ার পরই অনবরত ঢেঁকুর উঠতে থাকে
  • প্রতিনিয়ত বায়ু নির্গত হয়
  • পেটে ব্যথা শুরু হলে তীব্র যন্ত্রনা কমাতে ইনজেকশন নিতে হয় 
  • টয়লেট একবারই হয় ভোর বেলায়
  • মাঝে মাঝে টয়লেটের বেগেই ঘুম ভাঙে
  • নরম পায়খানা, প্রচুর, কিছুটা রক্তযুক্ত, আমযুক্ত, ফেনাযুক্ত
  • দুধ অসহ্য, খেতেই পারি না
  • পিপাসা নেই
  • জিহ্বা সাদা বর্ণের
  • ক্ষুধা নেই বললেই চলে
  • ডিম খেতে খুব পছন্দ
  • ঘাম স্বাভাবিক
  • প্রস্রাবে সমস্যা নেই
  • ঘুমের ঔষধ খেয়ে ঘুমাতে হয়
  • যুদ্ধ-বিগ্রহ আর মারামারির স্বপ্ন দেখে
  • গরম কাতর, গোসলে অনীহা আছে 
  • পেটের যন্ত্রনা খাওয়ার পর এবং বিকালে বাড়ে
  • ছোটবেলায় প্রায় সবগুলি টিকা নিয়েছেন 
  • টাইফয়েড হয়েছিল একবার
  • চর্মরোগ হয়েছিল যেটা মলম দিয়ে সাড়িয়েছিলেন
ফ্যামিলি হিস্ট্রি এখানে দিলাম না। উনার দেয়া তথ্য মতে, তিনি ১৮ বছর যাবৎ এই পেটের সমস্যায় ভুগছেন কিন্তু এখন কোন ঔষধই আর কাজ করছে না। সব কিছু বিচার বিশ্লেষণ করে -
  • ১৬-১২-২০১৯ তারিখে প্রথম ঔষধ প্রয়োগ করি 
  • ২২-১২-১০১৯ তারিখে ফোন করে বলছেন প্রায় ১০% উন্নতি হয়েছে
  • ০১-০১-২০২০ তারিখে আবার ফোন করে বলছেন প্রায় ৪০% উন্নতি হয়েছে
  • ০৬-০১-২০২০ তারিখে দ্বিতীয় দফায় ঔষধ প্রয়োগ করি। এই ধাপেই প্রায় ৮০% উন্নতির কথা তিনি বলেছিলেন। প্রায় সব ধরণের খাবার দাবারও খেতে পারছেন। এর মধ্যে দাওয়াত খেয়েছেন কয়েক বার কিন্তু তেমন কোন সমস্যা হয়নি।
  • ২৭-০২-২০২০ তারিখে তৃতীয় দফায় ঔষধ প্রয়োগ করি। ভালো আছেন এখন পর্যন্ত কোন প্রকার ঔষধ ছাড়াই।
উনার উন্নতি দেখে স্ত্রীকেও দ্বিতীয় বারই নিয়ে আসছিলেন হোমিও ট্রিটমেন্টের জন্য। উনার স্ত্রী মাস খানেক আগে আমার চেম্বারে আসছিলেন। স্বামীর কথা জিজ্ঞেস করলে বলছিলেন - তিনি ভাল আছেন কোন সমস্যা হচ্ছে না। আইবিএস এর এরকম বহু কেইস (কিছু প্রামাণ্য ভিডিও দেখুন) আমি হ্যান্ডেল করেছিলাম এবং এখনো করছি।
যারা বলেন আইবিএস ভাল হয় না, তারা মূলত এই সমস্যার চিকিৎসা দিতে জানেন না। আপনি দেখবেন বহু উচ্চ ডিগ্রিধারী এলোপ্যাথিক চিকিৎসকরাই এই ধরণের আজগুবি কথাবার্তা বলে থাকে কারণ, প্রথমতঃ এলোপ্যাথিতে এই সমস্যা নির্মূলের আদৌ কোন ঔষধ বা চিকিৎসা নেই আর তারা সেটাই শিখে এসেছেন। দ্বিতীয়তঃ অধিকাংশ এলোপ্যাথিক চিকিৎসকেরই হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা এবং হোমিও চিকিৎসকদের সক্ষমতা সম্পর্কে ২% এর বেশি জ্ঞান নেই। কারো কারো দেখা যায় হোমিওপ্যাথি সম্পর্কে কোন কনসেপ্ট পর্যন্ত নেই। তারা অনেকেই না জেনে না বুঝে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে থাকে। তবে কিছু কিছু এমবিবিএস(MBBS) কোর্সের এলোপ্যাথিক চিকিৎসক আছেন যারা হোমিওপ্যাথি ভালো বুঝেন। তাদের কেউ কেউ আবার এলোপ্যাথি ছেড়ে দিয়ে হোমিওপ্যাথি প্রাকটিস করছেন।
যে চিকিৎসক আপনার শরীরে কোন প্রকার জটিলতা তৈরী না করে সম্পূর্ণ ভাবে আপনার রোগ নির্মূল করতে পারেন তিনিই হলেন সবচেয়ে ভালো চিকিৎসক। 
যেসকল রোগের এলোপ্যাথিক চিকিৎসা নেই সাধারণ মানুষ যদি সে বিষয়গুলি না জেনে বা এই বিষয়ে সচেতন না হয়ে অযথা বছরের পর বছর এলোপ্যাথির পেছনেই ছুটে চলেন তাহলে অর্থ ও সময় অপচয়, শারীরিক ও মানুষিক দুর্ভোগ ছাড়া তারা কিছুই পান না। তাই চিকিৎসা নেয়ার পূর্বেই আপনাকে জানতে হবে আপনার রোগটি কোন চিকিৎসা পদ্ধতি নির্মূল করতে পারবে। তারপর সেই চিকিৎসা পদ্ধতির অভিজ্ঞ একজন চিকিৎসক খুঁজে বের করে ধৈর্য ধরে চিকিৎসা নিতে হবে। তাহলেই আপনি অর্থ ও সময় অপচয়, শারীরিক ও মানুষিক দুর্ভোগ সব কিছু থেকেই বেঁচে যাবেন আশা করি।

এটি আবার ভাববেন না মাসের পর মাস নিজে নিজে হোমিও ঔষধ খেয়ে গেলেই আপনি ভালো হয়ে যাবেন। দুরারোগ্য জটিল ব্যাধিগুলির চিকিৎসা নেয়ার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে আপনার কাজ হলো এক্সপার্ট একজন হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করা অন্যথায় এখানেও আপনার সময় নষ্ট হবে। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায়, লোকজন ভালো চিকিৎসকদের কাছে না গিয়ে হোমিও ঔষধ বিক্রেতাদের নিকট যাচ্ছে চিকিৎসা নিতে। ফলশ্রুতিতে যা হওয়ার তাই হচ্ছে। অযথাই ঔষধ খেয়ে চলেছে মাসের পর মাস অথচ এলোপ্যাথির মত কিছুটা আরাম দেয়া ছাড়া আরো কোন উন্নতি নেই। শেষে যত দোষ সব হোমিওপ্যাথির। অথচ চিকিৎসকের কাছে না যাওয়ায় তার কোন প্রপার ট্রিটমেন্টই হয়নি।

এক্সপার্ট একজন হোমিও চিকিৎসক কেইস টেকিং করে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি নিয়ে নির্দিষ্ট ঔষধ নির্দিষ্ট মাত্রায় নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত আপনার শরীরে প্রয়োগ করে করে আপনাকে ইম্প্রোভমেন্টে নিয়ে যাবেন এবং এক সময় এই সমস্যা পুরুপুরি ঠিক হয়ে যাবে ইনশা-আল্লাহ।

যা যা জেনেছেন

  • IBS কি
  • আই বি এস রোগ
  • আই বি এস থেকে মুক্তির উপায় কি
বিস্তারিত

সোমবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২০

ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (আইবিএস) - প্রকৃত ও অপ্রকৃত কারণ

আগের পর্বে আপনারা ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা আইবিএস Irritable bowel syndrome (IBS) সম্পর্কে জেনেছেন। এ পর্যায়ে আমরা এই সমস্যার প্রকৃত ও অপ্রকৃত কারণগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত জানব। এটি পরিপাকতন্ত্রের একটি জটিল সমস্যা বলেই বিবেচনা করা হয়। বহু ক্রনিক ডিজিসের মতো এই সমস্যারও অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে কোন স্থায়ী চিকিৎসা নেই কিন্তু আইবিএস সম্পূর্ণ নির্মূল হয় একমাত্র হোমিও চিকিৎসায়। তার মানে আবার এই না যে - আপনি একজন হোমিও ডাক্তারের কাছে গেলেন আর সাথে সাথেই ভালো হয়ে যাবেন। আইবিএস ট্রিটমেন্ট নেয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে প্রথমেই সেরূপ দক্ষ একজন হোমিও চিকিৎসক খুঁজে বের করতে হবে যিনি হোমিওপ্যাথির নির্দিষ্ট নিয়মনীতি অনুসরণ করে আপনার চিকিৎসা কার্য পরিচালনা করবেন।

ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (আইবিএস) -  অপ্রকৃত কারণ

যখন আমার পেসেন্টদের জিজ্ঞেস করি কখন কিভাবে আপনার এই সমস্যা শুরু হয়েছে ? তখন তারা যে কারণগুলির কথা বলে থাকেন সেগুলি মূলত এই সমস্যার অপ্রকৃত কারণ। সুপারফিশিয়াল অর্থাৎ উপর দিকে চিন্তা করলে এটি মূলত অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যকারিতার ত্রুটি জনিত একটি সমস্যা বলে বিবেচিত হয়। বিভিন্ন গবেষণায় এর কারণ হিসেবে নানা থিওরি বা ব্যাখ্যা দেওয়া হলেও কোন সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে না পেয়ে একে ফাংশনাল গ্যাস্ট্রো-ইনটেস্টাইনাল ডিজঅর্ডার বলা হয়ে থাকে। এই সমস্যায় আক্রান্ত রোগীরা যে অভিযোগ গুলি করে থাকেন -
  • স্যার এই সমস্যা আমি নিজে নিজে তৈরি করেছি। জীবনে কোন ব্যালান্স ছিল না। মাঝে মাঝে নেশাও করতাম। সেই যে ৫ বছর আগে পেটের সমস্যার শুরু এখনও চলছে। 
  • কেউ বলছেন - সব সময় ভাজাপোড়া খাবার খেতাম। বাহিরে অনবরত খাওয়ার ফলে আমার এই সমস্যা হয়েছে। 
  • কেউ বলছেন  - দাওয়াত খেতে গিয়েছিলাম। সেই সেদিন রাতে পাতলা পায়খানার সমস্যা হয় তারপর এলোপ্যাথিক ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধ খেয়ে পাতলা পায়খানা ঠিক হয়। কিন্তু তারপর থেকে আজ পর্যন্ত পেটের নানা সমস্যা লেগেই আছে। 
  • কেউ বলছেন - একবার ভরপেট খাওয়ার পর হজমের জন্য ঔষধ খেয়েছিলাম। সেই থেকে সমস্যার শুরু। 
  • কেউ বলছেন - সমস্যাটি আমার পিতারও আছে আর আমার বয়স যখন ১৫ তখন থেকে আমারও শুরু হয়। 
  • কেউ বলছেন - স্যার আমার অন্ত্রের স্বাভাবিক কার্যক্রমে ত্রুটি আছে তাই আমি আইবিএস সমস্যায় ভুগছি। 
  • কেউ বলছেন - আমার মা বলেছেন, জন্মের পর থেকেই আমার এই সমস্যা। অনেক ডাক্তার দেখিয়েছেন কিন্তু কাজ হয়নি।  
কোন কোন চিকিৎসা বিজ্ঞানী বলছেন - খাবার পাকস্থলী থেকে পরিপাকনালীর মধ্য দিয়ে বৃহদন্ত্রের শেষ অংশ বা মলাশয়ে যাওয়ার সময় অন্ত্রের প্রাচীর একটি নির্দিষ্ট ছন্দে সংকুচিত ও প্রসারিত হয়।  এই সংকোচন-প্রসারণ স্বাভাবিকের তুলনায় দ্রুত হলে পেটে গ্যাস হয়, পেট ফেঁপে যায় এবং ডায়রিয়া হয়। আবার অন্ত্রের এই সংকোচন-প্রসারণ যদি স্বাভাবিকের তুলনায় ধীর হয়ে পড়ে তাহলে মল শক্ত হয়ে যায় অর্থাৎ কোষ্ঠকাঠিন্য জনিত আইবিএস তৈরী হয়।
ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (আইবিএস) - প্রকৃত কারণ
কোন কোন চিকিৎসক বলছেন - আপনার সমস্যা  হরমোনজনিত, অন্ত্রের প্রতিরোধ ব্যবস্থার পরিবর্তন, দুশ্চিন্তা ও হতাশা অথবা গ্যাস্ট্রোইন্টেস্টাইনাল নার্ভাস সিস্টেমের অস্বাভাবিকতার কারণেও এই রোগ হতে পারে। তর্কের খাতিরে ধরে নিলাম সবই ঠিক, কিন্তু চিকিৎসা দিয়ে ঠিক করা যাচ্ছে না কেন?

বস্তুত এরকম বহু সুপারফিশিয়াল চিন্তা ভাবনা করে কারণ খুজার চেষ্টা করে থাকেন চিকিৎসক এবং রোগীরা। অথচ এর কোনটিই আইবিএস সমস্যাটির মূল কারণ নয়। এর প্রকৃত কারণ জানতে হলে আপনাকে আরো গভীরে গিয়ে চিন্তা করতে হবে যা একমাত্র করতে পারে বিশ্বের একটি মাত্র ট্রিটমেন্ট সিস্টেম - হোমিওপ্যাথি। আর তাই হোমিওপ্যাথি এই সমস্যা চিরতরে দূর করতেও সক্ষম। কিছু প্রামাণ্য ভিডিও দেখুন।

ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (আইবিএস) -  প্রকৃত কারণ

আগেই বলেছি নানা প্রকার সুপারফিশিয়াল বা উপরি উপরি চিন্তা করে অথবা নানা প্রকার ব্যর্থ মেডিক্যাল টেস্ট করে আইবিএস সমস্যার কারণ নির্ণয়ের চেষ্টা করা হয়ে থাকে আর সে অনুযায়ী চিকিৎসা দেয়া হয়ে থাকে এলোপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্রে। কিন্তু এক্ষেত্রে আইবিএস কখনও নির্মূল করা সম্ভব হয়না সাময়িক আরাম পাওয়া যায় মাত্র। এলোপ্যাথিক সিস্টেমে মূলত রোগের কারণ নির্ণয় করেই চিকিৎসা দেয়া হয়। তাই কারণ না পেলে এলোপ্যাথিতে রোগের চিকিৎসাও হয় না ঠিক ঠাক ভাবে। যেহেতু এলোপ্যাথিসহ অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে উপরি উপরি অর্থাৎ ঐ স্থানের বর্তমান অবস্থা চিন্তা করে আইবিএস এর চিকিৎসা দেয়া হয় তাই সাময়িক একটু উপশম ছাড়া রোগ আদৌ নির্মূল হয় না। যেমন পাতলা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য হলে তাৎক্ষনিক ভাবে সেটা ঠিক করার ঔষধ দেয়া হয়। সমস্যা সাময়িক ঠিক হয়ে রোগী আরাম পায় বটে কিন্তু ঔষধ না খেলেই সমস্যা আবার দেখা দেয়।
এর প্রধান কারণ হলো আপনি মূলত একটি প্রকৃত রোগের সৃষ্ট কিছু উপসর্গ বা লক্ষণ ঠিক করার চিকিৎসা করছেন। তাই লক্ষণ ঠিক হচ্ছে কিন্তু প্রকৃত রোগের চিকিৎসা না হওয়ায় লক্ষণ বা উপসর্গ আবার প্রকাশ পাচ্ছে আর ভেতরের প্রকৃত রোগ বা True Disease দিন দিন আরো জটিল হচ্ছে। সেই প্রকৃত রোগটি মূলত কি আর তা দূর করার উপায়ই বা কি? এ সম্পর্কে বর্তমান বিশ্বের একটি মাত্র চিকিৎসা শাস্ত্রই ধারণা দিয়ে থাকে তা হল - হোমিওপ্যাথি
শুক্রাণু এবং ডিম্বাণুর মিলনে ঘন্টা খানেক হলো একটি জাইগোট তৈরি হয়েছে। সেখানে রয়েছে তার পিতা মাতা উভয়ের থেকে প্রাপ্ত ক্রোমোজোম যা হচ্ছে বংশগতির প্রধান উপাদান। মজার ব্যাপার হলো জাইগোটটির বয়স ১ ঘন্টা হলেও তার ভাইটাল ফোর্সকে ঘিরে যে ক্রোমোজোম রয়েছে তার বয়স কিন্তু কয়েক লক্ষ বছর। এর মাধ্যমেই আপনার পিতা-মাতা, দাদা-দাদী বা তারও পূর্ব পুরুষ থেকে সকল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল অর্জন করে রেখেছেন জন্ম থেকেই। এই রোগগুলির সবকটি সরাসরি আপনার মধ্যে হয়তো প্রকাশিত হবে না। তবে যেটির জেনেটিক মেটেরিয়াল প্রকট থাকবে সেটি নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিতে থাকবে, যতদিন না আপনি প্রপার হোমিও ট্রিটমেন্ট নিয়ে সেটিকে ঠিক করেছেন।

তাছাড়া যতদিন আপনার ভাইটাল ফোর্স শক্তিশালী অবস্থায় থাকবে তত দিন ভেতরের প্রকৃত রোগটি বা অনেকগুলি জটিল রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল এমনিতেই নিস্তেজ অবস্থায় থাকবে। আর যখন ভাইটাল ফোর্স দুর্বল হয়ে যাবে তখন ভেতরের সেই True Disease বা প্রকৃত রোগটি প্রকট হয়ে উঠবে অথবা নানা প্রকার উপসর্গ প্রকাশ করে আপনাকে কষ্ট দিবে।

মূলত সুপারফিশিয়াল বা উপরের দিক চিন্তা করে প্রকৃত রোগটির সৃষ্ট উপসর্গকে একটি রোগের নাম দিয়ে বিভিন্ন চিকিৎসা শাস্ত্র সেটিকে নির্মূল করার চেষ্টা করে থাকে। উপসর্গ চলে যায়, কিছুকাল পরে আবার সেই উপসর্গ প্রকাশ পায় বা সেটি নতুন উপসর্গ নিয়ে অন্যভাবে প্রকাশ পায়। কারণ ভেতরের প্রকৃত রোগটি নিয়ে মোটেও চিন্তা করে না এলোপ্যাথিক এবং অন্যান্য ট্রিটমেন্ট সিস্টেম আর তাই সমস্যাও দূর হয় না স্থায়ী ভাবে। ঔষধ খেয়ে খেয়ে ভাল থাকার চেষ্টা করা হয় মাত্র। ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (আইবিএস) তেমনি একটি True Disease বা প্রকৃত রোগের কিছু উপসর্গ মাত্র।

প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম পর্যন্ত নানা রোগ ব্যাধিতে ভুগতে থাকা পূর্বপুরুষের জেনেটিক মেটেরিয়াল আপনি বহন করে চলেছেন। তারা কত প্রকারের স্বাস্থ সমস্যায় আক্রান্ত ছিলেন একটি বারও কি আপনি সেটা চিন্তা করেছেন? আদৌ না !
হোমিও চিকিৎসক আপনাকে চিকিৎসা দেয়ার সময় আপনার কনস্টিটিউশন অনুসারে ঔষধ বের করার জন্য আপনার হিস্ট্রি নিবেন সাথে আপনার শৈশবের জীবনদর্শন, আপনার পিতা-মাতা, দাদা-দাদি, নানা-নানীর হিস্ট্রি নিবেন। তখন অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসক বের করবেন আপনার ভেতরে প্রকৃত রোগের কি কি জেনেটিক মেটেরিয়াল আছে। তারপর ধাপে ধাপে নির্দিষ্ট মাত্রায় ঔষধ প্রয়োগ করে সেগুলিকে প্রকট অবস্থা থেকে সুপ্তাবস্থায় পাঠাবেন এবং আপনার ভাইটাল ফোর্সকে শক্তিশালী করে তুলবেন। তখন আপনার মধ্যে কোন রোগ জটিলতা থাকবে না এবং আপনি ভালো থাকবেন।

আসুন দেখি পেসেন্টরা কি কি মায়াজম অথবা কনস্টিটিউশনের হয়ে থাকে এবং সেগুলির ক্ষেত্রে কি কি মেডিসিন হতে পারে। এখানে মূলত আমি Synthesis Repertory রেপার্টরি থেকেই বিষয়টি আপনাদের দেখাচ্ছি-
কনস্টিটিউশন (Constitution) অনুসারে ঔষধগুলিও আপনারা দেখুন -
হিস্ট্রি নেয়ার সময় দেখা যায় - কারো ভাই যক্ষায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, কারো পিতা ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। কারো মা শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ, কোষ্টকাঠিন্যে ভুগছেন। কারো দাদা ক্যান্সারে মারা গেছেন। কারো নানার CVA (Cerebrovascular Accident) করে মারা যান। কেউ কেউ সরাসরি বলেন - সমস্যাটি আমার দাদারও ছিল আমারও আছে.... ইত্যাদি ইত্যাদি। কেউ কেউ আবার বলেন একবার টাইফয়েড হয়েছিল আমার, তারপর থেকে সেই যে পেটের পীড়া হল কত ঔষধ খাই কিন্তু ঠিক হচ্ছে না। আপনার নিকট আত্মীয়দের মধ্যে বিদ্যমান রোগ-ব্যাধিগুলি আপনার মধ্যে থাকা প্রকৃত রোগ বা সেগুলির জেনেটিক মেটেরিয়াল বিদ্যমান থাকার প্রকটতা সম্পর্কে ধারণা দিয়ে থাকে। আইবিএস সমস্যাটি মূলত সেই জেনেটিক মেটেরিয়াল দ্বারা সৃষ্ট উপসর্গ মাত্র।
আইবিএস রোগীদের মধ্যে মূলত Tubercular Diathesis প্রকট হয়ে থাকে। যা মূলত Psoric miasm এর Syphilitic miasm মিলিত হয়ে সৃষ্টি হয়।
অনেকেই আছেন নিজের অজ্ঞতা বসত হোমিওপ্যাথিকে এলোপ্যাথির মতো চিন্তা করেন। আপনাকে মনে রাখতে হবে দুটি চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পূর্ণ আলাদা। এলোপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোগ ও রোগের কারণ নির্ণয় করতে যেমন নানা প্রকার টেস্ট করতে হয় ঠিক হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোগীর হিস্ট্রি নেয়ার জন্য কেইস টেকিং জরুরী। সেসময় আপনি যদি চিকিৎসককে বিস্তারিত তথ্য দিয়ে সাহায্য না করেন তাহলে চিকিৎসক আপনাকে ঠিকঠাক ভাবে চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হতে পারেন। কারণ একজন হোমিও চিকিৎসক আপনার দেয়া তথ্য অনুযায়ী সামনে আগাবেন এবং ঔষধ সিলেকশন করবেন। সব ঠিক থাকলে আইবিএস এর মতো সকল জটিল পীড়াতেই আপনি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে নির্মল আরোগ্য লাভ করবেন ইনশা-আল্লাহ।
বিস্তারিত

রবিবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২০

আইবিএস IBS এর প্রকৃত লক্ষণ এবং উপসর্গ - রোগীদের কেস টেকিং (Case Taking) থেকে

আগের পর্বে আমরা IBS ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম বা আইবিএস এর প্রকৃত ও অপ্রকৃত কারণ সম্পর্কে জানলাম। এ পর্যায়ে Irritable bowel syndrome (IBS) এর প্রকৃত লক্ষণ এবং উপসর্গ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোকপাত করবো। এটা মূলত একটি উপসর্গ ভিত্তিক সমস্যা তবে এর লক্ষণ এবং উপসর্গগুলির ব্যক্তি বিশেষে ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। আজকে আমার পেসেন্টদের কেইস টেকিং থেকে আইবিএস IBS এর বেশ কিছু প্রকৃত লক্ষণ এবং উপসর্গ তুলে ধরবো। তবে সাধারণ ভাবে আমরা এই সমস্যায় যে লক্ষণ ও উপসর্গগুলি দেখতে পাই -

আইবিএস এর প্রকৃত লক্ষণ এবং উপসর্গ - সাধারণ

  • পেটের অস্বস্থি, পেট ফাঁপা, পেটে ব্যথা
  • পেটে ভুটভাট শব্দ হওয়া 
  • ক্ষুধা মন্দা হওয়া বা মোটেই না থাকা আবার কখনো অতিরিক্ত ক্ষুধা থাকা
  • গলা বুক জ্বালা ও বমি বমি ভাব
  • ঢেকুর আসা এবং খাওয়ার পর এর তীব্রতা বেড়ে যাওয়া
  • প্রতিনিয়ত গ্যাস হওয়া এবং ঘন ঘন মলদ্বার দিয়ে গ্যাস বের হওয়া
  • ঘন ঘন পাতলা মল কিংবা পানির মতো তরল উদরাময়
  • পায়খানায় যাওয়ার বেগ সামলাতে না পারা এবং মলদ্বারে ব্যথা
  • খাওয়ার পরই টয়লেটের বেগ হওয়া
  • প্রতিবার মলত্যাগের আগে বা পরে এবং মলের সঙ্গে মিউকাস ক্ষরণ
  • কোষ্টবদ্ধ অবস্থায় মলের বেগ না আসা কিংবা খুবই শক্তমল কষ্টে অল্প অল্প বের হওয়া
  • প্রচণ্ড শারীরিক দুর্বলতা, মস্তিষ্ক ক্লান্তি ও কাজের প্রতি অমনোযোগিতা
  •  খিটখিটে মেজাজ, উত্তেজনা, অবসাদ এবং উদ্বিগ্নতা
  • শরীরের ওজন হ্রাস পাওয়া
আইবিএস IBS এর প্রকৃত লক্ষণ এবং উপসর্গ

আইবিএস এর প্রকৃত লক্ষণ এবং উপসর্গ - রোগীদের কেস টেকিং থেকে

হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্যান্য ট্রিটমেন্টে সিস্টেমে শুধু পেটের যন্ত্রনাকেই আইবিএস এর লক্ষণ এবং উপসর্গ হিসেবে প্রাধান্য দেয়া হয়। কিন্তু হোমিওপ্যাথি মূলত সম্পূর্ণ মানুষটির লক্ষণ ও উপসর্গকে প্রাধান্য দিয়ে থাকে কারণ সবকিছু মিলেই কিন্তু একটি মানুষ। এর আগের পর্বে প্রতিটি মানুষের ভেতরের প্রকৃত রোগ বা তার জেনেটিক মেটেরিয়াল সম্পর্কে ধারণা দিয়েছিলাম। মূলত সেই প্রকৃত রোগ বা তার জেনেটিক মেটেরিয়াল মানব দেহ-মনে আইবিএস নামক সমস্যায় যেসকল লক্ষণ এবং উপসর্গ তৈরি করে সেগুলিই হলো এই রোগের জন্য প্রকৃত উপসর্গ তবে সেগুলি ব্যক্তি বিশেষের ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে প্রকাশিত হয়ে থাকে।

মানুষ যখন রোগাক্রান্ত হয় তখন তার শরীরে একটা সার্বিক পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। আইবিএস এর ক্ষেত্রে পেটের নানারূপ লক্ষণের সাথে আপনার পিপাসা, জিহ্বা, লালা, ক্ষুধা, খাদ্য, ঘুম, স্বপ্ন, ঘাম, পায়খানা, প্রস্রাব ইত্যাদির ক্ষেত্রেও কোন না কোন পরিবর্তন পরিলক্ষিত হবে। মূলত সেগুলিও আপনার রোগের ক্ষেত্রে প্রধান লক্ষণ বলে বিবেচিত হবে। কিন্তু পৃথিবীর কোন চিকিৎসা শাস্ত্রই এই বিষয়গুলি সার্বিক ভাবে পর্যালোচনা করে চিকিৎসা দিতে পারে না, একমাত্র হোমিওপ্যাথি ছাড়া। অন্যান্য সকল চিকিৎসা শাস্ত্র মূলত স্থানিক বা উপরি উপরি চিন্তা করে এই সমস্যাগুলি সমাধানের চেষ্টা করে আর বিফল হয়।
পৃথিবীর একটি মাত্র চিকিৎসা শাস্ত্রই আপনার ভেতরের মানুষটাকে নিয়ে চিন্তা করে আর সেটা হলো - হোমিওপ্যাথি।
হোমিওপ্যাথি যেহেতু একটি মানুষের সার্বিক অবস্থা নিয়ে চিন্তা করে ট্রিটমেন্ট দিয়ে থাকে তাই প্রকৃত আরোগ্য লাভে কিছুটা সময় লাগলেও রোগী নির্মল আরোগ্য লাভ করে বিধায় দেহ-মন সর্বদিক থেকেই সে ভালো থাকে - যাকে বলে সুস্বাস্থ্য। এখানে সাধারণের বুঝার সুবিধার্থে আমার কিছু পেসেন্টের আইবিএস এর সার্বদৈহিক লক্ষণ ও উপসর্গ সহজ বাংলায় তুলে ধরা হলো -

আইবিএস কেস : এক (....হোসেন)

১০ বছর যাবৎ আইবিএস সমস্যায় ভুগছেন। এ পর্যন্ত বিভিন্ন চিকিৎসা নিয়ে ভালো থাকার চেষ্টা করেছেন। এখানে তার লক্ষণ সমষ্টি সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো -
  • খাওয়ার সাথে সাথেই পেট ফুলে যায় 
  • পেটে জ্বালাপোড়া
  • টক ঢেকুর খাওয়ার পর বেশি
  • দিন ৭/৮ বার টয়লেটে যেতে হয়
  • যখন তখন পায়খানার বেগ চাপে
  • আমযুক্ত, নরম বা পাতলা পায়খানা 
০১. সার্বদৈহিক লক্ষণ এবং উপসর্গ
  • পিপাসা : স্বাভাবিক
  • জিহ্বা : সাদা প্রলেপযুক্ত
  • লালা : স্বাভাবিক 
  • ক্ষুধা : কম, খাবারে অনীহা
  • ইচ্ছা : ডিম, ভাজাপোড়া, টক, ঝাল, মাংস এবং মসলাযুক্ত খাদ্য
  • অনিচ্ছা : মিষ্টি, রুটি
  • অসহ্য: দুধ, ডিম, ভাজাপোড়া, মাংস, মসলাযুক্ত খাদ্য
  • ঘাম : স্বাভাবিক
  • ঘুম : কম, ৩/৪ ঘন্টার মতো 
  • স্বপ্ন: মল-মূত্র, ময়লা আবর্জনা, নদী, পানি
  • পায়খানা : নরম, পাতলা, আমযুক্ত পায়খানা, দুর্গন্ধযুক্ত, দিনে ৭/৮ বার হয়, সকালের দিকে বেশি, মাঝে মাঝে পায়খানার চাপে ঘুম ভাঙে। 
  • প্রস্রাব : স্বাভাবিক 
  • কখন বাড়ে : সকালের দিকে
  • কিসে বাড়ে : খাওয়ার পর,  খাবারে অনিয়মে, দুধ, ডিম, ভাজাপোড়া, মাংস, মসলাযুক্ত খাদ্যে
  • কখন কমে :...
  • কিসে কমে : খালি পেটে উপশম 
  • কাতরতা : শীত কাতর এবং গোসলে অনীহা রয়েছে 
  • মন : খিটখিটে, অবসাদ ভাব এবং উদ্বিগ্নতা
পূর্ব চিকিৎসা :
  • এলোপ্যাথি - Mebeverine, Metronidazole ইত্যাদি 
  • হোমিওপ্যাথি - Merc Sol, Merc Cor, Nux Vom, Carbo Veg, Iris Vers, China, Chaparro, Natrum Phos, Sulphur, Natrum Sulph
০২. পার্সোনাল হিস্ট্রি :
  • শিশুকালে ঘনঘন আমাশয় হতো
  • শিশুকাল থেকেই মাঝে মাঝে জ্বর এবং পাতলা পায়খানা হতো
  • মায়ের বুকের দুধ খেত না
  • এলার্জি আছে, মুখে ঘাঁ আছে
  • ঠান্ডা এবং হাঁচি সর্বদা লেগেই থাকে
০৩. ফ্যামিলি হিস্ট্রি :
  • পিতা : বাতের ব্যথা, এলার্জি, সামান্যতেই ঠান্ডা লাগে
  • মাতা : গ্যাস্ট্রিক, বাতের ব্যথা
  • দাদা : সব সময় আমাশয় লেগেই থাকতো
  • দাদী : পেটে টিউমার
  • নানা : খাদ্য নালীতে ক্যান্সার
  • নানী : DM, CVA

আইবিএস কেস : দুই (....রহমান)

৭ বছর যাবৎ আইবিএস সমস্যায় ভুগছেন। এ পর্যন্ত বিভিন্ন চিকিৎসা নিয়েছেন। এখানে তার লক্ষণ সমষ্টি সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো -
  • পেটে একটা অস্বস্থি সর্বদা লেগেই থাকে
  • টয়লেটের সমস্যাটাই বেশি অনুভব করেন
  • দিন ৩/৪ বার টয়লেট হলেও...পরিষ্কার হয় না
  • যখন তখন পায়খানার বেগ পায় কিন্তু সব সময় হয়না
  • মাঝে মাঝে মলদ্বারে ব্যথা হয়
  • গাড়িতে চড়তে পারেন না
০১. সার্বদৈহিক লক্ষণ এবং উপসর্গ
  • পিপাসা : অত্যধিক
  • জিহ্বা : সাদা, ময়লাযুক্ত
  • লালা : মাঝে মাঝে রাতে ঘুমের মধ্যে, পাতলা
  • ক্ষুধা : প্রবল (Ravenous)
  • ইচ্ছা : মাছ, গরম প্রকৃতির খাদ্য, মিষ্টি 
  • অনিচ্ছা : টক, ঝাল, মাংস, ঠান্ডা, মসলাজাতীয় খাবার
  • অসহ্য : দুধ, মাংস, ফাস্টফুড, ঝাল, ভাজাপোড়া, মসলাজাতীয় খাবার, জলীয় শাকসবজি
  • ঘাম : বেশি, হাত এবং পায়ের পাতা ঘামে, দুর্গন্ধযুক্ত 
  • ঘুম : স্বাভাবিক
  • পায়খানা : পাতলা পায়খানা, দিনে ৩/৪ বার হয়, সকালের দিকে, মাঝে মাঝে সন্ধ্যার দিকে একবার
  • প্রস্রাব : ঘনঘন প্রস্রাব হয়, দিনে এবং রাতে একই
  • কখন বাড়ে : সকালের দিকে
  • কিসে বাড়ে : দুধ, মাংস, ফাস্টফুড, ভাজাপোড়া, মসলাজাতীয় খাবার, জলীয় শাকসবজিতে
  • কখন কমে :  .....
  • কিসে কমে : বায়ু নির্গমনে, ঢেকুরে উপশম, টয়লেটের পর
  • কাতরতা : শীত কাতর এবং গোসলে অনীহা রয়েছে 
  • মন :  খিটখিটে, অবসাদ ভাব এবং উদ্বিগ্নতা
  • পূর্ব চিকিৎসা : এলোপ্যাথি, কবিরাজি এবং হোমিওপ্যাথি
০২. পার্সোনাল হিস্ট্রি : দেয়া হলো না।
০৩. ফ্যামিলি হিস্ট্রি :  দেয়া হলো না।

আইবিএস কেস : তিন (....সরকার)

প্রায় ৭ বছর যাবৎ আইবিএস সমস্যায় ভুগছেন। এ পর্যন্ত বিভিন্ন চিকিৎসা নিয়েছেন। এখানে তার লক্ষণ সমষ্টি সম্পর্কে আলোকপাত করা হলো -
  • খাবার খেলেই পেট ফুলে যায়
  • তলপেট সব সময় ভারী হয়ে থাকে
  • নাভির নিচে জ্বলে
  • আমাশয় - আম এবং রক্ত যায়
  • টানা ৩ বছর যাবৎ ঔষধ খাচ্ছে 
০১. সার্বদৈহিক লক্ষণ এবং উপসর্গ
  • পিপাসা :স্বাভাবিক
  • জিহ্বা : হালকা সাদা প্রলেপযুক্ত
  • লালা : স্বাভাবিক
  • ক্ষুধা : ক্ষুধাহীনতা
  • ইচ্ছা : মাছ, শাকসবজি, টক, মিষ্টি, ঠান্ডা, হালকা ঝাল,
  • অনিচ্ছা : গরুর মাংস, তৈলাক্ত খাবার, বেশি ঝাল
  • অসহ্য : দুধ, মাংস, বেশি ঝাল
  • ঘাম : স্বাভাবিক
  • ঘুম : স্বাভাবিক
  • স্বপ্ন : পড়ে যাওয়া, মৃত মানুষ, মৃত আত্মীয়স্বজন
  • পায়খানা : নরম,  আম-রক্ত মিশ্রিত। দিনে ৫/৬ বার
  • প্রস্রাব : স্বাভাবিক
  • বায়ু নিঃসরণ : দুর্গন্ধযুক্ত
  • কখন বাড়ে : সকালের দিকে
  • কিসে বাড়ে : দুধ, মাংস, খাবারে অনিয়ম হলে
  • কখন কমে : .....
  • কিসে কমে : বায়ু নিঃসরনে, ঢেকুরে, টয়লেটের পর 
  • কাতরতা : উভয় কাতর
  • মন : উদ্বিগ্নতা, ভয় ভয় ভাব, একা থাকতে ভয়, রাতে ভয়, জিনভুতের ভয়
  • পূর্ব চিকিৎসা : এলোপ্যাথি এবং হোমিওপ্যাথি
০২. পার্সোনাল হিস্ট্রি :
  • ১০ বছর বয়সে পক্স হয়েছিল
  • ১১ বছর বয়সে টাইফয়েড হয়েছিল
  • ১৫ বছর বয়সে জন্ডিস হয়েছিল
০৩. ফ্যামিলি হিস্ট্রি :
  • পিতা : Liver Problem, DM, HTN
  • মাতা : বাতের ব্যথা
  • দাদা : কিছু বলতে পারেনি
  • দাদী : কিছু বলতে পারেনি
  • নানা : Anal fissure
  • নানী : সব সময় পেটের ব্যথায় কষ্ট পেতো
এখানে মূলতঃ বিষয়টি বুঝানোর জন্য কিছু তথ্য উপস্থাপন করা হল পেসেন্টের কেস টেকিং থেকে। এভাবে আইবিএস এ আক্রান্ত রোগীর সব সিম্পটম নিয়েই চিন্তা করে চিকিৎসা দিতে হয় যা হোমিওপ্যাথি ছাড়া বিশ্বের আর কোন ট্রিটমেন্ট সিস্টেমই দিতে পারে না। হোমিওপ্যাথি আপনার ভেতরের মানুষকে নিয়ে চিন্তা করবে উপরি উপরি চিন্তা করে একটি বা দুটি লক্ষণকেই প্রাধান্য দিবে না। যখন দুয়েকটি লক্ষণ চিন্তা না করে সম্পূর্ণ মানুষটিকে নিয়ে চিন্তা করে চিকিৎসা করা হয় তখন সেই মানুষটিই পরিপূর্ণ সুস্থতা লাভ করে যাকে বলা হয় - সুস্বাস্থ। আর এই কাজটি করে থাকে হোমিওপ্যাথি।

যা যা জেনেছেন

  • আই বি এস রোগের লক্ষণ
  • আই বি এস থেকে মুক্তির উপায় কি
বিস্তারিত

আইবিএস IBS এর চিকিৎসা - হোমিওপ্যাথি, এলোপ্যাথি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ

আইবিএস IBS এর চিকিৎসা - হোমিওপ্যাথি, এলোপ্যাথি ও আয়ুর্বেদিক ঔষধ কি কি হতে পারে এ সম্পর্কে বিস্তারিত থাকছে আজকের পর্বে।  ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম Irritable bowel syndrome (IBS) থেকে মুক্তির উপায় যারা খুঁজছেন তারা মোটামোটি এর চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে বেশ ভালো একটা ধারণা পেয়ে যাবেন আজ। পেটের এই সমস্যায় প্রথমেই আমাদের দেশের মানুষ এলোপ্যাথিক চিকিৎসার দ্বারস্থ হন কিন্তু যখন দেখেন মাসের পর মাস ঔষধ খেয়ে যাচ্ছেন অথচ সমস্যার সুরাহা নেই শুধু সাময়িক একটু আরাম পাওয়া যায় তখন তাদের চোখ খুলে যায়। আবার হাসপাতালে অথবা   চিকিৎসকের নিকট গেলে তাদের বুঝানো হয় এই সমস্যা ভাল হয় না ঔষধ খেয়ে থাকতে হয়।

কিছু লোক সরল বিশ্বাসে এভাবেই ঔষধ খেয়ে খেয়ে একটি জরাজীর্ণ জীবন পার করে দেন মূলত তাদের অজ্ঞতা আর মূর্খতার কারণে। এর মধ্যে আবার কিছু লোক এর বিকল্প সমাধান খুঁজতে থাকেন অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রের মধ্যে। তাদের কেউ কেউ এক সময় সুস্থ হয়ে উঠেন প্রপার হোমিপ্যাথিক ট্রিটমেন্ট পেয়ে। আর কেউ কেউ ভুল ট্রিটমেন্ট বা ঔষধ ব্যবসায়ীদের যাঁতাকলে পড়ে অযথাই মাসের পর মাস ঔষধ খেয়ে যায় অথচ তেমন কোন ফল পান না। এর প্রধান কারণ হলো তাদের নিজেদেরই অজ্ঞতা।
বিশ্বে বহু ট্রিটমেন্ট সিস্টেম রয়েছে। সেগুলির মধ্যে একমাত্র হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা শাস্ত্র সার্জারি বহির্ভুত প্রায় ৯০% রোগের চিকিৎসা দিতে পারে। আপনাকে আগে জানতে হবে কোন ট্রিটমেন্ট সিস্টেমে আপনার রোগের প্রপার ট্রিটমেন্ট রয়েছে তারপর সেই ট্রিটমেন্ট সিস্টেমের একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তথ্যাবধানে যথাযথ চিকিৎসা নিতে হবে। তাহলেই স্থায়ী ভাবে রোগ মুক্তি হয়ে আপনি সুস্বাস্থ্য লাভ করবেন। 
এর বাহিরে, যে চিকিৎসা শাস্ত্রে আপনার রোগের সঠিক সমাধান নেই সেখানেই যদি আপনি ঘুরতে থাকেন আর অযথাই উপশমমূলক ঔষধ খেয়ে খেয়ে কিছুটা আরাম নিয়ে নিয়ে মাসের পর মাস বা বছরের পর বছর অতিবাহিত করতে থাকেন তাহলে দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন রাসায়নিক ঔষধের পার্শপ্রতিক্রিয়ায় আরো জটিল জটিল শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হতে পারেন। মূলতঃ এভাবে রোগ কখনই নির্মূল হয় না, একে বলা হয় রোগ পুষে রাখা।
আইবিএস IBS এর চিকিৎসাআইবিএস IBS হলো এমন একটি সমস্যা এর মূলত হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্য কোন ট্রিটমেন্ট সিস্টেমে স্থায়ী কোন সমাধান নেই। অন্যান্য চিকিৎসা শাস্ত্রে মূলত ঔষধ খেয়ে খেয়ে এই সমস্যায় সাময়িক আরাম পাওয়া যায় কিন্তু রোগ নির্মূল কখনই হয় না। তবে আপনি যদি আবার প্রপার হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা না পান তাহলে এই সমস্যা থেকে এখানেও আপনার মুক্তি মিলবে না। এর জন্য অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক দরকার যিনি হোমিওপ্যাথির নির্দিষ্ট নিয়মনীতি অনুসরণ করে আপনার ট্রিটমেন্ট করবেন। এখন আমরা জানব ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম বা আইবিএস সমস্যায় হোমিওপ্যাথি, এলোপ্যাথি ও আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্রে সাধারণত কি কি ঔষধ ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

এলোপ্যাথিতে আইবিএস এর চিকিৎসা

এলোপ্যাথিতে এই সমস্যার স্থায়ী কোন চিকিৎসা নেই। মূলত এই চিকিৎসা শাস্ত্রে তাৎক্ষণিক উপশমের জন্য লক্ষণ ভিত্তিক ঔষধ প্রয়োগ করা হয়ে থাকে আর সাথে সাথে জীবন যাপনের ক্ষেত্রে নানা বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়ে থাকে।
সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া যেকোন ঔষধ ব্যবহার করা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকুন।
আইবিএস এর ক্ষেত্রে পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়ার লক্ষণে নিম্নোক্ত ঔষধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে-
  • Loperamide - Imotil
  • Rifaximin - Xifaxan
  • Eluxadoline - Viberzi
  • Alosetron - Lotronex
আমাশয়ের লক্ষণে ব্যবহৃত হয় -
  • Anti-Amoebic Drugs - Metronidazole
  • Antibiotics - Cefixime, Ciprofloxacin
আবার কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণে ব্যবহৃত হয় -
  • Fiber supplements
  • Laxatives - Lactulose, Liquid paraffin etc
  • Lubiprostone  - Amitiza
  • Linaclotide  - Linzess
এছাড়া পেটে অস্বস্তি বা পেট ব্যথায় ব্যবহার করা হয় 
  • Antispasmodics - Mebeverine hydrochloride
কিছু মানুষিক দিক বিবেচনায় ব্যবহৃত হয় -
  • Antidepressants or Anti-anxiety medications - Diazepam
এই ঔষধগুলি ছাড়াও লক্ষণ এবং উপসর্গভেদে আরো কিছু এলোপ্যাথিক ঔষধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে যেগুলি আইবিএস এর বিভিন্ন উপসর্গে সাময়িক উপশম দিয়ে থাকে কিন্ত রোগ নির্মূল করে না।

আয়ুর্বেদে পেটের পীড়ার চিকিৎসা

অম্ল, অজীর্ণ, আমাশয়, পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া ইত্যাদি সমস্যায় কোম্পানি ভেদে বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক ঔষধ ব্যবহার করা হয়ে থাকে। নিম্নে দেশের বিশুদ্ধ একটি আয়ুর্বেদিক কোম্পানি "সাধনা ঔষধালয়"এর তৈরিকৃত কিছু ঔষধ উল্লেখ করা হলো যেগুলি অম্ল, অজীর্ণ, কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশয়, পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়ার লক্ষণে ব্যবহৃত হয়ে থাকে।
০১. আমলকি রসায়ন
০২. রোহিতকারিষ্ট
০৩. ভাস্কর লবন
০৪. বজ্রক্ষার
০৫. অগ্নিবটি
০৬. বৃহৎ অগ্নিকুমার রস
০৭. কুটজারিস্ট
০৮. মহাগন্ধক
০৯. কোষ্ঠশুদ্ধি বটিকা
১০. অষ্টাঙ্গ লবন ইত্যাদি
এগুলি ছাড়াও আরো বিভিন্ন আয়ুর্বেদিক কোম্পানির বিভিন্ন নামে ঔষধ রয়েছে যেগুলি পেটের অম্ল, অজীর্ণ, কোষ্ঠকাঠিন্য, আমাশয়, পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়ার লক্ষণে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে। কিন্তু আইবিএস এর ক্ষেত্রে এই ঔষধগুলি বা আরো যে আয়ুর্বেদিক ঔষধ রয়েছে সেগুলি কিছুটা উপশম দিয়ে থাকে কিন্তু রোগ নির্মূল করে না। অর্থাৎ কিছু কিছু আয়ুর্বেদিক ঔষধ খেয়ে আপনি আরাম পেতে পারেন কিন্তু আইবিএস আদৌ নির্মূল হয় না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রাথমিক অবস্থায় অর্থাৎ সমস্যার শুরুতে আপনি এই ঔষধেই উপকার পেতে পারেন। তবে মনে রাখতে হবে "আয়ুর্বেদ" হলো মূলত প্রাইমারী ট্রিটমেন্ট সিস্টেম।

হোমিওপ্যাথিতে আইবিএস এর চিকিৎসা

আগের একটি পর্বে আপনারা জেনেছেন হোমিওপ্যাথিতে আইবিএস নির্মূল হয়ে যায় তার মানে এই নয় যে - আপনি একজন হোমিও ডাক্তারের কাছে গেলেন ঔষধ খেলেন আর আপনি ভালো হয়ে গেলেন। এর জন্য দরকার একটি প্রপার হোমিও ট্রিটমেন্ট যা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মানুষ পায় না। এর প্রধান কারণ কি জানেন ?

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষেরই হোমিওপ্যাথি সম্পর্কে খুব বেশি ধারণা নেই। এটি যে কত উঁচু মানের ট্রিটমেন্ট সিস্টেম তা বহু উচ্চ শিক্ষিত এলোপ্যাথিক চিকিৎসকও জানে না যেহেতু তারা হোমিওপ্যাথি পড়ে না। হোমিওপ্যাথিতে রয়েছে প্রায় ৮২০০ ঔষধ যা বিশ্বের আর কোন চিকিৎসা শাস্ত্রে নেই। হোমিওপ্যাথিক ঔষধগুলি সরাসরি মানুষের শরীরের উপর প্রয়োগ করে প্রমাণিত তাই নিয়মনীতি অনুসরণ করে প্রয়োগে হোমিও ঔষধের কোন পার্শপ্রতিক্রিয়া নেই। তাছাড়া হোমিওপ্যাথি বহু বছর যাবৎ সরাসরি মানুষের উপর গবেষণা লব্ধ পরীক্ষিত ফলাফল। এর রয়েছে নিজস্ব সংবিধান যা বিশ্বের আর কোন ট্রিটমেন্ট সিস্টেমের নেই।

কিছু কিছু মানুষকে আবার নিজের অজ্ঞতা আর মূর্খতা বশতঃ হোমিওপ্যাথি সম্পর্কে নানা প্রকার বিরূপ কথাবার্তা বলতে দেখা যায়। কিন্তু যখন তারা নিজেরা কোন দুরারোগ্য স্বাস্থ্য সমস্যায় আক্রান্ত হয় আর মাসের পর এলোপ্যাথি বা অন্যান্য ট্রিটমেন্ট সিস্টেমে চিকিৎসা নিয়েও কোন ফল পায় না তখন তাদের টনক নড়ে উঠে আর হোমিও ট্রিটমেন্ট নিতে আসে। ঠিক তখনই অধিকাংশ মানুষই যে ভুলটি করে থাকে তা হলো - হোমিওপ্যাথি সম্পর্কে পূর্ব ধারণা না থাকায় তারা কোন হোমিও চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে মূলত হোমিওপ্যাথিক ঔষধ ব্যবসায়ীদের নিকট যায় হোমিও ট্রিটমেন্টের জন্য। যার ফলে প্রপার একটি হোমিওপ্যাথিক ট্রিটমেন্ট থেকে বঞ্চিত হয় তারা, আর রোগ আগে যেমন ছিল তেমনই থেকে যায় কিছুটা উপশম হয়তো পেয়ে থাকে এলোপ্যাথিক ঔষধের মতো।

কিভাবে বুঝবেন আপনি কোন চিকিৎসকের কাছে না গিয়ে মূলতঃ ঔষধ ব্যবসায়ীর নিকট হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা নিতে গিয়েছেন -
  • তারা আপনার কেইস টেকিং করবে না, কয়েকটি কথা জিজ্ঞেস করেই আপনাকে ঔষধ ধরিয়ে দিবে। 
  • কেউ কেউ আপনাকে ৪ মাস, ৬ মাস, ৮ মাস, ১ বছর, ২ বছর ইত্যাদি কোর্স ধরিয়ে দিবে।
  • আপনাকে বলবে তারা জার্মানী, সুইজারল্যান্ড ইত্যাদি বিদেশী ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা করে। অর্থাৎ আপনার সামনে ঔষধের গুনকীর্তন করবে, যেহেতু তারা ঔষধ ব্যবসায়ী। অথচ আপনার রোগ ভালো হবে কি হবে না সেটা কোন দেশের কোন কোম্পানির ঔষধ ব্যবহার করছেন তার উপর নির্ভর করে না, সেটা নির্ভর করে ডাক্তারের ডাক্তারির উপর। অর্থাৎ চিকিৎসক যদি ঠিকঠাক ঔষধ সিলেক্ট করে দেন তাহলে বিশ্বের সবচেয়ে কম রেটিং এর হোমিও কোম্পানির ঔষধটি প্রয়োগ করলেও আপনি ভালো হয়ে যাবেন। 
  • আইবিএস সমস্যায় গদবাধা কিছু ঔষধ - Nux, Podophyllum, Aloe Socotrina, Robinia Q, China Q, Chaparro Q, Kurchi Q, Hydrastis Q ইত্যাদি মাসের পর মাস আপনাকে খাওয়াবে যেগুলি মূলত আইবিএস সারায় না, এলোপ্যাথি এবং আয়ুর্বেদের মতো কিছুটা আরাম দেয় মাত্র। 
অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসক যত্ন নিয়ে আপনার কেইস টেকিং করবেন। সময় নিয়ে আপনার হিস্টি শুনবেন। তিনি আপনার - বর্তমান কষ্টের বিস্তারিত বিবরণ, সার্বদৈহিক অবস্থা - পিপাসা, জিহ্বা, লালা, ক্ষুধা, খাদ্য, ঘুম, স্বপ্ন, ঘাম, পায়খানা, প্রস্রাব, পূর্ব রোগের ইতিহাস, জীবনদর্শন, আপনার পিতা-মাতা, দাদা-দাদী, নানা-নানীর হিস্ট্রি নিবেন এবং সেই আলোকে ধাপে ধাপে নির্দিষ্ট সময় পর পর আপনার শরীরে ঔষধ প্রয়োগ করে আপনাকে ইম্প্রোভমেন্টে নিয়ে যাবেন এবং এক সময় আপনি পুরোপুরি সুস্থ হয়ে পূর্ণ সুস্বাস্থ্য লাভ করবেন। 
অনেকেই আমাকে প্রশ্ন করেন ইন্টারনেট বা ইউটিউবে বিভিন্ন ডাক্তার আইবিএস এর জন্য বিভিন্ন হোমিওপ্যাথিক ঔষধ খেতে পরামর্শ দিয়ে থাকেন - সেগুলি কি IBS সারায়? সোজা উত্তর হলো : না, এভাবে ঔষধ প্রয়োগে IBS আদৌ সারে না। কেউ কেউ কিছুটা আরাম পাবেন কিন্তু আপনার রোগ আদৌ নির্মূল হবে না বরং ভেতরে ভেতরে দিন দিন রোগ জটিলতা আরো বাড়তে থাকে। তাছাড়া দীর্ঘদিন যাবৎ অসদৃশ ঔষধ প্রয়োগের ফলে মেডিসিনাল ট্রমা তৈরী হয়।

তবে যদি আপনার সমস্যাটি আইবিএস না হয়ে সাধারণ একটি নতুন পেটের পীড়া হয়ে থাকে তাহলে ঐ সকল ঔষধ লক্ষণ মিলিয়ে যেকোন একটি প্রয়োগ করিলেই সমস্যা ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু আইবিএস হলে এভাবে ঔষধ প্রয়োগে আদৌ ঠিক হবে না। কারণ প্রপার হোমিওপ্যাথিক ট্রিটমেন্ট ছাড়া আইবিএস এর মতো জটিল পেটের সমস্যা কখনই ঠিক হয় না। এর পিছনে মূলত আরো বহু ফ্যাক্টর থাকে।

হোমিওপ্যাথিতে এই সমস্যায় বহু মেডিসিন রয়েছে - যেমন ধরুন কারো পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়ার সমস্যা। রেপার্টরীতে এই রুব্রিকে যে যে ঔষধ রয়েছে -
পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া জনিত আইবিএস
আবার অনৈচ্ছিক মলবেগের সমস্যা তাদের জন্য রেপার্টরীতে এই রুব্রিকে যে যে ঔষধ রয়েছে -
অনৈচ্ছিক মলবেগযুক্ত আইবিএস
যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতা তাদের জন্য রেপার্টরীতে এই রুব্রিকে যে যে ঔষধ রয়েছে -
কোষ্ঠকাঠিন্যের প্রবণতাযুক্ত আইবিএস
আবার মলদ্বারের নিষ্ক্রিয়তা থাকলে রেপার্টরীতে এই রুব্রিকে যে যে ঔষধ রয়েছে -
মলদ্বারের নিষ্ক্রিয়তাযুক্ত আইবিএস
কারো কারো ক্ষেত্রে জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকে সেক্ষেত্রে রেপার্টরীতে যে যে ঔষধ রয়েছে -
জ্বালাপোড়ার সমস্যাযুক্ত আইবিএস
কারো কারো আবার পেট ফেঁপে থাকে সে ক্ষেত্রে রেপার্টরীতে যে যে ঔষধ রয়েছে -
পেট ফাঁপাযুক্ত আইবিএস
কারো ক্ষেত্রে আবার পেটে ডাকাডাকি করে অর্থাৎ শব্দ হয় তাদের ক্ষেত্রে-
পেটে শব্দযুক্ত আইবিএস
এখানে মাত্র কিছু রুব্রিক দেখানো হয়েছে। এছাড়াও আইবিএস পেসেন্টদের মধ্যে বহু উপসর্গ থাকে যেমন - ঢেঁকুর আসা, পেটে ব্যথা বা অস্বস্থিভাব, অনবরত বায়ু নিঃস্বরণ, মনের খিটখিটে ভাব ইত্যাদি সেগুলির উপরও মেডিসিন আসবে। যাদের মেজাজ খিট্খিটে ভাব থাকে তাদের ক্ষেত্রে রেপার্টরীতে এই রুব্রিকে যে যে ঔষধ রয়েছে-
মেজাজ খিট্খিটে ভাবযুক্ত আইবিএস
অভিজ্ঞ একজন হোমিও চিকিৎসক মূলতঃ আপনার সর্বদৈহিক অবস্থা - বর্তমান কষ্টের বিস্তারিত বিবরণ, আপনার পিপাসা, জিহ্বা, লালা, ক্ষুধা, খাদ্য, ঘুম, স্বপ্ন, ঘাম, পায়খানা, প্রস্রাব, পূর্ব রোগের ইতিহাস, জীবনদর্শন, আপনার পিতা-মাতা, দাদা-দাদী, নানা-নানীর হিস্ট্রি নিবেন তারপর আপনার উপযোগী সব রুব্রিক বিবেচনা পূর্বক নির্দিষ্ট ঔষধ নির্বাচন পূর্বক নির্দিষ্ট মাত্রায় আপনার শরীরে ডাইনামিক হোমিওপ্যাথিক ঔষধ প্রয়োগ করবেন। এক্ষেত্রে চিকিৎসক আপনার কনস্টিটিউশনও বিবেচনায় আনবেন। কারণ মানুষ জন্মগত ভাবেই অনেক দুরারোগ্য রোগের জেনেটিক মেটেরিয়াল পেয়ে থাকে। যখন তাদের ভাইটাল ফোর্স ডাউন হয়ে যায় তখন সেগুলি জেগে উঠে। সে অবস্থায় চিকিৎসককে আরো গভীরভাবে চিন্তা করে চিকিৎসা দিতে হয়।

হোমিওপ্যাথি ছাড়া বিশ্বের কোন ট্রিটমেন্ট সিস্টেমই ঐ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না। তাই অন্যান্য ট্রিটমেন্ট সিস্টেমে উপরি উপরি চিন্তা করে লক্ষন ভিত্তিক এর পেছনের বা ঐ স্থানের সাময়িক কারণটি নির্ণয়ের চেষ্টা করে থাকে আর সেখানকার স্থানিক লক্ষণ এবং এর সাময়িক কারণের চিকিৎসা দিয়ে থাকে। যার ফলে সেটা সাময়িক ভাবে ঠিক হয়। কিন্তু ভেতরের রোগ আগের মতোই প্রকট থাকায় সেটা আবার লক্ষণ এবং উপসর্গ তৈরী করে। ফলে সারা জীবনধরে ঔষধ খেয়ে খেয়ে লক্ষন বা উপসর্গকে কমিয়ে রাখা হয় প্রকৃত রোগ আদৌ নির্মূল হয় না।

এবার আসুন দেখি পেসেন্টরা কি কি মায়াজম অথবা কনস্টিটিউশনের হয়ে থাকে এবং সেগুলির ক্ষেত্রে কি কি মেডিসিন হতে পারে। এখানে মূলত আমি Synthesis Repertory রেপার্টরি থেকেই বিষয়টি আপনাদের দেখাচ্ছি-
কনস্টিটিউশন (Constitution) অনুসারে ঔষধগুলিও আপনারা দেখুন -
হিস্ট্রি নেয়ার সময় দেখা যায় - কারো ভাই বা বোন যক্ষায় আক্রান্ত হয়েছিলেন, কারো পিতা ডায়াবেটিস, হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। কারো মা শ্বাসকষ্ট, চর্মরোগ, কোষ্টকাঠিন্যে ভুগছেন। কারো দাদা ক্যান্সারে মারা গেছেন। কারো নানার CVA (Cerebrovascular Accident) করে মারা যান। কেউ কেউ সরাসরি বলেন - সমস্যাটি আমার দাদারও ছিল আমারও আছে.... ইত্যাদি ইত্যাদি। কেউ কেউ আবার বলেন একবার টাইফয়েড হয়েছিল আমার, তারপর থেকে সেই যে পেটের পীড়া হল কত ঔষধ খাই কিন্তু ঠিক হচ্ছে না। আপনার নিকট আত্মীয়দের মধ্যে বিদ্যমান রোগ-ব্যাধিগুলি আপনার মধ্যে থাকা প্রকৃত রোগ বা সেগুলির জেনেটিক মেটেরিয়াল বিদ্যমান থাকার প্রকটতা সম্পর্কে ধারণা দিয়ে থাকে। আইবিএস সমস্যাটি মূলত সেই জেনেটিক মেটেরিয়াল দ্বারা সৃষ্ট কিছু উপসর্গ মাত্র। 

এবার হয়তো কিছটা হলেও ধারণা পেয়েছেন একটি দুরারোগ্য রোগের চিকিৎসা দিতে গেলে একজন হোমিও চিকিৎসককে কিভাবে আগাতে হয় এবং তাকে কত মাথা খাটাতে হয়। চিকিৎসক যদি যত্ন নিয়ে চিকিৎসা করেন এবং পেসেন্ট যদি ধৈর্য্য ধরে চিকিৎসা নেন তাহলে আইবিএস এর মত সকল জটিল স্বাস্থ্য সমস্যাই নির্মূল হয়ে রোগী পূর্ণ সুস্বাস্থ্য লাভ করে থাকে হোমিওপ্যাথিতে।

যা যা জেনেছেন 

  • IBS এর হোমিও ঔষধ
  • আইবিএস এর ঔষধ
  • আই বি এস রোগের ঔষধ
  • আই বি এস এর চিকিৎসা
  • আমাশয় হোমিও চিকিৎসা
  • আই বি এস এর প্রাকৃতিক চিকিৎসা
  • আইবিএস হোমিওপ্যাথি
  • আইবিএস এর ঘরোয়া চিকিৎসা
  • পেটের সমস্যায় হোমিওপ্যাথি
  • আই বি এস রোগের হোমিও ঔষধ
  • আই বি এস থেকে মুক্তির উপায় কি
  • আইবিএস এর হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা
বিস্তারিত